somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একপোষ্ঠে ৩-বছরের-ডিজিটাল-বাংলাদেশ পূর্নাঙ্গ মূল্যায়ন স্বেতপত্র - সেইভ এ্যা কান্ট্রি

১২ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকাঃ
ওয়ারিদ-এয়ারটেলঃ সরকার ক্ষমতায় এসেই এয়ারটেলকে ওয়ারিদের শেয়ার কিনতে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়।সেখানে ওয়ারিদের মোট মূল্য ১ কোটি টাকা দেখিয়ে মাত্র ৭০ লাখ টাকা বিনিময়ে ওয়ারিদ টেলিকমের ৭০ ভাগ শেয়ার কিনে নেয় এয়ারটেল। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ওয়ারিদের মালিক ধাবি গ্রুপের স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুসারে ওয়ারিদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ধাবি গ্রুপের ৭৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার কথা।এ বিষয়ে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ওয়েবসাইট একটি হিসাব প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়, ‘ওয়ারিদের সম্পদের মূল্যায়ন করে বলা যায় এর পরিমাণ ৫০ থেকে ৫৫ কোটি ইউএস ডলার হবে, ফলে ভারতী এয়ারটেলকে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি ডলারে ওয়ারিদের ৭০ ভাগ শেয়ার কিনতে হতে পারে। টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১-এর ধারা ৩৭(১) অনুসারে বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স পাওয়া কোনো কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানিকে লাইসেন্স বিক্রি করতে পারবে না। কিন্তু ৩৭(৩)-এর ঝ উপধারা অনুসারে শেয়ার হস্তান্তর করতে পারবে।সে শেয়ার হস্তান্তরের সময় শেয়ারের মূল্যের ৫.৫ ভাগ সরকারকে দিতে হবে। এখন ওয়ারিদের ৭০ ভাগ শেয়ারের মূল্য ৩০ কোটি ডলার দেখালে এর ৫.৫ ভাগ অর্থাৎ ১১৫.৫ কোটি টাকা বিটিআরসিকে দিতে হতো।কিন্তু শেয়ারের মূল্য মাত্র ৭০ লাখ টাকা দেখানোর কারণে দিতে হয়েছে ৭০ লাখ টাকার ৫.৫ ভাগ অর্থাৎ মাত্র ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা

শুরু করার আগে একটি হাল্কা বেসিক তথ্যঃ মাথাপিছু ডলার এনালগ দেশে যত গুরুত্বপূর্ন, মাথাপিছু ব্যান্ডউইথ ডিজিটাল দেশে তত গুরুত্বপূর্ন।কয়েকটি দেশের BW per Person ডাটা দেখুন- বাংলাদেশ ৩ bits, মালদ্বীপ ২৬০০ bits, সুইডেন ৫০০০০ bits, গ্রীস ৫০০০ bits, বেলজিয়াম ২৫০০০ bits ...

সবকিছু পরিমাপের যেমন একটা ইউনিট/একক আছে যেমন, পানি লিটার, লোহা কেজি, বিদ্যুৎ ওয়াট, তেমনি ইন্টারনেট তথা ডিজিটালেরও পরিমাপের একটা একক আছে।ইন্টারনেটের এই পরিমাপের নাম ব্যান্ডউথ, যার একক বিট - বিট, কিলোবিট, মেগাবিট, গিগাবিট, টেরাবিট, প্রতিবার এক হাজার বা ১০২৪ দিয়ে গুন করে।এই একক দিয়েই মাপা হয় তথ্যপ্রযুক্তির সকল কর্মকান্ড, ডেভলপমেন্ট, পশ্চাদপদতা, আশির্বাদ, অভিশাপ সকল কিছু।ইংরেজি বর্নমালায় যেমন ছোট হাতের ও বড় হাতের দুই রকম বর্নমালা আছে, তেমনি ব্যান্ডউইথেও বিট (ছোট) ও বাইট (বড়), যদিও এই তফাৎটি গুরুত্বপূর্ন কোন বিষয় না।ছোটটা লিখতে ছোট হাতের বি, আর বড়টা লিখতে বড় হাতের বি ইউজ হয়।সাধারনত অনলাইন কন্টেন্ট হিসাব করতে বিট ও অফলাইন কন্টেন্ট হিসাব করতে বাইট ব্যবহার করতে দেখা যায়।তবে এখানে নিহিত তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে জ্ঞানের কথাটি হলো ১ বাইট = ৮ বিট।এটুকু জানা থাকলেই কেউ প্রতারনা করতে পারবে না।বাংলায় এমএ পাশ করা একজন রাষ্ট্রনায়কও শুধু এটুকু জ্ঞান দিয়েই তার দেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে সর্বচ্চ শিখরে নিতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা, পরিকল্পনা, নিয়ন্ত্রন সবকিছু করতে পারবে।

ব্যান্ডউইথ'ই তথ্যপ্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি'ই ব্যান্ডউইথ।আজ এক একটা দেশ তথ্যপ্রযক্তিতে কতটুকু ডেভলপ করেছে তা জানতে আর কোন ডাটা জানার দরকার নাই, শুধু ঐ দেশের ব্যান্ডউইথ ইউজ ও জনসংখ্যা জানলেই বলে দেয়া যাবে ঐ দেশের ডিজিটালাইজেশনের প্রকৃত চিত্র।যেমন- বাংলাদেশ জনসংখ্যা ১৬ কোটি-টোটাল ব্যান্ডউইথ ইউজ ১৫ গিগাবিট/সেকেন্ড, দক্ষিন কোরিয়া জনসংখ্যা ৫ কোটি-টোটাল ব্যান্ডউইথ ইউজ ২৫,০০০ গিগাবিট/সেকেন্ড। দেশ দুটির তথ্যপ্রযুক্তির পার্থক্যও এই, বাংলাদেশে আজ যেটুকু ডিজিটাল দেখেন তা এই ১৫ গিগাবিট/সেকেন্ডেরই ফল।দশ বছর আগে বৈধ্যভাবে এর পরিমান ছিল ৫০ মেগাবিট/সেকেন্ড, অনেক অগ্রগতি অবশ্যই, ৩০০ গুন বেশি।দুই লাইন উপরে বোল্ডকরা অংশটুকু পড়ুন।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষনা দিয়েই আমাদের প্রথম যে কাজটি করা উচিত ছিল, তাহলো, সংবিধানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের পরেই ব্যন্ডউইথ/ ব্রডব্যান্ড-ব্যান্ডউইথ শব্দটি যোগ করা।অথচ এই ব্যান্ডউইথ নিয়ে আমাদের নীতি নির্ধারকরা বছরের পর বছর কি রকম হাস্যকর পলিসি গ্রহন করে আসছে তা দেখলে, আমি শিওর একই সাথে হাসতে হাসতে আপনার লুঙ্গি খুলে যাবে ও রাগে গা জ্বলেপুড়ে যাবে!

সূচনাঃ ব্যান্ডউইথের জগতে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালের জুন মাসে, সে সময় দেশটি ভিস্যাট স্থাপনের আইন পাশ করে ও স্থাপন করে প্রথমবারের মত ইন্টারনেটে যুক্ত হয়।ব্যান্ডউইথের পরিমান ছিল ২ এমবিপিএস।দক্ষিন কোরিয়ার ক্ষেত্রে এই তথ্যটি হবে, ১৯৮২ সাল।(আমি অবশ্য বলি বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রথম আসে ২০০৬ সালের জুনের পরে, কারন এর আগে মোবাইলে ইন্টারনেট সেবার লাইসেন্স না দেয়ার আমার মত একজন সাধারনের জীবনের প্রথম ইন্টারনেট দেখার সৌভাগ্য হয়, সেখানেই আমার যাত্রা শুরু, এর আগে শুনেছি ইন্টারনেট নামে একটা যোগাযোগ আছে যা অল্প কিছু ভিআইপি লোক ও প্রতিষ্ঠানের কপালে জুটতো।) যাহউক, সে সময় এই দুই মেগাবিট/সে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারই দেশের জন্য অনেক ব্যায়বহুল ছিল কারন বাংলাদেশ ১৯৭৩-৭৮ সালে সাবমেরিন ক্যবল সিমিউই-১, পরে ১৯৮৫ সালে একই পরিবারের সিমিউই-২ ও ১৯৯৪ সালে সিমিউই-৩ এর কোনটিতেই যুক্ত না হওয়ায় অনেক বেশি মূল্যে হংকং ও সিঙ্গাপুর ভিএইচএফ লিংকে ব্যান্ডউইথ নেয়ার বিকল্প ছিল না।ঠিক ১০ বছর পর ২০০৬ সালের মে মাসে দেশটি সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হওয়া পর্যন্ত দেশ জুরে অনেক ভিস্যাট অনুমোদন দেয়া হয় যার প্রায় সবটুকুই ব্যবহার হয়েছে অবৈধ্য ভিওআইপি ব্যবসায়।আর বৈধ্য পরিমান ৫০০ মেগাবিট/সেকেন্ডও অতিক্রম করেনি।

২০০৬ সালে দেশটি ৭.৪ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিয়ে সিমিউই-৪ সাবমেরিন ক্যবলে প্রথমবারের মত যুক্ত হলেও আইএসপিদের জন্য প্রতি এমবিপিএস ৩ লাখ টাকার উপর মূল্য নির্ধারন করায় ২ জিবিপিএসও ব্যবহার হয়নি আর অব্যবহৃত ছিল বাকি টুকু।২০০৭ সালের ডিসেম্বরে এই ক্যবলে ১ম আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ ২৪.৬ জিবিপিএসে উন্নিত হয় -ব্যবহার বাড়েনি।২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ২য় আপগ্রেডেশনে এই সংযোগে ৪৫.৪ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথে উন্নিত হয়, এর আগে কেয়ারটেকার সরকার প্রতি এমবিপিএস এর সরকারী মূল্য ১লাখ ২৭ হাজারে নামিয়ে আনায় ব্যবহার কিছুটা বাড়লেও ৭৫% ব্যান্ডউইথ অব্যবহৃত থেকেছে।উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যবল কোম্পানী লিমিটেড এর ওয়েবসাইটে এক প্রেস রিলিজে দেখা যায় ঐ মুহুর্তে সারাদেশে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে এবং ডিসেম্বর ২০০৯ এ এই ল্যান্ডিং স্টেশনে ৩য় আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে মাত্র ৩০ কোটি টাকা ব্যায়ে আরও ১১০ জিবিপিএস যুক্তু হবে।সেখানে আরও লেখা ছিল, এমনিতেই অব্যবহৃত তিন চতুর্থাংশ ও নতুন সংযুক্ত বাড়তি ব্যান্ডউইথ নিয়ে সরকার ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত চাহিদার পর্যাপ্ত সংরক্ষণ করে ও রপ্তানী করার কথা চিন্তা ভাবনা করছে।কত বড় ইডিয়ট চিন্তা করুন ? এইযে এখানে আছে এই ওয়েবসাইটের ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারীতে পাওয়া একটি প্রেস রিলিজের চিত্র। ব্যন্ডউইথ সংরক্ষন ! আপনি বিষয়টি বুঝলে, অবশ্যই মাথার চুল ছিরতে ইচ্ছা করবে ? ২০১১ সালে আরেক প্রেস রিলিজে দেখা যায় দেশে ১৫ জিবিপিএস ব্যবহার হচ্ছে, এর মধ্যে সরকার অবশ্য ব্যন্ডউইথের দামও অনেক কমিয়েছে -আইএসপি ও ভিওআইপি ওয়ালাদের কথা মাথায় রেখে।নিচে রপ্তানির দরপত্রের শট দেখুন।

তাহলে কি করলাম ? আমরা গত ৩ বছর ধরে ? কি করে আসছি ? মাত্র ১৫ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছি আর বাকি ৩০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের কি হইলো ? কোন ব্যাংকে জমা আছে ? ব্যান্ডউইথ কি বিদ্যুৎ নাকি, যে ব্যাটারী চার্জ দিয়ে কিছু রেখে দিবেন ? তারমানে অব্যবহৃত রাখছি ? - ব্যবহার করিনি, মানে ফেলে দিয়েছি ? এক সময় শুনতাম, আমেরিকা নাকি তার উৎপাদিত বাড়তি গম সমুদ্রে ফেলে দিত - বাংলাদেশ কি ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথে সে পর্যায় চলে গেছে ? বলেন কি ? দঃ কোরিয়া বাংলাদেশের তিন ভাগের এক ভাগেরও কম জনগণ নিয়েও এই মুহুর্তে ১১ টি ক্যবলে ২৫ টেরাবিট/সেকেন্ড ব্যবন্ডউইথ ব্যবহার করছে।আর ঘোষনা দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেও আমরা ১৬ কোটি জনগণেরে ৫কিলোবাইট/সেকেন্ড গতিতে ১৫ গিগাবিট/সেকেন্ড ব্যবহার করার নীতিমালা করে রেখেছি।আর ৩০ জিবিপিএস ফেলে দিচ্ছি !!!! চলুন তো এই ফেলে দেয়া কন্টেন্টের পরিমান বর্তমান বাজার মূল্য ও ক্ষতিটা একটু দেখি! সাবমেরিন ক্যবলে গত ৩ বছরে (৩০ x ৬০ x ৬০ x ২৪ x ৩৬৫ x ৩) ভাগ ১০০০ = ২৮,৩৮,২৪০ টেরাবিট বা প্রায় ৩০ লাক্ষ টেরাবিট।আজকাল মার্কেটে ১ জিবি কন্টেন্টের ভ্যাট সহ প্রায় ৪০০/- টাকায় বিক্রি হয় -গ্রামীনফোন ইন্টারনেটের পি-6 প্যাকেজে।আরএক প্যাকেজে ৩ এমবি কন্টেন্ট এর দাম ৯/- টাকা, অন্যএক প্যাকেজে ৯৯ এমবি ৯৯/- টাকা - গতি অবশ্যই সর্বদা সমান, ৫ কেবিপিএস, ওয়াইম্যাক্স ৩জিবি ১২০০/- টাকা বেঁচে।আপনি প্রতি জিবি ২০০/- টাকা করে ধরলেও এই ক্ষতির টাকার পরিমান ২৮,৩৮,২৪০ x ২০০ x ১০০০ = ৫৬৪,৬৪,৮০,০০,০০০ টাকা বা প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা।জনগণের টাকায় কেনা ব্যান্ডউইথ জনগণ ব্যবহার না করার কোন যুক্তি বা সুযোগ নেই, এটা খুব সহজ হিসাব, এটা ভিষন অন্যায়, আর বাংলাদেশের মত দেশের জন্য মহাপাপ।ব্যান্ডউইথ এমন কোন জিনিষ না যে তাকে এখন ব্যবহার না করে ভবিষ্যতের জন্য সরক্ষন করা যায় বা কিছু ব্যান্ডউইথ ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটানোর জন্য রেখে দেয়াও নির্বুদ্ধিতা।একটু খেয়াল করে দেখেন, আমরা গত ৩ বছরে আপনার যে ডিজিটাল অগ্রগতি হয়েছেন বলে আপনি আস্ফালন করেন, তার পরিমান কিন্তু অব্যবহারের অর্থেক বা ১৪,১৯,১২০ টেরাবিট'ই।এইটুকু কন্টেন্টই বাংলাদেশ গত ৩ বছরে আপলোড ও ডাউনলোড করেছে।আজ নেটে সার্চ দিয়ে যা বাংলার কন্টেন্ট পান তা এরই অংশ -৩ বছর বাংলাদেশ এটুকুই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।যদি এই ব্যবহারের পরিমান ৪২,৫৭,৪০০ টেরাবিট হতো তাহলে আজ আরও এত পরিমান নেটে আপলোড/ডাউনলোড হতো নাকি ? এতে আপনার উন্নতি কি কম হতো, না বেশি ? আপনি জানেন কি আজ পর্যন্ত ভিয়েতনামের কন্টেন্ট অভিজ্ঞতা কয় শত কোটি টেরাবিট ?

ছবিতঃ ইন্টারনেট কন্টেন্ট বাই ল্যাগুয়েজ।ইন্টারনেটে কোন ভাষার কন্টেন্ট কত শতাংশ আছে তার একটা ডাটাও নেটে পাওয়া যায়, সেখানে দেখা যায় নেটে বাংলা ভাষার টোটাল কন্টেন্ট ০.০০০০০০০০০১%, যার ৯৫ ভাগ ব্লগারদের অবদান।অথচ প্রতি মাসে সাবমেরিন ক্যবলে ৩৬৮,০৬৪,০০০ জিবি কন্টেন্ট আমরা অব্যবহৃত রেখেছি।যা দিয়ে প্রতিমাসে সম পরিমান বাংলা কন্টেন্ট আপলোড করা যেত।

আবার আরেকে হিসেবে দেখুন মোট ব্যবহৃত এই ১৫ Gbps ৮ হাজার টাকা প্রতি এমবিপিএস হলে মোট ১২ কোটি টাকা পাচ্ছে সরকার।আর অব্যবহৃত রাখছে ১২০০ কোটি টাকার উপর ব্যান্ডউইথ প্রতি মাসে।

আবার বলেন, বিএনপি ১৯৯৩ সালে সাবমেরিন ক্যবলে যুক্ত না হয়ে মহা ক্ষতি করেছে, আবার হাস্যকর ভাবে বলেন মাগনা দিতে চেয়েছিল !!!! হাহাহা, জানেন সাবমেরিন ক্যবল কিভাবে হয় ও এর ইতিহাস কয়শ বছরের ? সাবমেরিন ক্যবলের প্রথম ধারনার জন্ম ১৭৮৫ সালে স্পেনে আন্তমহাদেশীয় টেলিগ্রাফের নেটওয়ার্কের ধারনা থেকে। অবশ্য বিশ্বের প্রথম সফল সাবমেরিন স্থাপন হয়েছিল ১৮৫৬ সালে ইংলিশ চ্যানেলে। ১৮৭৬ সালে আটলান্টিকে , রানী এজাবেথ তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কাছে টরেটক টেলিগ্রাফ করে তা উদ্বোধন করেছিল।এরপর সাবমেরিন ক্যবলের শুধু প্রসার আর প্রসার ১৯৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রতলদেশে জালেরমত ছড়িয়ে পরে সাবমেরিন ক্যবল আর প্রতি ১৫-২০ বছর পরপর তাড়গুলো প্রতিস্থাপন হতে থাকে আরও উন্নত ও দক্ষ তাড় দিয়ে।এই এ্যালবামের আরও ছবিঃ সাবমেরিন ক্যবলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস


যাক বিএনপির সে ক্ষতি বিশাল, তবে সে সময় সাবমেরিন ক্যবল না থাকলেও আমারা ভিস্যাটের মাধ্যমে আনা নেট ইউজ করেছিলাম।যার পরিমান সর্বোচ্চ কয়েক এমবিপিএস থেকে ২০০৬ সালে এসে কয়েকশ এমবিপিএস হয়ে ছিল।আর ততকালীন সিমিউই-৩ ক্যবলে, ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সংযুক্ত হলে ২০০৬ পর্যন্ত আপগ্রেড করে সর্বচ্চ ৫০০ এমবিপিএস থেকে ২ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ পেতো।তাহলে ১২ বছরে বিএনপি ক্ষতি করেছে সর্বোচ্চো ৩,৭৮,৪৩২ টেরাবিট কন্টেন্ট।সুতরাং দেখা যায় বর্তমান সরকার প্রতি এক মাসেই প্রায় সমান ক্ষতি করছে।

এখানেই শেষ নয়, সেদিন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে জানালেন, গত বছর অক্টবর মাসে আমাদের সাবমেরিন ক্যবল তৃতীয় আপগ্রডেশনের মাধ্যমে মাত্র ৫০ কোটি টাকা খরচ করে ৪৫ জিবিবিএস থেকে ১৬৪ জিবিপিএস সংযোগে উন্নিত হয়েছে।তার মানে গত ৩ মাস যাবৎ ব্যবহার করছি ১৫ জিবিপিএস আর অব্যবহৃত রাখছি ১৫০ জিবিপিএস -হায়হায়হায়।এইটা আসলে হইয়া গেছে গত বছর অক্টবর মাসে, এখানে দেখুন মন্ত্রী বলছে -

তবে ভয়ংকর কথা হচ্ছে এই কাজটা ২০০৯ সালেই হওয়ার কথাছিল। এখানে ঐ প্রেসরিলিজে আর ২০১০ সালে ও ২০১১ সালের আপগ্রেডেশন এই ক্যবলটি সবগুলো সংযোগে আজ ১.২৮ টেরাবিট ব্যন্ডউইথে উন্নিত হয়ে গেছে।শ্রীলাংকায় একই ক্যবলে ১.২৮ টেরাবিট ব্যন্ডউইথে উন্নিত হয়েছে।নিচের ছবিতে শৃলংকা দেখুন -
তারপরও আমরা আশা রাখি একদিন সময় থাকতেই আমরা বুঝব, সেদিন প্রথমেই এদের প্রত্যেকটার দপ্তরের চেয়ারের পেছনের অর্নার বোড থেকে নাম ঠিকানা নিয়ে এদের খুজে বের করবো!!!!! দেশের তথ্যপ্রযুক্তির ভবিষ্যৎ খুবই ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে পার করছে।সঠিক সময়ে আপগ্রেডেশন করে সিমিউই-৪ ক্যবলে যত কম মূল্যে আমরা টেরাবিট ব্যান্ডউইথ পাব তা যদি এবার মিস করি তাহলে আর রক্ষা নাই।আবার হাজার কোটি টাকা খরচ করে হলেও এই ফ্যামেলির পরবর্তী ক্যবলে সংযোগ নিতে অনেক দেরী, ২০২৫ সাল।১৯৯৪ সালে সংযোগ না নিয়ে আমরা দেশের যে ক্ষতি করেছি সেটা তেমন ক্ষতি ছিল না, কারন চাহিদা কম থাকায় ভিস্যাটেই তা সম্ভব ছিল কিন্তু বর্তমান গিগাবিট গতির বিশ্বে এবারের ক্ষতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমাদের পঙ্গু করে দেবে।এই ক্যবলে অলরেডি দুই বছর ড্রপ মারছেন।দেশকে বাঁচাতে বিপদ ঠেকান!একটা কথা বলি, আপনাদের মাথায় না ঢুকলেও ধরে নেন অক্সিজেন ছাড়া মানুষ বাঁচলেও ভবিষ্যতের সভ্যতা-অর্থনীতি ব্যান্ডউইথ ছাড়া বাঁচবে না।

একবার ভেবে দেখেছেন, এখনই আমরা বলছি দেশে দুই কোটি নেট ইউজার আছে, প্রায় ১৫-২০% আরও আওয়াজ দিচ্ছি ২০১৫ সালের মধ্যে লক্ষ্য ৪৫% পেনিট্রেশনের, কিছু বোঝেন - ১কিলোবাইট/সেকেন্ড গতিতে ? অথচ ৩জি করার পর এই দুই কোটি ইউজারকে ডেডিকেটেড ১ এমবিপিএস গতি দিয়ে হিসাব করলে দরকার ২০টেরাবিট/সেকেন্ড ব্যন্ডউইথ লাগে -তাহলে বুঝেন আপনার শেয়ারিং কি হবে ? কোন ফর্মুলায় শেয়ার করে আপনি ১০০০ জিবিপিএস বা ১ টেরাবিটের নিচে ব্যান্ডউইথ দিয়ে ১ এমবিপিএস গতির লোয়েস্ট থ্রীজি দিতে পারবেন ? হিসাব করে নীতিনির্ধারকদের দেখাতে বলেন ? এই মুহুর্তে আপনার আছে মাত্র ১৬৫ জিবিপিএস।আবার ব্যবহার করছেন ১৫ জিবিপিএস, আহাম্মক কোনহানকার।
ছবিটি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যবল কোম্পানীর সাইটের স্ক্রীন শট দেখুন

লিংকের প্রেসরিলিজে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল্ কোম্পানী লিমিটেড (বিএসসিসিএল) এর বিগত ০৩ (তিন) বছরের কার্যক্রম ও অগ্রগতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন ।(প্রেসরিলিজ সরাসরি পিডিএফ ইংলিশ পিডিএফ )

প্রেস রিলিজটি এক জায়গায় বলছে বর্তমানে সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি খাতের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ‘ভিশন ২০২১’ পরিকল্পনার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ একটি আধুনিক টেলিনেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।ভিশন ২০২১ এর দিকে লক্ষ্য রেখে এবং অধিকতর ব্যবহার ও র্বসাধারণের সামর্থের মধ্যে আনার লক্ষ্যে ২০০৯ সালের আগষ্ট মাসে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ চার্জ সাবমেরিন কেবল্রে ক্ষেত্রে (Wet Segment -এ) ১০% কমানো হয়েছে এবং ২০১১ সালের জানুয়ারী মাসে পুনঃরায় ১০% কমানো হয়েছে।এই চার্জ আরও ১০% কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।বর্তমান সরকার গত তিন বছরে কয়েক ধাপে ১ মেগাবিট/সেকেন্ড ব্যান্ডউইথের মূল্য ২৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে মাত্র ৮ হাজার টাকা করেছে। উল্লেখ্য গত কেয়ার টেকার সরকার এই মূল্য ১ লাখ ২৭ হাজার থেকে কমিয়ে মাত্র ২৭ হাজার টাকা করে রেখে গিয়েছিল।তবে ব্যান্ডউথের দাম কমালেও এই বাড়তি ব্যান্ডউইথ ইউজার পর্যন্ত পরিবহন করার জন্য প্রয়োজনীয় তরঙ্গের দাম কয়েক শত কোটি টাকা নির্ধারিত থাকার কারনে দাম কমার সুবিধা কখনও পায়নি, পেয়েছে শুধু সার্ভিস প্রভাইডারেরা -পরে বলছি কিভাবে।

বর্তমান সরকারের আমলে ব্যান্ডউইথ ব্যবহার ৭.৫ Gbps হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২২ Gbps অতিক্রম করেছে।আন্তর্জাতিক সার্কিট বৃদ্ধি, ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সম্প্রসারণের কারণে ব্যান্ডউইথ এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।সাবমেরিন ক্যবল কোম্পানীর ওয়েবসাইটের ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারীতে পাওয়া এক প্রেসরিলিজে দেখা যায় সারাদেশে ৮ Gbps ব্যান্ডউথ ব্যবহার হচ্ছে।যা ২০১১ সালের শেষে দেখা যায় ১৫ Gbps আজ হঠাৎ দেখলাম ২২ Gbps অবশ্য ইংলিশ প্রেসরিলিজে এখনও ১৫ Gbps দেখাচ্ছে।প্রমান ছবিতে -
ভবিষ্যতে দেশের ব্যান্ডউইথ চাহিদা সামনে রেখে বিএসসিসিএল সরকারের অনুমতিক্রমে কনসোর্টিয়ামের আপগ্রেড#৩ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অতিরিক্ত 4 Million MIU*Km ক্যাপাসিটি আনয়নের ব্যবস্থা করেছে।গত ৩রা এপ্রিল ২০১১ তারিখে গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উক্ত Upgradation প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেন। ইতিমধ্যে বিএসসিসিএল আপগ্রেড#৩ তে অংশগ্রহণ করার জন্য ৫০ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল হতে SEA-ME-WE-4 কনসোর্টিয়াম কে প্রদান করেছে।এর ফলে ব্যান্ডউইথ পরিমান ২০১২ সালের মে মাস নাগাদ ৪৪.৬০ Gbps হতে বৃদ্ধি পেয়ে ১৬০ Gbps এ পৌঁছাবে।

আজ ১ এমবিপিএস এর নিচের গতিকে ইন্টারনেটই বলা হয় না, ব্রডব্যন্ডের সংঙ্গা ৫ এমবিপিএস করার দাবি উঠছে আজকাল।আপনি জানেন কি বাংলাদেশের টেলি আইনে ২৫৬ ও অধিক গতিকে ব্রডব্যন্ড বলা হয়।

ব্যান্ডউথের দাম ও গতিঃ আজকাল দেখি অনেকেই দেশের ইন্টারনেটর গতি নিয়ে কথা বলে। মন্ত্রী, আমলা, সচিব, এমপি থেকে শুরু করে সেদিন সাধারন মানুষও।এতদিনে মাত্র গতি সচেতনতা! সেদিন দেখি বিটিআরসি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) জিয়া আহাম্মেদও মূর্খের মত বললেন যে, সরকার গত ৩ বছরে ব্যান্ডউইথের দাম ৩ দফা কমিয়ে ১২৭,০০০/- হাজার টাকা থেকে মাত্র ৮০০০/- টাকায় নামিয়ে আনার পরও দেশে ইউজার ল্যাভেলে নেটের দাম তুলনা মুলক কমে তো নিই'ই ইন্টারনেটের গতিরও সামান্যও উন্নতি হয়নি।অথচ ওরই জানার কথা সব ঘটনা। বরাবরের মত মোবাইলের নম্বর সেইভ করার যোগ্যতাও না থাকা জাতির মাথায় বিষয়টি কখনই ঢোকে না -জিয়া কইলো কি ?

বর্তমানে গ্রামীন সহ অন্যান্য মোবাইল অপারেটররা যেহেতু আগের ১২৭,০০০/- টাকায় ১ মেগাবিটের পরিবর্তে এখন ১৩ মেগাবিট/সেকেন্ড ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে সেখানে ইউজার এন্ডে বর্তমান গড় গতি ৫ কিলোবাইট/সেকেন্ডের পরিবর্তে ১২০ কিলোবাইট/সেকেন্ড না হলেও অন্তত এজ নেটেওয়ার্কের সর্বোচ্চ ৬০ কিলোবাইট না হলেও ৫০ কেবিপিএস হওয়া উচিত।হারামজাদা মোবাইল অপারেটররা অবশ্যই আমাদের সাথে প্রতারনা করছে ? এমনিতেই বাতাস বেঁচে বিদেশিরা দেশের টাকা নিয়ে গেল এইরকম দেশপ্রেমে আমাদের সপ্তাহে একবার স্বপ্ন দোষ হয়।অথচ বুঝে না কি দিয়া কারে কি বুঝাইতেছে আর জনগণেরই বারটা বাজাইতেছে।আচ্ছা এই যে কারেন্টে আমরা বাতি জ্বালাই, ফ্যান চালাই, এই কারেন্ট কিসের ভেতর দিয়ে পাস হয় ? উত্তর সবার জানা। কারেন্টের তাড়ের ভিতর দিয়ে কারেন্ট পাস হয়! আচ্ছা অপটিক ক্যাবলের ভিতর দিয়ে কি পাস হয় ? এর উত্তরও অনেকেই জানে, ব্যান্ডউইথ/ইন্টারনেট পাস হয়। তাহলে বলুন, এই যে মোবাইল চলে, মোবাইলে, ওয়াইম্যাক্সে আমরা ইন্টারনেট পাই তা কিসের ভিতর দিয়ে পাস হয়ে ইউজারের মডেমে ঢুকে ? হ্যাঁ, ঐ জিনিষটা তরঙ্গ! তরঙ্গের মাধ্যমে। মোববাইল, মোবাইল ইন্টারনেট, ওয়াইম্যাক্স, থ্রিজি সহ তাড়বিহীন সকল যোগাযোগের প্রাণ হলো এই তরঙ্গ - যা প্রাকৃতিক সম্পদ।পৃথিবীতে অঞ্চল ভেদে নানা খনিজ সম্পদের তারতম্য থাকলেও এর কোন তারতম্য নেই, আমেরিকায় যা বাংলাদেশেও তাই।তবে এর ব্যবহার নিয়ে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে চলে গণবিরোধী অসংখ্য নীতি ও রাজনীতির খেলা।জন্মগত ভাবেই মানুষ তার মাথার উপর আকাশের তরঙ্গে উপর অধিকারী হলেও বাংলাদেশের সামরিক, একনায়ক, গণতন্ত্রের নামে ইজারাতান্ত্রীক সরকার ও রাজনীতি জনগণকে তাদের এই অধিকার থেকে ৯৮% বঞ্চিত রেখেছে।বাংলাদেশে মূলত কোন তরঙ্গ নীতিমালাই নেই।যা চলছে তা পৃথিবীতে নজির বিহীন।পদাধীকার বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফ্রিকোয়েন্সি এলোকেশন কমিটির চেয়ারম্যান, আর চালাচ্ছে সর্বনিম্ন ব্যবহার নীতিতে।বাংলাদেশে বর্তমানে ১ মেগাহার্ড্স তরঙ্গের জন্য সরকারকে গড়ে ৫০০ কোটি টাকা ফি দিতে হয় -সেই সাথে ভয়েস ও ডাটা বেকহাউলিং আরও শত টেটনামি।

এদিকে গত তিন বছরেও বিটিআরসি থ্রিজি স্পেকটার্ম অকশন নীতিমালা করতে পারেনি।ওয়াইম্যাক্স স্পেকটার্ম নিয়ে যত বেশি তরঙ্গ ব্যবহার না করে ফেলে রাখা যায় তত মঙ্গল, এই নীতিমালায় চলছে - পুলিশকে বিনা কাজে ১০ মেগাহার্স্ড ফাউ দিয়ে রেখেছে।ওয়াইড ব্যান্ড, ৪জি স্পেকটার্ম সম্পর্কে সচেতনতাও নেই।তাছাড়া ভিএইচএফ, এফএম সহ আরও হাজার রকমের নীতিহীনতায় ভুগছে দেশের সমগ্র তাড়বিহীন তথ্যযোগাযোগ ব্যবস্থা ও সম্ভাবনা।অথচ এই তাড় বিহীন যোগাযোগকেই হতে হবে বাংলাদেশের ডমেস্টিক কানেক্টিভিটির প্রথম ও অন্যতম মাধ্যম।কারন এদেশে কখনওই দেশ জুরে টেলিফোন সিস্টেম ক্যাবল নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেনি এবং ভৌগলিক অবস্থার জন্য সম্ভবও না।আর ২০১২ সালে দেশে ২০০ কিলোমিটার অপটিক ক্যবলও স্থাপন হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে -যেখানে বাকি বিশ্ব ২০০০ সালের আগে ন্যাশনাল অপটিক ব্যাকবোন দ্বিতীয় মেয়াদে আপগ্রেড করে ফেলেছিল।তাই সারাদেশ তাড় দিয়ে কানেক্টিভিটির কথা আপনার সামনে যদি কেউ বলে, নির্দিধায় তাকে একটা থাপ্পর মেরে বলতে পারেন /মোবাইল/ওয়ারলেস ব্রডব্যন্ড'ই হবে বাংলাদেশের ডমেস্টিক ব্রডব্যন্ড বেকবোন।এবার নিচের ভিডিওতে দেখেন ডিজিটাল বাংলাদেশ ৩ বছর খতিয়ান - খুবই গুরুত্বপূর্ন। মাত্র ১ মিনিট ২১ সেকেন্ডের ১ এমবি ভিডিও,

থ্রীজি হলো তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক। ১জি প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রথম স্থাপন হয়েছিল জাপানে ১৯৭৯ সালে।এই প্রজন্মটি ছিল এ্যানালগ মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন।১৯৯১ সালে ২জি বা প্রথম ডিজিটাল মোবাইল নেটওয়ার্ক ফিনল্যান্ডে শুরু হয়।আর ৩জি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছিল ১ অক্টবর, ২০০১ জাপানে, প্রথম।

আপনাদের মনে থাকবে ওয়ারীদ বাংলাদেশে ৩জি'র আওয়াজ তুলেছিল ২০০৪ সালেই।ওয়ারিদকে মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনের লাইসেন্সের সাথে থ্রী-জি অনুমোদনের ফাইল গেলে সেদিন কেবিনেট মিটিং এ সকলে এর বিপক্ষে জোর দাবী তুলেছিল।শানেনজুল ছিল, "এটা দিলে আমাদের ইয়ং জেনারেশন নষ্ট হয়ে যাবে, ওরা ভিষন পাপ করবে, ফ্রি সেক্স হইয়ে যাবে, ঘরে বসে ওরা একে অন্যের ব্লুফিল্ম দেখবে।কোরান, হাদিস সব ঘেটে ঐ মিটিংয়েই ইসলামে ৩জি'র অনুমোদনের কোন সুযোগ নেই তা প্রমান হয়েছিল।এখনও এই নীতিই চলমান।উল্লেখ্য থ্রীজি'র সাথে ধর্মীয় বিষয়টি সবদেশেই কম বেশি ছিল এবং বাংলাদেশে এই প্রতিবন্ধকতাটি সবচেয়ে বেশি যার বীজ উপ্ত হয়েছিল ২০০৪ সালে।তাই থ্রীজিকে একমাত্র বাংলাদেশেই আজও আটকে রাখতে পারছে।শুনা যাচ্ছে এবছর শিওর আসছে, আমার ভবিষ্যৎবানী বাংলাদেশে থ্রীজি আসলেও নেটের গতি আসবে না কারন তরঙ্গ দিবে না।

ইকমার্স বা পেপলের কতা তো কইলামই না, যেই ইন্টারনেট টাকা লেনদেন করা যায় না তা হিজরা ইন্টারনেট।আচ্ছা বলেন তো টাকা লেনদেন করা যায়না এমন ইন্টারনে বিশ্বের কোন দেশে আছে ?
বাংলাদেশ ও পাকিস্তন ছাড়া পৃথিবীর কোথাও এই রকম ইন্টারনেট ২০০৫ সালের পরে নেই।বাংলাদেশের ইন্টারনেটের একদিকে যেমন সামান্যতম গতি নেই তেমনি বীর্যও নেই।এটাকে বলতে পারেন ফাইজিল ডিজিটাল বাংলাদেশের ফাউল নেট।এটা দিয়া ফাইজলামী ও পর্নগ্রাফি ছাড়া আর কোন কামের না।বাংলাদেশ পাকিস্তান ভাই ভাই কোন দেশে পেপল নাই।



পেপল না থাকায় ডিজিটাল অর্থনীতির সমস্ত দরজাই বন্ধ।যেমন আউটসোর্সিয়ের কথাই ধরুন।দেশের সর্বশেষ রেমিটেন্স রেকর্ড ১২.৫ বিলিয়ন যা প্রায় ১০ মিলিয়ন প্রবাসীর অবদান।এই রেমিটেন্স গতি গত ৩ বছরের প্রথম ৬ মাসেই দ্বিগুনের কাছাকাছি যাওয়ার কথা ছিল।দেশে এই মুহুর্তে জেএসসি থেকে মাস্টার্স উত্তর ৫ বছর পর্যন্ত ৩ কোটির উপর শিক্ষিত বেকার তরুন'ই আছে - এবছর জেএসসি পরীক্ষার্থী সংখ্য ছিল ১৯ লাখ, এসএসসি ১৪ লাখ।সরকারের সামান্য পদক্ষেপেই ৩ মাসের মধ্যে বর্তমান প্রবাসীদের সাথে আরও ১৫ মিলিয়ন অনলাইন রেমিটেন্স উপার্জনকারী যোগ হতে পারে।এই প্রবাসীদের সাথে এরাও কাজ করবে, রেমিটেন্স আনবে।তবে এরা কাজ করবে আরও পাওয়ারফুল পথে।এরা যে শুধু দেশে বসেই কাজ করবে তা নয়, এরা ঘরে বসেই ভিসা ফ্রী বিশ্বের যে কোন দেশেই কাজ করবে - কাজ শেষে প্রতি ঘন্টায় তার মোবাইলের ফ্লেক্সিব্যাংকে ১ ডলার ভেঙ্গে ৭৬ টাকা জমা পরবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলে পেপল ভ্যারিফাই করলে দেশের সব টাকা পাচার হয়ে যাবে।ডক্টর আতিয়ার রহমান যখন বিবি গভর্নর হইলো তখন মনে করছিলাম এই গরীবের পোলা জনগণের কষ্ট বুজবো।কিন্তু যেদিন দেখলাম দেশের ৮ কোটি লোকের কাছে পৌছে যাওয়া মোবাইলের ফ্লেক্সীলোড ভাংঙানোর সহজ মোবাইল ব্যাংক না দিয়া ট্রাস্টব্যাংক, ডাচবাংলাব্যাংককে মোবাইল ব্যাংকিং লাইসেন্স দেয় সেদিনই বুঝছি এও একই চক্রের সদস্য।তানা হলে ২০০৯ সালের মধ্যে দেশে পেপল ভ্যারিফাই করতো।

তাই বলিঃ বাংলার পুলাপানরে বলছিঃ আউটসোসিংয়ের কাজ করতে হবে না, আপনি লোম ফালানোর কাজ করেন, উন্নতি করবেন।

তা যে ইন্টারনেট পাইলেন, তা কি পাইলেন তা একটু জানতে ইচ্ছে করে না ?
ছবিতে ফেসবুকের ডান মেনুতে থাকা একটি বিজ্ঞাপনের স্ক্রীনশট।সেই ২০০৬ সালের মে মাসে থেকে পেপলের জন্য অপেক্ষা করছি।এটি ছাড়া ইন্টারনেট অর্থহীন - তামাশা মাত্র।সেদিন থেকে কারন, তখনই মাত্র বাংলাদেশ প্রথমবার সাবমেরিন ক্যবলে যুক্ত হয়েছিল আর আমার মত সাধারন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হওয়ার সৌভাগ্য সৃষ্টি হয়েছিল।এর আগে যে ইন্টারনেট ছিল তা হাতে গোনা কয়েক হাজার সুবিধাভোগী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য।সেদিন বাধ্য হয়েই দেশটি সাবমেরিন ক্যবলে যুক্ত হয়েছিল কারন সাধারন জনগণ বিষয়টি জেনে গিয়েছিল বলে, আর অন্ধকারে রাখা সম্ভব ছিল না।

আজ ২০১২ সালে তার উপর ডিজিটাল বাংলাদেশে ঘোষনার পরও আমাদের অবস্থা উপলব্ধী করতে কিছু তথ্য দেখুন- ৭০ এর দশকের শুরুতেও এশিয়ার দরিদ্রতম দেশের তালিকায় থাকা দক্ষিন কোরিয়া ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়েছিল ১৯৮২ সালে।পিসি ব্যাংকিং চালু করেছিল ১৯৮৭ সালে।ইকমার্স ওপেন করেছিল ১৯৯৬ সালে।দেশটিতে স্বশরীরে মার্কেটে না গিয়ে অনলাইন স্টক ট্রেডিং শুরু হয় ১৯৯৯ সালে।দেশটিতে ২০০১ সালে স্বশরীরে ব্যাংকে না গিয়ে ইন্টারনেটে ফান্ড ট্রান্সফার সহ যেকোন পেমেন্ট সুবিধা ব্যবহারকারী প্রায় সংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি, অর্থাৎ ৪৫% জনগণ।২০০৩ সালে দেশটির মোবাইল ব্যাংকিং ট্রানজেক্শন ছিল ২০০ ট্রিলিয়ন ওন এর উপর ও ইকমার্স ছিল ৩০০ ট্রিলিয়ন ওন এর উপর।অধিকন্তু, ভাবুন তো এই পরিমান লেনদেনে কি পরিমান ফিজিক্যাল বা মলিকিউল মোবিলাইজেশন লাগতো, যা বিট মোবিলাইজেশনে হয়ে গেল।অথচ সড়কে ট্রাফিক বেড়ে গেছে বলেন!!!

ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে কি শুধু আধুনা তথ্যপ্রযুক্তির বাংলাদেশ, তাই যদি হবে তাহলে ওরা ডিজিটাল আমেরিকা, ডিজিটাল দক্ষিন কোরিয়া, ডিজিটাল ভিয়েতনাম, ডিজিটাল মিশর, ডিজিটাল নেপাল বলে না, আমরা কেন ডিজিটাল বাংলাদেশ বললাম ? বিশ্বের কোন দেশই তো তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থায় নেই।ব্রডব্যান্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ও মৌলিক সিদ্ধান্তগুলোও তো তারা ২০০৮ এর মধ্যে নিয়ে নিয়েছে!এই তালিকায় সুদান সোমালিয়াও তো এই মুহুর্তেও ডিজিটাল বাংলাদেশের চেয়ে ৫ বছর এগিয়ে।তাহলে কেন ডিজিটাল সুদান, ডিজিটাল সোমালিয়া বললো না ? অথচ আমরা মুখে কয়েক ধাপ এগিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেও আছি কই ? হাগল নি !

এদিকে জ্ঞানের অভাবে চির অজ্ঞান বাঙালী জাতির এক মূর্খ নেত্রী আজ বিশাল এক মহা মূর্খের সমাবেশে বললেন, আমরা ঘরে ঘরে চাকুরী দেব! আজ তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়া কোন বিষয়ই না, এর টেকনিক আমাদের জানা আছে।কিন্তু এখন বলবো না - কি এমন কথা যা তিনি এখন বলবেন না, এমন কি দেশে যে আজ দুই কোটি বেকার আছে, তার ঐ টেকনিক দিয়ে এখন এই বেকার সমস্যা সমাধান করা যাবে তবু এখন বলবেন না।কি সেই গোপন কথা ? কি সেই আলাউদ্দিনের প্রদীপ ... ? কি সেই টেকনিক, যা ম্যাডাম জানে, এখন বলবে না ?

সূত্রঃ Digital Bangladesh Warriors
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৪
২৯টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×