somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রজন্ম জানতে চায় (শেষ পর্ব)

০৩ রা মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রজন্ম জানতে চায় (১ম পর্ব)
প্রজন্ম জানতে চায় (২য় পর্ব)

পি টি আই এলাকার যুদ্ধ:
নোয়াখালী জেলার শেষ যুদ্ধ। যুদ্ধ শুরু হয় ৬ ডিসেম্বর’ ৭১। রাত্রি ৩.৩০ মি:
থেকে ৭ ডিসেম্বর’৭১ এর বিকেল ৩.১০ মি: পর্যন্ত। যুদ্ধ শুরুর পূর্বে ৪ ও ৫ ডিসেম্বর পাকসেনা ও মিলিশিয়ারা আস্তে আস্তে স্থান ত্যাগ করে কুমিল্লা
অভিমুখে রওয়ানা হয়ে যায়। এ ব্যাপারটি রাজাকাররাও বুঝতে পারে নি।
এদিকে নোয়াখালী জেলা বি.এল.এফ কমান্ডার (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে) জনাব মাহমুদুর রহমান বেলায়েত ৫ ডিসেম্বর বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার প্রত্যেকটি থানা কমান্ডারদের (বি.এল.এফ/এফএফ/এমএফ/বিডি এফ) কে নির্দেশ দেন প্রত্যেক থানা সদর দপ্তর আক্রমণ করে পুরোপুরি শত্রুমুক্ত করতে। যে কথা সেই কাজ। সকল থানায় যুদ্ধের সাজ সাজ রব পড়ে যায়। জেলা সদরের পি.টি.আই দখলের দায়িত্ব পড়ে সদরের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের উপর। পি.টি.আই আক্রমণ করতে এসে মুক্তিযোদ্ধারা শহরের প্রবেশ পথে (১) নাহার বিল্ডিং রাজাকার ক্যাম্প (২) মাইজদী কোর্ট স্টেশান রাজাকার ক্যাম্প (৩) দত্তের হাট রাজাকার ক্যাম্প গুড়িয়ে দেয়। ক্যাম্প আক্রমণ করতে সদর পশ্চিম অঞ্চল থেকে সি জোনের কমান্ডার আদমজীর শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ উল্যা ও আদমজী চটকলের বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী সফি নেতা নেতৃত্ব দেন। এই যুদ্ধে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনী/ আনসার/ মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাসহ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সি জোনের পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। তারা জামে মসজিদের পশ্চিমে অবস্থিত রেনুমিয়া কন্টাক্টরের বাড়ী থেকে বর্তমান নতুন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। উত্তর দক্ষিণ ও পূর্ব অঞ্চল থেকে সকল মুক্তিযোদ্ধা শহরে উঠে বাকী তিন দিক ঘিরে ফেলে। ৬ ডিসেম্বর রাত্রি ৩টা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের জবাব দেয় ৩০৩ রাইফেল থেকে।

এদিকে ফেনীতে ২নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল জাফর ইমাম মাইজদী পি.টি.আই যুদ্ধের খবর পেয়ে তার একটি সেকশন নিয়ে দুপুরে এসে মাইজদী অবস্থান নেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সকল অবস্থান ও শত্রুর অবস্থান জেনে নিয়ে শত্রুর আস্তানার ২টি ২ ইঞ্চি মটর সেল নিক্ষেপ করেন। সঙ্গে সঙ্গে রাজাকাররা ভয় পেয়ে আত্মসমর্পণ করে। এরপর ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলা পুরোপুরি শত্রুমুক্ত হয়ে যায়। এই যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। তাঁরা হচ্ছেন- (১) আমিনুল হক, গ্রাম-দামাদর, ২ নং দাদপুর ইউনিয়ন, সদর। তার গলায় গুলি লাগলে তিনি কন্ঠস্বর হারিয়ে ফেলেন। দেশ স্বাধীনের পর মরহুম আবদুল মালেক উকিল কল্যাণ ট্রাস্টের ভাতা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। (২) অন্যজন হচ্ছে- আদমজীর শ্রমিক গোলাম মোস্তফা। গ্রাম-রামকৃষ্ণপুর, ৩ নং নোয়ান্নই, সদর। তার পেটে গুলি লাগে। চিকিতসার পর সে ভালো হয়। তিনি জীবিত। তিনিও কল্যাণ ট্রাস্টের ভাতা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।

নোয়াখালী পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাবে নানা জায়গায় অবস্থান নেয়। বৃহৎ আকারে ছিলো (১) নোয়াখালী জিলা স্কুল। (২) হরিনারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় (৩) আহম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাপুর।

প্রজন্মের জন্য আরো লেখার ইচ্ছা রইল।


► লেখক: সাইফুল আলম জাহাঙ্গীর
সাবেক ইউনিট কমান্ডার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নোয়াখালী।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত স্মারক স্বাধীনতা ২০০৩ থেকে নেয়া হয়েছে। প্রকাশকালঃ মার্চ ২০০৩।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৫০
২২টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×