somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় ভুল করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে... (পর্ব-৩)

১০ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
নয়ন-৩



অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণের পত্র বুক পকেটে নিয়ে নিয়ে ঘুরছে নয়ন। নিরিবিলি একটা জায়গার দরকার, কেউ যেনো না দেখে। প্রথম প্রেমের প্রথম চিঠি। বুকে একটা দুরুদুরু ভাব, ভয়ের কিছু নেই, তবুও কেমন লজ্জা লাগছে নয়নের। তাই আগে থেকেই সাবধান থাকার চেষ্টা। তখন সবেমাত্র দশটা বাজে। ক্লাস শুরু হতে এখনো আধাঘন্টা। তা ভেবেই সাহেব আলীদের বাড়ির দিকে হাটছে নয়ন। বাড়িটি স্কুলের সাইডেই, সবার অবাধ চলাফেরা সেই বাড়িতে। সাহবে আলীর বাবা ফকির মিঞা সে স্কুলেরই পাহারাদারের চাকরি করে। খুব ভালো মানুষ। নয়নের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক। নয়নকে খুব ভালোও বাসে হয়তো। এই ভালোবাসা স্কুলে নয়নে উম্মুক্ত চলাফেরা আর তারচেয়েও বড় কথা নয়ের মা তার বাড়ির পঞ্চাশ গজ দূরেই ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর ভিজিটর (মহিলা ডাক্তার)। সেই সুবাদে নয়নকে সবাই একটু বেশিই আদরে দেখে। হাসপাতাল কোয়ার্টারেও থেকেছে নয়ন তার মার সাথে ছোট সময়। তখন থেকেই নয়নকে ওরা ভালোবাসে। যাহোক, মিনতির চিঠি পড়ার উপযুক্ত জায়গা সাহেব আলীদের ইন্দিরা পাড় ভেবে সে দিকেই যাচ্ছে। কারণ, এই সময় কেউ সে বাড়িতে যাবে না।

নয়ন সেই বাড়িতে ঢুকে সোজা কুয়াঁর কাছে চলে গেল। কুয়াঁর চারপাশ নানা ধরণের গাছগাছড়ায় ভরা। পিছনের ছাইট খুবই ঘন জঙ্গল। কুয়াঁর সঙ্গে দুটি জবা ফুলের গাছ। খুব সুন্দর সুন্দর লাল লাল জবা ফুল ফোটে আছে গাছে। দারুণ একটা জায়গা ভালো লাগার মতো। কুয়াঁর পাশে একটা গাছ হেলে প্রায় মাটির সাথে মিশে যাওয়া অবস্থা। গত ঝড়ে মনে হয়ে হয় শেকড় উপড়ে পড়েছিল, সেটি আর সরানো হয়নি। সেই গাছের উপর বসেই নয়ন ধীরেধীরে বুক পকেট থেকে মিনতির প্রথম প্রেমপত্র বের করে পড়ছে। চোখে মুখে মুগ্ধতার ছাপ স্পষ্টত। মনের খুশিতে হাসি হাসি মুখে চিঠি পড়ছে নয়ন। আহ! সে কি আনন্দের মুহূর্ত! মনে হচ্ছে কত সহস্র বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণের তৃপ্ততা! খুব সুন্দর করে মেয়েলি হাতের লেখা পড়ছে আর ভাবছে মাঝেমধ্যে। একটু ভাবতেই হচ্ছে কারণ, অনেক বানানই ভুল, সেগুলো মিলাতেই ভাবতে হচ্ছে। তাড়াতাড়ি লিখেছে মা বোনের চোখ ফাকি দিয়ে, তাই বানানের ভুল গুলি মিনতির চোখে পড়েনি হয় তো। যাক, সেগুলো নয়ন ঠিকই বোঝতে পারছে। প্রেমিক যারা তারা প্রেমিকার অনেক কিছুই বোঝতে পারে ঠারেঠোরে। নয়নও বোঝে নিচ্ছে।

নয়নের আনন্দ ভাবনার মাঝে কখন যে সাহেব আলীর মা এসে পাশে দাঁড়িয়ে আছে নয়ন টেরই পায়নি। ধ্যান ভাঙে যখন বলছে, 'ওরে গোলাম, স্কুলে এসে এগুলো করা হচ্ছে?' হঠাত নয়ন এমন কথা শুনে হকচকিয়ে বলছে, না না তেমন কিছুনা, এই তো এখনই আসলাম, চলে যাবো। তাড়াতাড়ি যা, এই বলে সাহেব আলীর মা কোঁয়া থেকে পানি তুলতে চেষ্টা করছে। এতক্ষণে নয়ন বোঝতে পারছে এখানে কেন এসেছে। যাচ্ছি বলে নয়ন জবা গাছের হেলে থাকা ডাল থেকে দুটি জবা ফুল ছিড়ে হাতে নিয়ে আবার স্কুলের দিকে রওয়ানা দিল। বাড়ি থেকে বের হতেই দেখে অ্যাসেম্বলি লাইন দাঁড়িয়ে গেছে। তাই একটু অপেক্ষা করছে সেই বাড়িতেই। অ্যাসেম্বলি শেষ হলেই আসবে ভেবে। কিন্তু, মনে কেমন যেনো একটা চিন্তা। অ্যাসেম্বলিতে তো তাকে খুঁজবে। কারণ, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার তিন জনের মধ্যে একজন তো নয়নই। নয়ন একটু গানবাজনা প্রিয়, গায়ও বেশ চমৎকার, কণ্ঠও মোটামুটি ভালোই। তাই প্রতিদিন অ্যাসেম্বলিতে নয়নের উপস্থিত থাকতেই হয়। না হলে সবাই খোঁজে, কারণ, কেউ সামনে গিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে চায় না। যা হোক, আজ নয়ন অ্যাসেম্বলিতো জোগ দিবে না ভাবছে। কারণ, হাতের জবা ফুল দুটি তার ক্লাস পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সখ হয়েছে। অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়ালে ফুল পকেটে রাখতে হবে, নষ্ট হয়ে যাবে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাসেম্বলি শেষ হলো, সবাই যার যার ক্লাসরুমে চলে গেল। নয়নও হাতে দুটি জবা নিয়ে ক্লাসে ঢুকছে। আমীর সাব মনে হয় কিছুটা বোঝেই ফেলেছে। তার বোঝার খুব একটা কারণও আছে হয় তো। যাক সে কারণ আর বলছি না। সেটা গোপনই থাকুক, যেহেতু তখনও প্রকাশ হয়নি আমার কাছে।
কি ব্যাপার নয়ন সাব কোথায় ছিলেন অ্যাসেম্বলির সময়? স্যার আপনাকে খুঁজেছে। আমীর এর কথা শেষ না হতেই আক্রাম বলে ওঠলো কি ব্যাপার নয়ন, ( মুখে মুচকি হাসি নিয়ে) অ্যাসেম্বলিতে গড়হাজির, হাতে ফুল, কই ছিলা তুমি? নয়ন মুচকি হেসে জবাব দিল, আরে না তেমন কিছুই না, ফকির ভাইয়ের বাড়ির দিকে গেছিলাম। হাতের কাছে ফুল দেখে লোভ সামলাতে পরলাম না, তাই দুটো নিয়েই ফিরলাম। দেখি অ্যাসেম্বলি দাঁড়িয়ে গেছে তাই আর আসিনি।
সবাই একটু মুচকি হেসে নিল, মোটো আকরাম বলেই ফেললো, মনে বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে তাই....
নয়ন মুখে কিছু না বলে একটু মুচকি হেসে ব্র্যাঞ্চে বসে পড়লো। ফুল দুটো বইয়ের পাশেই রাখা।

মেয়েরা ক্লাসে ঢুকছে, স্যার সম্ভবত তাদের ক্লাসে যেতে বলে তিনি পাশের ক্লাশের স্যারের সাথে আলাপ করছে। খালেদার দিকে প্রথমেই তাকালো নয়ন, চোখ দিয়েই বুঝিয়ে দিল যে হ্যা, মিনতি চিঠি দিয়েছে। মিনতি চুপচাপ নিচের দিকে চেয়ে আছে। মনে হয় একটু লজ্জাই পাচ্ছে। লজ্জায় সাদা মুখটা যেন জ্বাল করা দুধের মতো লাল দেখাচ্ছে। স্যার না আসায় নয়ন খালেদার দিকে দুটো ফুলই বাড়িয়ে দিয়ে বলছে, ধরো, তোমাদের শুভেচ্ছা দিলাম জবা ফুলের। খালেদা মুচকি হেসে ফুল দুটি নিয়ে একটা মিনতির সামনে রেখে দিল। মিরা আর ইয়াসমিন বলে ওঠলো মাত্র দুটি! আমরা কি দোষ করলাম? ভাগ্যিস সেদিন রেখা আসেনি, না হলে আরও কিছু শুনতে হতো, রেখা মেয়েটা খুবই পটু কথাবার্তায়। হ্যা হ্যা, সবাইকে দেবো একদিন। সবাইকে শুভেচ্ছা রইল আজ, ফুল আরেকদিন দিবো পাওনা রইলা। ফুল লোকানো দেখেই দরজার দিকে তাকাইলো নয়ন। স্যার ঢুকে পড়েছে ক্লাসে। সেদিনের মতো আনন্দেই পার হলো স্কুল সময়।
স্কুল ছুটি হয়ে গেল। নয়ন বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছে। চোখ দুটো যে তার মিনতিকেই খুঁজছে। খালেদা পাশা দিয়ে যাওয়ার সময় চুপিচাপি বলে গেল, আগামীকাল যেন মিস না হয়, মনে রেখো। নয়নও স্কুল থেকে সবার সাথেই বেরিয়ে পড়লো।

প্রথম প্রেমের প্রথম স্বাদ প্রথম চিঠি। কিযে আনন্দের তা যারা প্রথম প্রথম প্রেমে পড়ে তারাই বোঝে। নয়ন আজ বেজাই খুশি। অন্যান্য দিনের মতো খুশিতে আজ কোন গান টান গাইছে না। কি যেন ভাবছে, খুব গম্ভীর একটা ভাব, চোখে মুখে কোন একটা চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হয়তো। তাই তো মিন্টু দেখা হতেই বললো, কিরে কি হয়েছে, খুব চিন্তা দেখছি?
মিন্টু ছেলেটা এরকমই, মুখ দেখেই বোঝে যায় সব। হুম, কিছু একটা তো হয়েছেরে।
কি হয়েছে সেটা বল, একটু শুনি। দেখি কিছু করতে পারি কিনা।
তুই আর কি করবি, যা করার তো আমাকেই করতে হবে।
হুম, তুইই তো করবি, আমিও না হয় একটু শুনি। মিনতি আপা চিঠি দেওয়ার কথা ছিল আজ, দিয়েছে ?
হুম, সেটাই তো ভাবছিরে মিন্টু....! প্রেমটা মনে হয় হয়েই গেল।
ভালোই তো হলো তাহলে, তোর তো এমনটাই চাওয়া ছিল।
হ্যা, তা ছিল। তবুও কেমন যেন আনন্দের মাঝেও আমার কি একটা দুশ্চিন্তা লাগছে। আমাকে মন থেকে ভালোবাসবে তো? আমার খুব আনন্দ যেমন হচ্ছে, তেমনি কেমন যেন একটা ভাবনায় গম্ভীরতা আসছে। কি হবে!
কিচ্ছু হবে না, সব ঠিক হয়ে যাবে দেখবি।
কথাটা এমনভাবে বললি যেন তুই আগে অনেকগুলো প্রেম করেছিলি।
প্রেম করা লাগবে কেন, কয়েক জনের প্রেম তো দেখেছি, তাতেই একটা ধারণা মাত্র।
হুম, বুঝছি, খুব শেয়ানা তুই, দেখেই বুঝে যাস সবকিছু। খুব পাকনা। হা হা হা।
এতে হাসার কি হইল।
হাসবো না ?
না, হাসবি না। কারণ, তোর চেয়ে প্রেম প্রেম খেলা আমি বেশি দেখেছি। এবার আসল কথা বল। মিনতি কি লেখছে চিঠিতে।
হুম, লেখছে তো অনেক কিছুই।
কই দেখি, আমাকে দেখা কি লেখছে।
না না, সেটা দেখাবো না কাওকে। এর পর থেকে দেখিস। এটা আমি আমার মানের ঘরে রেখেদিবো যতনে। কাউকে দেখাবো না। মনে মনে ভাবছে, আসলে চিঠির মধ্যে খুব বেশি ভুল। কোন কোন শব্দে শেষ অক্ষরই নাই। এমন চিঠি দেখাতে নয়নের এটু লজ্জা লাগছিল। তাই আর দেখাবেনা কাউকে এমনটাই চিন্তা ভাবনা।
ও ও আচ্ছা, তো মজ্নু সাব কন দেহি, কি কি লেখছে। একটু শুনা, শুনে ধন্য হই।
দুর বোকা, সেটা কি মুখে ওতো টা বলা যায়। তবে, সে নাকি আমাকে অনেক দিন থেকেই ভালোবাসে, বলতে চায়, কিন্তু বলতে পারেনি।
হুম, প্রথম প্রথম এমনই বলে।
কি ?
না, কিছুনা, হবে হয় তো। আচ্ছা, মিনতি আপা ক্লাস এইটে ভর্তি হয়েছে না?
হুম, ঠিক বলেছস। সেই প্রথম থেকেই নাকি আমাকে নজরে নজরে রেখেছে।
হুম, বোঝতে পারছি। এখন তুই কি লেখলি।
না, আমি এখনও লেখিনি। রাত্রে লেখবো। একটা ছবিও দিতে বলেছে।
ও, আচ্ছা রাত্রে লেখবি একা একা মনের ভাব মিশিয়ে। চেষ্টা কর, যেমনই হোক। তোর ছবি তোলা নেই?
না, আমার কোন ছবি তো বর্তমানে তোলা নেই। তবে হাফ সাদাকালো আছে একটা।
সেটাই দিবি সমস্যা কি। সে ছবি দিয়েছে?
হুম, একটা সাদাকালো হাফ ছবি দিয়েছে। এই বলে মিনতির ছবিটি মিন্টুর দিকে বাড়িয়ে দিল।
হুম, খুব সুন্দর দেখতে হয়েছে। আসলে সুন্দর মানুষ তো, ছবিও সুন্দর হয়েছে। ছবিটি দেখে আবার আমার হাতে দিয়ে বলছে, তুই থাক, সন্ধ্যে হয়ে যাবে, আমি এখন একটি দহিন পাড়া যাবো। রাত্রে কথা হবে। বলেই মিন্টু চলে গেল কাঠাল তলির দিকে।

আমি কিছুক্ষণ ওখানে বসেই থাকলাম। সন্ধ্যার ঠিক কিছুক্ষণ বাকি। সূর্য ঢুবেই গেছে। তবে আলো এখনো আছে। মেঘমুক্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে নয়ন মিনতির সাথে কথা বলছে। অনেক কথা, অনেক স্বপ্ন তার চোখে ভেসে ওঠছে। জানিনা কোনদিন সেই সব কথা বলতে পারবো কিনা, সেইসব স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা। নাকি স্বপ্নগুলো সব স্বপ্ন হয়েই মনের আকাশে ভেসে বেড়াবে। দেখতে দেখতে হাল্কা অন্ধকার নেমে এলো। এবার ওঠতেই হবে। ক্লাসের পড়া মুখস্থ করতে হবে। অংক করতে হবে। আবার মিনতির জন্য একটা চিঠিও লিখতে হবে। অনেক কাজ আজ নয়নের। তাই সেখান থেকে ওঠে বাড়ির দিকে হাটছে নয়ন।

বাড়ি দহলে আসতেই আল আমিনের সাথে দেখা। আল আমিন হয়তো পশ্চিম পাড়া তার বোনের বাড়িতে গেছিলো। ওতো সেদিকেই বেশি যায়। কিরে, কই থাইক্কা আইলি সন্ধ্যা সময়।
নয়নকে দেখে আল আমিন দাঁড়িয়েই ছিল। এই তো বিকেলে একটু বুবুদের বাড়িতে গেছিলাম। কি খবর তোর।
না, কোন খবর নেই, ভালই। এখন কিছু পড়া আছে, বিএসসি স্যারের একটা অংক আছে সেগুলো করতে হবে।
ও আচ্ছা, থাক তাইলে, বাড়ি যাই। আমারও আজ কিছু পড়ার চাপ আছে। এই বলে আল আমিন চলে গেল। নয়ন তার রুমে ঢুকে চেয়ারে বসে আছে, কুপি বাতি জ্বালিয়ে। গ্রামের বাড়ি। তখনও বিদ্যুৎ আসেনি গ্রামে। কুপি বাতি না হয় হারিকেন জ্বালিয়েই পড়তে হয়। আজ হারিকেন না জ্বালিয়ে কুপি বাতিই জ্বালালো নয়ন। হারিকেনের চিমনি একটু কালি হয়েছে। বিকেলে মুছা হয়নি। এখন আর মুছতে ইচ্ছে হলো না।
চেয়ারে বসে বসে ভাবছে কি করবে। আগে চিঠি লিখতে বসবে নাকি পড়া শেষ করবে। ভাবতে ভাবতে আগে পড়া নিয়েই বসে পড়লো নয়ন। পড়া আগে মুখস্থ করতে হবে, নয়তো ক্লাসে লজ্জা পেতে হবে। নতুন প্রিয়তমার সামনে লজ্জা পেতে রাজি না। খুব মনোযোগী হয়েই পড়ছে নয়ন। অল্প সময়েই কয়েকটি বইয়ের কয়েকটি প্রশ্ন মুখস্থ হয়ে গেল নয়নের। অংকটা বাকি। ভাবছে অংকটিও করেই খাইতে যাবে। তাই অংক বই বের করে অংক করতে বসলো। এমন সময় মা ওই ঘর থেকে ডাকছে, নয়ন... ভাত খেয়ে যা। নয়ন, অংক করতে করতেই জবাব দিল আসছি, আর একটু, অংকটা করেই আসছি। অংকটা শেষমেশ আর হলো না। প্রথমবার ভুল হওয়াতে সরল অংক গড়ল হয়ে গেছে। দুই তিনবার করেও যখন মিলছে না। কেমনে মিলবে, খাতার পাতায় অংকের বদলে মিনতির বিচরণ। বারবার মিনতিকেই দেখছে সে। না আর মিলবে না মনে হচ্ছে, তখন স্কুলে গিয়ে আমীর আলীর খাতা দেখে তুলে নেওয়ার কথা ভেবেই ওঠে ভাত খেতে চলে গেল।

রাত প্রায় এগারোটা ছোঁয় ছোঁয়। গ্রামের নীরব স্তব্ধ রাত। বেশিরভাগ বাড়ির মানুষই কাঁচা ঘুমে মত্ত এখন। এই সময় নয়নের বাড়ির সামনে পায়ে হাটা পথের ধারে আড্ডায় থাকার কথা বন্ধুদের সাথে। প্রতিদিনই তো তা'ই করে নয়ন। রাত দশটা সেড়ে দশটা থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলে তাদের গান আর রাত্রি পাহারা। বাড়িতে থাকলে এমনটিই হয়ে থাকে প্রতিদিন। আজ ব্যতিক্রম হয়ে গেলো। নয়ন কুপির মিষ্টি আলোয় টেবিলের পাশে চেয়ারে বসে কলম হাতে খাতার পাতা শেষ করে চলেছে, একটা চিঠি লিখতে পারছেনা। লিখতে পারছেনা বলতে, হচ্ছে না মনের মতো। বারবার লেখছে আর ছিড়ছে। একসময় হয়েছে মনের মতো কোনোরকম। ভাবছে থাকুক আজ এ পর্যন্তই। পরের চিঠিতে লেখবো। চিঠিটা লিখে সুন্দর করে ভাঁজ করে বইয়ের মাঝে রেখে বাহিরে চলে এলো নয়ন।

বাহিরে ঝিরঝির ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। আকাশটাও পরিষ্কার। অর্ধচন্দ্রটি মাথার উপর থেকে সোনালী আলো ছড়াচ্ছে। সঙ্গে তারাগুলি সৌন্দর্যময় করে তুলেছে গ্রামের নিঝুম রাতের আকাশটিকে। নয়ন ধীরেধীরে সেই জায়গায় হেটে যাচ্ছে যেখানে রোজ মিন্টু আল-আমিন আর আছাদ মাঝেমধ্যে মন্জুদের সাথে অনেকক্ষণ সময় কাটায় গানে গানে। নয়নের আজ গলা ছেড়ে গান গাইতে মন চাইছে। সেখানে এসে দেখে দুই জন বসে আছে। আল-আমিন আর আছাদ চলে গেছে। মিন্টু আর মন্জুকে পেয়ে ভালই লাগলো। কিরে, তোরা আছস নাকি। হেরা দুই জন চলে গেছে।
হুম, কখন গেছে তারা। মনে হয়ে ঘুমিয়েও পড়েছে এতক্ষণে। তুই আজ এত দেরি করলি যে। মন্জু বলছিল আমাকে দেখেই। আমি বললাম একটু কাজ ছিল, তাই দেরি হয়ে গেল। মিন্টু বলছে, বোঝতে পারছি তোর দেরির কারণ, যেতে চেয়েছিলাম তোর ঘরে, কিন্তু পরে আর না গিয়ে এখানে এসে বসে পড়লাম। ভাবছি তুই আসবি, তাই এখনো থেকেই গেলাম।
ভালো করেছিস। আমিও আসতেই চেয়েছিলাম তাড়াতাড়িই কিন্তু দেরি হয়ে গেল, একটা চিঠি লিখতেই।
হুম বোঝেছি। মিন্টু বললো।
আজ তাইলে একটা গান হয়ে যাক। মন্জু খুব উচ্ছসিত হয়েই বললো। মন্জুও গান গাইতে শিখে গেছে আমার সাথে থাকতে থাকতে। আমি বললাম, তুই শুরুকরে দে, আমি ধরবো সাথে।
মন্জু আর মিন্টু দুজনেই টান দিল একটা ছায়াছবির গান। আমারও খুবই প্রিয় গানটি। আমিও তাদের সাথে সুর ধরলাম।
কি যাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা,
থাকিতে পারিনা ঘরেতে প্রাণ সজনী
থাকিতে পারিনা ঘরেতে......
গান শেষ হতেই- বাহ! বাহ! চমৎকার গানটিই ধরছস রে মন্জু। আমারও এখন যে তেমনই অবস্থা। আরও কয়েকটা গান গেয়ে আমি বললাম আজ একটু তাড়াতাড়ি ঘুমোতে হবে। তাই এখন চল ওঠি। মিন্টু বলছে তাড়াতাড়ি করতে হবে না, এমনিতেই একটা পার হয়ে গেছে।
হুম, আমিই তো এসেছি প্রায় বারোটার দিকে। এখন একটা পার হতেই পারে। চল ওঠি বলে আমি ওঠে বাড়ির দিকে হাটছি। আমাদের বাড়ির সামনে থেকে মন্জু চলে গেল তাদেরে বাড়ির দিকে, মিন্টু আমাদের বাড়ি পার হয়ে যাবে। মিন্টুকে বললাম কাল একটু সকাল সকাল স্কুলে যেতে হবে, বলেই বাড়ির ভিতর ঢুকে গেলাম। রুমে ঢুকে মিনতির ছবিটা দেখলাম কুপি জ্বালিয়ে বেশকিছুক্ষণ। মনে মনে অনেক স্বপ্ন কথাই এঁকে ফেললাম আগামীকালের কথা মনে করে। বাতি নিভিয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যাই হয়তো....।

সকালে ন'টার মধ্যে গোসল করে খাওয়া দাওয়া সেরে বই নিয়ে সাড়ে ন'টার মধ্যেই স্কুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। দশ মিনিটেই স্কুলে পৌঁছে বইগুলি রেখে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। বারবার হাতের ঘরিটি দেখছি। মনে মনে কখন আসবে মিনতি। দশটার একটু আগেই মিনতিকে দেখে আমার অস্থিরতা কিছুটা কমলো। মিনতি সবসময়ই সাদামাঠা সাজগোজ করে স্কুলে আসতো, আজ একটু অন্যরকম চকচকানো মনে হচ্ছে। খুব সুন্দর লাগছে। আমি অপলক চেয়ে আছি তার দিকে। তার হাটার তালে তালে আমার মন নাচতে চাইছে। আমি মুগ্ধ হয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছি। মিনতি কাছাকাছি এসে পড়েছে। কমনরুমে বই রেখে আমার ক্লাসে এসে হাজির। বস মিনতি, আজ একটু সময়।
না না, বসা যাবেনা, তুমি আমার চিঠি দাও।
তোমার চিঠি মানে! তোমার চিঠি ফেরত নিবা?
আরে না বোকারাম, আমাকে দিতে যে চিঠি এনেছো সেটা দাও।
ও ও তাই বলো, আমি তো আরও ভাবছিলাম তোমারটাই ফেরত চাইছো।
হুম, তুমি তো ভাববাই। দাও তো এখন, দেরি করো না।
এত তাড়াতাড়ি কেন কর বলো তো? আমার সাথে কি একটুও থাকতে মন চায় না তোমার। আমি একটু মন খারাপ করার মতোই বললাম। মিনতি বারবার দূর পথের দিকে তাকাচ্ছে। আমি একটু রাগ হয়েই বললাম দমকের সুরে - কি দেখছো উঁকি দিয়ে, এত ভয় কিসের তোমার? আমার রাগ বোঝতে পেরে মিনতি একটু দমে যাওয়ার মতো স্থির হয়ে নিচু স্বরে বলছে-
আরে না, ভয় না তেমন, তাছাড়া আমি আসার সময় দেখে আসছি আমাদের গ্রামের আরও ছাত্রিরা আসছে স্কুলে। আমি তাদের ছাড়িয়ে একটু তাড়াতাড়ি এসেছি। তারা এসে গেলে সব জেনে যেতে পারে।
জানলে কি হবে?
কি হবে তুমি কি বোঝবা। একটু গম্ভীর হয়ে কথাটা বলে মিনতি চুপ হয়ে আছে। মিনতির এমন চুপ হয়ে যাওয়া গম্ভীর মুখ দেখে নয়নের বুকের ভেতরটা কেমন যেনো মুচড়ে ওঠছে। নয়নেরও কষ্ট অনুভব হচ্ছে। নয়ন মিনতির দিকে চেয়ে আছে অপলক। চোখ দিয়ে যেনো অশ্রু এখনই গড়িয়ে পড়বে। মিনতি তা দেখেই মুচকি হাসি দিয়ে-
দেখো, তোমার এগুলো ভাবতে হবে না। আমার আম্মাকে দারুণ ভয় পাই আমি। গ্রামের অন্য কেউ দেখলে যদি আম্মার কানে কিছু জানায় তো আর নিস্তার নেই আমার। নয়ন মিনতির মুখের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ শ্রোতার মতো শুনে যাচ্ছে। মিনতি হঠাৎ দমকের সুরেই বলছে- কই, দেও, ছবিও বের করো।
নয়নের যেনো ঘোর কেটে গেল, ও হ্যা, আমার কোন ছবি নাই বর্তমানে পরে দিতে হবে। চিঠিটি বের করে মিনতির হাতে দিলাম।
ছবি পরে মানে, কোন ছবিই নেই! চিঠি নিতে নিতে মিনতি অবাক হয়েই বললো।
না, মানে, হাফ সাদাকালো আছে।
সেটাই নিয়ে আসলানা কেন? মিনতির মুখটা ভার মনে হলো।
আচ্ছা কাল নিয়ে আসবো। আর মুখ ভার করতে হবে না। পরে একদিন আরও ছবি দেবো এনে। এবার একটু হাসো।
মিনতি এবার হাসি মুখে তার বুকের ভেতর থেকে আরেকটা চিঠি বের করে আমাকে দিতে দিতে বলছে-
গতকাল সবকথা লিখতে পারিনি। আজ মোটামুটি লেখেছি। এটা পড়ে কালকেই উত্তর নিয়ে আসবা, ভুল যেন না হয়।
নয়নের মনটা অজানা সুখে ভরে উঠলো নতুন চিঠি পেয়ে। চিঠি পকেটে রেখে, তোমাকে খুব মনে পড়ে মিনতি। আমারও... বলে মুচকি হেসে বেরিয়ে পড়লো কমনরুমের দিকে হাটছে। নয়ন মুগ্ধ নয়নের মিনতির হেটে যাওয়া দেখছে পিছন থেকে।

এভাবেই চলতে থাকলো প্রায় রোজই একটা করে নতুন চিঠি। বড় জোর একদিন পার হতেই আবারও নতুন চিঠি। খুব জমে ওঠলো দুজনের চিঠি আদানপ্রদান। দিন পার হচ্ছে, চিঠির পর চিঠি জমছে। মনের কথাগুলো সব কাগজের গায়ে চাপিয়ে জানানো হচ্ছে। প্রতিদিনের স্বপ্ন অাশা মনের না বলা কথাগুলো এভাবেই বলে চলেছে দিনের পর দিন। সামনাসামনি কিছুই বলার সুযোগ নেই, সুযোগ থাকলেও হয় না বলা। চিঠির পাতায় বলেই শেষ করা হচ্ছে মনের যতো জমানো কথা। ভালোই হাসিখুশি চলছে তাদের স্কুল জীবন। কোনো চিন্তাভাবনা নেই যেনো আর..... একদিন না দেখলে চলবে না যেনো কারোরই। প্রতিদিন স্কুলে আসতেই হবে, দেখতেই হবে প্রিয় মুখটি। চলছিলও তাই......

হঠাৎ বেশ কয়েকদিন স্কুলে আসছে না মিনতি। নয়নের মুখে এখন আর হাসি নেই সারাক্ষণ এক বেদনার প্রতিচ্ছবি। কোন কাজে মন নেই। পড়া লেখাও হচ্ছে না তেমন। মিনতি কোথায়, কেমন আছে সেই চিন্তাই মনে সারাক্ষণ। ভালো মন্দ কত অজানা ভাবনায় ডুবে আছে নয়ন। যে নয়ন সারাক্ষণ মুখে গান গাইতো গুনগুন করে, সেই নয়ন এখন চুপচাপ বসে থাকে শুধু। কারো সাথে কথা নেই, মুখে গান নেই, কেমন একটা বিষণ্ণতা ছেয়ে আছে তাকে। সঙ্গী সাথী ক্লাসমেট, বন্ধু সবার মনে একটাই ভাবনা কি হলো নয়নের। কেন নয়ন আগের মতো উচ্ছল নয়, চঞ্চলতা হারিয়ে চুপচাপ। ক্লাসে আগের মতো তেমন চঞ্চল দেখা যায়না নয়নকে। খালেদার নজরে পড়তে দেরি হলো না নয়নের এমন অবস্থা। কোনোকোনো বান্ধবীর খোঁচা মারা কথা কোন কিছুই আর নয়নকে সরব করে তুলতে পারছে। খালেদা একসময় সেই টিউবয়েল পারে নয়নকে পেয়েই দাঁড়াতে বলছে, দাঁড়াও নয়ন।
হ্যা বল,
তোমার মনটা খুব খারাপ যাচ্ছে কয়েকদিন। আমি বুঝেছি তোমার কষ্টগুলো। কিন্তু বিশ্বাস করো, আমিও জানিনা মিনতি কেন স্কুলে আসছে না। কিছু বলেও নি আমাকে।
হ্যা খালেদা, আমার চিন্তার কারণ তুমি ধরেছো। আমি কেমনে থাকি বলতে পারো! যাকে প্রতিদিন দেখি, তাকে আজ কয়েকদিন দেখতেই পারিনা। তারচেয়েও বড় কষ্টের জানিই না সে কোথায়! কি কারণে আসছে না স্কুলে।
হ্যা ঠিকই বলেছো তুমি। আমি দেখি আজ তাদের বাড়ির পাশের একজনকে মিনতি সম্পর্কে জানতে চাইবো। তুমি ভেঙে পড়ো না। তুমি একটু সরব থাকো আগের মতো।
নয়ন বেশ খেয়াল করেছে, খালেদা তাকে ভাইয়ের মতোই স্নেহ ভালোবাসা দেখায় সবসময়। অন্যান্য ক্লাসমেটের চেয়ে খালেদার আন্তরিকতাও বেশি নয়নের প্রতি। সম্পূর্ণ বিবেকবান একটা মেয়ে খালেদা। খালেদার এমন মায়া ভরা কথায় নয়নের চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে দিয়েছে দেখে তাড়াতাড়ি টিউবয়েল চেপে পানি দিয়ে মুখটা ধোঁয়ে নিল নয়ন। খালেদার চোখ এই সামান্য অশ্রুটুকুও এড়িয়ে যেতে পারেনি। খালেদা যাওয়ার সময় বলছে, নয়ন মনে সাহস রাখো, তার সাথে আগে আমার সব কথাই হয়েছে তোমার সম্পর্কে। মিনতি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে। তুমি শুধু এটুকুই মনে রেখো। এইটুকু বলে খালেদা চলে গেল। নয়ন গার কাত করে সম্মতি জানিয়ে খালেদাকে বিদায় জানিয়ে আবারও মুখটা ধোয়ে ক্লাসে চলে এলো।

আমীর আলী নয়নকে দেখে বোঝতে পেরে বলছে, নয়ন সাব আপনার চোখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে আপনি কাঁদছেন। আমি আপনাকে সেসব বলবো না। আমি বলতে চাইছি আপনি সবসময় আগের মতোই হাসিখুশি থাকুন। আপনার জিনিষ আপনারই থাকবে, যেখানেই তা থাকুক।
বুঝেছি অামীর সাব, তবুও কেন যেন মন মানতে চায় না। বারবার ঘুরেফিরে তার কথাই ভাবে। নয়ন একটু সহজ হতে চাইছে।

স্কুল ছুটি হলে প্রতিদিনকার মতো নয়ন বাড়ির দিকে হাটছে। মিন্টু দূর থেকে ঢাকছে দেখে দাঁড়ালো একটু। মিন্টু এসেই পিঠে হাত রেখে হাটছে আর বলছে- তোর কয়েকদিনের চিন্তাভাবনা আমাকে এড়িয়ে যেতে পারেনি। আমি বোঝে গেছি তুই কষ্টে আছস। তাই তোকে না জানিয়েই আমি একটা তদন্ত চালিয়েছিলাম তোকে খুশি করবো বলে।
কি তদন্ত ?
কি তদন্ত তা তুই বুঝছস। তবুও বলি, তোর মিনতির খবর।
মুহূর্তেই নয়নের মধ্যে অন্যরকম চঞ্চলতা ফিরে এলো যেনো। অতি উৎসাহি হয়ে মিন্টুকে বলছে- একটু বল না, শুনে একটু শান্তি পাবো। বল না, বল, মিনতি কই?
নয়নের মিনতি ভরা চোখের দিকে তাকিয়ে আর বনিতা করতে পারলো না মিন্টু। সোজাসুজি বলে দিল, মিনতি আপা তার নানি বাড়ি বেড়াতে গেছে আজ তিনদিন হল।
তুই কেমনে জানলি ?
কেমনে জেনেছি সেটা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে তোর জন্য একটা স্বস্তিকর খবর আনতে পারলাম কি না বল?
হ্যা, হ্যা, অবশ্যই স্বস্তিকর খবর দিছস দোস্ত। আজকে রাতের আড্ডা খরচ আমার পক্ষ থেকে। দুজন কথা বলতে বলতে বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে। বাড়ির সামনে এসে মিন্টুকে বললাম, তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে খেয়ে দেয়ে বেরিয়ে আসবি, বিস্তারিত শুনে পুরোপুরিভাবে চিন্তামুক্ত হতে চাই।
মিন্টু বললো না, এখন না। অনেক আলাপ আছে এই বিষয়ে। রাতে সেখানে বসে সব আলাপ হবে। আমি এখন একটু ক্ষেতে যাবো, কিছু কাজ করতে হবে। ভালো থাকিস। চিন্তার কারণ তেমন নাই.... বলে মিন্টু চলে গেল তার বাড়ির দিকে।
নয়ন তার বাড়িতে ঢুকে পড়লো। মনে একটা চিন্তা রয়েই গেল যেন মিন্টুর শেষ কথায়। চিন্তার কারণ তেমন নাই, তবে কি কোনো চিন্তা আছে ? আবার কেমন যেনো একটা ভাবনা রয়েই গেল মনে.....

বড় ভুল করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে... পর্ব-২

বড় ভুল করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে... প্রথম পর্ব



সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৭
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×