সামনে বাঙালি জাতির গৌরবময় দিন, মাঝে মাত্র একমাস। বাঙালিদের মাতৃভাষার স্বীকৃতি পাওয়ার ঐতিহাসিক গৌরবের দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের সেইদিনে বাংলার সূর্য সন্তানরা মাতৃভাষার স্বীকৃতি আদায় করার জন্য বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঙিন করেছিলেন। আমাদের মাতৃভাষা বাংলার জন্য নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে রেখে গেছেন বাংলার গৌরব, অাদায় করে নিয়েছিলেন মাতৃভাষার স্বীকৃতি।
বাংলার সেই বীর শহীদদের স্মরণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষী বাঙালি জাতির শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার প্রকাশ করতে গড়ে তুলেন পবিত্র শহীদ মিনার। বাংলাদেশে প্রতিটি জেলা উপজেলা থানা পাড়া গ্রাম মহল্লা স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলা হয় শহীদ-মিনার।বছরের একটা দিন মাতৃভাষা প্রেমী বাঙালি জাতি বাংলার অকুতোভয় ভাষা-শহীদদের স্মরণ করে থাকেন। শহীদী আত্মার মাগফিরাত কামনায় গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার জানান দিয়ে থাকেন।
কিন্তু! বর্তমান প্রজন্মান্তরে বাংলার বীর ভাষা শহীদদের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাবোধ, কতটা সম্মান ধারণীয় আছে তাতে সন্দেহের অনেক কারণ চোখে পড়ে। কেন জানি মনে হচ্ছে শহীদ মিনার ও ভাষা-শহীদদের প্রতি বাংলার মানুষের আর শ্রদ্ধা ভালোবাসা নেই, কেবল লোক দেখানো মঞ্চ কাঁপানো মুখের মিথ্যে বুলি আওড়ানো ছাড়া!!
এইতো কয়েকদিন আগে গত ২৯ তারিখ দেখলাম শিক্ষিত বড় লোকদের মিলন মেলা! এমপি মন্ত্রী সচিব ডিআইজি প্রভাষক শিক্ষক ছাত্রের সমাবেশ, আনন্দ মেলা। সেদিন দেখলাম আমাদের ভাষা শহীদদের প্রতি সেইসব ভদ্র শিক্ষিত লোকের সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ নেই! অথচ একেক জনের বক্তব্যে দেশমাতৃকার জয়গান!! ভাষা শহীদদের তৃপ্ত আত্মায় জাগ্রত শহীদমিনারে জুতা দিয়ে মাড়িয়ে সেলফি আর ছবি তোলার প্রতিযোগিতা, কে কত ছবি তুলতে পারে!! হায়রে শিক্ষিত! হায়রে বাঙালি জাতি! কেন এতটা অকৃতজ্ঞ তোরা....!!
ত্রিশ সেকেন্ডের একটা ভিডিও তুলেছিলাম রাগে দুঃখে, দেখাতে পারতেছি না এখানে কতটা অকৃতজ্ঞ হলে শহীদদের রক্তের উপর জুতাপায়ে মাড়াতে পারে। এরা কেমন শিক্ষা নিয়েছে, তারা কেমন শিক্ষা দিয়েছে!!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩১