প্রশ্ন সহজ হোক বা কঠিন, যে পারার সে পারবে। যে গোটা বইটা ভালো করে বুঝে পড়েছে, সে যেমন প্রশ্নই আসুক পারবে। আমরা যখন নটরডেমে পড়েছি, তখন আমরা বিজ্ঞানের প্রতিটা পত্রে প্রায় ৪-৫ লেখকের আলাদা আলাদা বই পড়েছি। ক্লাসে পড়ানোর সময়ও আমি বলেছি যে বই ভালো লাগবে পড়বে, যতগুলো লেখকের বই পড়তে পারো, পড়বে। তোমরা কেন প্রাইভেট পড়ানো 'স্যার'দের সাজেশন পড়ে কিংবা তাঁদের বেধে দেওয়া লেখকের বই পড়ে গিয়ে পরীক্ষায় সব প্রশ্ন কমন পাওয়ার আশা করো?
.
প্রশ্ন সহজ হলেও সেটা সবার জন্য সহজ, কঠিন হলে সবার জন্য কঠিন। তোমার একার জন্য কঠিন নয়। 'অষ্টম অধ্যায় থেকে কেন প্রশ্ন আসেনি' বলে যারা স্ট্যাটাস দিচ্ছো, তারা নিশ্চয়ই পরীক্ষার আগে প্রশ্ন খুঁজে বেরানো অথবা সারা বছর না পড়ে পরীক্ষার আগে শুধু 'স্যার'দের সাজেশন মুখস্ত করে পরীক্ষার হলে যাওয়া ক্যাটাগরির পরীক্ষার্থী। দোষটা তোমাদের নয়, দোষটা আমাদের শিক্ষক-অভিভাবকদেরও।
.
পরীক্ষার হলে কড়া গার্ড হয়েছে? গার্ড কড়া না সহজ, সেটা দেখার সময় তুমি পাবে কেন? তুমি তো পরীক্ষা দেবে। লিখতে লিখতে সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, আশপাশ দেখার সময় পেলে কোথায়? তুমি পড়োনি বলেই পারো না, পারো না বলেই আশেপাশে তাকিয়েছো। পড়োনি যেহেতু, সেহেতু ভালো রেজাল্ট আশা করা তোমার জন্য অন্যায় আবদার। তাই নয় কি?
.
এবার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে না। প্রশ্ন স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে বলেই বোদ্ধামহল মনে করেন। তোমরা ভালো করে বই পড়ে হলে যাও। দেখাদেখির চেষ্টা করবে না, তাতে তোমাদের নিজেদেরই ক্ষতি। বহিষ্কার হতে পারো, নাহলে যারটা দেখে লিখছো তারটা ভুলও হতে পারে। কাজেই, নিজে যা পারো তাই লেখো। গোটা বই পড়েও যদি তুমি মনে করো তোমার পরীক্ষা খারাপ হয়েছে, তবে সেটা বাকিদেরও খারাপ হয়েছে। কাজেই, তোমার ভাবনার কিছু নেই। বই না পড়ে শুধু শুধু এ প্লাস পেয়ে লাভ কি, যদি ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারো এবং যোগ্যতা দিয়ে ভালো চাকরি না পাও? সর্বোপরি যদি একজন আলোকিত ভালো মানুষ হতে না পারো?
.
মনে রাখবে, যারা শিক্ষা প্রশাসনের সাথে যুক্ত, যারা তোমাদের পড়ান, প্রশ্ন করেন এবং খাতা দেখেন, তারা কেউই তোমাদের ক্ষতি চান না। তোমরা শুধু তোমাদের কাজটুকু ঠিকভাবে করে যাও, পড়ো। সিলেবাসটা, বইটা পুরোটা বুঝে পড়ো। নিয়মিত ক্লাস করো। বাকিটা স্রষ্টার ওপর ছেড়ে দাও।
.
তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
.
দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী