১।
আমার কোন কবিতার দরকার নেই,
এই রাত ভর বৃষ্টি ফসলের চাহিদায় আছে
আছে মাটির ফাঁটা শরীরের আকাক্ষায়,
আমার কোন বৃষ্টি র দরকার নেই।
প্রাণের ছায়াপথ খুলে বসে থাকি
নিঝুম রাত এই নিস্তব্ধ আঁধার নক্ষত্রের প্রদীপ একটা একটা করে নিভিয়ে এসো একদিন চোখের দুয়ারে
আমার কোন চাঁদের দরকার নেই।
২।
প্রয়োজনে লাগবে বলে যা তুলে রাখি
সেগুলো কখনোই কাজে লাগে না।
লাগলে নতুন করে কিনে আনি। খোঁজা হয় না।
খুঁজলেও পাওয়া যায় না।
তারপর একদিন সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় বস্তুর জঞ্জাল দেখে আঁত্কে উঠে
বিরক্ত হয়ে ফেলে দিই তিন তলার ছাদ থেকে।
প্রয়োজন খুব সহজেই অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়!
৩।
জেনেগেছি সব গোপন কৌশল
শিখেগেছি সব মন্ত্র
অথচ সমস্ত দরজা এখন হাট করে খোলা
একটিও দরজা অবশিষ্ট নেই আমি মন্ত্রবলে খুলতে পারি
ভুলেই গিয়েছিলাম এটা পুরোপুরি!
৪।
দুঃখ করো না এ পৃথিবী তোমাকে বুঝবে না
বাবা মা ভাই বোন বন্ধু বলে যাকে ডাকো কেউ না
সময় মত তারা দু ফোঁটা জল ফেলে মুখাগ্নী করে যাবে
এ মাটি শুধু চিনে নেবে তোমাকে
তোমার ভেতরের পুরোটা বিস্ময়;
দুঃখ করো না প্রিয়তমাদের স্বীকারোক্তি গুলো
বিশ্বাস ভাঙ্গে চিনে মাটির বাসনের মত যদি,
কড়ে মাটি ফেলে সেই সফেদ তৈজসেই তো ভরেছি ভেতরের প্রতিটা তাক
সেখানে কোন সুধা নয়, কোন অমৃত নয়, জমা এক হিরণ্ময় বিষাদ।
৫।
একটা সাগর পেরিয়ে আসিনি
কিংবা একটা মহাদেশীয় ভ্রমণ শেষের ক্লান্ত পায়ে,
এতোটা পথ আমার পেরনোর নেই
অথচ প্রতিদিন যেন একটা করে মহাসাগর পেরিয়ে ই আসতে হয়
একটা করে মহাদেশ
একটু ঘুমের জন্য, একটা বিছানার স্পর্শের জন্য ঘরের কাছে
আর দেখি আমার সামনে আরো কয়েকটা মহাদেশ পড়ে আছে এঁকে বেঁকে বিস্তৃর্ণ পথ নিয়ে
কোথাওবা পথের চিহ্ন টি ও নেই অথচ পেরতে হবে!
একটু ঘুমের জন্য দু'টি ক্লান্ত চোখ আর কতটা পেরতে পারে? সাঁতরাতে পারে কতটা সাগর?
৬।
এমন তো নয় প্রতীক্ষারা বসে দরজা র এপাশে
ওপাশে কড়া নড়লেই যেতে হবে ছুঁটে,
ওপাশে পায়ের শব্দ পেলেই যেন তুমি,
এমন তো নয়;
ওপাশে কড়া নড়লেই এপাশ টা চুপ
ওপাশে দরজায় কড়াতে আজকাল ভয় হয়।
৭।
তার যত ঝড় তোমাকে দিক
যত রৌদ্রখরতাপ তোমাকে পাঠাক,
তোমার তো অসংখ্য রং সৌরভ আর জনারণ্যের মেলা
আমার কি আছে?
এই কৃষ্ণচূড়ার ডাল ভর্তি আগুন কেন আমি নেব?
ভালবাসার পদাবলী একবার লিখেছি বলেই কি সব রোদ আমাকে পোড়াবে?
সব ঝড় বয়ে নিয়ে যেতে হবে শার্টের ভেতর?
রাত্রি জুড়ে থমকে আছে হাওয়া,
আমার কি আছে
এই বৈশাখে বুকের ভেতর এটুকু মূর শূণ্যতা ছাড়া?
৮।
দিন রাত পরস্পরকে ছুঁয়েছে সন্ধ্যার সেতু বেয়ে একটি অখন্ড প্রবাহে,
পরস্পর পরস্পরকে ছুঁয়ে আছে এ শহরের প্রতিটি দালান
অথচ আমরা কেউ কাউকে ছুঁয়ে নেই
পোস্ট অফিসের সামনের একাকী কড়ই গাছটার মত আমরাও যে যার মত একা, ভীষণ একা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭