somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আশরাফুলরা যাতে এ দেশে না জন্মায়....... আসুন সে প্রার্থনাই করি।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রংমহল ফোরামে লিখা সামুর এক পুরোন ব্লগারের লিখা এটি। সাম্প্রতিক সময়ে আশরাফুলের উপর তামিম ইকবালের চড়াও হওয়ার ঘটনা শোনার পর লিখাটি এখানে শেয়ার করলাম।
**************************

আচ্ছা, আপনাদের মধ্যে কতজন বাংলা বর্ণমালার বর্ণ গুলো ক্রমানুশারে বলতে পারবেন? অনেকেই পারবেন না। আমি নিজেও পারি না। এখন ক্লাস ওয়ানে পড়া একটা বাচ্চা যদি আপনাকে বলে, “ধুর! আপনি তো কিছুই জানেন না” তখন আপনার কেমন লাগবে?
বাদ দিন। অনেক দিন পরে ফোরামে লগঅন করলাম। কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা করছে। কি নিয়ে লিখব? আমার সবচেযে প্রিয় বিষয়, “ক্রিকেট” নিযে? সেটা নিয়ে লিখলে অবধারিত ভাবে প্রিয় মুখ আশরাফুলের নাম চলে আসবে। তখন আবার চরম সেলিব্রেটি কিছু ফোরামিকে গা জ্বালা করতে শুরু করবে। তারচেয়ে বরং নিজের চোখে দেখা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কথা বলি।
১৯৯৭ সাল। হুজুর এসেছে আরবী পড়াতে। পড়ছি, কিন্তু মন দিতে পারছি না। আমি যেখানে পড়ছিলাম, তার পাশেই আমার ফুপাত ভাই রেডিওতে বাংলাদেশ কেনিয়ার ফাইনাল ম্যাচের ধারাভাষ্য শুনছিল। বাংলাদেশ জিতেছে, আমি চিৎকার করে পড়া ফেলে দৌড় দিলাম। আনন্দের দৌড়, বিজয়ের দৌড়। হুজুর ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিযে রইল।
১৯৯৯ সাল। সবাই মিলে বিশ্বকাপ দেখছি। পাকিস্তানের এক একটা উইকেট পরছে। আমার পিঠে এক একটা কিল পরছে। ব্যথা পাবার কথা, বাট ব্যাট ব্যাথা পাচ্ছি না। বরং অন্যরকম এক খুশি তে মন ভরে উঠছে। পাকিস্তানের হেরে যাবার সেই ঐতিহাসিক মুহুর্ত!! সেটা কি ভোলা যায?
এরপর? এরপর শুধুই পরাজয় আর পরাজয়! টানা পাঁচটি বছর। কি দুর্বিসহ সেই দিনগুলো। সম্ভবত ৪৪ টি ওয়ানডে তে টানা পরাজয়। আজকের ছেলেরা ৫৮ রানে গুটিয়ে যাবার লজ্জায় সাকিব তামিম দের বাড়িতে ঢিল ছোড়ে। তারা কি করে বুঝবে ঈদের আনন্দ মাটি হলে কেমন লাগে। হ্যা, আমি ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের কথা বলছি। কুরবানীর ঈদের সকালটা আমার জন্য খুশির হয় নি। অনেক দু:খের, অনেক কষ্টের। বাংলাদের হেরে গেছে নবাগত কানাডার কাছে। সম্ভবত ১৬০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
টানা পাঁচ বছরের হারের পর পূর্ন শক্তির জিম্বুয়ের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে শুরু। জয়ের নায়ক আশরাফুল। বাংলাদেশের ক্রিকেট মানেই টেনে টুনে ৫০ ওভার টিকে থাকার চ্ষ্টো। এতে ২০০ পার হলেও হতে পারে। কিন্তু সেই সময়ে এক তরুন ক্রিকেটার পুরো দলকে ঝাকুনি দিয়ে শিখিয়ে দিল, বাংলালাদেশও পারে বোলারদের চার্জ করে খেলতে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ও সামর্থ আছে স্ট্রাইকরেইট ১০০ এর উপর রাখতে।
ভুল সময়ে ভুল দেশে জন্ম নেয়া আশরাফুল। আমার বিশ্বাস, টেন্ডুলকারও যদি এই দেশে জন্ম নিত তবে তার পরিনতি আশরাফুলের চেয়ে ভাল হত না। টেন্ডুলকারকেও টিপস দিতে আসত যদু মদু টাইপ ক্রিকেটারেরা। তাছাড়া ফর্মে থাকা দেশের সেরা ব্যাটসম্যান এর ব্যাটিং স্ট্যাইল বদলে দেবার কিম্বা নতুন করে গ্রিপ করা শেখানোর মত দু:সাহস কোন কোচেরই হত না। থাক, আশরাফুল প্রসঙ্গ বাদ দেই। আমার চোখে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নতুন মন্ত্রে উজ্জিবিত করা আশরাফুল আগে যেমন আমার হিরো ছিল আজও আছে।
আমার মন খারাপ। জানি মন খারাপ করার মত কিছুই ঘটেনি। যে দেশে বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীন করা মুক্তি যোদ্ধাদের লাথি খেতে হয় সেই দেশে অপমান করে আশরাফুলকে হোটেল থেকে বের করে দেয়া তেমন কিছুই নয়। দু:খ শুধু একটাই, কেউ কিছু মনে রাখে না। আশরাফুল কিম্বা ***** চৌধুরীরা বরাবরই এই দেশে অবহেলিত। খালি মন থেকে প্রার্থনা করি, বাংলাদেশে যেন আর কোন আশরাফুলের জন্ম না হয়।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৫০
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×