somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গ বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ: প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাফল্যগাথা !!

০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিদেশ বিভুইয়ে অসংখ্য কৃতিমুখ আছে যাদের সাফল্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশী বা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সেইসব সফল মানুষদের কীর্তিগাঁথায় আমরাও গৌরবান্বিত হই। কেউ শিক্ষাক্ষেত্রে, কেউ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে, কেউ ক্রীড়ায় কেউ ব্যবসায় উদ্যোগে কেউবা আবার সাংস্কৃতিক অঙ্গণে নিজেদের কৃত্তি্ব দিয়ে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের নাম। আবার বিশ্ব রাজনীতিতেও বাংলাদেশীদে বংশোদ্ভুত কিংবা বিদেশী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ ও সাফল্য আসছে হরহামেশাই। আমরা আজকের আয়োজনে জানবো সাধারন ক্ষেত্রে সফল কিছু বাংলাদেশীর গল্প।

ইউএস নেভিতে - আবু হেনা সাইফুল ইসলাম

ছবিটিতে জর্জ ডবি্লউ পাশের পাশে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি একজন বাংলাদেশি। তার নাম আবু হেনা সাইফুল ইসলাম। তিনি যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীতে প্রথম বাংলাদেশী। ১৯৬৩ সালে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী সাইফুল ইসলাম উচ্চতর শিক্ষার জন্য তিনি ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পড়াশোনা করেন সাউদার্ন নিউ হ্যাম্পশায়ার ইউনিভার্সিটিতে। ১৯৯২ সালে অর্জন করেন এমবিএ ডিগ্রি। একই বছর তিনি যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন কোরে। তাকে ১৯৯৫ সালের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীতে নিয়োজিত। নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তিনি নেভি চ্যাপলাইন কোরের ইমাম হওয়ার জন্য দুই বছরের প্রশিক্ষণ করেন। এরপর ১৯৯৮ সালে তার সামনে সুযোগ আসে। তিনি এ বছর কমিশন লাভ করেন। এ সময় তার প্রধান কাজ ছিল ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবি্লউ বুশের খুব আনুগত্য পেয়েছিলেন।

১৬তম প্রভাবশালী উদ্যোক্তা - সুমাইয়া কাজী
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি 'রয়টারস এবং কাউট' ওয়েবসাইটে সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০ ব্যক্তি-উদ্যোক্তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। আর সেখানে ১৬ নম্বরে রয়েছেন সুমাইয়া কাজী। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশী সুমাইয়া কাজী। সুমাইয়া কাজী তার মা-বাবা-ভাই-বোনদের সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো বে এলাকায় থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া চলাকালীন সময়েই টুকটাক সমাজ সেবার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নেন সুমাইয়া। লেখাপড়া শেষে সিনিয়র সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন সানমাইক্রোসিস্টেম নামক একটি প্রতিষ্ঠানে। সেই সঙ্গে ২০০৫ সালে 'কালচারেল কানেক্ট' নামে সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এটি মূলত একটি সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। তার এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচটি সাপ্তাহিক ই-ম্যাগজিন প্রকাশিত হতো। সেগুলো হচ্ছে ১. দ্যা দেশী কানেক্ট, ২. দ্যা মিডলইস্ট কানেক্ট, ৩. দ্যা এশিয়া কানেক্ট, ৪. দ্যা ল্যাটিন কানেক্ট, ৫. দ্যা আফ্রিকান কানেক্ট। বিশ্বের শতাধিক দেশে এসব ম্যাগাজিনের গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশী। এরপর ২০১০ সালে তিনি 'সুমাজি ডট কম' প্রতিষ্ঠা করেন। এটি সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করে। তরুণদেরকে মেধা, মনন ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে উদ্দীপক এই প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে বেশকিছু সম্মানজনক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে থেকে মার্কেটিং এবং স্ট্যাটেজিক প্লানিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রিধারী সুমাইয়া কাজী জন্মের পর থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ৭/৮ বার। বাংলায় সাবলীলভাবে কথা বলতে না পারলেও দেশের প্রতি তার প্রচণ্ড রকম ভালোবাসা রয়েছে। ২০০৬ সালেও বিজনেস উইক ম্যাগাজিন কর্তৃক আমেরিকায় অনুর্ধ ২৫ বছর বয়সী সেরা উদ্যোক্তার তালিকায় স্থান পান সুমাইয়া কাজী। সুমাইয়া কাজী ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস উয়িক ম্যাগাজিন ও কালার লাইট ম্যাগাজিন থেকে 'সেরা তরুণ উদ্যোক্তা' পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার অর্জণ করেছেন।ব্যক্তি জীবনে সুমাইয়া কাজী অবিবাহিত। বছর খানেকের মধ্যে আবারো বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তার।


নাসার গবেষক - তনিমা তাসনিম অনন্যা
যেখানে দেশের অধিকাংশ তরুণীরা এখনো রক্ষণশীলতার বলয় ভেঙ্গে বেরুতে পারেনি, সেখানে নাসায় কাজ করছেন একজন বাংলাদেশি তরুণী। সেটি নি:সন্দেহে গৌরবের। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চে (সিইআরএন) গবেষণার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তনিমা তাসনিম অনন্যা। তার গবেষণার বিষয় হিগস-বসন নামে এলিমেন্টারি পার্টিকল-এর শনাক্তকরণ। ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ নিয়ে নানা রকম স্বপ্ন ছিল তনিমার। তাই বলে নাসার হয়ে গবেষণার কাজ করার সুযোগ আসবে এমনটা কখনোই ভাবেননি তিনি। কিন্তু কখনো কখনো বাস্তবতা কল্পনাকেও হার মানায়। অনন্যানর ক্ষেত্রেও এমনটিই হয়েছে। তবে নিজের ভাবনা থেকেই অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে আমেরিকাতে পড়ালেখা করেছেন তিনি। ব্রায়ান মার কলেজে দুই বছরের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্সে ভর্তি হন ফিলিঙ্ ও অ্যাস্ট্রোনমির ওপর। এখন ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে এক বছরের একটি কোর্স করছেন। এটি শেষ করে আবার চলে যাবেন আমেরিকার পেনসিলভেনিয়াতে ব্রায়ান মার কলেজে। অনন্যা বাংলাদেশের মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে 'ও' এবং 'এ' লেবেল পাস করে স্কলারশিপ নিয়ে চলে যান আমেরিকার ব্রায়ান মার কলেজে। কলেজ জীবনে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন দেশে পড়াশোনার খোঁজখবর নিজে নিজেই নেন। ৩ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে অনন্যা বড়। পরিবারের সবার ইচ্ছা সে মহাকাশ বিজ্ঞানী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক।

শুভ রায় - তৈরি করলেন কৃত্রিম কিডনি


বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শুভ রায়সহ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের দাবি, তারা একটি কৃত্রিম কিডনি উদ্ভাবন করেছেন। গবেষকরা দশ বছরের নিরন্তর প্রচেষ্টায় এই কৃত্রিম কিডনিটি তৈরি করেছেন। তবে, মানুষের দেহে পরীক্ষা এখনো বাকি রয়েছে। সেই পরীক্ষায় সফল হতে পারলে এটি হবে বিশ্বের প্রথম প্রতিস্থাপনযোগ্য কৃত্রিম কিডনি। গবেষকদের দাবি, তারা এমন একটি কৃত্রিম কিডনি তৈরি করেছেন, যা শুধু রক্ত থেকে বজর্্য পদার্থ পরিশোধনই করে না, বরং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ভিটামিন ডি সংশেস্নষ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায়ও সাহায্য করে। অবশ্য, ইতিমধ্যেই ইঁদুর ও শুকরের দেহে সফলভাবে এই কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। তবে, মানবদেহ কিভাবে এই কৃত্রিম অঙ্গে সাড়া দেয়, তার উপরই নিভর্র করছে এই গবেষকদের মূল সাফল্য।

মনিকা ইউনুস - বিশ্বখ্যাত অপেরার সুরে
তার একটা পরিচয় হতে পারে তিনি নোবেলজয়ী ড. ইউনুসের বড় কন্যা। কিন্তু বাবার নোবেল জয়ের পর নয় বরং এর আগে থেকেই স্বনামে ও স্ব অবস্থানে নিজেকে বিখ্যাত করে ফেলেছেন নোবেলজয়ীমোহাম্মদ ইউনুসের বড় কন্যা মনিকা ইউনুস। জন্ম বাংলাদেশে হলেও তাকে আপাদমস্তক বিদেশীই বলা যেতে পারে। কারন ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া মণিকার শৈশব কৈশোর আর বাড়ন্ত বেলার পুরোটাই কেটেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাগিশযিায়। বাংলাদেশি-রাশিয়ান-আমেরিকান মনিকার মূল খ্যাতি একজন অপেরাশিল্পী হিসেবে। মনিকার মা ড. ইউনুসের সাবেক স্ত্রী ভেরা ফরোসটেনকো। ড. ইউনুস যখন ভ্যানডারবিল্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়তেন তখনই ভেরা ফরোসটেনকোর সঙ্গে পরিচয় ও পরিণয়। ১৯৭০ সালের শুভ বিয়েটা খুব বেশিদিন টেকেনি। মনিকার জন্মের কয়েক মাস পরেই বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর মনিকার মা ও তার মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। এরপর আর বাবার সানি্নধ্য পাননি মনিকা। তবে তার জীবন থেকে বাবার স্মৃতি মুছে যায়নি মোটেই। ছোটবেলা থেকে বাবাকে না দেখলেও মনিকা ২০০৪ সালে ড. ইউনুসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২০০৫ সালে তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন। ড. ইউনুস যখন সর্বশেষ মনিকাকে দেখেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র চার মাস। এরপর ২০০৫ সালেই মেয়েকে দেখার সুযোগ পান। মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাবার পর মনিকার শৈশব কেটেছে নিউ জার্সিতে নানানানির স্নেহে। ছোট বেলা থেকেই ইংরেজির পাশাপাশি রাশিয়ান এবং অন্যান্য শ্লোভিক ভাষায় লেখাপড়া চালিয়ে যান। তবে সঙ্গীতের ব্যাপারে মনিকার আগ্রহ তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল তার নানীর। বেশ ছোট বেলাতেই তিনি তাকে রাশিয়ান অর্থোডঙ্ গীর্জায় কোরাস গাওয়ার সুযোগ করে দেন। সেই থেকে মনিকা ক্লাসিক্যাল মিউজিকের প্রেমে পড়েন। আস্তে আস্তে জড়িয়ে যান অপেরা সঙ্গীতের সমৃদ্ধ সম্রাজ্যে। ২০০২ সালে জুলিয়ার্ড স্কুুল থেকে তিনি ভোকাল পারফরমেন্সে মাস্টার ডিগ্রী অর্জণ করেন। বর্তমানে নিউইয়র্কের বাসিন্দা মনিকা ইউনুস মানবিক সহযোগিতার জন্য তহবিল সংগ্রহকারি সিং ফর হোপের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

মাহিয়া আবেদিন রাখী - এক পরীক্ষাতে ইতালি জয়

মাহিয়া আবেদিন রাখি। বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের মেয়ে রাখী এখন ইতালীয় বাবা-মা'র সন্তানদের লেখাপড়ার রোলমডেল। সব ইতালীয় বাবা মার চাওয়া একটাই তাদের সন্তান যের রাখীর মতো পড়াশোনা করে সাফল্য নিয়ে আসে। রাখীর অসামান্য সাফল্য কেবল ইতালিয়ানদের মনেই নয়, ওখানকার বাংলাতেশি কমিউনিটি এমনকি বাংলাদেশের মানুষের মনেও দারুন আলোড়ন তুলেছে। এ এক অনন্য গৌরব। এক পরীক্ষাতেই ইতালি কাঁপানো রাখীর জন্ম জন্ম বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার হালিমপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামে। ছায়া সুনিবীড় শান্তি নীড়ে বেড়ে ওঠা রাখীর বাবা জয়নাল আবেদিন। মা মাসুদা আবেদিন শান্তা। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় রাখী মাত্র নয় বছর বয়সে বাবা-মার সঙ্গে ইতালিতে এসে চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যায়ন শুরু করে। বর্তমানে রাখী উনিশ বছর বয়সী এক তরুণী। ইতালির ২০১২ সালের এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় ভিসেন্সা প্রভিন্সের চেক্কাতো দি মোনতেক্কিয় কলেজ থেকে অংশ নেয় রাখী। এতোটুকু পর্যন্ত খবরটাতে কোনো আকর্ষণ নেই। কিন্তু অভিনবত্ব আসে পরীক্ষার ফল প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। রাখীর ফলাফল সবার মাথা ঘুরিয়ে দেয়। ইতালির প্রায় সকল জাতীয় মিডিয়া ঘিরে ধরে তাকে। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখী। তাকে নিয়ে এতো নাচানাচি আর গৌরবের কারণ একটাই-। পরীক্ষায় রাখীর অসাধারণ সাফল্য। সে প্রতিটা বিষয়ে ১০০ তে ১০০ নম্বর পেয়ে গোটা ইতালিতে প্রথম হয়েছে। কেবল প্রথম হয়েছে বললে অবশ্য ভুল বলা হবে। ১০০ তে ১০০ নম্বর পেয়ে প্রথম বারের মতো ইতালিতে জাতীয় রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশের মেয়ে রাখী। মজার ব্যাপার হলো ২০১০ সালের এসএসসি সমমানের পরীক্ষায়ও রাখি সকল বিষয়ে ১০০ তে ১০০ নম্বর পেয়েছিল। তখন ইতালির প্রেসিডেন্ট জর্জ নাপোলিতানো তাকে সম্মানসূচক আরো ১০টি করে নম্বর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং রাখীকে প্রেসিডেন্ট ভবনে নিমন্ত্রণ করে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করেছিলেন। ভবিষ্যতে কম্পিউটার বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর রাখী নিজের এই সাফল্য ধরে রাখতে চান। বাবা-মা আর দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণে সকলকে গৌরবান্বিত করার মতো আরো বড় বড় সাফল্য বয়ে আনতে চান।

সালমান খান - অর্জন বিশাল কিন্তু শেকড় বাংলাদেশের

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী ম্যাগাজিন টাইম প্রতিবছরই বিশ্বের ধনী, প্রভাবশালী, ক্ষমতাধর, উদ্যোক্তা প্রভৃতি বিষয়ক তালিকা প্রকাশ করে থাকে। আর এবছর টাইম ম্যাগাজিন নির্বাচিত বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটন কিংবা ধনকুবের ওয়ারেন বাফেটের মতো মানুষদের সঙ্গে তার নাম উচ্চারিত হওয়াটা বিস্ময়করই বটে। তবে এর আগেই খান একাডেমির মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা ও অবস্থানের কথা বিশ্ববাসীর কাছে ভালোভাবোই জানান দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ উদ্যোক্তা সালমান খান।
বেশ কিছুদিন ধরে গোটা বিশ্বই ভাসছে খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সালমান খানের প্রশংসায়। আর সেই ধারবাহিকতাতেই টাইমের তালিকায় ওঠে এসেছে তার নাম। মজার ব্যাপার হলো টাইমের এই তালিকায় সালমান সম্পর্কে আর্টিকেল লিখেছেন স্বয়ং মাইক্রোসফট গুরু বিল গেটস।

সালমান অবশ্য নিজেও জানতেন না এভাবে ম্যাজিকের মতো বদলে যাবে তার জীবন। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব আইটি (এমআইটি) থেকে তিন বিষয়ে স্নাতক আর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ শেষ করে তাঁর দিনরাত ব্যবসা জগতের জটিল হিসাব-নিকাশেই কেটে যেত সালমানের। এতে অবশ্য তার খুব একটা আফসোস ছিল না। কিন্তু ছকে বাঁধা জীবনে বাদ সাধল ছোট্ট কাজিন নাদিয়া। অঙ্ক নিয়ে বড়ই হিমশিম খাচ্ছে সে। অগত্যা বড় ভাই সালমান সিলিকন ভ্যালির অ্যাপার্টমেন্টে বসে ইন্টারনেটে নিউ অরলিন্সে থাকা নাদিয়াকে অঙ্ক শেখানো শুরু করলেন। আস্তে আস্তে আরও অনেকে সালমানের কাছে পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠল। এতজনকে কীভাবে একসঙ্গে শেখানো যায়! ভাবতে ভাবতে সালমান কিছু টিউটরিয়াল ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করে দিলেন। ঘটনাটা ২০০৬ সালের। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দারুন জনপ্রিয় হয়ে ওঠলো ভিডিওগুলো। কিছু হবে বুঝতে পেরে ২০০৯ সালে সবকিছু ছেড়ে পরিপূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করে শুরু করেন 'খান একাডেমি'।

২০০৯ সালেই মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে সালমান লাভ করেন শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য সম্মানসূচক পুরস্কার। ২০১০ সালে গুগল খান একাডেমির ভিডিওগুলোকে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদের জন্য ২০ লাখ ডলারের অর্থ সহায়তা প্রদান করে। একই বছর ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রকাশিত ৪০ বছরের কম বয়সী পৃথিবীর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ৪০ জন ব্যক্তির তালিকায় নিজের স্থান করে নেন সালমান। বিল গেটসের উপস্থাপনায় টিইডি সম্মেলনে খান একাডেমি নিয়ে বক্তব্য দেন তিনি। শুধু বড় বড় পুরস্কার আর সম্মাননাই নয়, সালমান খান এক বৈপ্লবিক শিক্ষাপদ্ধতির সূচনা করে জয় করে নিয়েছেন সাধারণ মানুষের হৃদয়।

ডা. আমজাদ হোসেন - গেটস ভ্যাক্সিন ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী
বিশ্বজুড়ে সামাজিক কাজের জন্য মাইক্রোসফট-গুরু বিল গেটস ও তার স্ত্রী গড়ে তুলেছেন 'বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন'। আর নানা ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গেটস দম্পতির এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাও অর্জন করেছে। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এ বছরই প্রথমবারের মতো 'গেটস ভ্যাঙ্নি ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড'-এর প্রচলন করে। মূলত ভ্যাঙ্নি বা জীবনরক্ষাকারী টিকার ক্ষেত্রে অভিনব আবিষ্কার ও উদ্যোগকে উৎসাহিত করার জন্যই এ পুরস্কারের প্রবর্তন। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের এবারের পুরস্কারটি জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. আমজাদ হোসেন। ফাউন্ডেশনের মতে শিশুদের জীবনরক্ষাকারী টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ডা. আমজাদ অভিনব ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

বিল গেটস তার বার্ষিক চিঠিতে লিখেছেন, 'ডা. হোসেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ জেলায় নিজের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণের চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। গর্ভবতী মায়েদের তথ্য সংগ্রহ, টিকার তারিখ?সংগ্রহ ও এলাকাবাসীকে জানানো ইত্যাদি কাজেও তিনি নিরলস শ্রম দিয়েছেন। ফলে পুরনো সমস্যাগুলোকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।' আ স ম আমজাদ হোসেন গেটস ভ্যাঙ্নি ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড হিসেবে আড়াই লাখ মার্কিন ডলার পেয়েছেন। এই টাকার বড় অংশ তার পছন্দমতো উন্নয়ন খাতে খরচ করবেন বলে জানান তিনি।

শান্তনু বণিক - স্তন ক্যান্সার গবেষণায় সাফল্য
বিশ্বজুড়েই স্তন ক্যান্সার এখন একটি বড় আতঙ্কের নাম। যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে প্রতি বছর ২ লাখ ১৬ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশেও এই হারটা কম নয়। আর এই স্তন ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচার অন্তত কিছুটা স্বস্তির উপায় খুঁজে বের করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশি শান্তনু বণিক। তরুণ এই গবেষক আবিষ্কার করেছেন স্তন ক্যান্সার দেখা দেওয়ার অনেক আগেই তা শনাক্ত করার পদ্ধতি। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগেরির স্বনামধন্য অধ্যাপক ড. রাজ রঙ্গায়েন ও রেডিওলজিস্ট ডা. লিও ডেজাটেলসের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ গবেষণার ফলাফল স্তন ক্যান্সারের আশু শনাক্তকরণে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশের পর পরই কানাডাজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। তাদের কৃতিত্বপূর্ণ এ গবেষণার কথা ফলাও করে প্রকাশ হয় মিডিয়ায়। তাদের তৈরি কম্পিউটার প্রোগ্রামে মহিলাদের স্তনের ম্যামোগ্রাম বিশ্লেষণ করে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ার গড়ে?১৫ মাস আগেই শতকরা আশি ভাগ ক্ষেত্রে শনাক্ত করতে সক্ষম। শান্তনু বণিক ঢাকার নটর ডেম কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগেরি থেকে ক্যান্সার গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছরের জানুয়ারিতে কানাডার ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রকাশনা পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিষয়ক উচ্চমানের গবেষণাপত্র আইট্রিপলি ট্রান্সাকশন অন মেডিকেল ইমেজিংয়ে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত গবেষণার জন্য পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও তিনি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগেরিতে অসাধারণ গবেষণাকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ গত বছর সম্মানসূচক জেবি-হাইন গবেষণা-উদ্ভাবন?পুরস্কার লাভ করেন।

নাফিস বিন জাফর - প্রথম অস্কারজয়ী বাংলাদেশি

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নাফিস বিন জাফর অস্কার পুরস্কার পেয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজেকে অমর করে রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রের একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স বিভাগে অস্কার পেয়েছেন। হলিউড ব্লকবাস্টার মুভি 'পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান : অ্যাট ওয়ার্ল্ডস অ্যান্ড'-এ ফ্লুইড ডাইনামিঙ্রে অসাধারণ কাজ করায় ২০০৭ সালে তাকে এ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। বেভারলি উইলশায়ার হোটেলে ২০০৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি অস্কার পুরস্কার অনুষ্ঠানে তার হাতে এই 'সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল অ্যাওয়ার্ড' তুলে দেওয়া হয়। নাফিস বিন জাফর ছাড়াও ডিজিটাল ডোমেইনে ফ্লুইড সিমুলেশন পদ্ধতির উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে আরও দুজনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে বসবাসরত নাফিস বিন জাফরের বাবা জাফর বিন বাশার ও মা নাফিসা জাফর। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান নাফিস ১৯৭৭ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী। ১৯৮৯ সালে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার চার্লসটনে চলে যান। কলেজ অব চার্লসটন থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ পর্যন্ত তিনি হলিউডের কয়েকটি ফিল্মে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে 'পার্সি জ্যাকসন অ্যান্ড অলিম্পিয়ানস : দ্য লাইটিং থিফ', 'দ্য সিকার : দ্য ডার্ক ইস রাইজিং', 'ফ্লাগস অব আওয়ার ফাদার', 'স্টিলথ'। নাফিস জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত সৈয়দ মইনুল হোসেনের ভাগ্নে এবং বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ারের নাতি।


লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশ কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়নের হাতে অলিম্পিক মশাল
আন্তর্জাতিক কিকবক্সিংয়ে ৪৮-৫০ ক্যাটাগরিতে ব্রোঞ্জজয়ী তরুণীর নাম রোকসানা বেগম। তিনি একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণী। শুধু তাই নয়, রোকসানা বেগমের নাম রয়েছে প্রভাবশালী ১০০ ব্রিটিশ বাঙালির তালিকা 'পাওয়ার হানড্রেড'-এও। এর সবচেয়ে বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছেন লন্ডন অলিম্পিকে মশাল হাতে ছুটে বেড়িয়ে।

যে কেউ চাইলেই অলিম্পিকের ঐতিহ্যবাহী মশালবাহক হতে পারেন না। বাহকের থাকতে হয় কোনো না কোনো বিশেষত্ব। আর ব্রিটেনের আরও সব ব্রিটিশ বাংলাদেশি অ্যাথলেটদের সঙ্গে মশাল বহন করার সৌভাগ্য অর্জন করেন রোকসানা বেগম। কিকবক্সিংয়ে নিজের আগের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর রোকসানা তার প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এবার আর ব্রোঞ্জ কিংবা সিলভার নয়, এবার তার টার্গেট সোনা।

সায়মান মিয়া - অলিম্পিক স্মারক মুদ্রার নকশাকার
অলিম্পিকের মতো বড় আসরে কোনো স্মারক মুদ্রা থাকবে না, তা কি হয়! সে হিসাব থেকে ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক ও প্যারা-অলিম্পিক নিয়েও স্মারক মুদ্রা করারপরিকল্পনা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। তাও আবার একটি দুটি নয়, আলাদা পাঁচ পাউন্ড সমমানের স্মারক মুদ্রা বের করার প্রস্তুতি নেয় ব্রিটিশ মুদ্রা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দ্য রয়েল মিন্ট। তবে এই মুদ্রা নকশার জন্য অভিনব একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে তারা। সে জন্য যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্ট অ্যান্ড ডিজাইনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আয়োজন করা হয় একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার। এতে বিজয়ী হয়ে ব্যাপক আলোচিত হন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি তরুণ সায়মান মিয়া। কয়েক হাজার নকশার মধ্য থেকে নির্বাচিত হয় তার নকশাটি। সায়মান বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে?স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী। তার নকশা করা অলিম্পিক ২০১২ সালের স্মারক মুদ্রাটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীজুড়ে। ১৯৫৫ সালে ব্রিটেনে আসেন সায়মানের বাবা আরজু মিয়া। চার ভাইবোনের পরিবারে গর্বিত মা পিয়ারা খাতুন সায়মানের সাফল্যে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'পূর্বপুরুষের মাটির গল্প শুনেই তারা বড় হয়েছে। আমার সন্তানের এই স্বীকৃতি বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করবে, এতে আমি খুবই খুশি। ১০ বছর বয়সে শেষবার বাংলাদেশে গেলেও ভাটা পড়েনি দেশের প্রতি টানে।


আয়শা কোরেশি - অলিম্পিকের আয়োজক তালিকায় !

সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয়েছে এবারের লন্ডন অলিম্পিক। এই সুবিশাল আয়োজনের তালিকা থেকে বাদ পড়েনি বাঙালিও। বিরাট এই আয়োজনে একজনের ভূমিকাকেতিনি আয়েশা কোরেশি। তিনি একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং অ্যাসোসিয়েট। তিনি অলিম্পিক বিড জয়ে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তার পেশাগত এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে। তার রয়েছে বিবিসিতে কাজ করার চমৎকার অভিজ্ঞতা আর তার এই অভিজ্ঞতা বিড জিততে দারুণ অবদান রাখে। অবশ্য এমন কৃতিত্বের স্বীকৃতি ঠিকই পেয়েছেন আয়েশা। নিলাম জয়ে অসামান্য অবদান রাখায় তাকে দেওয়া হয়েছে এমবিই উপাধি। অলিম্পিক নিয়ে মাঠপর্যায়ে জনমত গঠনের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি এবং তা শেষ করেন সফলতার সঙ্গে। অলিম্পিক পার্কের জন্য অনুমতি, লন্ডনজুড়ে ফোরাম গঠনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন আয়েশা যৌথভাবে ড. বারীর সঙ্গে। সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির মিটিংয়ে তিনি কয়েকজন তরুণকে নিয়ে লন্ডন অলিম্পিক কমিটির নেতৃত্ব দেন। যা দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। প্যারিসকে হারিয়ে লন্ডনকে ভেন্যু জয় করার পেছনে তার নেতৃত্বে এই তরুণ দলটির দারুণ অবদান। ব্রিটেনে তিনি বাঙালিদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

ফাহিম আলম - দাবায় বাংলাদেশি কিশোরের ফ্রান্স জয়
দেশে থাকার সময়ই তার দাবার মেধার কথা জেনেছে দেশবাসী। গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানকে হারিয়ে রীতিমতো সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় কিশোর দাবাড়ু ফাহিম আলম। এবার সে তার দাবার মেধার কথা জানিয়ে দিল বিশ্ববাসীকে। ফ্রান্সে অনূধর্্ব-১২ দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশি কিশোর ফাহিম আলম। গত মাসে জাতীয় ওই প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় ১১ বছর বয়সী ফাহিম। তবে অবৈধভাবে বসবাস করায় দেশটি থেকে বহিষ্কারের হুমকিতে রয়েছে ফাহিম। কিন্তু ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফাইলন জানিয়েছেন, অবৈধভাবে বসবাসের ফলে বহিষ্কারের হুমকিতে থাকা ফাহিমের স্থায়ীভাবে থাকার মামলাটি পর্যালোচনা করা হবে। যদি সে চ্যাম্পিয়ন হয়ে থাকে তাহলে তার মামলার বিষযয়টি সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে মনোযোগ দিয়ে দেখা হবে। ফাহিম আলম ২০০৮ সালের অক্টোবরে তার বাবার সঙ্গে অবৈধভাবে ফ্রান্সে আসে। অবৈধভাবে বসবাসের জন্য ২০১০ সালে তাকে সে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। ফাহিম একটি সময়ের জন্য অভিবাসী সাহায্যকারী গ্রুপ দ্বারা আশ্রিত হয়। বর্তমানে সে রাজধানী প্যারিসের উপশহর ক্রিটেলে তার দাবা ক্লাবের লজে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। ফরাসি দাবা ফেডারেশন বলেছে, যদি তার বিদেশ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকে তাহলে সে দেশের বাইরের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য জাতীয় দলে যোগদান করতে পারবে।

ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্য সুত্র : লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:৩২
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×