somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উড়ো চিঠি - সাত

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"ছি ছি!! প্রথম পরিচয়ে কারো কখনও এরকম অসভ্য ইচ্ছে হয় বুঝি! নির্লজ্জ নাতো কি! যদিও ইচ্ছেটা পুর্ণ হতে তোমার সময় লেগেছিল প্রায় আট মাস। ভালোবাসি বলার পর প্রথম যেদিন আমরা দেখা করেছিলাম, সেই কাঁচের দেয়াল ঘেরা কফি হাউসটায়। মনে আছে? খুব বৃষ্টি ছিল সেদিন...আধ ভেজা আমি এসে দেখি তুমি বসে আছো। কি অদ্ভুত মিষ্টি করে হেসে দিলে আমায় দেখে...একটুও জড়তা নেই। অথচ আমার কি ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছিল! মনে হচ্ছিল একদম নতুন কারো সামনে, একদম নতুন আমি। শীতে কাপছিলাম ভীষণ....তাই গরম কফি এগিয়ে দিলে। কফির কাপে চুমুক দিতেই ঠোঁটের কোনে লেগে গেলো সফেদ ফেনা। তুমি আলতো করে সরিয়ে দিলে আংগুল দিয়ে। তোমার প্রথম সপর্শ.... আমি আবারো কেঁপে উঠলাম !

তোমার সবকিছুই খুব অদ্ভুত! সবাই প্রথম হাত সপর্শ করে, তুমি করলে ঠোঁট। সবাই জ্বর দেখতে কপালে হাত দেয়, তুমি দাও গলায়! কতোদিন জানতে চেয়েছি কেন? শুধু মুচকি হেসে এড়িয়ে যাও। তোমার গম্ভীর কন্ঠের হাসির গল্পে সবাই হেসে খুন...কিন্তু তুমি নির্বিকার সিগারেট ফুঁকতে থাকো। আবার কখনও খুব সাধারণ কথায় হো হো করে বিকট শব্দে হেসে উঠো! আমি বার বার সেই শব্দের প্রেমে পরি। অদ্ভুত তোমার প্রেমে অন্যরাও যে বাঁধা পরে যায়, তা আমি দিব্যি টের পাই। আর তাইতো শৈলীকে নিয়ে এতো ভয় ছিল। কেন জানি, ওর প্রতি তোমার নির্লিপ্ততা এড়িয়ে গিয়ে, তোমার প্রতি ওর আগ্রহটাই চোখে পরতো। আর মনে বাজতো " ওহে হারাই হারাই সদা হয় ভয়...."

গতকাল থেকে এখানে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। অফিস যাওয়ার পর যে শুরু হলো, আর থামার কোনো নাম নেই। বুঝতেই পারছো ছাতা নেইনি। ভাগ্যিস কলিগ রাবেয়া আপু, গাড়িতে করে অনেকদুর পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছিলো! তবুও বাকি রাস্তায় রিক্সার খোঁজ করতে গিয়ে প্রায় কাক ভেজা হয়ে বাসায় ফিরেছি। বাবাতো আমাকে দেখে পুরাই অস্থির। তুমিতো বাবাকে চেনো, অল্পতেই ঘাবড়ে যান। রাতে হালকা একটু গা গরম দেখে তখনই নির্দেশ দিলেন,"কাল অফিস যাবেনা কিন্তু।" আমাকে নিয়ে যে কেনো এতো চিন্তা বাবার! রাতে মাইগ্রেনের ব্যথাটা আবার উঠলো অনেকদিন পর। তোমার দেয়া আশুতোষের " সোনার হরিণ নেই" বইটির পাতা উলটে আবার রেখে দিলাম। চোখে ঘুম নেমে এলো....

মাঝরাতে দুঃস্বপ্ন এলো। দেখলাম আমি অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছি...তুমি হাত বাড়িয়েও আমাকে ছুঁতে পারছোনা। প্রচন্ড ভয়ে ঘুম ভেঙে গেলো...সারাটা শরীর ভিজে গেলো ঘামে। বুক ধড়ফড় করতে থাকলো। পানির গ্লাসটাতে ঠোঁট ছোঁয়াতেই ফোনটা বেজে উঠলো.... তোমার নামটা জ্বলজ্বল করে উঠলো স্ক্রিনে। আমার সব ভয় নিমিষেই মুছে গেলো। কি করে জানলে তুমি!! কানে নেয়ার শক্তি ছিলোনা, স্পিকারটা অন করলাম। বেজে উঠলো ভরাট সুন্দর তোমার কন্ঠ," হ্যালো.... জলকন্যার ঘুম ভাঙিয়ে দিলাম নাকি?" আমার সব শান্তি আবার ফিরে এলো। অনেকদিন পর আমরা ভোর পর্যন্ত কথা বললাম! আহ! কি ভীষন ভালোলাগা! কি সুন্দর সকাল! শান্তি নেমে এলো আমার দু'চোখে..."

ইতি
"মেয়েটি "



পূর্ববর্তী পোস্ট:
উড়ো চিঠি - ছয়
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×