somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২৫ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবসঃ পরিবর্তন প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ ২৫ নভেম্বর, ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য এলিমিনেশন অব ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন’ বা আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস মানবতার বিপর্যয়ে, মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিকার হয় নারী ও শিশু। এই প্রবণতা শুধু দুঃখজনকই নয়, ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশের জীবনে যে কোনো সময় পুরুষ কর্তৃক শারীরিক সহিংসতার শিকার হতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীরা গৃহ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। সম্প্রতি নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা আর্ত-সামাজিক সাংস্কৃতিক সমস্যায় পরিগণিত হয়েছে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে সমাজ কাঠামো, বিকশিত হচ্ছে সভ্যতা। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, বন্ধ হয়নি নারী নির্যাতন। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং সমাজের উন্নয়নে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। উন্নয়নের যে কোনো ধারাকে গতিশীল করতে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ জরুরি। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে নারীর শিক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। যদি কোনোভাবে নারীর এসব অধিকার ক্ষুণ্ন হয় এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়তে থাকে তবে তা যেমন দুঃখজনক, অন্যদিকে জাতীয় জীবনে উন্নতির ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধক। আন্তর্জাতিকভাবেও নারীর প্রতি সহিংসতাকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা এ লঙ্ঘন বারবার মানবতা, অর্থনীতি, সমাজ সর্বোপরি দেশের যাবতীয় উন্নয়নকেই বাধাগ্রস্ত করে। যা কোনো ভাবেই প্রত্যাশিত নয়। নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকার নারীদের সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে এ দিবসটি স্বীকৃতি পায়। তখন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘে নারীর প্রতি সহিংসতা বিলোপ-সংক্রান্ত ঘোষণায় বলা হয়েছে, এমন কোনও কাজ যা নারীর দৈহিক, যৌন কিংবা মানসিক ক্ষতির কারণ হয় কিংবা সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনে নারীর স্বাধীনতাকে জোরপূর্বক হরণ করে, তাকেই নারীর প্রতি সহিংসতা বলা যায়। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের খসড়া অনুমোদন করে প্রতিবছর ২৫ নভেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন দূরীকরণ দিবস' হিসেবে গ্রহণ করেছে। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ব্যক্তি থেকে সমাজ, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। এ ক্ষেত্রে নিজে নির্যাতন থেকে দূরে থাকলেই চলবে না, সেই সঙ্গে আমাদের আশপাশে ঘটে যাওয়া যেকোনো নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে হবে। সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর এ জন্য পরিবর্তন প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ রয়েছে – “ Prevention is better than Cure” প্রবাদটি একেবারেই মিথ্যে নয়। প্রতিকারের আগে প্রতিরোধ করা উত্তম। তাই আসুন, আমরা সহমর্মী ও সমব্যথি হয়ে সহিংসতার শিকার নারীর পাশে দাঁড়াই, নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি, সহিংসতার ঘটনা লুকিয়ে না রেখে দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে এবং বিচার পেতে সহিংসতার শিকার নারীকে সহযোগিতা করি। নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারলে তবেই তা হবে সত্যিকারের অর্জন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×