somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামুতে আমার পর্যবেক্ষণঃ হাল্কা চটুল ও বিতর্কিত পোস্টই বেশী টানে পাঠকদের

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি বিগত ৩ বছর ১ মাস যাবৎ সামু ব্লগে আছি আর পোস্ট করেছি অত্র লেখাসহ মোট ৮৬০টি লেখা, মন্তব্য করেছি ৩৩৯৩টি টি আর মন্তব্য পেয়েছি: ৪৩১৩ টি ব্লগটি মোট ১১৯৭০৯ বার দেখা হয়েছে। পর্যবেক্ষন করলাম সামুর ব্লগাররা গঠনমূলক, সমাজ সচেতনামূলক লেখা থেকে পাঠকরা হাল্কা চটুল পোষ্ট বেশী পছন্দ করে। একজন লেখক অনেক যত্ম করে তার লেখাগুলো তৈরী করে, উদ্দেশ্য থাকে সমাজকে সচেতন করা, কোন অন্যায় ও অনিয়মকে গোচরীভূত করে তার থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করা।বিশেষ বিশেষ দিনে গুণীজনদের জন্ম-মৃত্যুদিনে মনিষীদের সম্পর্কে অজানা তথ্য উপাস্থাপন ও বিশ্বেব চিত্র বিচিত্র অনেক ঘটনা পাঠকদের সাথে তুলে ধরা। অনেক সময় স্বাস্থ্য বিষয়ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পাঠকদের সচেতন করে তোলা। এটা সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার পাশা পাশি বিনোদন ও বটে। তবে বিনোদনের প্রকৃতি ব্যক্তি-মানুষের নিজস্ব রুচি নির্ভর। এই রুচি যেমন শিক্ষা, কর্ম, পেশা, বয়স, অভিজ্ঞতা এসবকিছু দ্বারা প্রভাবিত হয়, তেমনি সময়, যুগ বা কালও একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। এছাড়া আরো অনেক অনেক অনুঘটকও এতে বিদ্যমান থাকতে পারে। এরকম অনেককিছুর বিন্যাস ও সমাবেশের মাধ্যমেই একেকজন ব্যক্তিমানুষের রুচিবোধ গড়ে ওঠে। তাই বিনোদন চাওয়া আর পাওয়ার প্রকৃতি যে প্রতিটা ব্যক্তিমানুষের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমি দীর্ঘদিন যাবত লক্ষ্য করছি বিজ্ঞ পাঠকরা তথ্যনির্ভর গঠনমূলক, সচেতনামূলক লেখা থেকে হাল্কা চটুল ও বিতর্কিত লেখা বেশী পছন্দ করে। তা ছাড়া কিছু কিছু পাঠক ও ব্লগার একটা সিণ্ডিকেটের আওতায় বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় লেখকের পোস্টে মন্তব্য করে থাকে। তবে সেই মন্তব্যের ব্যাপারেও আমি হতাশ। অনেক মন্তব্যকারীই ২/১টি ফুল পাতা কিংবা ইমোকটিন ব্যবহার করে তার হাজিরা নিশ্চিত করে। তবে সবচেয়ে গভীর বেদনা দুঃখের পর্যবেক্ষন এই যে, অনেক ব্লগাররাই নিজেদের সবজান্তা সমসের মনে করেন, কিছু বুঝুক বা না বুঝুক একটা মন্তব্য করতে হবে বলেই মন্তব্য করে নিজের বিদ্যার জাহির করে। অনেক সময় তা কোন গঠন মূলক কাজেতো আসেই না বরঞ্চ তা অন্যের অপছন্দের কারণ হয়। তোয়াজের অতি কথনে জড়িয়ে পড়ে ব্যাক্তিগত আক্রোশে।কো্ন কোন সময় অশ্লীল কথাবার্তাও চলতে থাকে যা অনেককেই বিব্রত করে।

এখানে কেউ কেউ ভাঁড়ামো করেও ব্যাপক আনন্দ পান। এই ভাঁড়ামো দেখে আবার অন্য অনেকে তা থেকে প্রচুর বিনোদন সংগ্রহ করেন। আবার এই ভাঁড়ামো থেকে অন্যদের আনন্দ কুড়ানোর উপায় বা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেও কেউ কেউ বিনোদন পান বৈ কি। আসলে চারদিকে আমাদের কথায়-কাজে-আচারে-বিচারে এতো বেশি অসংগতি ও বৈকল্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে যে, একটু গভীরভাবে দেখলে এগুলোর মধ্যে প্রচুর ভাঁড়ামোর উপাদান যেমন চোখে পড়বে, বিনোদন হিসেবেও তা কিন্তু ফেলনা নয়। আর চাইলে জীবনের নশ্বরতাটুকুও হয়তো তা থেকে খুঁজে পেতে পারেন। তবে বহতা নদীর মতো অবিরল ঘটে যাওয়া এই ঘটনাগুলো চলমান, অস্থির। এখন যা আছে, একটু পর সেটা আর থাকছে না। নতুন ঘটনা ঘটছে। নতুন কিছু হয়ে যাচ্ছে। নতুন আরেক বিনোদন বা এর উৎস সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। লেখালেখির জগতেও এসব উপাদানের কমতি নেই। এক্ষেত্রে বড় সুবিধাটা হলো, এগুলো লিখিত থাকে বলে অক্ষরগুলো সহজে ধুয়ে মুছে হারিয়ে যায় না। নমুনাগুলো দীর্ঘকাল থেকে যায়। তবে বহমান ঘটনা বা পলে পলে পাল্টে যাওয়া প্রেক্ষিতগুলোর বৈচিত্র্য বলি আর মোহই বলি, এর মাজেজাই আলাদা। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে অদ্যাবধি বিজ্ঞ ব্লগারদের অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে তার মাঝে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা স্থান পেয়েছে। যা সমাজের নানা অসংগতি ও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট। তবে উক্ত পোস্টে পাঠক ও ব্লগারদের মন্তব্যের সংখ্যা দেখে হতাশ হয়েছি। এর সাথে বেশ কিছু অনাবশ্যক ও কম গুরুত্বপূর্ণ পোস্টও প্রকাশিত হয়ছে যথারীতি।
যেমন আমার ফালতু লেখাঃ গদ্য ফর্মাটে কাকবিষয়ক একটি অাধুনিক কাকবিতা ৮৪৫ বার পঠিত
অথচ আমার বিশ্বাসমতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ লেখাঃ আমার বাংলা ভাষা মাত্র ৪৭ বার পঠিত হয়েছে
আমার বিশ্বাস এখানে যারা লেখালেখি করেন বা পাঠক হিসেবে লেখাগুলো পাঠ করেন তারা সকলেই সুশিক্ষিত ও সমাজ সচেতন। তারা গত ১৫দিনে সামু ব্লগের সংশ্লিষ্ট পোস্টগুলি পর্যবেক্ষণ করলে বুঝতে সক্ষম হবেন যে কোন পোস্টটি কতটুকু গুরুত্ব রাখে এখানে প্রকাশের জন্য। কষ্টকরে গত ১৫ দিনের পোষ্টগুলো ভিজিট করলে আপনিও আমার কথার যথার্থতা বুঝতে সক্ষম হবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি কাউকে হেয় করার জন্য নয় বরং শুধুমাত্র সচেতন ও আত্মসমালোচনার জন্য বিনীত ভাবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আমার আজকের "সামু ব্লগে পাঠক ও মন্তব্যবারীদের সম্পর্কে আমার পর্যবেক্ষণঃ" পোস্টের যুক্তির পক্ষে প্রমাণ দাঁড় করাতে এই হালকা, চটুল বলতে পারেন ফালতু পোষ্টটি দিলাম। আমার বিশ্বাস আমার এই পোস্ট প্রমাণ করবে, " গুরুত্বপূর্ণ লেখা থেকে হাল্কা চটুল পোষ্টই বেশী পছন্দ করেন"।

বিঃদ্রঃ ব্লগ সকল ব্লগারের স্বাধীন মতামত প্রকাশের উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। তাই আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু বুঝেছি ততটুকু প্রকাশ করলাম। এই পোস্ট কাউকে হেয় প্রতিপন্ন কিংবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারো অনুভূতিতে আঘাতের জন্য নয়। এটা আমার নিজস্ব অভিমত। আমার অনুরোধ থাকবে ব্লগারের কোন পোস্ট গোচরে আসলে অথবা পাঠ করলে তাতে আপনার স্বাধীন মত প্রকাশ করুন। আপনাদের গঠনমূলক মন্তব্য সমালোচনা লেখকে পরিশুদ্ধ করবে। তার ভুলত্রুটি বুঝতে পারবে। কাউকে খুশি করা কিংবা তোয়াজ করতে যেয়ে এমন মন্তব্য করবেন না যাতে লেখকের অহমিকা বেড়ে গিয়ে তার লেখার মান খারাপ হয়ে যায়। উপদেশের বাড়াবাড়ি হলে নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন কারণ ক্ষমা মহৎ হবার গুরুত্বপূর্ণ সোপান

ঢাকাঃ ২৮ নভেম্বর ২০১৭ইং
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৮
৫৩টি মন্তব্য ৫৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×