somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রেঞ্চ ওমেন ডোন্ট গেট ফ্যাট - মেরিল গুইলিয়ানো,পর্ব ১ ।

২৪ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফরাসি নারীরা মোটা হয়না । কথাটা শোনার পর হয়তো অনেকেই থামবে । কপাল কুচকাবে । তারপর চিন্তা করবে । কিন্তু কেন .।।
কি কারনে তারা মোটা হয়না ।
পৃথিবীর সব নারীদের মতো ফরাসি নারীরাও ব্রেড খায় ,পেস্ট্রি খায় , ড্রিঙ্ক করে এবং তিন বেলার খাদ্য ও আনন্দের সাথে গ্রহন করে । শুধু তা নয় নারীদের জীবনে ও আনন্দ বেদনা ,সুখ ,দুঃখ, মজা ,প্রেম ,বন্ধুত্ব আর আছে জীবন শৈলী । সবার সাথে সব কিছু মিলে গেলেও এই জীবন যাত্রা আর জীবন শৈলীতে আছে কিছু পার্থক্য।
আর এই পার্থক্য গুলো নিয়ে বর্তমানে ফরাসি বই জগতে মেরিল গুইলিয়ানোর নাম বেশ জোরালো ভাবেই এসেছে ।তার লেখা বই ফ্রেঞ্চ ওমেন ডোন্ট গেট ফ্যাট বইটি আধুনিক নারীদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে । আলোচনা এবং তুমুল সমালোচনার মধ্যে বইটি সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে । এটি এমন একটি বই যা আপনার দেখা চেনা জানা জীবন এবং চিন্তার পথ কে পাল্টে দিতে পারে ।প্রথম ২০০৪ সালে এই বইটি প্রকাশ হয় । এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪০টি ভাষায় এই বইটি প্রকাশ হয়েছে । পুরো দুনিয়ায় ৩ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে গেছে । নিউইয়র্ক টাইমসে বেস্ট সেলারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ।ফরাসি- আমেরিকান এই লেখক ১৯৪৬ সালের ১৪ এপ্রিল ফ্রান্সের ময়ুভ্রে গ্রান্ডে জন্ম গ্রহন করেন । কিন্তু জীবনের অনেকটা সময় ধরে তিনি আমেরিকায় পড়াশুনা করেন এবং সেখানেই নিজের পছন্দের কাজ গুলো করেন । বর্তমানে তিনি আমেরিকার ম্যানহাটনে স্বামী এডওয়ার্ড গুইলিয়ানোর সাথে বসবাস করছেন । ফরাসি উচ্চারনে তার নামটি হবে মিইহে গুইলিনো । কিন্তু ইংরেজি থেকে বাংলায় করলে তা হয় মেরিলে গুইলিয়ানো ।
অন্য যে কোন সাধারন নারীর মতো ১৯৬৬ সালে একচেঞ্জ স্টুডেন্ট হয়ে আমেরিকায় পড়াশুনা করতে যায় । কিন্তু একটা সময় নিজেকে তিনি খুব ভারী শরীরের একজন হিসেবে আবিস্কার করেন । নিজেকে নিজে দেখে অবাক হন । সেই সময়ের মানসিক অবসাদ তাকে কৈশোরকালীন যন্ত্রণায় ঠেলে দেয় । সে সময় তাদের পারিবারিক মহৎ বন্ধু ফিজিসিয়ান ডঃ মিরাকল এই দুঃসময়ে পাশে থাকেন । তিনি তখন ফ্রেঞ্চ গ্যাস্ট্রনমির মূল বিষয় এবং সময় কে সম্মান জানিয়ে নারীর গোপন বিষয় গুলো বুঝতে শেখায় শেখায় । সেই মানসিক ধাক্কা তাকে নতুন করে জীবন বুঝতে শেখায় ।
আর সেখান থেকে পুনরায় নিজের আর আমেরিকান জীবনের পার্থক্য গুলো খুঁজে ফিরেন । নিজের খাওয়া দাওয়া আর জীবন যাত্রায় যে বিষয় গুলো জীবনকে থামিয়ে দিতে উৎসাহ দেয় সেগুলো আবিস্কার করেন । নতুন করে নিজের জীবনের সাথে বোঝাপরা করেন । নতুন করে পরিচিত খাদ্য এবং খাদ্যাভাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন । সমঝোতা করেন যাপিত জীবনটার সাথে । কিভাবে খাদ্যকে উপভোগ্য করা যায় । আর সুন্দর অবয়ব আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায় । আনন্দময় ,সংবেদনশীল আর একটি শক্তিশালী জীবন কে স্বাগত জানাতে হলে কিছু গোপন রহস্য অনুসরন করতে হয় প্রকাশ্যে।খুব দায়িত্বের সাথে ।খুব ভালোবেসে । খুব প্রাণবন্ত ভাবে । ফরাসি নারীরা সপ্তাহান্তে খাদ্য ,পানীয় আর চলাফেরায় ভারসাম্য রাখে ।
এই ভারসাম্য দৈনন্দিন জীবনের সাথে কোন বিরোধ নেই । নেই কোন আলাদা ডায়েটিং । খুব সুন্দর ভাবে নিজের মতো জীবনকে উপভোগ করা যায় ।
তিনি প্রথমত যে বিষয়টি গুরুত্ব দেন তা হল অন্তরের শৈলী এবং অন্তরকে ভাল রাখা । মানুষের মনোজাগতিক সৌন্দযকে । সেখানে আছে চারটি বিষয় ১। সাধারন থাকা ২। পরিধানের পোশাককে গুরুত্ব দেওয়া , ৩। ব্যবকৃত গহনার সচেতনতা ৪। কেনাকাটায় সুঅভ্যাস ।
এই বিশদ আলোচনায় যাওয়ার আগে ফরাসি নারীদের স্বাভাবিক সৌন্দর্যের পাঁচটি গোপন রহস্য জেনে নেই ।

১। ফরাসি নারীরা জানে হাইড্রেশণ বা জলয়োজন শরীরের ত্বক এবং চুলের জন্য কতোটা জরুরি । তাই মেরিল গুইলিয়ানো পরামর্শ দেন প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে এক গ্লাস পানি খাওয়া । যা কিনা ফরাসি নারীদের সৌন্দর্য এবং ভাল স্বাস্থ্যের গোপন অস্ত্র। শুধু তা নয় যখন আপনি অনেক বেশি ক্ষুধার্ত তখন হাল্কা স্নাক্স কখনই খাবেন না । আপনার শরীর সত্যিই তৃষ্ণার্ত থাকে । যতোটুকু পানি এবং খাদ্য প্রয়োজন তা সম্পর্কে সচেতন থাকুন । তাই নিজের ওজন নিয়ন্ত্রনে খাদ্যের সুঅভ্যাস খুব জরুরি ।

২। ফরাসি নারীরা উপলব্ধি করে একটা ভাল প্রচলন সব সময় নিজেকে প্রদীপ্ত রাখে । তাই তারা গোসলে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে ভয় পায় না । শরীরের আভ্যন্তরীণ ছোট ছোট বন্ধ ছিদ্র গুলো প্রথমে গরম এবং পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিচর্যা করে স্নায়ুতন্ত্রকে সচল রাখতে হয় ।প্রতিদিনের নিয়মমাফিক কাজের অংশ হিসেবে করতে হয় । যা ক্লান্ত মস্তিস্ককে কে জাগিয়ে রাখে । একটা প্রানবন্ত গোসল শরীরের রক্ত সঞ্চালন এবং উজ্জ্বল ত্বক তৈরি করতে সাহায্য করে ।

৩। ফরাসি নারীদের তাদের দাদিদের পুরনো রীতি নীতি এবং ধর্মানুষ্ঠান শিক্ষা দেওয়া হয় । গুইলিয়ানো বলেন যে তার মা তাকে শিখিয়ে ছিল এমন যে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে পুরো মুখমন্ডল ভাল করে পরিস্কার করতে হবে । একটা সাধারন মাস্ক মুখে পনের মিনিট রাখতে হবে এবং এক টুকরো শসা চোখে দিয়ে চোখ কে বিশ্রাম দিতে হবে । এর পর স্ট্রবেরির রস মধুর সাথে মিশিয়ে মুখে মেখে দিতে হবে ।চুল সব সময় ঠান্ডা পানিতে ধুতে হবে এক টেবিল চামচ ভিনেগার অথবা লেবুর রস মিশিয়ে । যা সব সময় চুলকে উজ্জ্বল এবং নরম রাখে ।

৪ । ফরাসি নারীরা স্বাস্থ্য ভাল দিক এবং সূর্যের ক্ষতিকর দিক গুলোকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারে । সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে নিয়মিত সানগ্লাস এবং সানক্রিম ব্যবহার করে । প্রতি সপ্তাহে নিজের মতো একান্ত কিছু সময় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে মনের আনন্দে । হতে পারে খেলাধুলা অথবা গভির মগ্নতা নিয়ে হাঁটাহাঁটি ।

৫ । ফরাসি নারীরা জানে একটা শৈল্পিক চুলের কাট , একটা প্রিয় পানীয় আর নিজের সবচেয়ে প্রিয় পারফিউম সাথে থাকলে মন আনন্দে থাকে নিজের মতো । অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকা যায় ।আপাতত এর চেয়ে বেশি কিছু বলা একজন ফরাসি সুখি নারীর জন্য প্রয়োজন নেই ।

চলবে ...।।
মেরিল গুইলিয়ানোর কিছু ছবি :



অনুবাদ ; নুরুন নাহার লিলিয়ান
উৎস; দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস , দ্য গার্ডিয়ান , মেরিল গুইলিয়ানোর ওয়েব সাইট , উইকিপিডিয়া ।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×