somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোজে দ্বীপে স্বেচ্ছানির্বাসন (একটি ভ্রমণ ব্লগ) -১

২২ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুরদেশে থেকে জড়া আর ক্লান্তিকে দুপাশে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে যেখানে থাকবেনা যান্ত্রিক কোলাহল অথবা আমার সবথেকে বড় সঙ্গী – ইন্টারনেট। মুঠোফোনের সুইচটি বন্ধ করে দিয়ে রবিনসন ক্রুসোর মতন একাকী নির্জন একটা দ্বীপে আধুনিকতা বিবর্জিত অবস্থায় বোহেমিয়ান হবার সাধ জাগে এই দুরন্ত হৃদয়ে। বিদেশের মাটিতে আমাদের ছোট্ট এই বাঙ্গালী কম্যুনিটিতে মাঝে মাঝেই হঠাৎ করে এডভেঞ্চারের খেঁয়াল চেপে বসে। কোরিয়ান ট্র্যাডিশনাল ফেস্টিভ্যাল ‘চুসক’-এর ছুটি চলছিল তখন, এক হপ্তা ক্লাস নেই, প্রফেসরের ঝারি আর চোখ রাঙানি-ও দেখতে হবেনা কিছু দিন। সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম মামুন ভাইয়ের বাসায়, লালনের গান চলছিল, বাড়ির পাশে আড়শী নগর... বাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। কতদিন দেখিনা প্রিয়জনদের মুখ গুলো। হঠাৎ করেই মামুন ভাইয়ের প্রস্তাব, এবারের চুসকের ছুটিতে গোজে দ্বীপে ঘুরতে যাওয়া যাক। সবাই হৈ হৈ করে উঠলো, গোজে দ্বীপ কেন? মামুন ভাইয়ের নির্লিপ্ত উত্তর, কারন এই দ্বীপটি নুভানের চেনা।

প্রায় চারশত বর্গকিঃমিঃ-র এই গোজে দ্বীপে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জাহাজ নির্মান প্রতিষ্ঠান গুলো রয়েছে, একারনে গতবৎসর প্রফেসরের সাথে গিয়েছিলাম সেখানে, কিন্তু পুরো দ্বীপটি ঘুরে দেখবার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি, তাই এবার আর সেই চান্সটি মিস করতে চাচ্ছি না। আর আইল্যান্ডে এডভেঞ্চারের কথা শুনে সবাই যাবার জন্য এক পায়ে খাড়া। সিদ্ধান্ত নেয়া হল পড়শুদিন সকালে রওনা দেব আমরা।


যাত্রা হল শুরু


মনে হয় যেন আজীবন থেকে যাই ...


দুজন নারী আর পাঁচজন পুরুষের এই সাত সদস্যের টিম সক্কাল-সক্কাল বেড়িয়ে পরলাম গোজে আইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে, প্রথমে আমাদের গন্তব্য- এক্সপ্রেস বাস টার্মিনাল, এরপর বাসে করে দ্বীপ যাত্রা। ক্যাম্পাসের কাছ থেকে সাবওয়ে-তে করে বাস টার্মিনালে যাচ্ছি আমরা। কোরিয়ার একটা জিনিস বেশ লাগে আমার আর তা হল এদের যোগাযোগ ব্যাবস্থা, কেউ চাইলে খুব ক্যালকুলেটিভ ওয়েতে বের হতে পারে ঘর থেকে, যেমনঃ আমাদের বিশ্বঃবিদ্যালয় থেকে পাবলিক ট্র্যান্সপোর্টে করে বাস টার্মিনালে যেতে পঁয়তাল্লিশ মিনিট লাগবে, এক্কেবারে ঘড়ি ধরা, দু’এক মিনিট এদিক ওদিক হতে পারে বড়জোড়। বাসের জন্য অপেক্ষা করছি সবাই টার্মিনালে, মামুন ভাই এদিকে তার সদ্য কেনা আইফোনটি নিয়ে হিসেবে ব্যাস্ত, আমাদের ক্যাশিয়ার যে উনি।


আমাদের পেনসন ...


জাহাজীর ট্রলারখানা ...


হাস্যরত দুই কোরিয়ান বালিকা...

গোজে দ্বীপে যেখানে আমরা উঠবো সেই ‘পেনসনের’ মালিককে আগেই বলে রাখা ছিলো আমাদের রিসিভ করার জন্য। ওখানে ট্যুরিস্টদের জন্য আবাসিক মোটেলগুলোকে পেনসন বলে। বাসে আমি ঘুমিয়ে কাটালেও সদ্য কোরিয়া আগত তিন সহযাত্রী উৎসুক দৃষ্টিতে বাহিরে নেত্রক্ষেপন করছে আর মুখদিয়ে হর্ষমিশ্রিত বিষ্ময়কর বাক্য বেরিয়ে আসছে তা বুঝতে আর বাকি রইলনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে নষ্ট না করেও যে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধার যোগান দিয়ে একটি উন্নত লোকালয় গড়ে ওঠা সম্ভব তার প্রকৃষ্ট উদাহরন এই গোজে দ্বীপ। ভূল বলছি, শুধু গোজে নয় বরঞ্চ পুরো কোরিয়া দেশটি এরকম। গিয়ে দেখি বাসটার্মিনালে সেই পেনসনের মালিক তার ছেলেকে নিয়ে আমাদের জন্য বাস টার্মিনালে অপেক্ষমান। লাঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছিলো, তাই কিছু খাবার মুখে দেয়ার জন্য রেষ্টুরেন্টে ঢুকলাম আমরা।
(চলবে...)
গোজে দ্বীপে স্বেচ্ছানির্বাসন -২
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৮
২৭টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×