২য় পর্ব২য় পর্ব
৩.
এক্সরে রির্পোটে দেখা যাচ্ছে বাম পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছে মইনের।
প্লাস্টার করা হবে, মইনের বন্ধু সাব্বির গিয়েছে জরুরী ওষুধ আনতে। মইন ব্যাথায় মুখ বিকৃত করে শুয়ে আছে সে। মিতুর খুব মায়া হচ্ছে। হোন্ডা চালাতে মইনকে অনেক বার নিষেদ করেছে মিতু। হোন্ডা দেখলেই তার ভয় হয়। আনিস কে উদ্দেশ্য করে মিতু বলে, আপনি কেন ওরে বাইক চালাতে দিলেন? জানেন না ও একটা গাধা!
আনিস মাথা নিচু করে মিতুর কথা শুনে যায় উত্তর দেবার সাহস হয়না। আনিস ভাল করেই মিতুকে জানে। রাগে মিতুর চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। গাধাটার জন্য তার কেন যে এত কষ্ট হচ্ছে, ভেবে পায়না সে। পাশে দাড়ানো সৌরভকেও সে গাল মন্দ করে। ঝড়ের বেগে রুমে ঢুকে মইনের মা সাজেদা বেগম। বিছানার কাছে গিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে সে। মইন বিরক্ত হয়ে বলে আনিস তুই আবার মাকে খবর দিতে গেলি কেন? কান্না থামাইবা মা?
মিতু বলে, আমিই খালাকে খবর দিয়েছি। পা ভেঙে বসে আছ। একমাস শুয়ে থাক এবার। সারাক্ষন বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর ঝাল বুঝো! খালা ছাড়া কে আছে তোমার? কে দেখবে তোমায়?
কেন তুই দেখবি? আমি সারা জীবন তোর জন্য কত কিছু করলাম। মইন হাসে। ব্যাথার কাতরতা পেরিয়ে সে হাসি ভারি বিশ্রী লাগে মিতুর। সে উঠে দাড়ায়। কেবিন থেকে বের হয়ে লন দিয়ে হেটে বারান্দায় দাড়িয়ে থাকে সে। বাইরে আলো নিভে যাচ্ছে খুব দ্রুত। ফ্যাকাসে লাল আলো। অথচ সকালে এই আলোর কত রং থাকে! বাসায় ফিরতে হবে। মা বাসায় গেলে বকবে। কেন যে সে হঠাৎ করেই মইনকে দুর করে দিতে চাইছে তা বুঝতে পারছে না মিতু। সে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে। কেন যেন আজ সারা রাত নির্বোধটার জন্য জেগে থাকতে ইচ্ছে করছে তার। কেন এমন ইচ্ছে হচ্ছে তার? সে প্রশ্নর উত্তর জানা নেই মিতুর। ভালবাসার মানুষের শাররীক কষ্ট অন্য জনের হৃদয় যে এভাবে ভেঙে দেয় জানা ছিলনা তার। মইনের আহত মুখটা ভেসে উঠছে তার চোখে বার বার। বুকটা কষ্টে ভেঙে যেতে চাইছে। কেন এমন লাগছে তার?
কিরে মা এখানে একা দাড়িয়ে কি করছিস? মইন কোথায়?
বাবাকে দেখে মিতুর খুব ভাললাগে। বুকে শক্তি ফিরে আসে। সে জানে তার বাবা তাকে সব সময় অনেক ভালবাসে। বাবাকে বিপদে কাছে পেয়ে চোখ মুছে সে পা বাড়ায় মইনের কক্ষের দিকে।
চলবে........
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



