somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বাড়ি, সে তো আমার নয় !

২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এই পোস্ট লিখতে শুরু করার পর শুধু ভাবছি, প্রথম পাতায় কি এটা দেবো, না কি দেবো না । ব্লগের অনলাইন লিস্টে যেভাবে চৈত্র মাসের খরা চলছে মনে হচ্ছে যেন রমজান শেষ হবার পর ব্লগারগণ ব্লগিং ছেড়ে দিয়েছেন । আগে দেখতাম বিকেলবেলা সত্তর আশিজনের নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে, এখন সংখ্যাটা অর্ধেকে নেমে এসেছে ।
ঈদের ছুটিতে এখনো সবাই ব্যস্ত ? নাকি ব্লগে দেবার সেই সময়টা এখন ফুটবল খেলা দেখে সবাই কাটাচ্ছেন কে জানে ।
এনিওয়ে, মূল কথায় আসি ।
এবার ছুটিতে বাড়ি যাবার পর একটা চিন্তা এলো । আমি আমাদের পুকুর ঘাটে একা বসে ভাবছিলাম, গ্রামের বাড়িটা আমাদের কি কাজে লাগে ? শুধু ঈদের ছুটিতে দুই তিনদিন থাকার জন্য গ্রামের বাড়ি আসি আর সারাবছর বাড়িটাতে ঘুঘু চরে । আমার কল্পনার মাঝে ছেদ পড়ল বাবার কারণে । বাবা এসে জানতে চাইলেন আমি একা বসে কি ভাবছি । কোন রাখঢাক না করে বাবাকে বলেই দিলাম, বাবা আমাদের এতো বড় বাড়ির কি দরকার ছিল ? আমাদের সবার জন্ম হয়েছে শহরের হাসপাতালে, সবার বিয়ে শাদি হচ্ছে শহরের কমিউনিটি সেন্টারে, খুব সম্ভবত মারাও যাবো শহরের কোন এক হাসপাতালে । এই যে টিনের চালার এতো সুন্দর বাংলো ঘর, এখানে তো আমরা বাঁচিও না মরিও না । এই বাড়িঘরের কি দরকার ছিল ?
বাবা হেসে বললেন, মরার পর কবর দিতে হবে তো এই বাড়ির পাশের গোরস্থানে । মরার পর কুলখানি করার জন্য আত্মীয় স্বজন সবাই আসবে এই বাড়িতেই, তখন কেউ কমিউনিটি সেন্টারে যাবে না ।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম, বুঝেছি বাবা, এই বাড়ি তাহলে তোমার জন্য, মায়ের জন্য, আর ভাইয়ার জন্য । তোমরা মরে গেলে এখানেই তোমাদের কবর হবে । আপাকে তো অন্য জায়গাতে বিয়ে দিয়ে দিয়েছ । সে এই বাড়িতে মরতে আসবে না । তার কবর হবে দূরে কোথাও । আমারও একই পরিণতি হবে, তাই না বাবা । তার মানে তো এই বাড়ি ঘর মোটেই আমার নয় ।

আমার কথা শুনে বাবা একদম চুপ হয়ে গেলেন । আমার চালাক বাবা তখন হয়ত মনে মনে একটা জুতসই উত্তর খুঁজছিলেন । নীরব বিকেল বেলা আমাদের নীরবতায় আরো নীরব হয়ে গেল । যেন আমরা বাপ বেটি কবরস্থানে বসে আছি, সেরকম চমৎকার নীরব পরিবেশ ।
আমি বেশিক্ষণ থাকিনি । বাবাকে পুকুর ঘাটে একা রেখে আস্তে উঠে ঘরে চলে গেলাম । আমার বাবা হয়ত তখনো বসে উত্তর খুঁজছিলেন ।

বাবা বাকপটু লোক । আমি জানি তিনি খুব শীঘ্রই আমার এই প্রশ্নের একটা ভালো জবাব দিবেন । হয়ত আজ কালের মধ্যেই তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে কিছু একটা বলবেন । দেখি, আমার চালাক পিতাজি আমাকে কি বলে সান্ত্বনা দেন ।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০১
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×