somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই দুইটা গার্লফ্রেন্ড নিয়া পরছি আমি ফান্ডে ( দি এন্ড)

৩০ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-আসো না একবার !
-নূপুর একটু বোঝার চেষ্টা কর । আমি আজ সারাদিন দিন বাইরে । একটু আগে বাসায় এসেছি । খুব ক্লান্ত । এখন কিভাবে আসবো বল ?
-কিছু করতে হবে না তোমাকে । আমি গাড়ি পাঠাচ্ছি । বেশি সময় তো লাগবে না ।
-নূপুর !
-প্লিজ অপু । তুমি কথা দিয়েছিলে ।
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললাম
-আচ্ছা ঠিক আছে । কিন্তু বেশিক্ষন কিন্তু থাকবো না ।
-ওকে । কেবল রাতের খাবার খেয়ে চলে যাবে । আর কিছু লাগবে না । আমি এখনই গাড়ি পাঠাচ্ছি ।
আমি ফোন রেখে দিলাম । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় সাড়ে দশটা বাজে ।
এতো রাতে কি নূপুরে বাড়িতে যাওয়া ঠিক হবে ? কিন্তু না গিয়ে উপায়ও বা কি ?
সকালবেলা কথা দিয়েছিলাম যে বিকেলে দেখা করবো কিন্তু নিশির জন্য আর হয়ে ওঠে নি ।
নিশি আজ কেমন যেন অদ্ভুদ আচরন করছিল । একটু যেন বেশিই কেয়ারিং !
নিশি এমনিতে কেয়ারিং কিন্তু আজ যেন একটু বেশি বেশি করছিল ।
এটা একটু অস্বাভাবিক ! যাক আমি অত কিছু ভাবলাম না ।
নূপুরে বাসায় যাওয়ার জন্য প্রত্তুতি নিলাম ।
আচ্ছা নূপুরের প্রতি কি আমি খানিকটা দুর্বল হয়ে পরছি ? কিছু সময় ধরে কারো সাথে মিশলে তার উপর একটু দুর্বলতা তো আছে ! আমার নূপুর আমার উপর যেমন ভাবে দুর্বল সেটাকে উপেক্ষা করাটা খানিকটা দুষ্কর ।
আমি মাঝে দুজনের মধ্যে কমপেয়ার করে ফেলি ।
যদিও কমপেয়ার করাটা একদমই ঠিক না ।
নিশির সাথে আমার রিলেশনটা স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে । নিশি আমাকে ভালবাসে কেবল আমার জন্যই ।
কিন্তু নূপুরের ব্যপারটা এরকম নয় । নূপুর আমার উপর দুর্বল তার কারন আমি না । তার কারন কেবল আমার চেহারাটা ওর হাসবেন্ডের মত ।
যদি অন্য কারোর চেহারা ঐ ভদ্রলোকের মত হত তাহলে তো নূপুর তার দিকে ঝুকে পরতো ।
সেখান দিয়ে নিশি একমাত্র !!
আমার জীবনে আর কারো অবস্থান থাকাটা ঠিক না ।
কিন্তু নূপুরকে উপেক্ষা করাটা খানিকটা কষ্টকর হয়ে উঠছে ।
জানি নি সামনে কি আছে ! আমার সব থেকে ভয় লাগে নিশি যদি ব্যাপারটা জানতে পারে তাহলে ব্যাপারটা কিভাবে নিবে কে জানে ?
তবে আমার বিশ্বাস নিশি বুঝবে ।

গাড়ি থেকে নূপুরের ফ্লাটের সামনে নামলাম তখন রাত প্রায় সাড়ে এগারো টা । ওর ফ্লাটের সামনে দাড়িয়ে খানিকটা চমকালাম । ও দরজা ধরে দাড়িয়ে আছে ।
দাড়ানোর ধরনটা একটু ভিন্ন ! তার সাথে ওর চোখের দৃষ্টিটাও কেমন যেন একটু অন্য রকম ।
আর সব থেকে অস্বাভাবিক যে ব্যাপারটা সেটা হল ওর পোষাক !
আমি নূপুরকে সাধারনত শাড়ি অথবা থ্রী পিচে দেখেছি কিন্তু আজ ?
ও মাই গড !
নূপুর কেবল একটা টপস আর সাদা রংয়ের ল্যাগিংস পরে আছে ।
এমন কি ওরনাও পরে নি । কেমন একটা উগ্র উগ্র ভাব রয়েছে ।
আমার মনটা আবার একটু কু ডেকে উঠল । ওর ঘরে ঢুকতে আমার কেমন একটা অস্বস্থি লাগছে । নূপুর বলল
-এসো !
আমার অস্বস্তি আরো খানিকটা বেড়ে গেল । নূপুর বলল
-আমাকে কেমন লাগছে ?
কি রে ভাই এটা আবার কেমন প্রশ্ন হল ?
আর আজকে মেয়ে গুলার হইলো কি ? নিশিও কেমন আদুরে আদুরে আচরন করছিল । এ ও ওরকম শুরু করেছে । আমি বললাম
-ভাল লাগছে ।
-জানো ও আমার টপস পরা অনেক পছন্দ করতো । আজ অনেক দিন পর এমন পোষাক পরলাম ।
ও মানে নূপুরের হাজবেন্ড ! কিন্তু ঐ বেটা পছন্দ করলে আমার কি ? আমার সামনে এমন পোষাক পরেছে ? আমি বললাম
-কেন ?
-তোমার জন্য !
আমার জন্য ! বলে কি এই মেয়ে ? এই মেয়ের ভাব চক্কর আমার মোটেও ভাল ঠেকছে না ।
আর এতো রাতে এর বাসায় আসা আমার একদম ঠিক হয় নি ! বললাম
-দেখো নূপুর ....
নূপুর আমাকে কথা শেষ করতে না ধিয়ে বলল
-প্লিজ অপু আজকে আমার একটা আবদার রাখো । আমি আর কোন দিন তোমার কাছে কিছু চাই বো না । প্লিজ ।
একথা বলতে বলতেই দেখলাম নূপুর আমাকে জড়িয়ে ধরতে আসলো ।
-নূপুর থামো । থামো বলছি ।
-কি হবে অপু ?
ওর চোখে কেমন এক আকুতি । একবার মনে হল ওর এই আকুতিকে প্রশ্রয় দেই । পরক্ষনেই নিজেকে খানিকটা ধিক্কার দিলাম ।
সিঃ এসব কি ভাবছি আমি । খুব কঠিন গলায় বললাম
-থামো বলছি । কি হবে তুমি বুঝতে পারছো না ? এরকম করলে কিন্তু আমি তোমার সাথে আর যোগাযোগ রাখবো না ।
এবার দেখলাম নূপুরের চেহারাটা কেমন যেন এগ্রিসিভ হয়ে উঠল । নূপুর বলল
-তুমি কিন্তু এটা ঠিক করছো না । আমার চাওয়ার কি কোন মূল্য নাই তোমার কাছে ? তুমি যদি আমার কথা না শোন তাহলে কিন্তু আমি নিশিকে সব কিছু বলে দিবো ।
-কি বললে তুমি ?
আমার রাগ হয়ে গেল হঠাত্‍ ।
এই মেয়ের এতো বড় সাহস ! আমাকে ব্লাকমেইল করতে চায় । বললাম
-কি বললে তুমি আবার বল ? বলে দেবে ? কি বলে দেবে ? তোমার সাথে আমি কি করেছি যে বলে দেবে ।
রাগটা আসতে আসতে বাড়তে থাকলো । আবার বললাম
-শোন নূপুর ! তোমাকে আমার চেনা হয়ে গেছে ! নিশিকে সব কিছু বলে দাও । আমার কোন আপত্তি নাই । নিশিকে আমি মেনেজ করে নেবো । কিন্তু আজকের পর থেকে তোমার সাথে আমার কোন যোগাযোগ থাকবে না এটা মনে রেখ ।
আমার রাগ বাড়তেই থাকল । সত্যি সত্যি আমার রাগ হতে লাগল খুব ।
এই জন্য মানুষকে লাই দিতে নাই । বসতে দিলে এরা শুতে চায় !!
নূপুর মনেহয় বুঝতে পারল আমি রেগে গেছি । গলা নরম করে বলল
-আই এম সরি অপু । আমি ... আমি ...
-নূপুর আমি এখন বাসায় যাবো ।
-প্লিজ অপু যেও না । আমি বুঝতে পারি নি । আমি একদম বুঝতে পারি নি !
বলে নূপুর কাঁদতে লাগল ।
ঐ যে আবার সেই একই হাতিয়ার । মেয়েদের চোখের জল দেখলে ছেলেরা একটু দুর্বল হয়ে ওঠা ।
আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনই ভেতরের ঘর থেকে নিশি বের হয়ে এল ।
নিশি !
নিশি !
নিশি এখানে কি করে ?
নিশি এখানে কিভাবে এল ?
নিশি সরাসরি আমার কাছে এসে বলল
-চল এখান থেকে । আই হেভ লিসেন্ড এনাফ ।
তারপর নূপুরের দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি তোমাকে বলেছিলাম তুমি জিততে পারবে না ! তুমি জিততে পারো নি ।
নিশি আমাকে নিয়ে বের হয়ে চলে এল ।

রাত বেশ হয়ে গেছিল । রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা । আমি রিক্সায় নিশির পাশে বসে আছি । খানিকটা ভয় ভয় করছে । জানি না ও কি বলবে । প্রথমে কিছুক্ষন চুপ করেই ছিল । নিশির মুখটাও গম্ভীর ছিল । হঠাত্‍ বলল
-ওর কত দিন ধরে লুকাচ্ছ আমার কাছ থেকে ? সব বল ।
আসতে আসতে সব বললাম ওকে । সব শেষে বললাম
-তুমি রাগ করছো ? আসলে আমি তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম । কিন্তু....
-প্রথমে একটু করেছিল । কিন্তু এখন আর রাগ নাই । তবে আমার মনে একটা বিশ্বাস ছিল যে তুমি আনফেয়ার কিছু করতে পারবে না । কিন্তু নূপুর যখন ফোন করে বলল যে তুমি ওর প্রতি ইনভল্ভ হয়ে গেছো আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল ।
-ফোন করে কি বলেছে ?
-আমাকে ফোন করে বলল যে তুমি আর আমাকে ভালবাসো না । তুমি ওকে ভালবাসো । এবং সে এটার প্রমান দিবে । তারপর আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে গেল ।
আমি কিছুক্ষন কিছু কথা বলতে পারলাম না । নূপুর নিশির সাথে আমার ব্রেক আপ করিয়ে নিজের পথ ক্লিয়ার করতে চেয়েছিল । কি প্লানিং করেছিল । আমি যদি ওর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যেতাম ....
আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না । নিশি বলল
-জানো আমার মনে এই বিশ্বাসটা ছিল যে তুমি আমাকেই ভালবাসো । এজন্য আমি নূপুরকে সরাসরি বলেছিলাম যে তুমি এমন কিছুই করবে না । আমি জিতেছি । কিন্তু আমি আর রিস্ক নেবো না ।
-মানে কি ?
-মানে হল পুরুষ মানুষের বিশ্বাস নেই । আজ আমাকে না জানিয়ে ওর সাথে সম্পর্ক করেছ ! কাল না জানি কি করবা ?
-নিশি কি বলছ এসব ? আমি এরকম কিছুই করি নি ।
-কর নি ! করতে কতক্ষন ! পুরুষ মানুষের বিশ্বাস নাই ।
-নিশি !
-শোন বলেছি না আর আমি রিস্ক নেবো না । কালকেই আমরা আমরা বিয়ে করবো । এখনই বিয়ে করতাম । কিন্তু এখন কাজী পাওয়া যাবে না । আগে বিয়ে করে নেই তারপয় মজা বুঝাবো ।
আমি চুপ করে থাকি । নির্জন রাস্তা দিয়ে রিক্সাটা এগিয়ে চলে টুংটাং করে শব্দ করতে করতে ..


আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:২৫
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×