somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ের সাক্ষী সাপ্লাই কোম্পানী !

২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ভাবতেই পারি নি এমন কিছু এই দুনিয়াতে থাকতে পারে ! তবে যাক ! ভালই হয়েছে ! আমাদের ঝামেলা দুর হয়েছে ! নিশি বলল
-যাও ! গিয়ে কথা বল !
আমি বললাম
-হ্যা ! বলবো ! ভাল হল না ? আমাদের একটা সমস্যার সমাধান হয়ে গেল ।
নিশি মিষ্টি করে হাসলো !
-বুঝলাম ! যাও !
-আরে বাবা যা্ছি ! বিয়ে করার জন্য এতো উতলা হয়েছ কেন ?
নিশি একটু লজ্জা পেল যেন !

অনেক দিন ধরে আমি নিশি বিয়ে করার চিন্তা করছিলাম ! আসলে নিশি নিজে খুব উতলা হয়েছিল ! কিন্তু আমি চাচ্ছিলাম ব্যাপার টা যেন কেউ না জানে ! গোপন রাখতে চাচ্ছিলাম ! একটু কারন অবশ্য ছিল !
যাক সে কথা !
সকালের দিকে নিশি আমার বাসার সামনে এসে হাজির । বলল
-আজ আমাকে তোমার বিয়ে করতেই হবে !
-আরে বাবা ! ফট করে বললেই হল ! একটা প্রস্তুতির ব্যাপার আছে না ।
-কোন প্রস্তুতির দরকার নাই ! তুমি কেবল চলে ! আমি আজই তোমাকে বিয়ে করতে চাই ! আজকেই এবং আজকেই !
নিশি যতই ছেলেমানুষী করুক, ওকে অনেক ভালবাসি তো তাই রাজি হয়ে গেলাম । আর বিয়ে তো একদিন করতেই হবে সুতরাং আজই নয় কেন !!

মগবাজার কাজী অফিসের সামনে যখন নামলাম তখন মনে হল যে বিয়ে করতে তো সাক্ষী লাগে ! এখন সাক্ষী পাই কই ?
আমি নিশিকে বললাম
-বিয়ে যে করবো তা সাক্ষী পাবো কোথায় ?
-আমি কি জানি ! তুমি বিয়ে করবা তুমি জানো !!
-মানে কি ?
-মানে জানো না ! বিয়ে করতে যাচ্ছ এটা আগেই ভাবা উচিৎ ছিল !
এই ফাজিল মেয়েকে আমি কি বলবো ?
এখন যেন আমার সব ঠ্যাকা !
এই জন্য মেয়েদের উপর মাঝে মাঝে মেজাজ গরম হয়ে যায় ! কোন কিছু না ভেবেই একটা কাজে লাফিয়ে পড়ে ! আর যখন কোন ঝামেলা হয় তখন এমন একটা ভাব যেন কিছুই জানে না । এই কাজ তারা করতেই পারে না !

আমি নিশিকে আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই আমার চোখ গেল সাইনবোর্ডটার উপর ! আমি সত্যিই ভাবতেই পারি নি এমন কিছু হতে পারে !
এমন কিছু হতে পারে !
আমি নিশি কে দেখালাম সাইনবোর্ডটা !
আমার মত নিশিও অবাক হল মনে হল ! তারপর মুচকি হেসে বলল
-সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে ! যাও । গিয়ে কথা বলে দেখ !

আমি সাইনবোর্ডটার দিকে এগিয়ে গেলাম । সাইনবোর্ডটাতে গোটা গোটা গোটা করে লেখা

বিয়ের সাক্ষী সাপ্লাই কোম্পানী !
মগবাজার, ঢাকা


সারা জীবনে কত সাপ্লাই কোম্পানী শুনেছি আহ এই প্রথম সাক্ষী সাপ্লাই কোম্পানীর নাম শুনলাম ! তাও আবার বিয়ের সাক্ষী !!
আমি কোম্পানীর ভিতরে ঢুকলাম ! বেশ কিছু চেয়ার সাজানো রয়েছে ! একটা বড় সেক্রেটারী টেবিল তার ওপাশে একজন সু্ন্দরী মেয়ে বসে কি যেন পড়ছে । আমাকে দেখে মিষ্টি করে হাসলো ! বলল
-কি সাহায্য করতে পারি ?
-আমি আসলে উপরের সাইনবোর্ডটা দেখে এসেছি !
-ও !
মেয়েটা আবার একটু হাসলো ! বলল
-আপনি কি কেবল কৌতূহল থেকেই এসেছেন নাকি আপনার সাক্ষীও লাগবে ?
আমি একটু হেসে বললাম
-আসলে দুটোই !
মেয়েটি বলল
-এরকম কোম্পানী এদেশে নতুন তো তাই অনেকেই আসে কৌতুহল থেকে ! তবে দিন দিন আমাদের চাহিদা বাড়ছে !
-কি রকম ? একটু খুলে বলবেন প্লিজ ! আসলে আমার খুব কৌতুহল হচ্ছে ! এরকম কোম্পানী আসলেই নতুন !
-আচ্ছা আমি বলছি !
-হ্যা ! বলুন প্লিজ !
-আসলে আমাদের কোম্পানীর যে মালিক তিনি যখন তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে পালিয়ে বিয়ে করার জন্য কাজী অফিসে যায় এবং দেখে যে বিয়ে করারা জন্য তাদের পাশে কেউ নেই । মানে বিয়ে করার জন্য যে সাক্ষী লাগে তেমন কোন সাক্ষী নেই ! কেবল একটা সাক্ষীর অভাবে সে দিন সে বিয়ে করতে পারে নি ! তখনই তার মাথায় এই বুদ্ধি আসে ! কাজী অফিসের সামনে এমন একটা অফিস থাকবে যেখানে বিয়ের জন্য রেডিমেড সাক্ষী পাওয়া যাবে !
আমি মাথা নাড়লাম ! ভাল একটা বুদ্ধি বের করেছে ভদ্রলোক !
আমি বললাম
-তা আপনাদের ব্যবসা কেমন চলছে !
-খুবই ভাল !
-খুবউ ভাল ? লোকজন আসে ?
-আপনি এসেছেন না ?
আমি হাসলাম !! বললাম
-তা আপনাদের সাক্ষী কি হিসাবে সাপ্লাই দেন !
মেয়েটি আমাকে একটা কাগজ ধরিয়ে দিল !
এখানে বিভিন্ন রেট লেখা আছে !
যেমন
প্রথম শ্রেণী সাক্ষী ৫০০ টাকা !
২র শ্রেণী সাক্ষী ৩০০ টাকা !
সাধারন সাক্ষী ২০০ টাকা !

আমি মেয়েটিকে বললাম
-প্রথম শ্রেণী সাক্ষী মানে টা কি ? আর সাধারন সাক্ষী মানে কি ?
মেয়েটি আবার হাসলো ! বলল
-প্রথম শ্রেণী সাক্ষী হল তাদের জন্য যারা পালিয়ে এসেছে কিন্তু চাকরী করে ! পয়সায়ালা ! কিংবা বড় লোক বাপের সন্তান !
আমি বললমা
-তাহলে কি সাধারন সাক্ষী বেকার দের জন্য ?
মেয়েটি হেসে বলল
-এই তো আপনি বুঝতে পেরেছেন ! তা আপনাকে কোন শ্রেণীর সাক্ষী দিবো !
আমি বললাম
-আমি এখনও পড়ালেখাই করি ! আমাকে সাধারন সাক্ষী দেন !
-আচ্ছা !
আমি বললাম
-আমি তো ছাত্র আমার জন্য হাফ রাখা যায় !
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি কি বাস ভাড়া দিচ্ছে যে হাফ দিবেন ? তবে ছাত্র দের জন্য আমাদের স্পেশাল অফার আছে ! আপনি যদি দুজন সাক্ষী নেন তাহলে ৩০০ টাকায় হয়ে যাবে ! দিবো ?
-ধন্যবাদ ! দিন !

আমি সাক্ষী নিয়ে বের হয়ে এলাম । আমার পিছনে লোকজন দেখে নিশি মিষ্টি করে হেসে উঠল !!
আমি ধন্যবাদ দিলাম ঐ ভদ্রলোক কে !!
যাক আমার বিয়েটা তো হয়ে যাবে !!



ভাবছি এমন একটা কোম্পানী খুলেই ফেলবো নাকি !! =p~ =p~ =p~ B-)) B-))


যারা এই গল্পটি পড়েছেন দয়া করে এই গল্পটিও পড়ুন । অনুরোধ রইলো !
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৫
২৪টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×