কেরালার নিপা ভাইরাস সংক্রমনে মৃতের সংখ্যার এই মুহূর্তে এগারজনে দাঁড়িয়েছে । প্রতিবেশী কর্ণাটকেও ঢুকে পড়েছে এই মারণরোগ । গতবছর শিলিগুড়িতে অজানা জ্বরে একাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে শিলিগুড়ি হাসপাতালে কর্মরত একজন ডাক্তার বাবুও ছিলেন । অনুমান করা হচ্চে সেসময় নিপার সম্ভাবনা এর মধ্যে থাকতে পারে । আর এর অন্যতম বাহক হিসাবে এবারও সে রাজ্যে কর্মরত শয়ে শয়ে রাজমিস্ত্রিদের শরীরের মাধ্যমে এরাজ্যেও ঢুকে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । কিন্তু যারা এই রোগের বাহক সেই বাদুড়রা কখনই অসুস্থ হয়না এই মারণরোগে ।
সম্প্রতি হিমাচলে ১৫ টি বাদুড়ের মৃত্যুতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে । তাদের মতে নিপার সংক্রমণের কারনেই বাদুড়ের মৃত্যু ঘটেছে । কিন্তু বিজ্ঞানীরা এ আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন । তাদের যুক্তি, মানুষ সহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহে সংক্রমিত নিপা সহ প্রায় ৬০ টি জীবাণু বাদুড়ের দেহে বাসা বেঁধে থাকে । অন্যান্য কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল - ব্যারিস, হেন্ড্রা, সার্স, রিওভাইরাস এমনকি ভয়াবহ ইবোলার জীবাণুও । উল্লেখ্য এতগুলি রোগের জীবাণু বহন করলেও বাদুড়দের মধ্যে রোগ সংক্রমণের নজির নেই ।
কী কারনে এই সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে বাদুড়রা? এ সম্পর্কে দুটি গবেষণার রিপোর্ট একটু দেখে নেওয়া যাক । ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী মিশেল বেকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, মানুষের মত জটিল ও শক্তপোক্ত রোগ প্রতিরোধ শক্তিতে বাদুড় তুলনায় দুর্বল । কিন্তু তার দেহে সবসময় প্রতিরোধক ক্ষমতা চালু থাকে, সেক্ষেত্রে মানুষের কোনও সংক্রমণ ঘটলে তবেই প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয় । বেকারের দাবি, প্রতিরোধ শক্তির এই আচরণগত পার্থক্যই বাদুড়কে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করছে ।
অন্যমতে, দীর্ঘপথ ওড়ার কারনে বাদুড়ের দেহের তাপমাত্রা পাখিদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ । এরফলে তাদের বিপাক পক্রিয়া খুবই গতিশীল । ২০০৫ সালে আমেরিকার ইউ এস জি এস ফোর্টের কলিন্স সামান্স নামক বিজ্ঞানীরর রিপোর্টে বলা হয়, দীর্ঘ পথ ওড়ার কারনে তাদের বিপাক পক্রিয়া খুব গতিশীল যে কারনে একাধিক রোগের জীবাণু বহন করলেও তাদের শরীরে রোগ সংক্রমিত হয়না । যেটা ইঁদুর বা মানুষের মত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে । এহেন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ধারকের দেহে বাসা বাঁধার কারনে শক্তিশালী হয়ে ওঠে জীবাণুকুলও ।
কৃতজ্ঞতা - এই সময় ওয়েব পেজ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৮ সকাল ৮:১৮