কলিজাকে ডাক্তার দেখিয়ে Prescription নিলাম ।
মোবাইলে Prescription এর ছবি তুলে ফার্মেসিতে গেলাম ঔষধ কিনতে।
বল্লো হবে না,
অরিজিনাল Prescription ছাড়া কোন মতেই ঔষধ দিবেন না ।
না তো নাই।
= বাসায় আছে, পরে দিয়ে যাই ?
= না, হবে না । কুড়ালের কুপ খামু তবুও Prescription ছাড়া ঔষধ দিমু না।।
= ছেকা খেয়ে বেকা হয়ে ফেরত আসলাম।
বাসায় এসে ফটোকপি পকেটে রেখে Original Prescription দিয়ে বাচ্চার জন্য ঔষধ কিনলাম ।
২ মিলি করে ৮ ঘন্টা পরপর ৭ দিন খাওয়াতে হবে।।
১ দিন মাত্র খাওয়াইছি।
সহজ সরল (পড়ুন বেক্কল) মহিলা ঔষধটি টেবিলের উপর রেখে রান্না ঘরে গিয়েছেন তরকারি ঘুটা দিতে ।। (ঐ দিন তরকারিতে ঝাল বেশি হইছিলো) ।
ঘুটা শেষে এসে দেখেন পুরো ঔষধের বোতল মেঝেতে ঢেলে কলিজায় পিছলা খেলতেছে।।
কেমুনডা লাগে কন???
কি করি, কি করি!!
Prescription যে one time use.
আবার ফার্মেসিতে গিয়ে হাতে পায়ে ধরলাম।।
but, নো ওয়ে।
আবার ডাক্তার দেখাও, original Prescription দিয়ে ঔষধ নিয়ে যাও । না হলে রাস্তা মাপো।
ডাক্তারের চিতা (Appointment) পেতে আবার মিনিমাম ৭ দিন।
এতদিনে অসুখ পুয়াতি হয়ে বাচ্চাও ডেলিভারী দিবে।
কি করি, কি করি।
অফিসে এসে ফটোকপির উপর নতুন কলম দিয়ে ডাক্তরের সাইন ওভার রাইটিং করে নকল করলাম ।
(নিজের কলিজা বলে কথা)
অফিসের পাশে একটা ফার্মেসি আছে যেখানে একজন সহজ সরল (পড়ুন বেক্কল) টাইপের ফার্মাসিস্ট (নাম হামযাহ্) এর কাছে ভয়ে ভয়ে নিয়ে গেলাম। (অন্তরে ডর; ধরা খাইলে এতদিনের ইজ্জত পকাত)
হামযাহ একটু সন্দেহ করলেও রেগুলার কাস্টুমার বলে অবিশ্বাস করলো না।
পাহলভী এটি ডুপ্লিকেট করতেই পারে না। য়ুহু....
দিয়ে দিলো।
এ নিয়ম শুধু ফরেনারদের জন্য।।
যারা রেগুলার ঔষধ কিনেন তাদের ঘটনা শুনতে চান??
ওকে, সংক্ষেপে বলছি। পারলে শেয়ার দিয়েন।
এখানে বসবাসরত সকল প্রানীর একটা করে মেডিকেল কার্ড আছে।
সেই কার্ড সকল রেজিস্টার্ড ডাক্তার+সকল ফার্মেসী+সকল ডায়াগোনোস্টিক ল্যাবের সাথে অনলাইন কানেক্টেড।
মানে,
ডাক্তার যদি রোগীকে একটা কৃমির ঔষধ ও লিখে সেটা সকল ডাক্তার+ফার্মাসী+ল্যাব দেখতে পাবে।।
মনে করেন আপনার এইডস হইছে।
ডাক্তার আপনাকে কম্পিউটারাইজড প্রেসক্রিপশন লিখে, কার্ডে ডাটা ইনপুট দিয়ে ল্যাবে পরিক্ষা করতে পাঠাবে ।
আপনি ল্যাবে গিয়ে যদি বলেন আমি যক্ষার টেস্ট করামু তাইলে আপনেরে এমন উষ্ঠা দিবো যে পরে পাইলস এর চিকিৎসা শুরু করতে হবে।।
ল্যাবওয়ালারা আপনার কার্ড চেক করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রেজাল্টের হার্ড কপি দিবে + সেই কার্ডে ডাটা ইনপুট দিয়ে আপনাকে বলবে আদিঅস (মানে বিদায়)।
তারপর সেই পূর্বের ডাক্তার আপনার অবস্থা বুঝে ঔষধ কার্ডে ও কাগজে ইনপুট করে বলবে আদিঅস (মানে বিদায়) ।
আপনি তখন সেই মেডিকেল কার্ড নিয়ে পৃথিবীর (বাংলাদেশ ব্যাতীত) যেকোন ফার্মাসীতে গিয়ে বলবেন কাক্কু আমাকে ঔষধগুলো দিনতো ।
কি ঔষধ দিবে তার নামও আপনার বলার দরকার নাই।
ফার্মাসিস্ট আপনাকে সঠিক মাপ ও ডাক্তারী পথ্যমত ঔষধ দিয়ে ঔষধের যা দাম হয় তার ৪০% রেখে বলবে আদিঅস (মানে বিদায়) ।
(ঔষধের দাম ৬০% সরকার বহন করে) ।
(কি, বিশ্বাস হয়?)
আর দেখুন,
ময়মনসিংহ সানকিপাড়ার আলামিন সাহেব পাদে ব্যাতিক্রমী গন্ধ পায় বলে ভাতের সাথে তিন বেলা এন্টিবায়োটিক খায়। (ফলে আয়ু কমছে৩০ বছর।)
বলে রাখা ভালো,
ওরা প্যারাসিটামল ও কাশির সিরাপ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই দিচ্ছে।
ওদের,
এখানে একেকটা ফার্মাসিস্ট (ফার্মাসীর দোহানদার) একেকজন ডাক্তারের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
আর,
আমার বন্ধুর তিন নাম্বার বৌ এর সৎ মায়ের পুলা বড় পাদি নেতা বলে আমি (আমি না) একটা ফার্মাসী খুলছি তো বটেই, পারলে ঘরে বসে বসে ক্যান্সারের ঔষধ ও বানাই।
=এই পোস্ট লেখতে লেখতে সারা বিডির মুড়ে মুড়ে বুইত্তা বুইত্তা ফার্মাসিস্টরা(!) কতশত এন্টিবায়োটিক ব্যবসা করে যে মানুষের আয়ু কমাচ্ছে তার ইয়াত্তা নাই ।
ফলাফলঃ
ওরা,
জন্মের ১ম দিন থেকে ৯০ বছরের বুড়া মানে মৃত্যু পর্যন্ত তার জীবনে যতগুলো-
১) ডাক্তার চিকিৎসা করছে তার রেকর্ড আছে,
২) কি কি ঔষধ খাইছে তার রেকর্ড আছে,
৩) কি কি পরিক্ষা নিরীক্ষা করছে তার রেকর্ড আছে,
৪) কি কি টীকা পুস করছে তার রেকর্ড আছে,
৫) সরকারের কত টাকা খাইছে তার রেকর্ড আছে,
৬) ভবিষ্যতে তার বাচ্চা কিরকম হতে পারে তা ধারনা করতে পারে,
৭) কোন ডাক্তারের চিকিৎসায় কি ফল হচ্ছে তা মূল্যায়ন করতে পারে,
৮) ভুল ঔষধ বা ভুল চিকিৎসা সম্পূর্ন দূর হয়েছে।
৯) রিপ্রেজেনটেটিভ কি জিনিস এরা জানে না। আরোও আছে.....
আমরাঃ
ধুকে ধুকে অকাল মৃত্যু।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:১২