somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষমতার শোকগাঁথা

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নঈম ছিদ্দীক্বী উনার বই ‘মুহসিনে ইনসানিয়াতে’ লিখেছেন যে, মানবতার সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য সম্ভবত এটাই যে, ইতিহাসে যখনই কোনো ব্যক্তি ক্ষমতার মসনদে আসীন হবার সুযোগ পেয়েছে- তা সে তরবারীর বলে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে কিংবা কোনো আকস্মিক ঘটনাচক্রে, যেভাবেই হোক না কেন, নিজেকে এরূপ ভাবতে শুরু করে যে, সে মানুষের শুধু শাসকই নয়, বরং মানুষের শিক্ষক ও সমাজ সংস্কারকও বটে।

এ ধরনের স্বকল্পিত শিক্ষক ও সংস্কারকের হাতে যখন শাসন ক্ষমতা ন্যাস্ত হয় তখন সে সর্বেসর্বা ও সর্বময় ভাগ্য বিধাতা হয়ে জেঁকে বসে।
নিজেকে সে পৃথিবীর সেরা চিন্তাবিদ ভাবে। সে জ্ঞানের প্রতিটি উৎসের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে এবং সমাজের সর্বোত্তম সচেতন ও প্রজ্ঞাবান লোকদের দূরে সরিয়ে রেখে নির্বিচারে এমন সব বিস্ময়কর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে থাকে যে, তার প্রতিটি পদক্ষেপ এক একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার সূত্রপাত করে।

তারা সহিংস পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষকে প্রকৃত কৃতদাসে রূপান্তর করতে চায় এবং ডান্ডা মেরে সবকিছু ঠান্ডা করতে চায়। তারা কখনো জানতে চেষ্টা করে না যে, মানুষকে মনুষ্যত্ব শেখানোর সঠিক পন্থা কী, তার সংশোধন ও প্রতিকারের কাজটা কোথা থেকে শুরু এবং কোথায় গিয়ে শেষ।

তারা পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতাকে কাজে না লাগিয়ে সম্পূর্ণ নতুনভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে শুরু করে। তারা পরামর্শ ও সমালোচনার দুয়ার বন্ধ করে দেয়, যাতে তাদের কোনো হিতাকাঙ্খী তাদের ধ্বংসাত্মক অভিজ্ঞতা অর্জনের পথে বাধা দিতে না পারে।

তারা সকল রোগের একটাই ধনন্তরি ওষুধ চিনে আর তা হচ্ছে বলপ্রয়োগ ও সহিংসতা। অর্থাৎ কড়া কড়া আইন প্রণয়ন ও নিত্যনতুন কঠোর বিধি জারী করা। মানুষের চারপাশে গোয়েন্দা লাগিয়ে দেয়া এবং দ্রুততম বিচারের ব্যবস্থা করা আর তা হচ্ছে, খুন, গুম, ক্রশফায়ার কিংবা বন্দুক যুদ্ধে নিহত।

উপরোক্ত বক্তব্য যদি যুক্তিসঙ্গত এবং গ্রহণযোগ্য হয় তবে ১৯৭১ সাল কিংবা ২০১৫ সালের মধ্যে তফাৎ কোথায়? ১৯৭১ সালে এদেশের মানবতা যেভাবে নিষ্পেষিত হয়েছিল বর্তমান সময়ের সাথে তার তারতম্য খুবই সামান্য। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কিংবা ক্ষমতাসীনদের ভাষা হয়তো ভিন্ন (উর্দু/বাংলা) তবে আচরণের নির্মমতায় কেউ কারো চেয়ে কম যায় না।

তখন রাস্তাতে বিরোধী দলীয় আওয়ামী লীগ দেখলেই পাক সেনা নির্বিচারে গুলি চালাতো আর বর্তমান সময় কি হচ্ছে? পোশাকগত কিংবা বাহিনীগত তারতম্য হয়েছে তবে আচরণগত কোনো পার্থক্য নেই। ’৭১ সালে ছিল বর্ববর পাক বাহিনী আর বর্তমান বাঙালি মুসলমান নিষ্পেষনে আছে আওয়ামী, র‌্যাব, পুলিশ আর বিজিবি।

হে মহান আল্লাহ পাক! আমরা নির্দলীয় দেশপ্রেমিক বাংলাদেশী, আমরা নিষ্পেষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই। আমরা নিরীহ মুসলমানেরা সেই ’৭১ সালের মতোই আবার দু’হাত তুলে সর্বান্তকরণে দোয়া করছি, আমাদের প্রতি দয়া করুন, রক্ষা করুন আমাদের জান-মালের নিরাপত্তা দিন। আমীন, সুম্মা আমীন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×