somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টি ও মেঘমালার জন্য ভালোবাসা

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মেয়েটার বয়স টেনেটুনে ষোলো। প্রেমে পড়ার আর চুটিয়ে প্রেম করার বয়স এটা। তবু সে বসে আছে বিষন্ন।

এমন কেন হলো? - নিজেই ভাবে মেয়েটা। প্রেমে সে পড়েছে একেবারে সবকিছুর মাত্রা ভেঙেই। তাও এমন একজনার, যাকে দেখছে একমাত্র ছবিতেই, একটা মাত্র ছবি, সেও কেমন ঝাপসা গোছের। সামনাসামনি ওকে দেখেনি সে কখনো। শুধুই ফোনে কথা বলা।

মা'র ওপর মনটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মাঝে মাঝে। কি দরকার ছিলো বিয়েটা এমন করে ভেঙে দেবার? মা'ই তো বলেছিলো, "ভালো ছেলে, একটু জেনেশুনে নিস"। তাই তো সে ফোন করে ভাব করে নিয়েছিলো ছেলেটার সাথে। এখন তবে কেন পিছিয়ে আসা?

ওর দোষ ও খুঁজে পায়না আঁতিপাঁতি করেও, খুঁজে পায়না ছেলেটার কোনো দোষও। মাকে কে জানি বলেছে ছেলে নাকি পাগল, তাই বিয়ে বন্ধ। তাইতো ভেস্তে গেল সবটা। এ কেমন নিয়ম? ওর মনের একটুও দাম নেই? ভালোবাসার? আর পাগল বল্লেই হলো! ওতো জানে ছেলেটা পাগল না, একটু বোকা আর ঘরকুনো।

চোখ বেয়ে নিঃশব্দে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু গড়ায় গালে। কোনোদিন বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়নি মেয়ে। পড়াশুনোতে খুব ভালো না হলেও ভালোই। ছেলেদের সাথে আজন্ম আড়ি ছিলো মায়ের কড়া শাসনের কারনে। ছেলেবেলা থেকেই মা ওকে নিজের মত মতন করে গড়ে নিয়েছে। যেখানে আর দশটা মেয়ে বন্ধু বান্ধবদের সাথে হৈচৈ করে বেড়ায় ও শিখেছে ঘরকন্না। মায়ের আঁচল ধরে বড় হয়েছে ও।

ছেলেটার সাথে মোটে কয়েকদিনের কথা জীবনটা বদলে দিয়েছে ওর। যে মেয়ে শাড়ী পড়তে জানতো না, সে এখন ঘরে শাড়ী পরে ঘুর ঘুর করে। হিন্দি চটুল গান আর বাজেনা ঘরে, প্রেমের উপন্যাসগুলোর ওপর ধুলো জমে। একদম বদলে গেছে ও, সেই ক'টা দিনেই। আগে খুব ভয় পেতো সবকিছুতেই, মনে হতো ও ছোট্টো মেয়েটা, বড় হয়নি কখনো। আর এখন দৃপ্ত ভাবে দৃড়তার সাথে নিতে পারে সবকিছুই। বৃষ্টি ওর দুচোখের বিষ ছিলো একসময়, এখন ও বৃষ্টিকে ভালোবাসতে জানে।

সেদিন ও জেদ করে বলেছিলো, কাউকে না জানিয়ে ছেলেটার কাছে চলে যাবে। ছেলেটা বলেছিলো, "তুমি এখনো আঠেরো হওনি।" চোখ ফেটে জল এসেছিলো ওর। গলার কাছে কষ্টের মতন কি যেনো একটা শক্ত দলা পাকিয়ে ছিলো অনেক্ষন।

জানালা দিয়ে বৃষ্টির দিকে তাকায় মেয়েটা। জানে, "সে" এখন ভিজছে কোথাও। ছেলেটা অসম্ভব বৃষ্টি পাগল। বৃষ্টি হলে ভেজা "ওর" চাই ই চাই। আস্তে এগিয়ে গিয়ে জানালা দিয়ে হাতটা বের করে বৃষ্টির স্পর্শ অনুভব করতে চায় মেয়েটা। মনে মনে ভাবে, ওর হাত ছুঁয়ে ঝরা বৃষ্টির ফোঁটাগুলো কোনোদিন হয়ত আবার বৃষ্টি হয়ে ছেলেটাকে ছুঁয়ে দেবে।

ছেলেটা তখন সন্ধের আঁধারে জনমানুষহীন একটা রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে। ভারী চশমা খুলে, মেঘলা আকাশের দিকে চেয়ে। টপ টপ করে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা ওকে আচ্ছন্ন করে রাখে। মনে হয় মেঘের চাদরে মুড়ে রাখে ওকে বৃষ্টির ফোঁটারা। আলিঙ্গনের ভঙ্গিতে দু'হাত আকাশের দিকে ছোঁড়ে ছেলেটা, অপেক্ষা করে, বৃষ্টি আর মেঘমালার আলিঙ্গনের জন্যে। ওর শরীর বেয়ে রাস্তায় নেমে যায় বৃষ্টিরা, মেঘমালার অশ্রুফোঁটার দল।

আর ঠিক তখনই সেই মেয়েটা জানালার বাইরে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির ফোঁটা ছুঁয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে প্রার্থনা করে মেঘ হয়ে যাবার।।

ঠিক দু'বছর পরে ওদের আমরা একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখবো। সেদিন ওদের মনে বিষন্নতা নয়, থাকবে অনাবিল স্বর্গীয় হাসি, আর বৃষ্টি ও মেঘমালার জন্য অনন্ত ভালোবাসা।

বিঃদ্রঃ সময়ের দাবী - সাম্প্রতিক সাধারন মানুষের ওপর পুলিশের নির্যাতন বেড়েই চলেছে... ব্যার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই

* ব্যাজের ইমেজ পোষ্টের চাইতে বড় আসতাছে তাই লিংক করে দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৩৪
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×