somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটু আলোচনা আশা করতে পারি?? বিষয়ঃ ইমিগ্রান্ট ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ কি?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০০৮ সালে দেশ ছেড়েছিলাম উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে; ৫ বছর প্রবাসী জীবন কাটালাম! প্রথম মিশন শেষ, এখন পরবর্তী দিনের পরিকল্পনা করার সময় এসেছে। এতদিন এরকম দোদুল্যমান অবস্থার কথা অন্যের মুখে শুনেছি, এখন সেই অবস্থায় পড়েছি নিজে । দেশে ফিরব, নাকি বাইরে সেটেল হব???? ছোট্ট একটা প্রশ্ন, উত্তরও হয়ত খুবই ছোট, হ্যাঁ অথবা না! কিন্তু সবদিক মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা যে কতটা কঠিন তা ভুক্তভুগী না হলে বোঝান কঠিন!

বিদেশে সবসময় যে খুব ভাল কেটেছে সেটা বলব না, কিন্তু এই ৫ বছর লাইফটা কেটেছে একদম স্মুথ! অপ্রত্যাশিত কোন ঝামেলা হঠাত সামনে এসে হাজির হতে পারে সেটা প্রায় ভুলেই গেছি। সুইচে টিপলে লাইট জলবে, ট্যাপ খুললে পানি পড়বে, চুলার সুইচ ঘুরালে আগুন জ্বলবে, বাসা থেকে সঠিক সময়ে বের হলে গন্তব্যে পৌঁছাতে হিসাবের বাইরে ১ মিনিটও দেরী হবে না, লাখ টাকা পকেটে নিয়ে বের হলেও সেটা কেও ছুরি ঠেকিয়ে নিয়ে যাবে না, কোন অফিসে কাজে গেলে কর্মকর্তারা ছুটে আসবে হেল্প করার জন্য ... ... ... এমন অনেক ব্যাপার এই ৫ বছরে ছিল স্বতঃসিদ্ধ! একবারের জন্য এসবের ব্যাতয় ঘটেনি।

এসব নাগরিক সুবিধার ব্যাপারে দেশের অবস্থা না-ই বলি; কারো অজানা নয়! কিন্তু দেশে যা আছে তা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়, সে যত উন্নত দেশই হোক না কেন। মা; মাটি; মায়া... নাড়ীর টান উপেক্ষা করি কেমনে! বিদেশে যত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেই থাকি না কেন, এ তো সোনার খাঁচা ব-ই অন্য কিছু নয়। মাঝে মাঝে খুব হাঁসফাঁস লাগে!!

যায় হোক; আবেগের কথা বাদ দিয়ে কাজের কথায় আসি! নিজেদের আবেগ-বাস্তবতার কথা বাদ দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু আলোচনা করতে চাই। আমাদের জীবনে যা হওয়ার অনেকটাই হয়ে গেছে, এখন বাকী জীবনের সফলতা ব্যর্থতা অনেকটাই নির্ভর করছে আমাদের সন্তানদের উপরে। সন্তানের জন্য সুন্দর একটা পরিবেশ সব পিতা-মাতার ই কাম্য। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে “প্রকৃত সুন্দর পরিবেশ” কোনটি? উন্নত বিশ্বের উন্নত জীবন ব্যবস্থা? নাকি নিজ দেশের মায়াময় পরিবেশ???

এই বিষয় নিয়ে আমার ছেলের বাবা-মায়ের মধ্যে কিছুদিন থেকে তুমুল যুক্তিতর্ক চলছে! বাবা’র বক্তব্য, সন্তান দেশের মাটিতে দেশের মানুষের সাথে সুখে-দুখে বড় হলেই প্রকৃত মানুষ হতে পারবে। একজন মানুষ যত বড়ই হোক না কেন তার ভিতর যদি শিকড়ের টান না থাকে তাহলে তা তার নিজের জীবনের, পরিবারের, দেশের, এমনকি বিশ্বের কোন কাজে আসে না। ডিফ্রেন্ট কালচারে বাচ্চা বড় হলে কিছুদিন পরেই তার সাথে আমাদের কালচারাল কনফ্লিক্ট শুরু হবে সেটা আমাদের কারো জন্য সুখকর হবে না। আর ছেলের মায়ের বক্তব্য; এসব পুরাণ সেন্টিমেন্ট! এখনকার প্রজন্ম হবে গ্লোবাল জেনারেশন; এখনকার বাচ্চারা পুরা পৃথিবীকে নিজেদের দেশ মনে করবে। সুতরাং যেখানেই সে বেশী উন্নত পরিবেশ পাবে সেখানেই সুযোগ থাকলে তার যাওয়া উচিত!

অবশ্য আমরা দু’জনেই একটা ব্যাপারে একমত হয়েছি যে প্রকৃতপক্ষে কোনটা (দেশ নাকি বিদেশ) সন্তানের বড় হওয়ার জন্য বেটার পরিবেশ; কোন পরিবেশে বড় হলে বাচ্চারা কেমন হয় সেটা কম্পিয়ার করার জন্য পর্যাপ্ত ডাটা আমাদের হাতে নেই। বিশেষ করে যে সব বাচ্চারা বিদেশের বড় হচ্ছে তারা জীবনে কেমন করছে অথবা তারা পরবর্তীতে কি কি সমস্যায় পড়ছে বা তাদের দ্বারা পরিবার কোন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কি না... ইত্যাদি বিষয়ে খুব বেশী জানা শোনা আমাদের নেই। আসলে দুই দশক আগেও দেশের বাইরে সেটেল হওয়া পরিবার খুব বেশী ছিল না। ইদানিং পরিবার সহ বিদেশের স্থায়ীভাবে বসবাসকারীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিদেশে সেটেল হওয়ার পিছনে সবার মূলত একটাই যুক্তি, সন্তানের জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ রেখে যাওয়া! তাই ব্যাপারটা আলোচনার দাবী রাখে!

শুধু আবেগ দিয়ে নয়, আবার আবেগ বর্জিত হয়েও নয়, আমি আপনাদের কাছে যুক্তিযুক্ত আলোচনা আশা করছি। অভিজ্ঞতার আলোকে আলোচনা হলে সেটা আরো ভাল হয়, আপনার পরিচিত কারো সন্তান বিদেশে বড় হয়ে কেমন আছে সেটা শেয়ার করার অনুরোধ রইল!
আপনার মতামত দিনঃ সার্বিক দিক বিবেচনা করে আপনি আপনার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কোনটা বেটার পরিবেশ মনে করেন? উন্নত বিশ্বের উন্নত জীবন ব্যবস্থা???? নাকি নিজ দেশের মায়াময় পরিবেশ????

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩২
৫০টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×