somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ঈশ্বর যখন পৃথিবীতে

২২ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক রাজা তার প্রজাদের দুঃখ-কষ্ট এবং সমস্যা গুলো সমাধানের উদ্দ্যেশে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতেন। নিজ চোখে প্রজাদের সমস্যা গুলো দেখে দেখে সমাধান করে দিতেন। ঠিক এই রকম করে একদিন ঈশ্বর মাটিতে নেমে এলেন মানুষের রুপ ধরে।

ঈশ্বর দাঁড়িয়ে আছেন সদর ঘাট। তিনি বুড়িগঙ্গা নদীর পানির গন্ধ পেয়ে অবাক। কোনো নদীর পানি যে এত কালো হতে পারে এবং এত বিচ্ছিরি গন্ধ ঈশ্বরের ধারনা ছিল না। এক কোনায় দাঁড়িয়ে ঈশ্বর তো বমিই করে দিলেন।

সদর ঘাট থেকে হাঁটতে হাঁটতে ঈশ্বর চলে এলেন বাবুবাজার ব্রীজের কাছে। রাস্তাঘাট এত নোংরা, মানুষের এত ভীড় ঈশ্বর নিজের অজান্তেই বলে ফেললেন ছিঃ। রাস্তার পাশের চায়ের দোকান থেকে এক কাপ চা মুখে দিয়ে ঈশ্বর আর একবার বমি করলেন।

দিনে দুপুরে মিডফোড হাসপাতালের সামনে ঈশ্বরকে ছিনতাইকারী ধরল। ঈশ্বর তো অবাক ! ছিনতাইকারীরা ঈশ্বরকে বলল- যা আছে ভদ্রভাবে দিয়ে দে। চিল্লাচিল্লি করলে টুকরো টুকরো করে দিবো। ঈশ্বর বলল, আমার কাছে কিছু নেই। কিছু নেই কেন, বলে একজন ছিনতাইকারী ঈশ্বরকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিল।

বিকেলে ঈশ্বর মন খারাপ করে রমনা পার্কের একটা বেঞ্চে বসে ছিলেন। চারদিকে কিছু তরুন তরুনী জোড়াজড়ি করে বসে আছে। এদের মধ্যে একজন তো এক মেয়ের জামার ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছে। মেয়েটি কিছু বলছে না বরং ছেলেটির হাতের স্পর্শ উপভোগ করছে। ঈশ্বর বিড়বিড় করে বললেন- আজিব !!

রাত ন'টায় রাজমনি হলের সামনে ঈশ্বর পড়লেন দুইজন নিশি কণ্যার হাতে। সস্তা লিপস্টিক ঠোঁটে চকচক করছে। নিশিকণ্যা দুইজন ঈশ্বরের সাথে রাত কাটাতে চায়। বিনিময়ে অল্প কিছু টাকা দিলেই হবে। তাদের টাকার খুব প্রয়োজন। ঈশ্বর তাদের নাম জিজ্ঞেস করতেই- মেয়ে দু'টি তাদের ছদ্মনাম বলল।

রাত দুই টায় ঈশ্বর গেলেন যাত্রাবাড়ী। যাত্রাবাড়ী গিয়ে ঈশ্বর অনেক অবাক হলেন। এত রাতেও এখানে অনেক জ্যাম। চারিদিকে ধূলোবালি উড়ছে। চারিদিকে এত বিকট সব গাড়ির হর্ন শুনে ঈশ্বর কানে হাত দিলেন। পৃথিবীর মানুষ এত কষ্টে আছেন তা ঈশ্বরের ধারনার বাইরে ছিল। আবারও ঈশ্বর রাস্তার ফুটপাতে বসে বমি করে দিলেন।

ঈশ্বর আরও কষ্ট পেলেন কাওরানবাজার এসে। এত মানুষ ফুটপাতের উপর শুয়ে আছে!! তাদের ঘর-বাড়ি নেই। আর এই কাওরানবাজার এত বড় বড় বিল্ডিং ! ফুটপাতে শুয়ে থাকা মানুষের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা করলো- দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কানে ধরে কাওরান বাজার নিয়ে আসতে। প্রধানমন্ত্রী নিজের চোখে দেখুক।

ফার্মগেট ব্রীজের উপর এসে ঈশ্বরের মেজাজ চরম খারাপ হলো। দশ-পনের জনানা বয়সের লোক মিলে নেশা করছে। আর ব্রীজের নীচে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। চেক পোষ্ট বসিয়ে সাধারন মানুষকে হয়রানি করছে। তাদের মানিব্যাগ তন্ন তন্ন করে কি যেন খুজছে। ম্যানিব্যাগের ভেতর কি পিস্তল বা গ্রেনেড লুকিয়ে রাখা যায়? ঈশ্বর মনে মনে বললেন- যতসব বদমাশের দল।

ভোর হতে শুরু করেছে। ঈশ্বর মিরপুর রোডে হাঁটছেন। দেশ এবং দেশের মানুষ নিয়ে ঈশ্বর অনেক বিচলিত। সাত আসমানের উপর গিয়ে হয়তো তিনি দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নিবেন। সাধারন মানুষজন অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারে কিন্তু ঈশ্বর মানুষদের দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারেন না। অলৌকিকভাবে এদেশের জন্য অবশ্যই কিছু করা হবে- ঈশ্বর ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন।

সিদ্দান্ত নেওয়ার পর এই প্রথম ঈশ্বরের মূখে হাসির আবেশ দেখা গেল। ঠিক তখন একটা ট্রাক ফুটপাতের উপর উঠে ঈশ্বরকে চাপা দিল। সাথে সাথে ঈশ্বর মারা গেলেন। ভোরের দিকে মিরপুর রোড ফাঁকা থাকে। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে ট্রাক ড্রাইভার স্প্রীড বাড়িয়ে দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।



৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×