somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাস্তায় পাওয়া ডায়েরী থেকে- ৩৮

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। রাত দুইটা। খুব ভয় ভয় করছে। আমি ঘরে আলো জ্বেলে ঘুমাতে পারি না। হঠাত দেখি ঘরে কে যেন আমার সাথে লুকোচুরি খেলছে। সাদা কাপড় পরা। চোখ মুখ সব সাদা কাপড়ে ঢাকা। আমি স্পষ্ট তার উপস্থিত টের পাচ্ছি। সে একবার দরজার পাশে লুকাচ্ছে, একবার জানালার পর্দার আড়ালে লুকাচ্ছে। ইচ্ছা করছে উঠে একটা থাপড়া দেই কিন্তু সাহস পাচ্ছি না। আমি একজন আধুনিক মানুষ হিসেবে- এই ধরনের ব্যাপার (ভূত) বিশ্বাস করতে পারি না। নিজেকে বুঝালাম- গভীর ঘুমে স্বপ্ন দেখছি। আর যদি সে সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে তাকে তার মতো থাকতে দেওয়া উচিত। সে তো আমাকে মারতে আসেনি, গলা টিপে ধরেনি বা রাক্ষসের মত গলার কাছে কামড় দেয়নি।খুব সাহস করে বিছানা থেকে নেমে একটা সিগারেট ধরালাম। আর কি আশ্চর্য সাথে সাথে সে বাতাসের সাথে মিশে গেল!

২। ছোট ভাইয়ের বন্ধু তুহিন আমার কাছে আসে ফোটোগ্রাফী শিখতে। তুহিনের ধারনা আমি একজন ভালো ফোটোগ্রাফার। সত্যি কথা বলতে- আমি ভালো ছবি তুলতে জানি না। অনেকের মত তুহিনও একথা বিশ্বাস'ই করে না। তুহিনের সাথে ফোটোগ্রাফির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। সে খুব আগ্রহ নিয়ে আমার কথা শুনে। মাঝে মাঝে ডায়েরীতে লিখে রাখে। আমি তুহিনকে বুঝিয়ে বললাম- লেন্স শব্দটি লাতিন ভাষা থেকে এসেছে। ক্যামেরার চোখ হচ্ছে এই ল্যান্স। এই ল্যান্সকে চার ভাগে ভাগ করা যায়... । কথায় কথায় একদিন তুহিন আমাকে বলল- ভাইয়া, আমাদের ক্লাসে সব বুড়া বুড়া স্যার ম্যাডাম। ক্লাস করে আনন্দ পাই না। অন্য ক্লাসে কি সুন্দর সুন্দর ম্যাডাম ! একেবারে অল্প বয়স। দেখলে মনে হয়- টিচার না যেন স্টুডেন্ট। একদিন আমরা সবাই রেগে গিয়ে আন্দোলন করলাম- পরের দিন দেখলাম খুব সুন্দর একজন ম্যাডাম এসেছে। এখন ক্লাস করে মজা পাই।

৩। সারারাত ঘুম হয় নি। শুধু এপাশ-ওপাশ করেছি। ফযরের আযানের পর ঘুম আসলো। সকাল সাড়ে ছয়টায় বুয়া এসে খট খট শুরু করলো। সাত টায় ছোট ভাই জোরে গান ছাড়লো। আট টায় মা টিভি অন করলো- চারিদিকে শুধু শব্দ আর শব্দ। মনে হচ্ছে কে যেন আমার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে পিটাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠে মা'র সাথে চিল্লাচিল্লি করলাম। মা বলল- সারারাত কি চুরী করছো? এত বেলা পর্যন্ত কেউ ঘুমায় না। টিভির শব্দ কমানো হবে না। নো নেভার। হঠাত করে মাথাটা গরম হয়ে গেল- ইচ্ছা করলো টিভি টা ভেঙ্গে ফেলি। কিন্তু ভাংলাম না, তাহলে খবর আর টক শো দেখব কি করে? হাতের কাছে ছিল পানির জগ- দিলাম পানির জগে একটা লাথথি। ব্যাথা পেলাম পায়ে। সাথে সাথে আঙ্গুলটা ফুলে গেল। এক আকাশ রাগ নিয়ে দরজাটা ধাম করে বন্ধ করে- বাইরে চলে গেলাম। এখন রাস্তায় এলোমেলো বেশ কিছু সময় হাঁটতে হবে।

৪। অদ্ভুত একটি উপন্যাস ''দিবারাত্রির কাব্য''। উপন্যাসটা পড়তে পড়তে ঘোর লেগে যায়। দিবারাত্রির কাব্য মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত তুমুল জনপ্রিয় এবং আলোচিত উপন্যাস। ১৯৩৫ সালে দিবারাত্রির কাব্য মলাটে প্রকাশিত হয়। আমরা সাধারনত যে উপন্যাস পড়ি তা থেকে সম্পুর্ণ আলাদা 'দিবারাত্রির কাব্য'। দিবারাত্রির কাব্য অবশ্যই প্রেমের উপন্যাস। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হেরম্ভ। উপন্যাসে হেরম্ভের জীবনে ৩টি মেয়ে আসে। উমা,সুপ্রিয়া এবং আনন্দ। উপন্যাসের শুরু হয় দারোগা অশোকের স্ত্রী সুপ্রিয়ার বাড়িতে। উমা হেরম্ভের স্ত্রী। এক সন্তান রেখে আত্যহত্যা করে সে। হেরম্ভের জীবনে সব কিছু উলটপালট করে দেয় আনন্দ নামের মেয়েটি।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাব্বিশ বছর বয়েসে গল্প লেখেন ‘একটি দিন’, ১৯৩৪ সালে। উপন্যাস নিয়ে ছবি করার কারও সাহস হবে এমন কথা মানিক ভাবেননি নিশ্চয়ই। মানিক তাঁর এক গল্পগ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছিলেন, ‘ভাবের আবেগে’ ভেসে যাওয়া মধ্যবিত্তকে কশাঘাত করার কথা। সাহিত্যে সরল আবেগ চর্চার সঙ্গে ওঁকেও লড়াই করতে হয়েছে।

৫। অনেকদিন পর আবারও 'কোথাও কেউ নেই' নাটকটা দেখলাম। সেই ভালো লাগা, সেই পাক খেয়ে উঠা কষ্ট! কারাগারে বাকেরের লাশ নিতে আসা মুনার সেই পান্ডুর মুখ! চারদিকে আজান হচ্ছে, কী হাহাকার করা দৃশ্য! বুকের উপর পাথর চেপে বসে। ইচ্ছা করে বাথরুমে গিয়ে খানিকটা কেঁদে আসি! কোথাও কেউ নেই, বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত, জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত ও নির্দেশক বরকত উল্লাহ নির্দেশিত জনপ্রিয়তম নাটক। নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিল "বাকের ভাই"। বাকের ভাই গুন্ডা প্রকৃতির লোক এবং তার সঙ্গী ছিল "বদি" আর "মজনু", তারা তিনজনই মোটর সাইকেলে করে চলাফেরা করতো। বাকের ভাইয়ের একটা মুদ্রাদোষ ছিল, সে একটা চেইন হাতের তর্জনিতে অনবরত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্যাঁচাতো, আবার উল্টোদিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্যাঁচ খুলে আবার প্যাঁচাতো। মুনা এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে, চাকরি করে, এবং তার মামাতো ভাই-বোনদের দেখাশোনা করে। বাকের ভাই এলাকার সন্ত্রাসী হলেও অধিকাংশ মানুষ তাকে ভালোবাসতো।

ঘটনাপ্রবাহে বাকের ভাই এলাকার প্রভাবশালী এক নারীর সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। ঐ নারী তার বাড়িতে অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন, বাকের ভাই তা জানতে পেরে প্রতিবাদ করে। মধ্যে রাতের অন্ধকারে কুত্তাওয়ালীর বাড়িতে একজন খুন হয়। ফাঁসানোর জন্য এই খুনের দায় দেয়া হয় বাকের ভাইকে, সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেয় কুত্তাওয়ালী'র দারোয়ান।নাটকের নামকে সার্থক করে মুনা নাটকের শেষ দৃশ্যে ভোরের আদো-অন্ধকারে ছায়া হয়ে একা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে থাকে। 'কোথাও কেউ নেই' নাটকটা ঠিক কত সালে প্রচারিত হয়েছিল বিটিভিতে আমার মনে নাই। সম্ভবত ৯০ সাল হবে। "কোথাও কেউ নেই"-এ কোর্টের একটা দৃশ্য থাকে এরকম। একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন, খুন করার সময় বাকেরের গায়ে তিনি লালচে টাইপের চাদর দেখেছেন। উকিল হুমায়ূন ফরিদি এই মিথ্যা সাক্ষ্য তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। রাস্তায় সোডিয়াম লাইট ছিল বিধায় লালচে বা মেরুন কালারের চাদর কুচকুচে কালো দেখা যাওয়ার কথা।
.
মুনাঃ চশমাটা খুলুন। (বাকের ভাই চশমা খুললেন) এখন বলুন রিকশাওয়ালাটাকে মার খাওয়ালেন কেন?
বাকের ভাইঃ মারলাম কোথায়!? একটু টিপে দিয়েছি।
মুনাঃ আপনাকে টিপে দিতে বলেছি? আমার সমস্যা আমি দেখব
বাকের ভাইঃ তুমি Angry হচ্ছ কেনো? অকারনে Angry is bad for health.
মুনাঃ কথায় কথায় ইংরেজি বলবেননা। যে ভাষাটা জানেননা সেটা বলতে জান কেন?
বাকের ভাই (অবাক হয়ে): আমি ইংরেজি জানিনা!! Who told! Wrong information very wrong information.

(মনের কিছু এলোমেলো কথা যদি ব্লগে না লিখি, তাহলে কোথায় লিখব?)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩৩
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×