১। প্রেসক্লাব জায়গাটা বড় অদ্ভুত। আমি যাদুঘরে গেলেও এত অবাক হই না। কিন্তু প্রেসক্লাবে আসলে প্রচন্ড অবাক হয়ে চারিদিকে হা করে তাকিয়ে থাকি। প্রতিদিন আলোচনা সভা, মিটিং মিছিল, মানব বন্ধন আরও কত কি! একসাথে ৫/৭ টা প্রতিষ্ঠান নানান দাবী-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। সবাই ৮/১০টা করে মাইক ব্যবহার করছে। কে কার কথা শুনছে আল্লাহ'ই জানেন। রাস্তায় ভয়াবহ জ্যাম তৈরি হয়। খুব বেড়াছেড়া অবস্থা। দিনের পর একই কান্ড দেখার কেউ নেই। উত্তর দক্ষিন পূর্ব পশ্চিম চারদিকেই বক্তারা গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে যাচ্ছে। কে কি বলছে কিছুই স্পষ্ট না। বেশ কিছু মানুষ আমরণ অনশন করছে। প্রতিদিন একই ঘটনা। ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝা যায় ব্যাপারটা যথেষ্ট হাস্যকর।
কিন্তু একসময় এই প্রেসক্লাব- ১৯৬৪ সালের দাঙ্গাবিরোধী শান্তি মিছিল, ১৯৬৭ সালে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রতিবাদ মিছিল এ প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে স্বাধিকার আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, আরও পরে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় এবং স্বৈরশাসনের দুঃসহ দিনগুলিতে প্রেসক্লাবই হয়ে উঠেছিল আন্দোলন ও সংগ্রামের কেন্দ্রস্থল।
২। বই ধরার আগে হাত পরিষ্কার করে নিন। নইলে হাতে থাকা ময়লা বইয়ে লেগে থাকবে। যা যুগ যুগ আপনার অপরিচ্ছন্নতার নমুনা হিসেবে বক্র হাসি দিয়ে যাবে।
অনেকের বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানো দেখলে মনে হয় যুদ্ধ করছেন। সর্তকতার সঙ্গে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টান। এতে আপনার সংবেদনশীলতার পরিচয় মিলবে।
৩। একদিন বিকেলে বোটের ছাদে বসে রবীন্দ্রনাথ বই পড়ছিলেন, বই পড়ার সময় পা দোলানো তার অভ্যাস। তখন তার পায়ে ছিল কটকি চটি। হঠাৎ পা দোলানিতে এক পাটি চটি পড়ে যায় নদীতে। চটি জোড়া খুব পুরনো হলেও প্রিয় ছিল তার। বোট তখন মাঝ নদীতে। প্রবল স্রোত। চটি টি ভাসতে ভাসতে দূরে চলে যাচ্ছিল। রবীন্দ্রনাথ কোন কিছু চিন্তা না করে লাফ দিলেন নদীতে। বজরার সব কর্মচারী তো অবাক! জমিদার মশাই কেন ঝাঁপ দিলেন নদীতে! কোন অমূল্য বস্তুর জন্য? কিছুক্ষন পর রবীন্দ্রনাথ সাঁতরে ফিরে এলেন, তার মুখে বিজয়ের হাসি। আর হাতে সেই একপাটি চটি।
৪। আগামীকাল বাংলা ১ ফাল্গুন, ইংরেজী ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮।
পৃথিবীর ধূলোকণায় ভালোবাসার জন্য । কিন্তু ধূলোকণায় যখন সূ্র্যের আলো পড়ে তখন তা স্বর্ণরেনুর মত চিকচিক করে ওঠে । যখন বাতাসের স্পর্শ পায়, শিশুর নির্মল হাসির মতো কোমল হয়ে ওঠে । আকাশ থেকে যখন বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে তখন ভালোবাসার ধূলিকণা হেসে বলে- আমি তো ঐশ্বরিক । পৃথিবীতে নেমে এসেছি বিধাতার কল্যাণ এবং ক্ষমা হয়ে ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৪