প্রানী জগতের মধ্যে হাতী আমার সবচেয়ে প্রিয় প্রানী। কি বিশাল প্রানী অথচ কোনো অহংকার নেই। হাতীকে কেউ না রাগালে সে কখনও রাগে না। ঢাকা শহরের রাস্তায় একটা হাতীকে প্রায়ই দেখা যায়। এই হাতীর পেছন পেছন আমি অনেক দূর পর্যন্ত যাই। বড় আনন্দ পাই। আমার যদি অনেক টাকা থাকতো তাহলে আমি হাতী পালতাম। অনেক আদর যত্ন দিয়ে হাতী বড় করতাম। চিড়িয়াখানায় আমি প্রায়ই যাই শুধু মাত্র হাতী দেখতে। এই প্রানী দেখলে মনটা শান্ত হয়ে যায়। ইচ্ছা করে চুরী করে চিড়িয়াখানার হাতীটা বাসায় নিয়ে আসি।
১৯১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল এক ঘটনা ঘটে, কারণ এই দিনে একটি হাতিকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দন্ড কার্যকর করা হয়। ব্যাপারটা খুব বেশি মর্মান্তিক।
ঘটনাটি আমেরিকার শহর টেনিসে, সেখানকার এক সার্কাস দলে কাজ করতো 'মেরি' নামের এক হাতি। মেরি সার্কাসে দুর্দান্ত সব কসরত করে মানুষকে অভিভূত করে রাখতো। মেরিকে দেখতেই সার্কাসে ভিড় হতো অনেক বেশি।
একদিন খেলা চলার সময় মাহুত মেরির উপরে বসে সার্কাস দেখাচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক চলছে, মেরি দুই পা তুলে পেছন পায়ে ভর দিয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জন করে যাচ্ছে। কিন্তু মাহুত অযথাই মেরির কানে লোহার শিক দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এক সময় মেরির মেজাজ চড়ে যায় সে মাহুতকে টেনে নিচে নামিয়ে পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলে।
ঘটনায় সমগ্র সার্কাস প্রাঙ্গণ এবং শহর জুড়ে মেরি বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠে। সবার এক দাবি হত্যাকারী হাতিকে সাঁজা দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন থামবে না। একটি হাতি থেকে একজন মানুষের মূল্য অনেক বেশি।
শেষে বাধ্য হয়েই সার্কাস মালিক সিদ্ধান্ত নিলেন মেরিকে হত্যা করতে হবে। মেরিকে ক্রেনে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেয়া হবে। তাই বিশাল ক্রেন নিয়ে আসা হল। সবাই মেতে উঠলো ভয়ংকর এক হত্যা প্রত্যক্ষ করতে। সবার চোখে তখন প্রতিশোধের ক্রোধ টগবগ করছে। মেরিকে অবশেষে বিশাল এক চেইন দিয়ে ক্রেনের হুকে বাঁধা হলো।
মেরি অনেক স্বাস্থ্যবান হওয়াতে ক্রেনের চেইন ছিঁড়ে ২০ ফুট উপর থেকে পড়ে যায় সে। এসময় মেরির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যায়। পা ভেঙ্গে যায়, গলা কেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। আবার মেরিকে ক্রেনের চেইনের সাথে বাঁধা হলো। থেমে গেলে চলবে না, শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। পরের চেষ্টায় মেরি ফাঁসির চেইনে ছটফট করতে করেই মারা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:২৫