আজকের দিনটি চমৎকার কেটেছে।
বাসা থেকে বের হয়েই বিশাল সেই ভিক্ষুক হাতীর দেখা আবারও পেলাম। আজ দেখি দুইটি হাতী। হাতী আমার খুব'ই প্রিয় প্রানী। নাদুস নুদুস! কোনো অহংকার নেই। খুব ভদ্র আর বিনয়ী। উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ওভার ব্রীজের কাছে হাতীটির দেখা পাই। শূর দিয়ে দোকানের সামনে গিয়ে সালাম দিচ্ছে। দোকানদার টাকা না দেওয়া পর্যন্ত হাতীটি দোকানের সামনে থেকে নড়ে না। সবাই খুশি মনেই দশ টাকা করে দিচ্ছে। রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকানদার টাকা না দিয়ে একটা রুটি দিল। হাটিটি খুব আগ্রহ নিয়ে রুটি খেল। বেশ আনন্দ নিয়ে এই হাতীর পেছন পেছন এক ঘন্টা ঘুরলাম।
বিএনপি'র পার্টি অফিসের সামনে অসংখ্য মানুষ।
চারিদিক বেশ জমজমাট। এতদিন এই পার্টি অফিস কেমন খা খা করেছে। আজ লোকজন মিছিল নিয়ে আসছে। আমি এই বিশাল জনতার সাথে মিশে গেলাম। আশে পাশের চায়ের দোকান গুলোতে প্রচন্ড ভীড়। চারপাশের সব কিছুই আমি খুব উপভোগ করছি। এর আগে আওয়ামীলীগের অফিসেও গিয়েছি। সেখানেও একই অবস্থা দেখেছি। কেউ কেউ ব্যান্ড পার্টি নিয়ে এসেছে। ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে এসেছে। চারপাশে এত লোক অথচ আমি কাউকে চিনি না। আমাকেও কেউ চিনে না। রাস্তায় ভয়াবহ জ্যাম লেগে গেছে। পুলিশ সমানে হুইসেল বাজিয়েই যাচ্ছে।
দুপুরবেলা গেলাম মতিঝিল রুপালী ব্যাংকে।
এই ব্যাংকে এক উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা আছেন। তিনি আমাকে খুব পছন্দ করেন। প্রায়ই আমাকে নানান রকম বই উপহার দেন। এমন কখনও হয়নি তার অফিসে গিয়েছি আর না খেয়ে ফিরেছি। আমি গেলেই উনি উনার পিয়নকে দিয়ে হাজীর বিরিয়ানী আনান। আর একটা ফানটা। আমি আরাম করে খাই। অনেকক্ষন গল্প টল্প করে চলে আসি। আজও গেলাম। বরাবরের মতোন বিরিয়ানী- ফানটা আর দু'টা বই নিয়ে আসলাম। উনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বিকেল পর্যন্ত আজ মতিঝিলেই কাটিয়ে দিলাম। এর মধ্যে একবার স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকে একজনের সাথে দেখা করতে গেলাম। ভদ্রলোক দেখা করলেন না। এর আগেও বেশ কয়েকবার গিয়েছি কিন্তু উনি দেখা করেন না। এক পিয়ন এসে বলে, স্যার মিটিং এ। স্যার অফিসে নাই।
সন্ধ্যা ৭ টায় হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরছি।
মনটা খুব খারাপ। সুরভি ফোন করে জানালো- পরী স্কুলে খেলতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে। অনেকখানি ছিলে গেছে। টিটেনাস দিতে হবে। আমি যেন তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরি। কিন্তু আমি দ্রুত হাঁটতে পারছি না। গত কয়েকদিন ধরে খুব বেশি হাঁটছি। পায়ের আঙ্গুল গুলোতে ঠোসা পড়ে গেছে। খুব ব্যথা। তারপরও আমি জোরে হাঁটছি- মেয়েটাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ফুটপাতে এক লোক বেগুন বিক্রি করছে। অথচ বলছে পাইলট---পাইলট। এটা কি বেগুনের নতুন কোনো জাত? আজিব ব্যাপার!
আমার ভাগ্যটা খুব ভালো।
বাসায় ফেরার পথে আবারও সকালে হাতীটির সাথে দেখা। হাতীর মাহুতের সাথে চা খেলাম আর অনেক গল্প করলাম। গল্প করে জানতে পারলাম- এই হাতীর মালিক টঙ্গী থাকেন। হাতীর বয়স-৭। এটা সার্কাসের হাতী। আপাতত সার্কাস বন্ধ। তাই মাহুত হাতী নিয়ে সারা ঢাকা শহর ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে। তাদের অনেক খরচ। হাতীটির জন্য প্রতিদিন ৭/৮ শ' টাকার খাবার লাগে। মাহুতের নিজের খরচ আছে। এভাবে টাকা সংগ্রহ না করলে খাবে কি? চলবে কি করে?
যাই হোক, বাসায় গেলাম। মেয়েকে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার বললেন, টিটেনাস দিতে হবে না। মেয়ে খুব খুশি ইনজেকশোন দিতে হবে না বলে। বাপ আর মেয়ে চকবার আইসক্রীম খেলাম লুকিয়ে লুকিয়ে। সুরভি জানলে চিল্লাচিল্লি করবে। মেয়ের ঠান্ডার সমস্যা আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৮