somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে |১৯| আসন: চক্রাসন।

০৮ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


# অর্ধ-চক্রাসন (Ardha-Chakrasana)
আসন অবস্থায় দেহটিকে অর্ধ-চক্রের মত দেখায় বলে আসনটির নাম হয়েছে অর্ধ-চক্রাসন।



পদ্ধতি:
সটান চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। এখন পা দু’টো একটু ফাঁক করে হাঁটুর কাছ থেকে ভেঙে গোড়ালিদ্বয় পাছার কাছে রাখুন। হাত দু’টো কনুইয়ের কাছ থেকে ভেঙে হাতের তালু উপুড় করে দু’পাশে মাটিতে রাখুন। এবার হাত ও পায়ের উপর জোর দিয়ে মাথা, পিঠ ও কোমর সাধ্যমতো উপরে তুলুন। ঠিক ধনুকের মতো হবে। মাথা যতদূর সম্ভব পেছনদিকে নিয়ে আসুন। হাত সোজা থাকবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এই অবস্থায় থাকুন। এরপর হাতের উপর ভর রেখে মাথা আস্তে আস্তে নামিয়ে এনে চিৎ হয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিন। আসনটি এভাবে ২/৩ বার করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
আসনটি দেখতে ধনুকের মতো হয় বলে একে উর্ধ্ব-ধনুরাসনও (Urdhva-Dhanurasana) বলা হয়ে থাকে।



উপকারিতা:
আসনটি বিশেষভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, জঠরাগ্নি বৃদ্ধি করে। প্লীহা, যকৃৎ, মূত্রাশয় প্রভৃতি পেটের দেহ-যন্ত্রগুলোকে সক্রিয় রাখে। আসনটিতে এড্রিনাল গ্রন্থির খুব ভালো কাজ হয়। দেহের সমস্ত স্নায়ুজাল সুস্থ ও সক্রিয় থাকে, মেরুদণ্ড নমনীয় হয়। অর্ধ-চক্রাসনের সঙ্গে পদহস্তাসন বা শশঙ্গাসন অভ্যাস রাখলে বাত, সায়টিকা, লাম্বার স্পন্ডিলোসিস, স্লীপড্‌ ডিস্ক জাতীয় রোগ কোনদিন হতে পারে না। এছাড়াও আসনটি বুকের খাঁচার দোষ-ত্রুটি দূর করে। মেরুদন্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও পিঠের দু’পাশের পেশী সুস্থ ও সক্রিয় রাখে। পেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমিয়ে দেহকে সুঠাম ও সুন্দর করে।

# চক্রাসন (Chakrasana)

পদ্ধতি:
প্রথমে অর্ধ-চক্রাসনের ভঙ্গিমায় আসুন। তারপর হাত দু’টো আস্তে আস্তে সরিয়ে এনে দু’পায়ের গোড়ালির কাছে রাখুন বা গোড়ালি দু’টো ধরুন। মাথা যতদূর সম্ভব পেছনদিকে বাঁকিয়ে নিয়ে যান। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এই অবস্থায় থাকুন। এরপর আস্তে আস্তে মাথা মাটিতে নামিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। বিশ্রাম নিয়ে আসনটি ২/৩ বার করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।



উপকারিতা:
আসনটি মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় রাখে। মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও তার পাশের পেশী সতেজ ও সক্রিয় রাখে। বুকের পেশী ও পাঁজরের হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং বুক সুগঠিত করে। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আসনটি অভ্যাসের সময় দেহের মধ্যভাগে প্রচণ্ড চাপ পড়ে বলে ঐ অঞ্চলের পেশী, স্নায়ুজাল সবল ও সক্রিয় থাকে এবং পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র, প্লীহা, যকৃৎ খুব ভালো কাজ করে। যাদের বুক বয়স অনুযায়ী সরু ও অপরিণত, তাদের এ আসনটি অবশ্য করা উচিৎ। আসনটি অভ্যাসে দেহের মধ্যভাগের অপ্রয়োজনীয় মেদ দূর হয়, মনের চঞ্চলতা দূর করে এবং স্বভাবে ধৈর্য্য বৃদ্ধি করে। কোন স্ত্রী-রোগ বা পেটের রোগ সহজে আক্রমণ করতে পারে না।

চক্রাসনের সঙ্গে পদহস্তাসন ও শশঙ্গাসন অভ্যাস রাখলে কোনদিন লাম্বার স্পন্ডিলোসিস বা স্লীপড্‌ ডিস্ক জাতীয় কোন রোগ হতে পারে না।



নিষেধ:
আসনটিতে বুকে প্রচণ্ড চাপ পড়ে বিধায় যাদের হৃৎপিণ্ড বা ফুসফুস দুর্বল, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য আসনটি করা উচিৎ নয়।
[Images: from internet]

(চলবে...)

পর্ব:[১৮] [**][২০]
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ২:০০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×