somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বামপক্ষ = ডানপক্ষ (প্রমানিত)

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকার করা নীল নকশা আফগানিস্তান অথবা ইরাকের মত পরিস্থিতির দিকে কি আমরাও যাচ্ছি? আমি ব্যক্তিগতভাবে বললে বলবো অবশ্যই। সমগ্র বিশ্বজুড়ে আমেরিকার যে সাম্রাজ্যবাদী কর্তৃত্ব বিস্তার তার ভয়ানক শিকারের মুখে আমরাও চূড়ান্তভাবে চলে এসেছি। যদিও ১৯৭১ সালের পর থেকেই বাংলাদেশ আমেরিকার আগ্রাসনের মুখেই ছিল।
দুঃখের বিষয় হল তালেবান, আল-কায়েদা, ISIS (Islamic State) সহ জঙ্গি গ্রুপ গুলো আমেরিকার সৃষ্টি আবার এইগুলো দমন করার জন্যও আমেরিকা প্রচুর অর্থ খরচ করছে। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের তেল, দুষ্প্রাপ্য খনিজ পদার্থের লোভ কিংবা ক্ষমতা দখলই কারন।

কিন্তু আমাদের দেশ কেন আমেরিকার টার্গেটে পরিনত হল? এইখানেও সুনির্দিষ্ট কারন আছে। এই উপমহাদেশে ভারতের কাছ থেকে কর্তৃত্ব ছিনিয়ে নিতে বাংলাদেশ ছাড়া বিকল্প সুন্দর কোন উপায় নেই। সেই উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষে আমেরিকা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। একটু নজর দিলেই বুঝা যায়। সেজন্য আমাদের বেশি অতিতে যেতে হবেনা সাম্প্রতিক কালের কর্মকাণ্ডের দিকে নজর দিলেই বুঝা যাবে। জাপানের নাগরিক হোসে কুনিও হত্যা, একজন ধর্মযাজককে হত্যার চেষ্টা, গুলশানে ইতালিয়ান নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা, পুরান ঢাকার হোসনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিতে বোমা হামলা, জাগৃতি প্রকাশনের মালিক ফয়সল আরেফিন ওরফে দীপনকে হত্যা, শুদ্বস্বরের মালিক আহমেদুর রশীদ টুটুল ও তার সঙ্গে থাকা দুই ব্লগারকে কুপিয়ে আহত করা, লেখক ও প্রকৌশলী তারেক রহিমকে গুলি করা, এই হামলা ও হত্যাকাণ্ড গুলো আবার নাকি ISIS ও আল-কায়েদা দায় স্বীকার করছে!

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আমাদের দেশে কোন IS বা আল-কায়েদা নেই। শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি কথা যে, সরকার এতদিন নিজের ক্ষমতাকে টিকানোর জন্য সারা বিশ্বে বাংলাদেশে জঙ্গি আছে, জঙ্গি আছে প্রচার করেছে মূলত উদ্দেশ্য একটাই বিএনপি জঙ্গি দল এবং তারা খমতায় আসলে জঙ্গি-সন্ত্রাসও বাড়বে সুতরাং আওয়ামীলীগের খমতায় থাকা দরকার। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে দেশে জঙ্গি আছে এটা বলা যাচ্ছে না, সন্ত্রাস আছে এটাও বলা যাচ্ছে না। কারন আমেরিকার কাছে দুটার উত্তর একি হবে, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্দে বাংলাদেশে আমাদের কাজ করা দরকার। এটা বুঝে সরকার এখন বলছে জঙ্গি না, সন্ত্রাস ও না এই হত্যা ও হামলা করছে বিরোধী দল। আসল কথা হচ্ছে এগুলো সবই আমেরিকার পূর্ব পরিকল্পনা, হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটিয়ে বাংলাদেশে জঙ্গি আছে কিভাবে সেটা প্রমান করা যায়। ব্যাস তাহলেই তো আমেরিকার বাংলাদেশে সেনা ঘাঁটি স্থাপনের বাঁধা ক্লিয়ার। অবাক হওয়ারই বিষয় এবং এটাই সত্য এবং এই হত্যাকাণ্ড গুলোর হয়তো কোন কুল কিনারাও করতে পারবেনা সরকার। আবার হত্যার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ ও দ্রুত বিচারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এভাবেই আমেরিকার পূর্বনির্দিষ্ট কূট কৌশলের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি ও ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

আসেন আরো একটু পিছনে যাই।কয়েক দিন আগে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর হওয়ার কথা ছিল কিন্তু কোন ইস্যু ছাড়াই সফর স্থগিত করে অস্ট্রেলিয়া। এর অল্প কিছুদিন পর দক্ষিন আফ্রিকাও সফর স্থগিত করে এবং কোন ইস্যু ছাড়াই সাথে সাথে আমেরিকার মিত্র দেশগুলো বাংলাদেশ বিদেশীদের জন্য নিরাপদ নয় খবর প্রচার শুরু করে। অথচ পূর্বে এইরুপ কোন বিদেশী হত্যাকাণ্ড না ঘটলেও "বাংলাদেশ বিদেশীদের জন্য নিরাপদ নয়" খবর প্রচার করার সাথে সাথে বিদেশীদের সত্যি সত্যি হত্যা শুরু হয়ে যায়।
আমেরিকা অন্য একটি মহাদেশের হয়েও এতো দূর থেকে আগাম এতকিছু কিভাবে জানলো? বাংলাদেশী গোয়েন্দা সংস্থা মনে হয় বসে বসে কেবল আজ্ঞুল চোষে, তারা কেন আগাম তথ্য পায়না?

আরো একটু পিছনে গেলে দেখা যাবে, কয়েক দিন আগে বাংলাদেশে্র নির্বাচন নিয়ে নানা খেলা চলছে এবং ওই রাজনৈতিক সংকটকালীন সময় বাংলাদেশের কর্তৃত্ব নিয়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে প্রতিযোগিতা দেখা গিয়েছিল এবং যার ফলশ্রুতিতে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততাও সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলও কিছু অংশে দায়ী। নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতকে তুষ্ট করবার জন্য প্রধান দু’দলই প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছিল।

আমেরিকার কর্তৃত্ব বাস্তবায়নের জন্য তারা একপা অগ্রসর হয়ে গিয়েছিল টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করার মাধ্যমে। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অর্থাৎ আওয়ামীলীগ সরকারের গত টার্মের শেষ সময়ে এসে সরকার আমেরিকার সাথে টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করে। আমেরিকা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য বাংলাদেশের ওপর ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিল। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগ মুলত টিকফা চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রকে তুষ্ট করবার জন্য। এই চুক্তি নিয়ে চরম গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছিল। উল্লেখ্যযে টিকফাতে চুক্তির ধারা সমুহ কঠোর ভাবে পালনের বাধ্যবাধকতা বলা হয়েছে। এবং আর্টিকেল পাঁচে বলা ছিল এই চুক্তিটি কোন পক্ষের প্রচলিত অভ্যন্তরীণ আইন এবং কোন পক্ষের স্বাক্ষরিত অন্যকোন চুক্তির ফলে প্রাপ্য অধিকার ও দায়বদ্ধতাকে ব্যাহত করবে না। ওই সময়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গগণের প্রশ্ন ছিল এতো বহুপক্ষিয় বাণিজ্য চুক্তি থাকতে টিকফা চুক্তি করার প্রয়োজন পড়লো কেন? সত্যি কথা বলতে আমেরিকার চুক্তিটি করার উদ্দেশ্য ছিল মুলত বাংলাদেশের সার্বভৌম অস্তিত্ব বিপন্ন করা।

এখন কেবল দেখার বিষয় আমেরিকা বাংলাদেশের রাজনীতিকে দীর্ঘমেয়াদি কোন কঠিন শৃঙ্খল ও বাধ্যবাধকতার মধ্যে নিয়ে যায়। হয়তো কিছু দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে পতুল সরকার বানিয়ে এবং বাংলাদেশ আফগানিস্তান অথবা ইরাকের মত পরিনতি বরন করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×