somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইনস্ট্যান্ট নির্বাচন ও আমাদের সুবিধা।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখন আর কোন চিন্তা নেই - উদ্বিগ্ন জাতি এখনই নেচে কুদে খুন হতে পারে। নির্বাচন না আসতেই নির্বাচনী ফল পাওয়া এবং কুড়ি দিন আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠতাও নিশ্চিত হয়ে যাওয়া - এ কি যা তা ব্যাপার? আমাদের নেতারা যা করবেন সেরাটাই করবেন - এমনটাই যেহেতু আমরা আশা করি সেহেতু একে চমৎকার তামাশা বলাটা ঠিক নয় - বড় বেশি হালকা হয়ে যায়। এই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও চেপে যেতে হবে - দাঁত বেরোলেই সর্বনাশ ... সোর্পদ হওয়ার আশঙ্কাও আছে। বরং খুঁজতে থাকুন রেকর্ড বইয়ের পাতা অথবা চলে যান নেটে, করতে থাকুন ক্লিক - সার্চ - ক্লিক যতোক্ষণনা ডাউন লোড সম্পন্ন হয়। তারপর খুজুন সর্বশেষ জাতীয় রেকর্ড, দেখতে চেষ্টা করুন কোনও দেশের সাধারণ নির্বাচনে ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন কিনা? এখানেই কাজ শেষ হবে না ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ্য নাগরিকদের। আপনাদেরকে ভোট করতে হবে - না হয় আবেদন - যেমন করেছিলেন সুন্দরবনকে প্রকৃতিক আশ্চর্য নির্বাচিত করার জন্য। মনে রাখবেন ওইবার কিন্তু ফোর জিরো ফোর (404) হয়ে গিয়েছিলেন, এবার তা হলে চলবে না এবার হিট সাফসেসফুল করতেই হবে। কোথায় করবেন? গিনেজের সাইট খুজে বের করুন না হলে জাতিসংঘ, ইউএস, ইউকে, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, জাপান যারাই গণতন্ত্র নিয়ে গর্ব করে তাদের যে নাগরিককেই পান তার ফেসবুকের ওয়ালে ঝুলিয়ে দিন, আপনার জাতীয় রেকর্ডের বার্তা। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত থাকতে পারবেন।

কী দরকার বেশি খবর রাখার? হরতাল-অবরোধ ছাড়াই প্রতিদিন কতোজন নিহত হচ্ছে কিংবা হরতাল অবরোধ হলে কতোজন মরছে? কী দরকার ওই হিসাব রাখার যে কতো জেলা রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে? এসব কোন বিষয়ই না বড় কোন অর্জন করতে হলে তো আপনাকে কিছু ত্যাগ করতে হবে। এতো বড় একটা রেকর্ড অর্জনের জন্য এ পর্যন্ত যা প্রাণ বলিদান হয়েছে তার জন্য দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই। এ ব্যাপারটাও ছেড়ে দিতে পারেন বিদেশী দেশ বা সংস্থার ওপর। এছাড়াও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অথবা হিউম্যান রাইটসের একাধিক সংস্থা - সংগঠন আছে, তারা বিবৃতি দিক। আপনি এই দেশের বাসিন্দা হয়ে কেন আপনার সোনার মানুষদের পেছনে লাগবেন, তাদের ছিদ্রান্বেষণ করবেন। কেন আপনি হিসাব করতে বসবেন ক্ষমতাসীন দল নতুন ক্ষমতার জন্য তাদের নৌকায় উঠিয়েছে কতোজন গডফাদার, কতোজন টেন্ডারবাজ-চাঁদাবাজ আর দুর্নীতিবাজকে। পত্রিকাগুলো নিশ্চয়ই দেখেছেন এদের সংখ্যা ৩২ জন যাদের ২৩ জনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এ জন্য দুঃখ বা কষ্ট কেন পাবেন আপনি বাংলাদেশের মানুষ হয়ে। আপনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতিগুলোর অন্যতম। আপনিই পারেন গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে ফেসবুকে নতুন স্ট্যাটাস দিতে, পারেন টুইটারে এমন কিছু লিখতে যা এর আগে অন্য কেউ লেখেনি। আপনি বা আপনার এসবই পারেন কারণ আপনার আছে একজন সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রী যিনি আপন ইচ্ছার বাইরে আর কোন কিছুকেই পাত্তা দেন না। যিনি ক্ষমতার ধারাবাহিকতায় যারপরনাই দৃঢ়তায় বিশ্বাসী। তিনি আপনাদের আপাতত সুখ দিতে না পারেন - নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ডিজিটাল পদ্ধতিতে শত শত ফলক উন্মোচন করে সুখ-স্বপ্ন উপহার দিয়েছেন। এখন মধুর, মিথ্যার সমুদ্রে আপনারা সুখ স্বপ্নে ডুবে থাকবেন এটাই তিনি আশা করেন।

যতোই বোমা ফাটুক, যতোই গুলি চলুক, যতোই দেশ ছিন্ন ভিন্ন হোক, যতোই বিরোধী রাজনীতিবিদরা জেলে পচুক তাতে আপনাদের কি? আপনারা যারা সব বেড়াজাল এড়িয়ে দুরু দুরু বুকে পথে ঘাটে চলাচল করে বেঁচে-বর্তে আছেন, তারা শোকর করেন এই যে ১৫৪ জনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া, এ জন্য নির্বাচন কমিশনের কাজ, ঝুঁকি কতোটা কমেছে ভেবেছেন? এই যে ৩২ গডফাদারের মধ্যে ২৩ জনের জিতে যাওয়া এর জন্য কতো জনপদে শান্তি থাকবে, কতোজনের জীবন বাঁচলো, তা কি ভেবেছেন?

যদি এখনো এই লাইনে না ভেবে থাকেন তাহলে এখন থেকে ভাবতে থাকুন। আপনি কেন মিছিমিছি সুখ-শান্তি খুজতে রাস্তায় বের হবেন, কেন ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন? লাইন দিয়ে ভোট দেয়া সে তো পুরনো মডেল। এ কারণেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে নির্বাচন করতে হলে কাউকে কষ্ট করে লাইনেও দাঁড়াতে হবে না, পছন্দ-অপছন্দের কোনো বিষয় থাকবে না। যারা কফি পান করেন তারা জানেন চটজলদি কফি পানের জন্য - ‘ইন্সট্যান্ট কফি’ বাজারজাত করে থাকে অনেক কোম্পানী। এর কারণ ভোক্তাদের কষ্ট লাঘব করা। কাজেই এখন থেকে ইন্সট্যান্ট নির্বাচন বা চটজলদি নির্বাচনের ব্যবস্থাটি চালু করে দিল আওয়ামী লীগ। আর এ নির্বাচনী পদ্ধতির পুরো ট্রেডমার্ক আওয়ামী লীগের এবং এর নেত্রীর। একবিংশ শতকে বিংশ শতকের রাজনীতি চলবে না। আমরা ‘আনুষ্ঠানিক গণতন্ত্র’ চালু করলাম সবাই আমাদের অনুসরণ করুক এবং তাই সবাইকে জানিয়ে দিন ‘ভোটার ক্লেশ নিবারনী পদ্ধতি’ হচ্ছে সবচেয়ে আধুনিক উপায়।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×