শ্রমিক আন্দোলন বুঝতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে শ্রমিক কেন শ্রম দেয়।শ্রমিক শ্রম দেয় বেঁচে থাকার তাগিদে।পুঁজিবাদী সমাজে তারা প্রাচীন দাসদের মত শ্রম দিতে বাধ্য।এখন কেউ কেউ বলতে পারেন প্রাচীন দাসদেরকে শ্রম দিতে বাধ্য করা হত।কিন্তু আধুনিক সমাজে শ্রমিক সইচ্ছায় শ্রম দেয়।এক জন শ্রমিক যদি কাজ ছেড়ে দেয় তবে মালিক পক্ষ তাকে শ্রম দিতে বাধ্য করে না।তবে প্রাচীন দাস এবং আধুনিক শ্রমিকের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?পার্থক্য শুধু সামন্তবাদ এবং পুঁজিবাদের কৌশলে।কৌশল ভিন্ন হলেও ফলাফল এক।পুঁজিবাদী সমাজে মালিকপক্ষ পুঁজি বিনিয়োগ করে মুনাফা লাভের আকাঙ্ক্ষা থেকে।কিন্তু পণ্য উৎপাদনের জন্য তাদের প্রয়োজন হয় বিপুল শ্রমশক্তি।শ্রম যত সস্তায় পাওয়া যাবে মালিক পক্ষের জন্য তত সুবিধা।সস্তায় শ্রমিকের শ্রম কিনে মালিকপক্ষ অধিক মুনাফা লাভ করতে চায়।এখন প্রশ্ন হচ্ছে সস্তায় নিজের শ্রম কারা বিক্রি করবে?
আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশে অধিকাংশ মানুষ মৌলিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্ছিত।যেহেতু গরিব উত্তরাধিকার সূত্রে গরিব থাকে এবং রাষ্ট্র এদের শিক্ষার দায়িত্ব নেয় না তাই বেঁচে থাকার জন্য নিজের কায়িক শ্রম বিক্রি করতে এরা বাধ্য হয়।আর এই শ্রেণীর মানুষই পুঁজিবাদীদের মুনাফা লাভের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।তাহলে আমরা বলতে পারি শ্রম দেয়া ছাড়া এসব শ্রমিকের বেঁচে থাকার আর কোন উপায় নেই।অর্থাৎ একজন শ্রমিক কোন ভাবে বেঁচে থাকার জন্য বাধ্য হয় সস্তায় তার শ্রম বিক্রি করতে।এটাই হচ্ছে পুঁজিবাদীদের কৌশল যা শ্রমিককে বাধ্য করে দাসে পরিনত হতে।পুঁজিবাদী মালিকপক্ষ যা ইচ্ছা তাই করতে পারে কারন তারা জানে শ্রমিকের বিকল্প কোন রাস্তা নেই।এক সময় সমাজতন্ত্র শ্রমিককে বিকল্প সেই রাস্তা দেখিয়েছিল।সেই মুক্ত হওয়ার স্বপ্নে পুঁজিবাদীদের বুক কেঁপে উঠেছিল।কিন্তু পুঁজিবাদীদের কৌশলের কাছে সমাজতন্ত্রের তাত্ত্বিক ধারনা তত্ত্বই থেকে যায়।দাসে পরিনত হওয়া ছাড়া শ্রমিকের অন্য কোন উপায় থাকে না।
তাহলে সমাধান কি?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১