somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘরের মধ্যে ঘর

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষকে অহরহ বলতে শুনি “ আমার হৃদয় নেই , মন নেই , আমি রোবট টাইপ , আমি কষ্ট ফিল করতে পারি না ইত্যাদি”
আমি জানি না মানুষ কি দিয়ে আসলে ফিল করে, মন, হৃদয় নাকি অন্যকিছু।
তবে জোর গলায় বলতে পারি মানুষের বুকের ভেতরে কিছু একটা আছে যার যোগসূত্র সরাসরি মস্তিষ্কে রাখা অতিতের মধুর স্রিতি গুলোর সাথে , যে স্রিতি গুলো মনে উকি দিলে ঐ সময়ে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রবল চাপ পরে বুকের মধ্যে থাকা ঐ অজানা যন্ত্রে। যে চাপ নিঃশ্বাস আটকে দেয় প্রায় , হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচলের গতিকে কুমিয়ে অস্বস্তি তে ফেলে দেয় মানুষকে । মানুষ তখন চেষ্টা করে স্রিতি গুলোর প্রবাহ মস্তিষ্কে আসার দরজাকে রুদ্ধ করে দিতে ।

মানুষ বলে “ আমার বৃষ্টি ভালো লাগে ” আবার কেউ বলে “বৃষ্টি আমার বিরক্ত লাগে ”
আমার আসলে বৃষ্টি ভালো খারাপ দুটোই লাগে, তবে সময় ভেদে । কিন্তু চারদিক অন্ধকার করে দেয়া, দমকা ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি আমি ভয় পাই । ঝর কে ভয় পাই না , ভয় পাই এর সাথে জড়িত শৈশবকে।

ঘরের মধ্যে ঘর , টিনের চালায় ঝুম ঝুম বৃষ্টি আর দব দব শব্দ করা ঝর।
চারদিক অন্ধকার করে আকাশের দুই প্রান্ত থকে ধেয়ে আসছে মেঘ , প্রবল বাতাশ , গাছ গুলো একবার বায়ে তো আর একবার ডানে হেলছে , মনে হচ্ছে গাছের চুরা বুঝি মাটি ছুতে চায় । ছেলে স্কুলে, তাই মায়ের মনেও ঝর , এ ঝর ভয়ের ঝর। উঠনের এ প্রান্তে একবার তো ঐ প্রান্তে আর একবার দৌরে যায় মা, আর উকি দিয়ে খুজে “এই বুঝি ছেলে এল ঘরে , সাইকেল এ ক্রিং ক্রিং শব্দ করে ঝর সুরুর আগেই ”। মা যেন মেঘ কে প্রতিনিয়ত অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছে যাতে দুই মেরুর মেঘের মীলন না ঘটে ছেলে আচলে আসার আগে । সুরু হাল্কা বৃষ্টি, ছেলে ভিজে একাকার ,তবে পৌঁছে মায়ের চোখের পাড় ।
দৌরে ঘরে যায় মা ছেলে । ঘরের মধ্যে দুম দাম শব্দ, জানালা গুলো বুঝি দমকা হাওয়ার তাড়া খেয়ে , হুমড়ি খেয়ে পড়ে, চূর্ণ বিচূর্ণ হচ্ছে । এবার প্রতিযোগিতা সুরু জানালা বন্ধ করার ।
জানালা বন্দ রুদ্ধ দ্বার, দুম করে বিকট শব্দ , চারদিক অন্ধকার।ঝরের তাড়নায়, তারে তারে ঘর্ষণে ট্রান্সফরমার বিরক্ত হয়ে বুঝি উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলে “ আমি পারব না আর”
কখন বিদ্যুৎ আসবে ঘরে বলা দুস্কর। মোম বাতি , কুপি বাতি আর হ্যারিকেন এই নির্ভর ।
মা নিয়ে যায় গোসল কড়াতে , নয়তো আসবে জ্বর । গোসল শেষ, চারদিক চুপ চাপ
শুধু ঝুম ঝুম বারী বর্ষণ টিনের চালায় । মাঝে মাঝে তীব্র আলোর ঝলকানি দিয়ে বিকট গ্রুম আওাজ করে খেলা করছে ঝর ।
বোনের হাতে ভাতের থালা , গুছিয়ে গুছিয়ে তুলে দিচ্ছে মুখে ভাতের লোকমা । শেষে গিয়ে না পরে পরে আম, জাম, কাঁঠাল, কলা ।
খাওয়া শেষ , চারদিক অন্ধকার মাঝখনে কালো ধোঁয়া ওড়ান হলুদ আলোর কুপি বাতি , তার সাথে ঝুম ঝুম আওয়াজ ... কেমন জানি অসম্ভব সুন্দর সিক্ত এক পরিবেশ । স্বর্গীয় অনুভুতি।
অল্প আলয় চলছে এবার “ ঘরের মধ্যে ঘর বানিয়ে কাল্পনিক ভবিষ্যৎ কে বাস্তব রুপ দেয়ার খেলা ”
চার টা বিছানার ১৬ টা বালিশ আর দুইটা কাথার ঘর । বালিশের উপর বালিশ তুলে , তিনটা দেয়াল সামনে ফাকা বর্গ করে, কাথার চালা তুলে দিয়ে তৈরি হল ঘর ।
বোন এবার বলে আমার “ যাব যখন দূরে চলে , বাবার মত কাজের ছলে ... থাকব ভাই বোন সুখের ছলে , এমন করে ঘরটি তুলে ’’
কতনা পরিকল্পনা ভাই বোন এর ,। কলেজ থকে আসবি , ক্লান্ত হয়ে বসবি ... অফিস থেকে আসব আমি তবু হবনা ক্লান্ত ...
তোর মুখে দানা তুলে তবেই যেন সান্তি মিলে । পুজা পার্বণ ঈদ এলে , আসব ভাই বোন বাবা মায়ের কলে ।

বড় হতে হবে , অনেক বড় , বাবা মা যেন মাথা উঁচু করে বলতে পারে “ এই আমার ছেলে, এই আমার মেয়ে ’’ এমন করে খেলার ছলে কখন যেন ঘুম বাসা বাধে চোখে ।ঝরের তীব্রতা কুমে , মেঘের গর্জনও ফিকে হয় ... ঘুম যায় ভাই, বোনের কোলে পা টি তুলে ।

বড় হওয়ার প্রতিযোগিতায় চলে এসেছি অনেক দূরে , প্রথমে ভাই বোন মিলে , কিছু দিন বাদে বোন চলে যায় পড়ের বাড়ি, ভাই হয়ে যায় একা ।

চলছে জীবন নিজ গতিতে, বাবা মা বশে শুন্য কোলে পথ চেয়ে আজ একা ।

এর চেয়ে মধুর স্রিতি কি হতে পাড়ে আমার জানা নাই , তবে আজ শুধু অতীতের পটে আকা ।
অন্ধকার করা দমকা হাওয়া আর দুম দুম শব্দ করা ঝর আসলেই বুকের মদ্ধটা কেমন জানি ফাকা ফাকা লাগে ... আর দম বন্ধ করা অব্যাক্ত অনুভূতি ...............
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×