somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৪২ বছরের ভুল রাজনীতি আর দুর্বল নের্তৃত্বে বাংলাদেশ দিশেহারা।। রেজা ঘটক

১৬ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্ব মানচিত্রে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর একটি নতুন দেশের জন্ম হয় যার নাম বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাত থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৮ মাস ২২ দিনের যুদ্ধে এই দেশটি স্বাধীন হল। এর আগে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত ২৩ বছর ৭ মাস ২০ দিন আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে বাঙালি জাতিকে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখেছি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন দিয়ে মূলত যার শুরু আর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে সম্মিলত মিত্র বাহিনীর কাছে পাকিস্তানের ইস্টার্ন ফোর্সের অধিনায়ক একে নিয়াজি'র আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যার শেষ। পৃথিবীর ইতিহাসে এতো কম সময়ে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জণ করার উদাহরণ মনে হয় আর একটিও নেই। কেন আমরা এতো কম সময়ে স্বাধীনতা পেয়ে গেলাম? কারণ তৎকালীন বিশ্ব রাজনীতির হিসাব নিকাশ। তখন রাশিয়া যদি জাতিসংঘে আমেরিকার বিরুদ্ধে ভেটো না দিতো তাহলে এই যুদ্ধ নিশ্চিতভাবেই আরো দীর্ঘতর হতো। এই যুদ্ধে ভারত যদি সক্রিয়ভাবে বাঙালির পাশে না দাঁড়াতো, তাহলেও এই যুদ্ধ আরো দীর্ঘায়িত হতো।
রাশিয়া আর ভারতের কাছে সেজন্য বাংলাদেশের সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। বিশ্ব রাজনীতি'র সঙ্গে আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তী অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই ভুল ছিল। বঙ্গবন্ধু'র নের্তৃত্বে তখন আওয়ামী লীগ সরকার তড়ি ঘড়ি করেই প্রায় সকল বিশ্ব সংস্থার সদস্যপদ গ্রহন করেছিল। রাজনৈতিক দর্শনে এটাই প্রথম ভুল পথে হাঁটার শুরু। এমন অনেক বিশ্ব সংস্থা আছে যার মেম্বারশিপ না নিলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হতো না। কিন্তু আমরা মেম্বারশিপ নেওয়া শুরু করলাম গণহারে। সেই সব বিশ্ব সংস্থায় প্রতি বছর আমাদের বাৎসরিক চাঁদা দিতে হয় এটাই বাস্তবতা। বিশ্ব সংস্থায় মেম্বরশিপ নেওয়া মানে দাঁড়ালো সারা বিশ্বে তখন বাংলাদেশকে পরিচয় করানোর একটি মতলব। আর বিশ্ব সংস্থার বিভিন্ন বাৎসরিক সম্মেলনে গিয়ে দলভারী একটি দল বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত পিকনিক করতে যাওয়ার মতো। সেই সব পিকনিকে অন্য দেশের শীর্ষ পর্যায়ের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ আর কিছু ফটোসেশান করা ছাড়া সেই সব সম্মেলন থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের তেমন কোনো লাভ হয়নি। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও এরকম অনেক বিশ্ব সংস্থার সাথে আমাদের কেবলই সৌজন্য রক্ষার কালচার বিদ্যমান। আমরা সেই পিকনিক আর ফটোসেশানের কালচার এখনো ধরে রেখেছি।
বিশ্ব সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রধান শর্ত হওয়া উচিত অর্থনৈতিক লেনদেন। বাংলাদেশের উচিত এখন সকল বিশ্ব সংস্থার মেম্বারশিপে কি কি লাভ হয়েছে, আর কোথায় কোথায় এমনতেই বছরের পর বছর আমরা মেম্বারশিপ ফি দিয়ে যাচ্ছি, তার একটি তালিকা করা। সরকারে যারা থাকেন, তাদেরই সেই তালিকা করে অপ্রয়োজনীয় সংস্থা থেকে বাংলাদেশকে প্রত্যাহার করা উচিত। তাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি কখনোই কমবে না বরং কিছু আর্থিক লাভ হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল স্বাধীনতার পক্ষের এবং বিপক্ষের দুটি দলে দেশের সকল মানুষকে দুই ভাবে ভাগ করে ফেলা। গোলাম আযমের নের্তৃত্ব জামায়াত, আলবদর, আলশামস, রাজাকার গোষ্ঠী তখন চিন্থিত ছিল। বাংলাদেশ ভূভখণ্ডে তাদের রাজনীতি তখন নিষিদ্ধ করে সিলগালা করে দেওয়া উচিত ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সেটি কঠোরভাবে করতে ব্যর্থ হয়েছিল। দেশীয় রাজাকার, আলবদর, আলশামস. জামায়াতের সঙ্গে তখন পাকিস্তানী ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দী উল্টো বাংলাদেশের ঘাড়ে একটি অশুভ হায়নার মতো চেপে বসলো। আমরা অনেক বিশ্ব সংস্থার মেম্বারশিপ নিলাম, কিন্তু পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হলাম। তাহলে সেই দুর্ভোগ তো পরবর্তী সময়ে জাতিকে পোহাতে হবেই। উল্টো ভুট্টোর সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষার জন্য আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক করলাম। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা ছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। সেই ভুল থেকেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটনার সূত্রপাত। রাজনীতিতে পরাজিত শক্তি সুযোগ পেলেই কামড় দেবে এটাই আসল সত্য। '৭৫ পরবর্তী সরকার গুলো বাংলাদেশে সেই পরাজিত শক্তির অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করলো। '৯০-এর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের পর বাংলাদেশের মানুষের ধারণা হয়েছিল এবার অন্তঃত দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে। বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি'র নের্তৃত্বে সরকার গঠন করে মানুষকে সেই ভুল ভাঙাতে পারেনি। আর বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য তখন আওয়ামী লীগের মাথা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেল। আওযামী লীগ তখন আবার সেই পুরানো ভুল করলো। এবার জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি বিরোধী আন্দোলন করলো আওয়ামী লীগ। যে গোলাম আযম ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল, আওয়ামী লীগের ভুল রাজনীতির কারণে সেই গোলাম আযম ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে ঢাকায় আসেন অসুস্থ মাকে দেখার কথা বলে। তবে তিনি আর ফিরে যাননি। আর স্বাধীন বাংলাদেশে গোলাম আযম ১৯৮১ সালে প্রথম জনসমক্ষে আসেন। কারণ, আওয়ামী লীগের ভুল রাজনৈতিক দর্শনের কারণে সৃষ্ট পরবর্তী সামরিক সরকার রাতারাতি এই সুযোগটি গ্রহন করেছিল নিজেদের রাজনৈতিক শক্তিকে আরো শক্তিশালী করার জন্য। জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। সেই জিয়ার হাত ধরেই গোলাম আযমরা এদেশে আবার শক্ত ঘাটি বানানোর সুযোগ পেল। কারণ, সেই সুযোগ তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগের ব্যর্থ রাজনৈতিক দর্শন। ব্যক্তি স্বার্থের কারণে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই খোন্দকার মোশতাকের মন্ত্রীসভায় ছিল। পরবর্তীতে জিয়ার মন্ত্রীসভায় খোদ জামায়াতের কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজুর রহমান স্থান পেলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এই যে ভুল রাজনৈতিক কালচারের আমদানি শুরু হল সেটা ৪২ বছর পরে এখনো চলমান।
১৯৯১ সালের ২৯শে ডিসেম্বর যখন গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী প্রকাশ্যে আমির ঘোষণা করলো, তখন জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে বড় ধরণের আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ১৯৯২ সালের ২৬শে মার্চ গণআদালত করে গোলাম আযমসহ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর তখন প্রতীকী বিচারও করা হয়েছিল। জাহানারা ইমামে সেই নতুন নের্তৃত্বকে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি অবজ্ঞা করেছিল। না জানি আওয়ামী লীগের নের্তৃত্ব শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাহানারা ইমামের কাছে চলে যায়, সেই আতংকে আওয়ামী লীগ তখন আবারো দোমনা দোমনা করেছিল। জেনারেল এরশাদের পতনের পর ৯১'র নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য অন্য দলের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। আর তখন জামায়াতের সমর্থনের বিনিময়ে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপি'র সঙ্গে জামায়াতের এক অনানুষ্ঠানিক সমঝোতা হয়েছিল। সেই সমঝোতার সুযোগে অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশের কারণেই জামায়াত তখন গোলাম আযমকে প্রকাশ্যে আমির ঘোষণা করেছিল। কিন্তু একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনের মুখে বিএনপি সরকার বাধ্য হয়ে ৯২ সালে মার্চ মাসে গোলাম আযমকে গ্রেফতার করেছিল। সেই গ্রেফতারের ক্ষেত্রে বিদেশী নাগরিক হয়ে বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরবর্তীতে নাগরিকত্বের প্রশ্নে হাইকোর্টে জামায়াত রিট মামলা করে এর পক্ষে রায় পেয়েছিল। সেই রায়ে স্বাক্ষর করেছিলেন বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান। যিনি পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হয়েছিলেন। কিন্তু তখন সরকার নামকাওয়াস্ত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েছিল। সুপ্রিমকোর্টে আপিল বিভাগ থেকে নাগরিকত্ব ফিরে পেয়ে ১৬ মাস জেল খাটার পর গোলাম আযম বেরিয়ে এসেছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে কয়েক দশক ধরে গোপনে এবং প্রকাশ্যে জামায়াতের আমীরের দায়িত্ব পালন করে গোলাম আযম ২০০০ সালে অবসরে যান।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আর অন্যান্য বাম রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়ার সরকারের পতন ঘটে। তখন জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আতাঁত হয়তো ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হয়েছিল, কিন্তু রাজনৈতিক দর্শনে সেটিও ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এভাবে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেদের একটি শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল। সেজন্য আওয়ামী লীগ যেমন দায়ী, বিএনপি তো অবশ্যই দায়ী। ভোট আসলেই বাংলাদেশের মানুষকে কয়েক ভাগে ভাগ করার একটা কালচার গড়ে উঠেছে। অমুক স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। অমুক স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। অমুক মুক্তিযোদ্ধা। তমুক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। অমুক দেশকে ভারত বানিয়ে ফেলবে। অমুক বাংলাদেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাবে। অমুক বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় ভরে তুলবে। আর এসবের মধ্যে চলে তলে তলে রাজনৈতিক আতাঁত করার কৌশল।
সারা বছর চুরি-চামারি, লুটপাট, দুর্নীতি, খুন, গুম, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করার সময় এই শ্লোগানগুলো কারোর মনে থাকে না। তখন নির্বাচনী খরচ তোলায় সবাই সরকারি ভাবেই চুরি চামারি করে আখের গোছান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনার বাবা মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়ে ৯ মাস পাকিস্তানের জেলে বন্দী ছিলেন। আর আমার বাবা সেই ৯ মাস যুদ্ধ করেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেছেন। আপনার মা আপনার পরিবার নিয়ে নিরাপদে রাজবন্দী ছিলেন। আর আমার মা দীর্ঘ নয় মাস প্রতিটি রাত আতংকে থেকেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাত রান্না করেছেন। কই, আমার বাবা তো মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট দাবী করেন নি। তার সন্তান হয়ে আমরা তো সেই সার্টিফিকেট তুলিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের লিস্ট বানানো ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে গুটিকয়েক রাজাকার, আলবদর, আলশামস আর তাদের দোসরদের বাদ দিলে গোটা ভূখণ্ডের প্রতিটি মানুষই তখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। সেই হিসাবে বলতে গেলে সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রায় সাত কোটি আসল মুক্তিযোদ্ধা। আর আপনারা একটা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বানালেন। নিজেদের আত্মীয়স্বজন যারা চিন্থিত রাজাকার ছিল তাদেরকেও আপনারা আওয়ামী লীগ আর বিএনপি মিলে মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট দিলেন। এই আকাম টা আপনারা কেন করলেন? কারণ, ভোটের রাজনীতিতে এদেশের সাধারণ মানুষের চোখ অন্যদিকে ঘুরানোর জন্য এই সেনসিটিভ ইস্যুটি বড়োই কার্যকর একটা উপায়। ভোটে এটার বেশ ভালো সারা পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠদের সন্তানরা চায়ের দোকান চালায়। আর আপনারা ঘি খেয়ে বাংলাদেশ শাসন করেন। এটা দেখার জন্য সাত কোটি বাঙালি সেদিন যুদ্ধ করেনি। এই পরিস্থিতি আপনারাই সৃষ্টি করেছেন। যদি নিজেদের স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি দাবি করেন, তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যে জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেন। তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করে দেশ থেকে বের করে দিন। তাদের দেশের আলো বাতাসে রাজনীতি করতে দেবেন আর ভোটের রাজনীতিতে তলে তলে আতাঁতের সন্ধি করবেন, আর জনসভায় বলে বেড়াবেন আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, এই বস্তাপচা রাজনীতি আর নতুন প্রজন্মকে খাওয়ানো যাবে না। এটা এখন দিন দিন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে খুব পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, আসলে আপনারা সবাই আসলে ক্ষমতার রাজনীতি করেন। দেশের মানুষের জন্য বুলি ছাড়া আপনাদের আর কিছু দেওয়ার নেই।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নতুন প্রজন্মের ভোটের জন্য একটি বড় অযুহাত তৈরি করলো যে, আমরা ক্ষমতায় গিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। বিচারের নামে একটি সাজানো নাটক তারা সাড়ে চার বছর ধরে করছেন। আর তলে তলে জামায়াতের সঙ্গে মহব্বত করছেন ভোটের হিসাব নিয়ে। দলীয় আদর্শ কাজগে লেখা থাকলেও আচার আচরণে, কাজকর্মে, লুটপাট, চুরি-চামারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, খুন, গুম, দুর্নীতি, দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার এসব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি'র মধ্যে কোনো বেসিক পার্থক্য নেই। ক্ষমতায় গেলে দু'দলের চরিত্র হারে হারে মিলে যায়। সো, ভোটের সময় আপনারা কেন মুক্তিযুদ্ধ ইস্যু আনেন? সারা বছর তা মনে থাকে না। আর মুক্তিযুদ্ধ তো করেছে সাত কোটি মানুষ। আপনারা লিস্ট বানালেন তো নিজেদের পছন্দের লোক ঢুকিয়ে। সেই লিস্ট তো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে রাজনৈতিক দুর্গন্ধে ভরপুর একটি দলীয় মুৎসুদ্দি। সেই লিস্টের তো আসলেই কোনো ভাগ্যের উন্নয়ন কারো চোখে পড়ে না।
সো, এই রাজনীতি আপনারা বন্ধ করুন। গতকাল ১৫ জুলাই ২০১৩ সালের পর আর এই পুরানা ফাঁদে সাধারণ মানুষ আপনাদের বিশ্বাস করবে না। আপনারা সবাই মিথ্যাবাদী। নিজেদের আখেরের স্বার্থে আপনারা জাতিকে আর মিথ্যা স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করবেন না। ১৫ জুলাই ২০১৩ সালে গোলাম আযমের যুদ্ধপরাধের জন্য ৯০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর সহজ সরল মানে হল, আগামী ৯০ বছর আপনারা এই একই পুরানা কুসন্দি নিয়ে ঘেউ ঘেউ করবেন। আপনারা আরো ৯০ বছর এই একই পুরানা হরতকি দিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে নিয়ে পুরানা রাজনীতি করার পায়তারা করছেন। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম এই রাজনীতি আর দেখতে চায় না।
গোলাম আযমের রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই এখন আর দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ বলে কিছু নেই। এখন নতুন প্রজন্মের উচিত হবে ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক দর্শন ঠিক করা। নইলে বাংলাদেশ আবারো পেছনের দিকে হাঁটা শুরু করবে। বাংলাদেশের দুই বড় রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের উন্নয়নের চেয়ে নিজেদের উন্নয়ন বেশি করেছেন। আর সাধারণ মানুষের সামনে কিছু রাজনৈতিক মূলা ঝুলিয়ে রেখেছেন। আমরা সেই মূলায় আর চুপ থাকতে পারি না। দুর্বল রাজনৈতিক নের্তৃত্ব থেকেই এখন হেফাজতে ইসলামের উত্থান ঘটেছে। আগামীতে ভোটের রাজনীতিতে হেফাজতই এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মাশুল এখন বাংলাদেশকে দিতে হবে। নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠাতা নিয়ে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে বেঈমানী করেছে। নতুন প্রজন্মকে এখন নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে আগামী দিনে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। সো, সাধু সাবধান।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×