somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঁচবিবির(Panchbibi) চুনাপাথর; অতীতের অবহেলা এবং গাফলতির পুনরাবৃত্তি ঘটছে

১৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাঁচবিবিতে চুনাপাথরের খনি আবিষ্কারের ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে এক বিশেষ রহমত(করুণা)।
বিগত ৪ঠা জুন-২০১২ সালে দৈনিক পত্রিকাতে লীড নিউজ হয় “জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে চুনাপাথর খনি আবিষ্কার” খবরে বলা হয়, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় চুনাপাথরের খনির সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)।” ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৪৯৮ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন শেষে চুনাপাথরের বড় মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে খননকারী দল। গত এপ্রিলে (২০১২ ঈ.) ভূতাত্ত্বিক জরিপের ভিত্তিতে ওই খনি এলাকায় অনুসন্ধান কূপ খনন শুরু করে জিএসবি। গত শনিবার সেখানে এই চুনাপাথরের খনি আবিষ্কৃত হয়। এর আগে জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ ও সুনামঞ্জের টেকেরঘাটে চুনাপাথরের সন্ধান পাওয়া গেলেও ওই দুটি প্রকল্প লাভজনক হয়নি। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়লা, কঠিন শিলা, পিট কয়লা এবং আরো নানা ধরনের দ্রবের খনি আবিষ্কার করেছে জিএসবি।
এদিকে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের আগাইর ও শালপাড়া মৌজায় ভূ-তাত্ত্বিক জরিপের প্রাথমিক অনুসন্ধানে কয়লা ও কঠিন শিলা খনি প্রাপ্তির সম্ভাবনা জানা গেছে।


বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এখানে প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে চুনাপাথরের মজুদ রয়েছে, “১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৮ কিলোমিটার প্রস্থের একটি বেসিনে এ পাথর রয়েছে।”
চুনাপাথর থেকে মূলত সিমেন্ট তৈরি করা হয়। সিমেন্ট তৈরিতে ৮০ শতাংশ চুনাপাথর, ১৬ শতাংশ ক্লে, জিপসাম ৪ শতাংশ লাগে।”
ধারণা করা হচ্ছে, জয়পুরহাটের পাঁচবিবির চুনাপাথর থেকে দেশে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামালের চাহিদার পুরোটাই এই খনি থেকে মেটানো সম্ভব হবে।”


এই চুনা পাথর ৩ কোটি ৪০ লাখ থেকে ৫ কোটি ৫০ লাখ বছর আগের দাবি করে বলা হয়েছে, “অনুসন্ধান কূপ খনন করে বর্তমানে যে চুনাপাথর পাওয়া গেছে তা সিলেট লাইমস্টোন ফরমেশনের আপার স্টেজের পাথর।”
আরো নিচের দিকে খনন কাজ এগিয়ে গেলে এই পাথরের নিচে কয়লা পাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, অতীতে একই জেলার জামালগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের টেকেরঘাটে আবিষ্কার হয় চুনাপাথরের খনি। সেখান থেকে চুনাপাথর উত্তোলন ব্যয় সাশ্রয়ী বিবেচিত হয়নি; মজুদও পাঁচবিবির মতো ছিল না ওগুলোয়। এসব দিক থেকে নতুন আবিষ্কৃত খনিটির সম্ভাব্য মজুদ আশান্বিত করে তুলছে আমাদের। প্রতি বছরই ব্যাপকভাবে আমদানি করতে হয় সিমেন্ট তৈরির বড় উপাদান চুনাপাথর।তাই এখন পাঁচবিবি থেকে যত দ্রুত তা উত্তোলন করা যাবে, তত শিগগির আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে আমাদের।আর এতে করে দেশের অর্থনীতির একটা বড় অংশ সাশ্রয় হবে। ভূগর্ভে একটির আশপাশে অন্য খনিজ সম্পদ প্রাপ্তির সম্ভাবনা বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পাঁচবিবিতে চুনাপাথরের নিচের স্তরেই কয়লা পাওয়া যেতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কয়লা বাদে অন্যান্য খনিজের জন্য অনুসন্ধান চালানো যেতে পারে। বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক গঠনগত বয়স অনুসারে সে ক্ষেত্রে চুনাপাথর-কয়লাসহ অন্যান্য সম্পদ পাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।


২০১১ সালের আগস্টে আবিস্কার হয় নোয়াখালীর সুন্দলপুর প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র। স্বল্প সময়ের ব্যবধানেই এ থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। ২০১২ সালে মার্চে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বঙ্গোপসাগরে এক্সটেন্ডেড ইকোনমিক জোন (ইইজেড) পেয়েছি আমরা, যেটি সমুদ্র থেকে খনিজ সম্পদ ও মৎস্য আহরণের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সিলেট বিভাগে আগেই আবিষ্কৃত কৈলাসটিলার জ্বালানি তেলের খনির মজুদ সম্বন্ধেও জানা গেছে বিস্তারিতভাবে। পেট্রোবাংলা কৈলাসটিলা ও হরিপুরে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক তেলমজুদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। ভূতাত্ত্বিক জরিপে আবিষ্কৃত ওই মজুদে উত্তোলনযোগ্য তেলের পরিমাণ পাঁচ কোটি ৫০ লাখ ব্যারেল। গত ২০শে মে ২০১২ তারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। তার পরপরই পাঁচবিবিতে চুনাপাথরের খনি আবিষ্কারের ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের উপর আর এক রহমত। তবে এ থেকে কতটা সুফল পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করছে এসব খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও ব্যবহারে দক্ষতার ওপর।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে আজ ২০১৫ সাল, এখন পর্যন্ত তেমন কোন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হয়নি।


বিভিন্ন সময় খনি আবিষ্কার, সম্পদ উত্তোলন ও তা সংরক্ষণে পারদর্শিতা দেখিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাপেক্স। তা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতা লক্ষণীয়। সুন্দলপুর থেকে গ্যাস উত্তোলনের পর জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের সময় সমস্যা হয়েছিলো। এ ক্ষেত্রে খনিজ সম্পদ আহরণে আরও দক্ষ জনবল ও কারিগরি সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন বাপেক্সের। এগুলো দ্রুত অর্জন করা অবশ্য কঠিন। এ অবস্থায় খনিজ সম্পদ উত্তোলনে অভিজ্ঞ কোম্পানির সঙ্গে যৌথ অংশগ্রহণ প্রতিষ্ঠানটিকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে। প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে বাপেক্স গোটা কার্যক্রমে নজরদারিও করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখা দরকার। যেভাবে এবং যে প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সম্পদ উত্তোলন করানো হলে ব্যয় কমবে, সে পথ অবলম্বনই শ্রেয়।

আধুনিক কালে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনিজ সম্পদ আহরণে পরিবেশগত ঝুঁকি কমে এসেছে যদিও তথাকথিত পরিবেশবাদীরা বিদেশী এজেন্ট হয়ে এ ব্যাপারে মাঝে মধ্যেই ষড়যন্ত্রমূলক হৈ চৈ শুরু করে। তাই খনির বহুমুখী ব্যবহার নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে যত দ্রুত গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছা যাবে, ততই মঙ্গল। নইলে কিন্তু ফুলবাড়ীর কয়লার মতো অব্যবহৃত থেকে যেতে পারে পাঁচবিবির চুনাপাথরও। সংকটের সময় সম্পদ আগলে নিষ্ক্রিয় থাকাটা আত্মঘাতী ছাড়া কিছুই নয়। আমি/আমরা পাঁচবিবিবাসী পাঁচবিবির চুনা পাথর উত্তোলন ও তা যথাযথভাবে ব্যবহার করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট এ ব্যাপারে বিশেষ দৃস্টি আকর্ষণ করছি। পাঁচবিবি সন্মন্ধে আরো জানতে চান তাহলে নিন্মের লিংকটিতে ক্লিক করুন
http://panchbibiinfo.blogspot.com/
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৫৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×