somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এসো বাংলাদেশ গড়ি

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবচেয়ে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হিসেবে সৌর বিদ্যুতের ব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ নেই নিশ্চয়। একেকটি সোলার সেল হতে কম বেশি গড়ে ২০ বছর বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায় এবং খুব সস্তা ও ব্যাবহার সহজ হবার ফলে পুনরায় নতুন সেল ব্যাবহার করে একটা সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প এক প্রকার চিরস্থায়ী প্রকল্প হিসবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। কিন্তু এই প্রকল্পের কঠিন বিষয় টা হলো প্রচুর পরিমান ভূমি বা জায়গা লাগে। যা আমাদের দেশের পক্ষে একটা বিরাট সমস্যা এবং আমাদের জন্যে এটা অনেক ব্যয় বহুল ও বটে। সাধারনত ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে আনুমানিক ২১৫০০ বর্গফুট (অসমর্থিত সুত্র) সোলার সেল দরকার হয়। এছাড়াও আরো কিছু ভূমির দরকার হয় উৎপাদিত বিদ্যুৎ কে রুপান্তর করে প্রবাহমান করার জন্যে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি বসানোর আরো কিছু ভূমি এবং সর্বপরি গ্রিডে যুক্ত করার জন্যে ও বেশ কিছু ভূমির প্রয়োজন। আমি বেশ কিছু সৌরবিদ্যুত ভোক্তা, সৌরবিদ্যুত সম্পর্কিত ইঞ্জিনিয়ার, ও সৌরবিদ্যুত বিষয়ক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি যে শুধু মাত্র ভূমির উপলভ্যতা না থাকার কারনে-ই আমাদের দেশে সৌরবিদ্যুত নিয়ে তেমন করে কেউ-ই ভাবছে না।

একজন নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক হিসেবে ভূমির যথাযোগ্য ব্যাবহারের কিছু ধারনা আমার আছে। আমি মনে মনে আমাদের দেশে-ই ভূমির উপলভ্যতা অনুসন্ধান করতে লাগলাম। এক পর্যায়ে আমার এক বন্ধু Kazi Akram কাজী আকরাম কথা প্রসঙ্গে আমাকে বললেন যে আমাদের শহর গুলোতে যেই বিজ্ঞাপন বিলবোর্ড গুলো আছে সেগুলোকে সোলার করলে কেমন হয়? কয়েক দিন এই বিষয়টা নিয়ে ভেবে দেখলাম যে সেটা বড় সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্যে তেমন আহামরি এর আকর্ষণীয় নয়। কিন্তু এই ভাবে বিকল্প অনুসন্ধানের প্রয়াস একেবারে মাথায় গেথে গেলো। ভাবনার এক পর্যায়ে আমার মাথায় মহাসড়ক ব্যবহারে ধারনা আসে এবং সেই সাথে রেলপথ ব্যাবহারের ধনরা। এবং এক পর্যায়ে আমি নিজে-ই রিতিমত অবাক হয়ে যায় এর বিশাল সম্ভবনা উপলব্ধি করে।

আমাদের রেলপথ আছে প্রায় ৪৫০০ কিলোমিটার। যদি ধরে নেই আমরা ৫০% রেলপথ ব্যবহার উপযোগী (আসলে প্রায় ৯০%-ই ব্যবহার উপযোগী হবে) রেলপথ আমরা পাবো। তাহলে আমরা প্রায় ২২৫০ কিলোমিটার রেলপথ। আর সবচেয়ে কম প্রসস্থের রেলপথ হলো মিটার গেজ। যা শুধু দুই লাইন এর প্রশস্ততা ১ মিটার হলেও তার আশে পাশে কমপক্ষে আরো ৫ থেকে ৭ মিটার বাড়তি যায়গা থাকে বিভিন্নি প্রয়োজনে। এর আমি যদি সেই রেলপথের উপর ছাদ নির্মাণ করি যা হবে অর্ধবৃত্তাকার তাহলে আমি একদম সবচেয়ে কম ধরে নিলেও পাবো ৭ মিটার যার পুরোটাই থাকবে সোলার সেল আবৃত। অর্থাৎ এক কিলোমিটারে আমি ১০০০@৭= ৭০০০ বর্গমিটার সোলার সেল বসাতে পারবো। অর্থাৎ এক বর্গমিটার = ১০.৭৬ বর্গফুট হিসেবে আমরা পাবো ৭০০০@১০.৭৬ = ৭৫৩২০ বরগফুট সোলারসেল স্থাপন উপযোগী অচ্ছাদন বা ছাদ। যার থেকে প্রায় সাড়ে ৩ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে দিনে কমপক্ষে ১০ ঘন্টা । ও হ্যা এটা সম্পূর্ণ জ্বালানী বিহীন, অন্যযেকোনো প্রকার বিদ্যুৎ প্রকল্পের চেয়ে বেশি পরিবেশ বান্ধব এবং প্রায় সরবনিম্ম খরচে। তাহলে প্রতি কিলোমিটার রেলপথে ৩.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়াগেলে ২২৫০ কিলোমিটারে পাওয়া যাবে ২২৫০@৩.৫= ৭৮৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

এই প্রকল্পের খরচ কেমন হবে?

রেলপথের ছাদ নির্মাণ ব্যায়ঃ

আমি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে গ্যারান্টির সাথে বলতে পারি প্রতি বরগফুট নির্মাণে বরেলপথের ছাদ র্তমান বাজারদর অনুযায়ী ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার বেশি খরচ হতে-ই পারে না। অর্থাৎ ১ কিলোমিটার বা ৩.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যে অচ্ছাদন নির্মাণ ব্যয় হতে পারে সর্বচ্চো ১০৭৬০@৬০০= ৬৪৫৬০০০/= টাকা (পুরোটাই দেশিয় মুদ্রায়)।

সোলার সেল স্থাপন ব্যায়ঃ

সাধারন ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ওয়াট বিদ্যুতের জন্যে যেই পরিমান সোলার সেল প্রোয়োজন তা ৭০ টাকা থেকে ১২০ টাকা দর খুচরা পর্যায়ে। আমি এই বিষয়ে অভিজ্ঞ অনেকের সাথে কথা বলে দেখেছি যে যদি দেশে-ই এই সোলার সেল উৎপাদন করা যায় তাহলে সেটা ২৫ থেকে ৩০ টাকার ও নিচে নেমে আসবে। যা হোক আমি মানসম্পন্ন আমদানি কৃত সোলার সেল এর মুল্য ৬০টাকা ধরে হিসেব করতে পারি। সেই হিসেবে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্য্যুতের জন্যে ব্যবহৃত সেলের দাম হবে ৬০@১০২৪ = ৬১৪৪০ টাকা অর্থাৎ ১ মেগাওয়াট বিদ্য্যুতের জন্যে ব্যবহৃত সেলের দাম হবে ৬১৪৪০@১০২৪= ৬২৯১৪৫৬০/= টাকা ( বৈদেশিক মুদ্রায়; কিন্তু দেশে উৎপাদন করতে পারলে দেশিও মুদ্রায়)

প্রবাহমান বিদ্যুৎ-এ রুপান্তর ও গ্রিডে যুক্ত করন ব্যয়ঃ

এই ক্ষেত্রে ভুমির প্রয়োজন আছে যা রেল কত্রিপক্ষের রেলপথ পার্শ্ববর্তি অনেক ভূমি ছাড়াও ভূ-গর্ভস্থ সাবস্টেশন নির্মাণ করা যেতে পারে। এতে একটু বেশি ব্যয় হলে ও কোনো ক্রমে-ই সেটার নির্মাণ ও স্থাপন ব্যয় ৫ কোটি টাকার বেশি হবে না। (যারা এই বিষয়- এ একটু আধটু জানেন তারা বুঝতে পারবেন যে সেড়ে তিন মেগাওয়াটের জন্যে ৫ কোটি টাকা ব্যায়ের সাব ষ্টেশন কত বেশি বাড়িয়ে বলা। তবুও প্রকপ্ল ব্যয় জেনো কোনো ভাবেই কম দেখানো না হয় সেই জন্যে-ই ৫ কোটি টাকা ধরা)

সর্বমোটঃ
রেলপথের ছাদ নির্মাণ ব্যায়ঃ ৬৪৫৬০০০/=
সোলার সেল স্থাপন ব্যায়ঃ ৬২৯১৪৫৬০/=
প্রবাহমান বিদ্যুৎ-এ রুপান্তর ও গ্রিডে যুক্ত করন ব্যয়ঃ ৫০০০০০০০/=
___________________________________________________________________
১১৯৩৭০৫৬০/= টাকা
১৫% অপচয়, আপ্যায়ন ও অবচয় যুক্ত করেঃ ১৭৯০৫৫৮৪/= টাকা
_________________________________________________________________
১৩৭২৭৬১৪৪/= টাকা

অর্থাৎ প্রতি ১ (এক) কিলোমিটার রেলপথ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ১৪ কোটিটাকা
অর্থাৎ ২২৫০ (বাইশ শত পঞ্চাশ) কিলোমিটার রেলপথ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় প্রায়৩১৫০০ কোটি টাকা মাত্র। এর প্রাপ্ত বিদ্যুৎ ৭৮৭৫ দৈনিক ১০ ঘন্টা।

*** আমাদের গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন এখোনো ৫০০০ মেগাওয়াট-ই অতিক্রম করে নাই। এর এর সামান্য তম ভাগের জন্যে-ই বছরে ২০হাজার কোটি টাকার ও বেশি ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এবং প্রতিওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বর্তমানে প্রায় ১২ টাকা সেখানে এই সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বিতরন ও রক্ষনাবেক্ষন খরচ ছাড়া এর কিছু-ই না। এবং সেটাও প্রতি ওয়াট এ এক ডিজিটের পয়সার ঘরে-ই থাকার কথা।

ধন্যবাদ

রি হোসাইন
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×