somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনাব জাফর ইকবাল সমীপেষু: প্লিজ অন্তত একবার চশমাটা খুলুন

২৭ শে মে, ২০১২ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জনাব জাফর ইকবাল সমীপেষু: প্লিজ অন্তত একবার চশমাটা খুলুন
দেশে চলমান সংকটের অন্ত নেই। রাজনৈতিকভাবে চরম অস্থিতিশীল রাষ্ট্র এখন বাংলাদেশ। অর্থনৈতিকভাবে চরম ভঙ্গুর অবস্থা। সম্প্রতি দেশের বৃহত্তম আয়ের খাতে গার্মেরন্ট শিল্প ধ্বংসের মুখে। এর পেছনে দেশি, বিদেশি প্রত্যক্ষ ষড়যন্ত্রের প্রমান পেয়েছে সরকার। রাজনৈতিক হত্যা, মামলা, গুম, আটক, সামাজিকভাবে অন্যায়, খুন, ছিনতাই, ডাকাতি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ঘুষ, কালো টাকার লেনদেন, শেয়ার বাজারে অস্থিরতা ইত্যাদি ভাবে দেশ এখন চরম সংকটাপন্ন অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া দেশব্যাপী চরম বিদ্যুৎ সংকটে নাকাল সব মানুষ।
ঠিক এই সময়ে আমরা যাকে দেশের গুণীজন হিসেবে সম্মান করি মুহাম্মদ জাফর ইকবাল আওয়ামীলীগের পক্ষে ভোট চাইলেন তার বিশাল একটি নিবন্ধে। তার জন্য তিনি এড়িয়ে গেলেন সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো। বাঙালির চিরন্তন আবেগ মুক্তিযুদ্ধকেই তিনি ভোট চাওয়ার পরিপত্র হিসেবে ব্যবহার করলেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের সকলেরই জানা- তবে জানাটা একটা বিভ্রাট হতে পারে। আর বিভ্রাটের জন্য যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছেন বা করেছেন তারাই দায়ী? কেননা তারা কোন না কোন দলের পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে নিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে পক্ষপাতমূলক ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়েছে।
আওয়ামীলীগের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো তিনি কিছুই খুঁজে পান নি। খুঁজে পেলেন জামাত-শিবির প্রসঙ্গ। বিএনপির সাথে জামাতের সম্পর্ক আছে এটা দেখিয়ে জনগণের আবেগকে আওয়ামীলীগের দিকে আনতে চেষ্টা করেছেন। তিনি আওয়ামীলীগের ভোট চান বা বিএনপির ভোট চান এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু রাজনৈতিক পরিচয় না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পরিচয় দিয়ে ভোট চাওয়াটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কলঙ্কজনক।
রগ কাটার সেই পুরাতন প্যাচাল আবার পাড়ার চেষ্টা করেছেন,তাও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে। তার মত ব্যক্তি যখন শোনা কথাকে যুক্তি হিসেবে দাড় করান অথবা মিথ্যার আশ্রয় নেন তখন সচেতন মানুষ মাত্রই অবাক না হয়ে পারেননা। সরকারের সাড়ে তিন বছরেই ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুবায়ের আহমেদ, রুয়েটের আহমেদ সানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু বকরসহ ২২ টি মেধাবী ছাত্রের খুনের ঘটনা কি তিনি দেখেন নি? নাকি এগুলো দেখলে তার তৈলমর্দন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বিধায় তিনি তা এড়িয়ে গেলেন। তিনি ছাত্রলীগের অপকর্মের সমালোচনা হয়তবা বাধ্যই হয়েই করেছেন। মা যেমন দুষ্টু ছেলেকে মৃদু শাসন করে খেতে বসতে বলেন,তেমনি ছাত্রলীগের বেলায় তিনি লিখলেন ছাত্ররাজনীতির শুধু নেতিবাচক দিকগুলো ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে না দেখে তাদের আদর্শিক দিকগুলো আরও একটু আন্তরিকভাবে দেখলে শেষ পর্যন্ত আমরাই কি লাভবান হবো না?...যারা ভবিষ্যতের নেতা হবে আমরা কি এখন তাদের একটু সাহায্য করবো না? এখন শুধু বলতে চাই আদর্শ বলতে তিনি কি খুন করে,গুম করে ক্ষমতা দখলকে বুঝিয়েছেন? নাকি টেন্ডারবাজি করে নগদ ব্যাংক ব্যালেন্স গঠনের কথা বলেছেন? নাকি ইভটিজিংয়ের মাধ্যমে মেয়েদেরকে অতিষ্ঠ করার কথা বলেছেন? নাকি তার আপন মেয়ের মত অসংখ্য বয় ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে মদের বোতলে বুদ হয়ে থাকার কথা বলেছেন? নাকি নৃত্য শিল্পীকে তুলে নিয়ে গিয়ে উপর্যপুরি ধর্ষণের কথা বলেছেন? নাকি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার নীতি বুঝিয়েছেন? সাহায্য করা বলতে এসব অপরাধীদের বিচার না করে তাদেরকেই ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে চাওয়ার আবেদনই বোধ হয় তিনি জানিয়েছেন।
ভাবতে অবাক লাগে একজন শিক্ষক কিভাবে অনৈতিকতা আর অসামাজিক কার্যকলাপে আপাদমস্তক ডুবে থাকা ছাত্রনামধারী সন্ত্রাসীদের সাহায্যের আবেদন জানাতে পারেন?
তিনি বুঝাবার চেষ্টা করেছেন তরুন প্রজন্ম নাকি শিবিরকে পছন্দ করেনা। তরুন প্রজন্ম যদি শিবির পছন্দ না করে ছাত্রলীগের সাথে পিয়ার করে, তাতে তো উনার দুশ্চিন্তার কোন কারণ থাকার কথা ছিলনা। উনার অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাই কি প্রমাণ করেনা ছাত্রশিবির তারুণ্যের অপ্রতিদ্বন্ধি এক প্রতিচ্ছবি?
তিনি তরুনদের নিয়ে কথা বলেন। তাদেরকে তার আদর্শের আলোকে গড়ে তুলতে চান। ষাটোর্ধŸ বয়সের একজন ব্যক্তি কি প্রকৃত পক্ষে ১৫-২০ বছরের তরুনদের পাল্স পুরোপুরি অনুধাবন করতে সক্ষম? আজকের তরুনরা কারা কোন দিকে যাচ্ছে তিনি কি সব খবর রাখেন? নিশ্চয়ই রাখেননা। তার কাছে যে দু এক জন মাঝে মাঝে সাক্ষাৎ করতে যায় তিনি তাদেরকেই তরুন প্রজন্ম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর প্রতি বছর ছাত্রশিবিরের পতাকাতলে যে লক্ষ লক্ষ তরুন ভীড় করছে তারা কোন প্রজন্ম? এত বিরোধীতা আর নির্যাতনের পরেও দিন দিন শিবিরের মিছিল যে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে তা কি তিনি দেখতে পান? চোখে রঙিন চশমা পরলে সব জিনিসকেই রঙিন মনে হয়। ফলে ধবধবে সাদা জিনিসকেও আর সাদা মনে হয়না। আবার কালো জিনিসকে অনেক ভালো মনে হয়। জাফর ইকবাল স্যারেরা যৌবনের শুরুতে সেই যে রঙিন চশমা চোখে দিয়েছেন মধ্য বয়সে এসেও তা চুম্বকের মতে চোখে আটকে আছে!! ফলে খালি চোখে আর কিছু দেখতে পাননা বা দেখতে চাননা। স্যারের কাছে আজকের তরুন প্রজন্মের একটাই প্রত্যাশা; প্লিজ বৃদ্ধ হওয়ার পুর্বে অন্তত একবার চশমাটা খুলুন!!
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×