somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফাঁসি নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত পাকিস্তানে

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে রোববার বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দীন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে পাকিস্তান। দেশটির বেশ কিছু গণমাধ্যম এই নিয়ে প্রতিবেদন ছাপছে।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে কেবল পাকিস্তানের সঙ্গে মহব্বত রাখার কারণে।

পাকিস্তানের বিশ্লেষক বা কলামিস্টরাও এমন ব্যাখ্যা করছেন মিডিয়ায়। সেখানে তারা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টিকে উহ্য রেখেছেন। সোমবার পাকিস্তানের জিওউর্দু নামের প্রথম সারির একটি পত্রিকা মন্তব্য প্রতিবেদন ছেপেছে। যেখানে বাংলাদেশের আদালত, বিচার ও সরকারকে হেয় করা হয়েছে।

মুমতাজ হায়দার নামের সাংবাদিকের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে সঙ্গ দেয়ায় ফাঁসি দেয়া হলো দুই শীর্ষ নেতাকে। এর আগেও আরো দুজনের ফাঁসি কার্যকর করেছে বাংলাদেশ। এটি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের আদালতের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে।

প্রতিবেদনে আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলা হয়, দুই নেতার ফাঁসি হলো। কিন্তু তারা ‘ন্যায় বিচারকে হত্যাকারী আদালতে’ কোনো ধরনের আপিল করেননি। বলা হয়, দুই নেতার জানাজা হয়েছে গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু সেখানে অংশ নিয়েছে হাজারো মানুষ। ফাঁসির আগে দুই নেতাই পরিবারের কাছে যে বক্তব্য রেখে গেছে তা চরম সাহসিকতারই পরিচয়। দুই নেতারই মামলার উপর কোনো আস্থা ছিল না। ফাঁসির আগে মুজাহিদ বলেছেন, আমার জন্য মৃত্যু কঠিন কোনো বিষয় নয়। আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। আমি ইসলামের জন্য এভাবে জান দিতেই পারি।

দুই নেতার উদ্দেশে রোববার দুপুরে লাহোরে গায়েবানা জানাজা পড়া হয়। সেখানে পাকিস্তান জামায়াত নেতাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

ফাঁসিকে গণহত্যা বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়, বাংলাদেশে গণহত্যা চলছে কিন্তু বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। আর আমাদের জন্য আফসোস আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। অথচ তারা ৪৫ বছর আগে আমাদের সহযোগিতা করার জন্যই এ হত্যার শিকার হচ্ছেন। তারা সে সেময় আইনগত একটি রাষ্ট্রের পক্ষ নিয়েছিলেন।

বিষয়টি পাকিস্তানের আগামী কেবিনেটে তোলার প্রস্তাব দিয়ে বলা হয়, মানবতাকে হত্যা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে অগ্নিসম্পর্ক দূর করা জরুরি। এ জন্য আগামী কেবিনেট সভায় বাংলাদেশ বিষয়টি উঠানো একান্ত জরুরি।

এরই মধ্যে বিষয়টি পাঞ্জাবের মন্ত্রিসভায় উঠেছে। সেখানে যথারীতি বিষয়টিকে ‘অন্যায় বিচার’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রীসভার সদস্য ডা. সাইয়েদ ওয়াসিম আখতার বাংলাদেশের তুমুল সমালোচনা করেন। তিনি ৭১ এর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিষয়ে পুনরায় খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান। সিনেট সদস্য মুহাম্মদ জাফরুল হক বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা যেভাবে বাড়ছে এটি জনসমর্থনহীন সরকারেরই প্রকৃত উদাহরণ। এই ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে বিশ্ব শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে।

পাকিস্তান জামায়াত আমির সিরাজুল হকের মন্তব্য কোট করে প্রতিবেদনে বলা হয়, জামায়াত নেতাদের ফাঁসি ইমাম হোসাইনের ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। কারণ ইমাম হোসেন ইয়াজিদের হাতে বায়আত হতে চাননি। যে কারণে তাকে শহীদ হতে হয়। প্রশ্ন থাকে, ৪০ বছর পর কেন এই মামলা চালানো হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভারতের এজেন্ডা’ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আলী আহসান মুজাহিদকে ফাঁসির আগে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল কিন্তু তিনি ‘ভারতের এজেন্ডা’ হাসিনা ওয়াজেদের সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশ ও শ্রীনগরকে একসঙ্গে উল্লেখ করে বলা হয়, আমাদের আফসোস হলো, বাংলাদেশ ও শ্রীনগর ইসলামি পাকিস্তানের জন্য কুরবানি দিচ্ছে, আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরীফ গণতান্ত্রিক পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় লিপ্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনা ওয়াজেদ প্রতিহিংসার রাজনীতি করছেন। এ জন্য আন্তর্জাতিক শক্তি এবং জাতিসঙ্ঘকে উদ্যোগ নেয়া উচিত। বাংলাদেশ সরকার ‘ডেমি আদালত’ বানিয়ে ৪৫ বছর পর পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধাতে চাচ্ছে। বিশ্বে এমন বেইনসাফি আর কোথাও হচ্ছে বলে আমাদের জানা নেই। হাসিনা ওয়াজেদ ভারতের আশির্বাদেই এমন কাজের সাহস পাচ্ছে। এই বিচার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পাকিস্তানের উচিত ৭১ এ পাকিস্তানের পাশে থাকা মানুষদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা। হাসিনা ওয়াজেদের জুডিশিয়াল হত্যা থেকে মানুষকে বাঁচাতে পাকিস্তানকে অন্য দেশের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করা।

-জিওউর্দু থেকে অনুবাদ
ক্লিক
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০২
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×