somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প: "মুহূর্ত"

২১ শে মে, ২০১৮ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




প্রেম কি ছেলেটা সেটা জানতো তখন। আর জানলেও সেই কিশোর বয়সের জ্ঞানে যা জানা দরকার সেটাই জানতো। একটা মেয়েকে প্রায়ই দেখত তিন চার জনের একটা দল নিয়ে স্কুলের দিকে যেতে! এদিকে ছেলেটা আর মেয়েটা একই কোচিং সেন্টারে পড়ে কিন্তু ভিন্ন বিষয়ে। তাদের মাঝে এক শ্রেণী তফাৎ আছে সিনিয়র জুনিয়র এর মত। ছোট সময় জুনিয়র কি আর সিনিয়র কি, হয় তুমি করে ডাকা আর পছন্দ না হলে সোজা তুই আর অতঃপর মারামারি! তবে ছেলেটা এসবের মাঝে যেত না। কারণ মারামারি তার একদমই পছন্দ না। মেয়েটির কোচিং শুরু হতো সকাল ৯.৩০ এ আর ছেলেটির সকাল ১০.০০। প্রতিদিন আগে এসে দরজার সামনের বেঞ্চে বসতো ছেলেটি যাতে মেয়েটিকে এক নজর দেখা যায়। তাদের মাঝে দেখা হত আধঘণ্টার জন্য! এই আধঘণ্টা সময় ছেলেটার জন্য অনেক কম মনে হত! তবে এই সময়ের মধ্যে অনেকবার একে অপরের চোখে চোখ পরেছে! মুখামুখি বেঞ্চে বসা মেয়েটি ও তার বান্ধবীরা পরস্পরের সাথে খোঁচাখুঁচি শুরু করে দেয়! কিন্তু ছেলেটির বন্ধু বান্ধব কিছু দেখতে পায় না। দেখতে পায় শুধু স্যার! স্যার যখন জিজ্ঞেস করে "কি দেখিস সামনে?" ছেলেটি তখন নানা বাহানা করতে থাকে! কলম পরে গেছে, খাতা পরে গেছে বা লাইটের আলো বোর্ডে পরছে তাই সে অক্ষর দেখতে পাচ্ছে না ইত্যাদি! স্যার একদিন তাকে দরজার পাশের বেঞ্চ থেকে জানালার পাশের বেঞ্চে বসিয়ে দিলেন! এতে মেয়েটিকে সে ওই আধঘণ্টা সময়ের মধ্যে এক পলকও দেখতে পায় নি! এভাবেই প্রায় সপ্তাহ খানেক কেটে গেলে। মেয়েটি হয়তো বিষয়টি লক্ষ্য করেছে বা তার বান্ধবীদের খোঁচাখোঁচির দ্বারা কিছু একটা আন্দাজ করতে পেরেছিল! এরপর হঠাৎ একদিন স্কুল ছুটির পর ছেলেটি মেয়েটিকে দেখতে পেল! ব্যস সাথে সাথে দ্রুত পায়ে হেটে মেয়েটির কাছাকাছি গেল সে। এভাবে মেয়েটির পিছে পিছে যেতে লাগলো সে। দুরত্ব কমার সাথে সাথে মনে দুশ্চিন্তা চলে এল ছেলেটির! যা হবার হবে, আগে সামনে যেতে হবে। ছেলেটি মেয়েটিকে অভারটেক করে মেয়েটির হাটার গতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে হাটতে শুরু করল! এরমধ্যে ছেলেটি ভীতু চোখে মেয়েটির ব্যাগের দিকে তাকিয়ে ব্যাগ ধরার কৌশল দেখে নিল। ছেলেটি মনে মনে একটু কোণের হিসেব করে নিল! কত ডিগ্রিতে সে ব্যাগটা বাকা করে ধরেছিল তার একটা ছোট হিসাবে সে বুঝে নিল ৩০ডিগ্রি বা তার চেয়ে একটু বেশি হবে! ডানহাতে ব্যাগ আর বামহাতে ব্যাগের ফিতা পেঁচিয়ে বাকা করে ধরে পিলপিল পায়ে হেটে যাচ্ছে! আচমকা তাদের মাঝে চোখাচোখি হয়ে যায়! ছেলেটি হা করে তাকিয়ে থাকে আর মেয়েটি লজ্জায় তাকাতে পারে না! মেয়েটি হাসতে চেয়েও হাসতে পারে না! ছেলেটি সেভাবেই তাকিয়ে থাকে! হঠাৎ ছেলেটি বাস্তবে ফিরে এসে দেখলো সে রাস্তার ময়লায় হাটা শুরু করেছে! ছেলেটি হন্তদন্ত হয়ে আবার ভালভাবে হাটতে থাকে। দিনের পর দিন অপেক্ষা করার পর এমন একটা মুহূর্ত আসে যা তার ছোট্ট রঙিন কাগজের স্বপ্নিল পৃথিবীকে রংধনুর সাত রঙে রাঙিয়ে দিয়ে যায়! এমনি ভাবেই ছেলেটি তার দিন পার করতে থাকে।


লেখা: Dorponer Protibimbo ®
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৮ রাত ১:১৪
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×