somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাত্রির সাথে পরিচয়-২

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের সন্ধ্যাটা খুব অন্যরকম ছিলো। এতোটাই অন্যরকম যে আমার মনে চিরায়ত বাঙালি ভাবধারা বদলে গিয়ে রীতিমত পশ্চিমা বিলাসিতা এসে ভর করলো!

হাটছিলাম নতুন ঢাকার এক খোলা, প্রশস্ত গলি ধরে। তেমন কিছু না, উদ্দেশ্যহীন হাটা। বিকেলের এক পশলা বৃষ্টি- রাস্তাটাকে মনে হোল যেনো ক্যানভাস বানিয়ে রেখেছে। রাস্তার দুপাশের সারবাধা দোকানগুলোর সিএফএল বাতির কোমল নীলাভ আলো সে ক্যানভাসের গায়ে কেমন অপার্থিব সব বাস্তবতা তৈরি করে; সাথে নিঃশব্দ হাহাকারের মত হৃদয় জমাট বাধিয়ে দেয়া বাতাস, কানে কানে মনে হয়- অন্য কোন পৃথিবীর গল্প শোনায়। যে পৃথিবীতে এক নিঃসংগ যাত্রী আর তার সঙ্গী ঘোড়াটি ক্ষণিকের জন্য থেমেছিলো...

কি দেখেছিলো তারা? অন্ধকার এক শীতের সন্ধ্যা- জমাট বরফ হয়ে নেমে এসেছিলো সেদিন পৃথিবীর বুকে। রাস্তার একপাশে স্তুপ করে রাখা গাছের গুড়ির উপর সে নেমে আসা তুষারগুঁড়ো জমা হয়ে উঠছিলো। পথিকের মনে হোল- তুষারের সফেদ শীতলতা যেনো ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলতে চলেছে নিঃসংগ সে গুড়িগুলোর গাঢ়, উষ্ণ শরীর..

'পশুপাখিরাও নিশ্চই অবাক হয়, তা না হলে সঙ্গী ঘোড়াটির অমন আচরণ করার মানেটা কি?'- ভাবলো পথিক। ঘাড় নেড়ে, লাগামের ঘন্টা ঝাকিয়ে প্রাণপণে তার মনিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে সে। কে জানে! হয়তো মানুষটি গন্তব্য ভেবে ভুল কোন জায়গায় এসে থেমেছে। আর ভুল তো মানুষই করে.....

সে যাই হোক- এমনই একটা ভুল করে ফেলতে ইচ্ছে করেছিলো আজ আমারও! মনে হয়েছিলো- এই শীতের সন্ধ্যায়- বৃষ্টি ভেজা ঢাকার অদ্ভূত এই নির্জন রাস্তা ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবার কোন অর্থই হয় না। বাতাসের সাথে সাথে আমিও হাটতে থাকি। কে জানে, হয়তো অতি সাধারণ এই পথটুকুই একসময় আমায় পৌছে দেবে অনন্য-সাধারণ কোন গন্তব্যে!

মানুষ যা চায়, তা কি আর সব সময় পায়? যেমন পেলাম না আমি! অথবা যেমন পায় নি দূর অতীতের ক্লান্ত সে পথিক! মায়াময়, স্বপ্নালু সে গাছের গুড়ির আকর্ষণ কাটিয়ে আবার তাকে যাত্রা শুরু করতে হয়েছিলো ঠিকই। ইতিমধ্যেই কোন এক প্রতিজ্ঞার কাছে যে তার অ-নে-ক খানি সময় বন্ধক দেয়া হয়ে গেছে!

আমি বিষণ্ণ মনে সন্ধ্যার অন্ধকারে বাসায় ফিরে যেতে থাকি। সারবাধা সোডিয়াম বাতির হলুদ আলো মাঝে মাঝে গাছের পাতার ফাক দিয়ে দিয়ে রাস্তার উপর পড়ে। বাতাসে সে গাছের পাতা কাপে আর ভেজা রাস্তায় কাপে সোনালি আলোর আবছা প্রতিবিম্ব।

তিরতির করে কাপতে থাকা সে বিম্ব দেখে আমি আবার ঘোরে আচ্ছন্ন হই। রাস্তাটাকে আমার নদী বলে ভ্রম হয়, আর নিজেকে মনে হয় কবিতার সে পথিক...

বাতাসে ভর করে নেমে আসা তুহিন আর তুষারের মধ্য দিয়ে যে পথিক তার সঙ্গী ঘোড়াটিকে নিয়ে এগিয়ে চলে। পেছনে পড়ে থাকে শুধু প্রবল শীতে জমে যাওয়া অপূর্ব এক হ্রদ!

Whose woods these are I think I know.
His house is in the village though;
He will not see me stopping here
To watch his woods fill up with snow.

My little horse must think it queer
To stop without a farmhouse near
Between the woods and frozen lake
The darkest evening of the year.

He gives his harness bells a shake
To ask if there is some mistake.
The only other sound’s the sweep
Of easy wind and downy flake.

The woods are lovely, dark and deep,
But I have promises to keep,
And miles to go before I sleep,
And miles to go before I sleep.

-- Robert Frost (March 26, 1874 – January 29, 1963)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২৭
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×