somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দলিতের প্রতি বৈষম্যের কি কোন প্রতিকার নেই?

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অধিকাংশ মানবশিশু অসীম সম্ভাবনা নিয়ে জন্ম গ্রহন করে। এমন কি গড়ীব পরিবারে যে শিশু জন্ম গ্রহন করে সেও তার পিতা মাতার আর্থিক অবস্থার চেয়ে উন্নতর অবস্থা অথবা অন্তত তা থেকে অন্য অবস্থায় জীবন ধারনের স্বপ্ন দেখার অধিকার রাখে। কিন্তু বাংলাদেশের দলিত পরিবারের সন্তানের ক্ষেত্রে সে স্বপ্ন আকাশ কুসুম কল্পনা বলে মনে হয়। যদি কোন শিশুর পিতা ঝাড়ুদার হয় তবে সে শিশুটিও যে বড় হয়ে ঝাড়ুদার হবে এটাই যেন কার চরম নিয়তি। তেমনি নাপিতের ছেলেকে বড় হয়ে নাপিত এবং মুচির ছেলেকে বড় হয়ে মুচি হিসেবে দেখতে পাবেন।

কিন্তু দলিতদের কাজের নিরাপত্তা ও জন্মগত দক্ষতার কারনে আমাদের দেশের মত এই গড়ীর দেশে তাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে সীমিত প্রবেশাধিকারের কারন কি বা কি ভুলের কারনে তাদের কাজের নিরাপত্তা নেই বা জন্মগত দক্ষতার বাহিরে বেরিয়ে আসতে পারছে না? সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের চোখে তারা “অচ্ছুত” এই মনোভাবই প্রধান কারন বলে প্রতিয়মান হয়। একজন দলিত হিসেবে তারা প্রতিনিয়ত তাদের দৈনন্দিন জীবনে সমাজের মানুষের নিকট থেকে তাচ্ছিল্লের শিকার হয়।

স্বাভাবিত ভাবে বেঁচে থাকা ও বেড়ে উঠার জন্য সমাজের তথাকথিত বাসস্থান, খেলার মাঠ, চায়ের দোকান অথবা কবরস্থান বা শশান যেখানে সবায় প্রবেশ করতে পারে কিন্তু সেখানে দলিতরা প্রবেশ করতে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। যে বাড়ীতে নতুন শিশু জন্ম গ্রহন করে অথবা বিয়ে বাড়ীতে সকলের সহজ প্রবেশাধিকার থাকলেও দলিতরা পারে না। এমন কি দলিতদের অনেক টয়লেট ব্যবহার এবং তাদের শিশুদের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে অস্বীকার করা হয়। সমাজের সংখ্যাগড়িষ্ট জনঅংশের কেউ বাজার বা মার্কেটে যদি কোন দলিত সদস্যের দেখা পায় তবে সাধারনত তাকে বাজারের ব্যাগ তার বাড়ী পর্যন্ত বহনের নির্দেশনা প্রদান করে থাকে।

বাংলাদেশে বসবাসরত মুসলিম এবং হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে জাত বৈশম্য, নিম্ন সম্প্রদায়ের প্রতি অষ্পৃশ্যতা ও তাদের বর্জনের মত সংস্কৃতি বিদ্যমান রয়েছে। এই তথাকথিত নিম্ম জাতের দলিত সম্প্রদায়ের সংখ্যা অনুমানিক ৩.৫ থেকে ৫.৫ মিলিয়ন। দলিতদের নিষ্পেশনের বিষয়টি এতটাই সহজাত যে নিষ্পেষনকারী ও নিষ্পেষনের শিকার উভয়েই তার গভীরতা জানেন, কিন্তু তা কখনো সঠিকভাবে নথিবদ্ধ হয় না বা জনসম্মূখে প্রকাশের আড়ালেই থেকে যায়। বাংলাদেশে জাত-পাত, অস্পৃশ্যতা ও কর্মভিত্তিক বৈশম্য এত ব্যপক হওয়া সত্বেও যারা এ বিষয়ে চর্চা করে বা রাষ্ট্রীয় পক্ষ থেকে এ বিষয়ে খুব কমই প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে সকল প্রকার বৈষম্যকে নিষিদ্ধ করা হলেও বাস্তবে তার কার্যকরন নেই বললেই চলে। এমন কি সরকার পরিচালিত বেশ কিছু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানেও বৈশম্য বিদ্যমান রয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ যখন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অংগনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সদা সচেষ্ঠ, তখন দেশে আন্তর্জতিকভাবে উদ্বেগিত শিশুশ্রমের অনুশীলন সম্প্রশারনশীল এবং জাতিগত বৈশম্য অনুশিলনে রাষ্ট্র পরোভাবে ইন্ধন দিয়ে চলেছে। যা শুধু বর্তমানে দারিদ্রতার জন্য নয় ভবিষ্যতে পুরো জাতির জন্য অশনি সংকেত।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×