বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের দিকে একটু চেয়ে দেখলে মনটা শান্ত হয়। স্বস্তি খুঁজে পায়। দ্বিতীয় বারের মত নিউজিল্যান্ডকে ‘বাংলাওয়াশ বা হোয়াইট ওয়াশ’ করার আনন্দে বুকটা ভরে যায়। বাঙালি, বাংলাদেশি বীরের জাতি হিসেবে মাথা উচু করে চিৎকার করতে ইচ্ছে হয়। নতুন করে দেশটা কে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে মনটা ব্যাকুল হয়।
তাবাদে কোথাও কোন সু-সংসবাদ নেই। সহিংসতা, হরতাল আর হত্যা দিয়ে গোটাদেশ অস্থির। নিরাপত্তাহীনতা ও বোমা-ককটেলের আতঙ্কে বেড়েছে হার্টবিট। আইন-আদালত, প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষ বলে কিছু নেই তাই নিজের প্রতি স্বান্তনা এ যেন নষ্ট জন্মের কষ্টের দোলনা।
চলমান সহিংস পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মাঝে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের উপর এতো ক্ষোভ এবং ক্রোধ দেখা দিয়েছে যে, বেহায়া রাজনীতিকরা সেটা বোঝেও না বোঝার ভান করেন, শোনেও না শোনার ভান করেন। শান্তি প্রিয় বাঙালি কোন কালেই সংঘাত ও সহিংসতা চায় নি। কিন্তু সে পথে যাওয়ার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন সময় বাধ্য করা হয়েছে। আর থোকা থোকা প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে। এতো উদার গণতান্ত্রিক, মিডিয়া স্বাধীনতায় বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ সরকার একটা সুস্থ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে নি। ক্ষমতার লোভে আরো একটা ‘ওয়ান এলিভেন’ যাতে না হয় সেই দোহাই দিয়ে তারা মনের মত সংবিধান সংশোধন করে নিয়েছে। অপরদিকে দীর্ঘ ৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার তীব্র-জ্বালা যন্ত্রনায় বিএনপি উন্মাদ হয়ে ওঠেছে ক্ষমতায় বসার জন্য। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় অকাতরে নির্বিচারে মানুষের যে প্রাণ যাচ্ছে সেটা কি নেতাদের বিন্দু পরিমাণ পীড়া দেয় না..? পীড়া দিক আর না দিক সেটা নিয়ে মায়া কান্নার সুযোগ আর নেই।
এই বিধ্বংসী নেতাদের উপর আর ভরসা করা যায় না। ‘ কে থাকে ঘুমে, কে থাকে ভেতরে, কে একা নি:সঙ্গ বসে আশ্রুপাত করে ’। ১১৮৯ সালের রংপুরের কৃষক নেতা নূরল দীনের মত করে জেগে ওঠার সময় এসেছে। ‘জাগো বাহে কনঠে সবাই’ এই শ্লোগানে শ্লোগানে বায়ুম-লকে ভারী করার সময় এসেছে। দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের জন্য কণ্ঠে আওয়াজ তোলার এই তো সু-সময়। এতে হয়তো কেউ কেউ চেঁচিয়ে ওঠবেন এবং বলবেন, ‘আবারো টু- মাইনাস থিয়োরি’র ষড়যন্ত্রকারীরা সোচ্চার হয়েছেন। মনে রাখা দরকার, খাল কেটে যদি কুমির আনার সুযোগ দেয়া হয় তাতে দোষ কার..?
তাই সময় নষ্ট না করে দলমতকে থোড়াই কেয়ার করে দেশ ও মানুষের কথা চিন্তা করে তরুণ প্রজন্মের এক দফা এক দাবিতে মহাত্মা গান্ধী’র আহিংস চেতনায় রাজপথে নামতে হবে। * ‘হয় সমোঝাতার ভিত্তিতে নির্বাচন দিতে হবে, না হয় দুই নেত্রীকে দেশ ছাড়তে হবে। ’ সাধারণ মানুষের প্রাণ নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলতে পারে না। এটা অন্যায়। সেই অন্যায় এই থ্রিজি যুগের তরুণ প্রজন্ম বসে বসে শুধু দেখে যেতে পারে না। পারা উচিত নয়। গণমানুষের যে গণচেতনা, মুক্তিযুদ্ধের যে প্রেরণা জাতির আজ সংকট কালে তরুণ প্রজন্মের বসে থাকা মানেই অতীতের জ¦লজলে আন্দোলনের সেই ইতিহাস কে কোরবানি করার শামিল।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারির পর শাহবাগী চেতনা যেভাবে গোটা দেশে সবশ্রেণীর মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল। সব চেতনায় না হোক অন্তত ঐক্যবদ্ধতার চেতনা কে কাজে লাগিয়ে হাসিনা-খালেদাকে বুঝিয়ে দেয়া উচিত আপনারা হাঙ্কি-পাঙ্কি করলে তরুণ প্রজন্ম বসে থাকবে না। তারা এই দেশের হাল ধরবে। দেশের মানুষের আলোর দিশারী হয়ে আলোর মশাল জ্বালাবে। বিজয়ের নতুন ঝা-া উড়াবে।
এখন শুধু অপেক্ষা কতিপয় তরুণের ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে উদ্যোগ গ্রহণ। সাহিত্যিক, সাংবাদিক আনিসুল হকের মত ‘অরণ্যে রোদন’ নয় বরং তারই আশা জাগানিয়া কবিতার মতন, ‘মানুষ কি জাগে নাই অন্ধকার তাড়ানিয়া সূর্য্যরে মতন/ জীবন কি জাগে নাই, মরণের আবরণ ভেঙ্গে.. ?’
এবার মরণের আবরণ ভেঙ্গে যারা জাগবে তারাই হবে এ দেশের প্রকৃত প্রিয় তৃতীয় শক্তি। সেই শক্তি নিয়ে তরুণ প্রজন্ম আসছে....!!
সজিব তৌহিদ
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৬