কি ব্যাপার মেয়েটাকে ধর্ষণ করলে কেন?
- করবো না তো কি করবো? যেই ড্রেস পড়ছে পুরাই সেক্সি লাগতেছিল। দেখলেই তো চেতনা দাঁড়িয়ে যায়। অতএব এতে আমার কোন দোষ নেই, সব দোষ ওর পোষাকের।
.
ওই মেয়েটাকে যে রাস্তার মধ্যে পাবলিক প্লেসে শ্লীলতাহানী করলে?
- আমার কোন দোষ নেই। ভীড়ের মধ্যে মেয়ে মানুষ আসবে কেন? আমার শরীরে ওর শরীর লেগেছে আমার অনুভূতি দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
.
বাসের মধ্যে যেই মেয়েটার গায়ে হাত দিলে ওর কি দোষ ও তো গায়ে ঘেষে দাড়ায়নি।
- তাতে কি! যেই পারফিউম দিয়েছে সেটার ঘ্রাণেই তো ওর শরীর খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছিল। অতএব আমার দোষ নেই, সব দোষ পারফিউমের।
.
রাতে রাস্তায় একা পেয়ে যেই মেয়েটাকে ধর্ষণ করলে ওর ড্রেস তো ভালোই ছিল।
- তাতে কি! রাতের বেলা মেয়ে মানুষ একা রাস্তায় কেন আসবেবে? এভাবে একা পেলে তো ফিল আসবেই।
.
দিনের বেলায় যে ওই মেয়েটাকে ধর্ষণ করলে এটা কেন?
- দিনে হলে কি হবে ড্রেস তো পড়েছে সেইরকম ওয়েষ্টার্ণ। স্লীভলেস জামায় হাত দেখা গেলে চেতনা তো জাগবেই। যেই হট লাগতেছিল, এরপরেও ঠিক থাকা যায় নাকি?
.
ওই মেয়েটার ড্রেস তো ভাল ছিল ওয়েষ্টার্ণ না, স্লীভলেস ও না।
- কিন্তু গলার নিচ দিয়ে বুকের এদিকটা তো একটু একটু দেখা যাচ্ছিল।
.
এই মেয়েটা তো দেশী পোশাক পড়ে ছিল।
- দেশী হলে কি হবে ওড়না ঠিক ছিল না। পোশাক সামলে রাখেনি কেন? নিজের পোশাক সামলে রাখতে পারে না?!
.
তোমার মা আর বোনেরাও তো মাঝে মাঝে বাসায় কাজ করতে গেলে কাপড় এদিক সেদিক হয়ে যায়। ওদের দেখেও কি চেতনা দাঁড়িয়ে যায়?
- ওই মিয়া! মুখ সামলে কথা বলেন। আমার মা বোনের ড্রেস ভালোই থাকে।
.
আচ্ছা আচ্ছা, এই মেয়েটা তো হিজাব করে ছিল, সব ঢাকা ছিল। ওর সাথে কেন করলে?
- হিজাব করলে কি হবে। হিজাবে তো আরো জোশ লাগতেছিল। শরীরের গঠন তো বুঝা যাচ্ছিল, বুকের উচু গঠন তো স্পষ্ট ছিল।
.
ওই বাচ্চা মেয়েটার বেলায় দেখে কি চেতনা জাগলো?
- বাচ্চা হলে কি হবে সাইজে তো সেই। শরীর তো বেড়ে গেছে। চেতনা তো জাগবেই। অতএব আমার কোন দোষ নেই।
.
হুম রাইট। তো তোমার নিজের মেয়ের শরীর সাস্থ্য ভাল হলে তাকে দেখেও কি চেতনা দাঁড়িয়ে যাবে?
- কথা ঠিকমত বলেন। আমার মেয়ের হিসেব আলাদা। এটা আমার মেয়ে না।
.
তোমার মেয়ে না কিন্তু আরেকজনের তো মেয়ে। তার মেয়ের সাথে তুমি কর, তোমার মেয়ের সাথেও আরেকজন করবে। এটা দোষের না, কি বল?
- ইম্পসিবল। খুন করে ফেলব!!
.
.
.
.....কেউ আগুনে ঝাপ দিতে বললেই তো ঝাপ দিবে না, তাহলে কে কি ড্রেস পড়ল এসব দেখে কেন প্রলুব্ধ হবে? খারাপভাবে চলাফেরা করলে তাকে এভয়েড করেন।
.
ধরলাম মেয়েটা খারাপ তাই বাজে ড্রেস পরে। কিন্তু ও তো জোর করে কিছু করেনা। আর তুমি জোর করে ধর্ষণ কর। তাহলে তুমি কোন জায়গার ভাল? খারাপের সাথে তো আরো খারাপ করলে।
নিজে ঠিক থাকলে খারাপের মাঝেও নিজেকে কন্ট্রোলে রাখতে পারা উচিৎ। আর এটাই স্বার্থকতা।
.
লোভনীয় কিছুর সুযোগ না পেলে কেউই তা নিতে পারবে না, এক্ষেত্রে সবাই সাধু। কিন্তু সহজে কাছে পাওয়ার পরেও অন্যায়ভাবে সেটা নেয়ার থেকে নিজেকে কে কতটুকু সামলে রাখতে পারে সেটাই হল প্রকৃত নৈতিকতা।
.
....আর ধর্মীয় দিক দিয়ে বললেও ধর্ম নারীকে শালীন পোশাক পড়তে বলেছে সত্যি, কিন্তু কোন নারী অশালীন হলেই পুরুষরা তাকে ধর্ষণ করবে আর লোলুপ হয়ে তাকাবে এটা কোথাও বলেছে?
বলেনি, বরং ধর্মেও নারী পুরুষ উভয়কেই দৃষ্টি সংযত রাখতে বলেছে।
.
তাই কে কি পোশাক পড়ল আর কিভাবে চলল এসব না দেখে নিজের চোখ আর চেতনাকে সামলান, কাজে দিবে।
.
মেয়ে দেখলেই অন্য কিছু দাড় করানোর আগে বিবেকটা দাড় করান। আর পুরুষত্ব বিছানায় না দেখিয়ে নিজের কাজকর্মে এবং ধৈর্য্যশক্তি দিয়ে দেখান।
.
.
কৃতজ্ঞতাঃ "নাজমুল হোসেন"
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:২৪