somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেবদূতদের জন্য আহ্বান ও ছোটদের সামহয়্যার ইন...

০৩ রা এপ্রিল, ২০০৯ ভোর ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনে পড়ে শৈশবের কথা।
খুব ছোটবেলায় মায়ের কোলের ঘুমপাড়ানী গান, একটু বড় হতেই রূপকথার গল্প,ভুত-পেত্নী, দৈত্য-দানো ! ছড়া মুখস্থ করে আত্মীয়-প্রতিবেশীর কাছে বাহবা কুড়ানো। স্কুলে ভর্তি হবার পর টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে কেনা বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সাপ্তাহিক ছোটদের পাতা, কিশোর পত্রিকা বইয়ের ভেতর লুকিয়ে পড়া...। আমাদের তুলনায় আজ-কালকার পিচ্চিগুলো সাধারণত বেশ চালাক-চতুর। তাদের বুদ্ধিমত্তা দেখলে প্রায়ই টাসকি লেগে যায়, আমরা কি ছোটবেলায় এরকম ভাবতে বা ঘটাতে পারতাম ! যেমন ধরুন আমাদের যে বয়সে টিভি নামক বস্তুটাই বিস্ময়কর ছিল,সেই বয়সের অনেক আগেই তারা পছন্দের চ্যানেল দেখার জন্য রাগ করে বসে থাকে। খেলার মাঠবিহীন স্কুল, কার্টুন, টিভি, গেমস, কম্পিউটার ইত্যাদি নিয়েই বেড়ে উঠছে আজকালকার শিশুরা। আমরা যে বয়সে লোকছড়া আউড়াতাম সেই বয়সে ওরা পড়ে নার্সারী রাইম ! আমাদের রুপকথার গল্প শোনার সময়ে ওদের ম্যাথ টিচার-ইংলিশ টিচারের ধস্তাধ্বস্তি । সৃষ্টিশীলতা থাকলেও তা বিকাশের জন্য চর্চা নেই। রুপকথার গল্প- ছড়া পড়ার সময় ওদের কোথায়?
এসব নিয়ে ব্লগার ইশতিয়াক আহমেদ একটি পোষ্ট দিয়েছিলেন “বরাবর, প্রিয় ব্লগার এবং সা.ইন কর্তৃপক্ষ :আসেন না ব্লগের একটা দিন খরচ করি আমাদের দেবদূতদের জন্য ...”
Click This Link
পোষ্টটি আসার পরই ব্লগাররা শিশুদের জন্য কিছু করার বিষয়টিকে বেশ ভালোভাবেই গ্রহন করেন এবং পোষ্টটি স্টিকি করা ও এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপের জন্য কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।। শিশুদের জন্য এ ডাকে সামহয়্যারইন কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয় এবং পোষ্টটি স্টিকি করে। পোস্টটি স্টিকি হবার পর দেখা গেল শিশুদের প্রতি সামহয়্যারের ব্লগারদের ভালোবাসা মুগ্ধ করার মতো। দুদিন স্টিকি থাকা অবস্থায় পোস্টটিতে 'শিশুদের জন্য একটা কিছু হোক' এমন প্রত্যাশার প্রতি দেখা গেছে স্বতস্ফুর্ত সাড়া, সবাই একে একে স্ক্রীনের ওপার থেকে মিশে গেছেন দেবদুতদের জন্য ভালোবাসার মিছিলে।
ব্লগারদের প্রত্যাশার সাথে মিল রেখে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও সাড়া মেলে এবং এরই ধারাবাহিকতায় সামহয়্যারইন প্রতিনিধি জানা বিষয়টি নিয়ে ইশতিয়াক ভাইসহ আমাদের কয়েকজন ব্লগারের সাথে কথা বলেন ও সামহয়্যারইন কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানান।নির্ধারিত দিনে ইশতিয়াক আহমেদ, মনির হাসান, শাকিল ফারুক আমি উপস্থিত হই এবং কফি খেতে খেতে B-) বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আরিল ও জানা-র সাথে। দেবদুতদের জন্য ব্লগারদের ভালোবাসায় মুগ্ধ আমরা আবারো আবিভূত হই দেবদুতদের জন্য সামহয়্যার ইন এর কার্যকরী কিছু করার আগ্রহে। জানা আপু আমাদের জানান শিশুদের জন্য ছোটদের সামহোয়্যার ইন Click This Link নামে প্রাথমিকভাবে একটি গ্রুপ খোলা হবে। শিশুতোষ সকল লেখা একটি বিশেষ আইকনসহ ব্লগের প্রথমপাতায় প্রকাশিত হবে এবং একইসাথে ছোটদের সামহয়্যারইনেও Click This Link প্রকাশ পাবে লেখাটি। এছাড়া শুধু গ্রুপ ব্লগই নয় শিশুদের জন্য আরও বড় কিছু করার ইচ্ছা সামহয়্যারইন কর্তৃপক্ষের আছে।

প্রিয় ব্লগার খুবই আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, অবশেষে আমাদের দেবদূতদের জন্য ছোটদের সামহয়্যার ইন Click This Link নামে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিশুতোষ সকল লেখা একটি বিশেষ আইকনসহ ব্লগের প্রথমপাতায় প্রকাশিত হবে একইসাথে ছোটদের সামহয়্যারইনেও প্রকাশ পাবে লেখাটি। কিন্তু আমরা এখানেই থেমে যেতে চাই না। একটি শিশুর মধ্যে যেমন লুকিয়ে থাকে অমিত সম্ভাবনা তেমনি সকল ব্লগারদের সম্মিলিত অংশগ্রহনের মাধ্যমে আমরাও ছোটদের এই ব্লগটিকে গড়ে তুলতে পারি শিশুদের মানসিকতা বিকাশের একটি উৎকৃষ্ট ও আদর্শ ক্ষেত্র হিসেবে। অবদান রাখতে পারি শিশুদের মেধা মনন ও মানসিকতা বিকাশে।

সেই সাথে এটা বলাও অপ্রাসংগিক হবে না যে ইশতিয়াক আহমেদেও লেখাটির সাথে দ্বিমতও পোষণ করেছেন কেউ কেউ। ব্লগে শিশুদের উপস্থিতি কম বলে কেউ কেউ বলেছেন “ব্লগে শিশুদের জন্য এখনই কিছু করার দরকার নেই। তার আগে ব্যাক্তিগত ও স্থানীয়ভাবে শিশুদের সঠিক বিকাশে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।এটা সত্যি যে, আমরা স্থানীয় ও ব্যাক্তিগত পর্যায়ে হয়তো অনেকে অনেক কিছুই করতে পারি। কিন্তু সকল কাজেরই সামগ্রিক সাফল্যের জন্য দরকার একটি সার্বজনীন প্লাটফর্ম। প্রশ্ন আসতে পারে সামহোয়্যারের সাথে বাংলাদেশের কতজন শিশু পরিচিত? কিন্তু যে কোন জায়গা থেকেই হোক শুরু তো করতে হবে। আর যুগটা যেহেতু ডিজিটাল;) তাই প্ল্যাটফর্মটা ডিজিটাল সামহয়্যার হলে মন্দ কি?
প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যেই নাকি একটি শিশুমন লুকিয়ে থাকে। কখনো সেটি প্রকাশ পায়, কখনো কঠিন বাস্তবতার বেড়াজালে শিশুটি থেকে যায় লোকচক্ষুর অন্তরালে। আবার বৃদ্ধ বয়সে মানুষ নাকি পুনরায় শিশু হয়। আসলে আমাদের সবার মধ্যেই একটি শিশুমন লুকিয়ে আছে। আর তাইতো প্রত্যেকের পরিবারের আনন্দের সবচাইতে বড় উপলক্ষ্যটি থাকে শিশু সন্তানটি। ছোটদের সামহয়্যারইনে লিখতে পারবেন নবীন-প্রবীন সবাই। গল্প-ছড়া-ভ্রমণকথা ছাড়াও নিত্যনতুন বিষয়ভিত্তিক ফিচার ও আইডিয়াতে সাজিয়ে তুলুন ছোটদের সামহয়্যারইন এর প্রতিটি পাতা। লিখতে পারেন আপনার শৈশবের কোন সোনালী স্মৃতি আথবা নবীন প্রজন্মকে জানাতে পারেন কোন শিক্ষনীয় ঘটনা। আপনার কষ্টার্জিত জ্ঞান-প্রজ্ঞা ছড়িয়ে দিন আগামী প্রজন্মর মাঝে। এতে আর কিছু না হোক আপনার কষ্টার্জিত অভিজ্ঞতা রেখে যাবেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আর কিছুক্ষণের জন্য হলেও অন্তত শৈশবে ফিরে যাওয়া যাবে ।


সামহয়্যারইন এর প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা, আমরা সংগঠিত হয়ে অনেক ভালো কাজ করতে পারি। বদলে দিতে পারে সময়কে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযানসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে আমরা প্রমান করেছি তা। আসুন আমরা আমাদের আগামী প্রজন্ম ,আমাদের দেবদূতদের নিয়ে ভাবি ; তাদের সমস্যা-সাফল্য, আনন্দ-বেদনা নিয়ে, তাদের সুস্থ বিকাশ ও ভবিষ্যত ভাবনা হোক নিত্যদিনের অনুষঙ্গ। আর দেবদূতের যারা নানা সমস্যায় জর্জরিত বা অবহেলিত হয়ে ‘পথকলি’ হিসেবে ছড়িয়ে আছে তাদের প্রতি সবার সহানুভূতি। তাদের সুযোগ করে দেই তাদের প্রাপ্য পরিবেশে বেড়ে ওঠার, যাতে করে তারা জাতিকে উপহার দিতে পারে একটি সুন্দর বাংলাদেশ।
দেবদূতদের ভুবনে স্বাগতম আপনাদের। সবার জন্য রইল শুভকামনা।

ছোটদের সামহোয়্যার ইন :
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১:০৫
৫৮টি মন্তব্য ৫৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×