কোকিলের কুহু কুহু ডাকটা সকালটাকে মিষ্টি মিষ্টি একটা ভাব
দিয়েছে। এই মিষ্টি ভাব জিভে স্বাদ নেয়া যায়না। শুধু মনে একটা মিষ্টি অনুভূতি হয় । মিষ্টি সকালে আজ ঋতুরাজ বসন্তের আগমন।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং.......... .....
-হ্যালো !
-হুম
-কোথায় তুমি ? কয়টা বাজে খেয়াল আছে তোমার ? তুমি না বললে সকাল ১০টার মধ্যে আমার বাসার নিচে আসবে ! তারপর আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবে । অথচ আমি প্রায় এক ঘন্টা আগে থেকে তোমার জন্য শাড়ী পরে তৈরি হয়ে আছি ! এখনও আসার নাম গন্ধ নেই !
(প্রচন্ড রেগে একদমে কথাগুলো বলল অতসী)
- এইতো রিক্সাতে লক্ষীসোনা !
- মিথ্যা বললা নাতো !
- কই নাতো !
-তাহলে রিক্সাওয়ালা মামাকে একটা বেল
দিতে বলতো শুনি ..
( মামা একটু বেল বাজান তো ! )
- শুনছো ? বাজালো ওইযে ...
বিশ্বাস করোনা আমারে? হুহ
- কই শুনি নাতো কিছু ! আর তোমারে আমি বিশ্বাস করবো? নেভার!
- কেন কি করছি আমি ?
- কি করোনাই ? ২০বার ফোন দেয়ার পর ফোন ধরেছো! ভাবলাম
কিনা কি হলো ... ..
- তুমি এতো খেয়াল রাখো জান ! আসলে আমিতো বাসের ভিতরে ছিলাম টের
পাইনি ! লাব্বিউ বেইবী ..
- কী ? একটু আগে বললা রিক্সা । এখন আবার বাস! আর কত মিথ্যা বলবা শুনি ?
এমন সময়ে রিহানের আপুর কন্ঠ -এই তুই এখনো বিছানা থেকে উঠিস নাই? ১২ টা বেজে গেল ...
বারোটা যে আসলে কার বাজলো এইবার টের পেল রিহান ..
-কই তুমি নাকি বাসে ? আবার রিক্সায় ? আমারে বেল শুনাও ? আপুরে নিয়ে রিকশায় ঘুরতেছ না ? মিথ্যাবাদী..
- মমম! নাআ মানে .. আমি ...
- কি মানে মানে ? আমারে আর
কখনো ফোন দিবানা ! প্রতিদিন
তুমি আমারে টেনশনে রাখো .. আর মিথ্যা বলো। আজ থেকে আর কোন সম্পর্ক নাই তোমার সাথে .. কখনো ফোন
দিবানা!
- শোন না ...
বলতে বলতেই টুট টুট করে ওপাশ
থেকে লাইনটা কেটে গেছে ..
মনটায় অনেক ভালো হয়ে গেল
রিহানের । প্রতিদিন অতসীর
ঝাড়ি না শুনলে ওর ভালো লাগেনা ! রাগলে মেয়েটার কন্ঠটা চিকন হয়ে আসে। শুনতে অসম্ভব রকমের ভালো লাগে .. আর
চেহারাটাও লাল হয়ে যায় আর মিথ্যা না বললে ওর কেয়ারিং, ভালোবাসাটাও ধরা যায়না ..
মেয়েটা এতো কেয়ারিং,
এতো কিউট ..
আসলে কিছুই হয়নি। রিহান জানে একটু পরেই অতসী আবার ফোন দিবে। ফোন দিয়ে একগাদা গালি দিবে আর ভালোবাসবে।
অতসী ও জানে রিহান কেন এরকম করে ! ভালোবাসার মধ্যে একটু রাগ, অভিমান, খুনসুটি না থাকলে মানায় না। একঘেয়ে,
পানসে হয়ে যায় ..
অনেককেই তো দেখা যায়। প্রথম প্রথম এতো ভালোবাসে সাত যে ভালোবাসার মানুষটির জন্য জীবনও দিতে পারে । অতঃপর মাস দুয়েকের মধ্যে ব্রেকাপ! কিন্তু রিহান আর অতসীর রিলেশানটা অনেক আলাদা ।
ঘন্টা খানেক যেতে না যেতেই অতসীর ফোনঃ
- এই শোন
- হুম বলো .. রাগ কমছে?
- তুমি এখন মাইর খাবা আমার
হাতে? আর আমি কী বেশীক্ষন আমার কিউট বাবুটার উপরে রাগ
করে থাকতে পারি ?
-আমি আসবো এখন?
- তাড়াতাড়ি আসো।
- যেমন হুকুম মহারাণীর ! তবে আজকে তোমার কিউট বাবুটাকে একটু লিপস্টিক খেতে দিতে হবে !
- ইসস, শখ কত্ত! কি বলতেছি শুনবা না?
- বলো বলো ..
- আমার খরগোশটাকে না আজকে অনেক মোটা মোটা লাগছে !
- কেন কি হয়েছে ? সকালবেলা বেশী খাইয়েছ.?
- না। বুদ্ধু। আমার মনে হয় ওর
বেবী হবে ! হিহিহিহিহি ...
অতসী হাসছে ... রিহান ভাবছে ..
মানুষের হাসি এতো সুন্দর হয় কিভাবে?