somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কম খরচে আবার ভারত পর্ব-১১ ( আধিক্য সিমলা-৩)

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্ব
পরের পর্ব
অন্য পর্বগুলো

সিমলা নিউ বাস স্ট্যান্ডের ভাড়া নিল ৭রুপি। সেখানে যখন আমি নামলাম সত্যিই আমি চমকে উঠলাম। কমপক্ষে চার তলা বাস স্ট্যান্ড। যেখানে উপর তলায়ও বাস উঠে যাচ্ছে। নিচ থেকে উপরে ওঠার জন্য অনেকগুলি লিফট আছে। প্রতি তলায় খাবার হোটেল আছে। টয়লেট গোসলখানা পানি খাবার সুব্যাবস্থা। লাগেজ জমা রাখার জন্য ক্লক রুম। এমনকি রাত্রে ঘুমানোর জন্য হোটেলও আছে।



ইনফরমেশন ডেক্সে গেলাম মানালি যাবার কোন বাস আছে কিনা জানার জন্য। সেখান থেকে জানালো রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত দুটো বাস আছে। ভাড়া চারশো রুপির মধ্যেই। ভাবলাম শেষ বাসটায় যাবো। সেতুরা যাবে কিনা জানার জন্য ফোন করতে হবে। কিন্তু আশেপাশে কোথাও ফোনের দোকান খুঁজে পেলাম না। একজন ড্রাইভারকে আশেপাশে কোথাও ফোনের দোকান আছে কিনা জানতে চাইতেই সে তার নিজের মোবাইল এগিয়ে দিলো আমার দিকে।

ফোন দিলাম সেতুকে। সে দেখি হিন্দি বাংলা ইংরেজি মিশিয়ে এয়া উয়ু করছে। শেষ পর্যন্ত বোঝাতে পারলাম আমি রাজ। মানালি যাবার রাতের বাসে তাদের জন্যও টিকিট কাটবো কিনা। কিন্তু সে নিষেধ করলো। এমনকি আমাকেও অনুনয় করে অনুরোধ করলো যেন আমি আজ না যায়। কথা বলা শেষ করে ফোন ফেরত দিয়ে লোকটাকে টাকা দিতে চাইলাম। কিন্তু লোকটা আমাকে বোঝালো যে আমি হচ্ছি তাদের অতিথি। আর অতিথির কাছ থেকে সে সামান্য ফোন কলের টাকা নিতে পারবে না। হিমাচল প্রদেশের সামান্য এক লোকাল বাস ড্রাইভারের এমন রুচি বোধের প্রকাশে আমি সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম।

লোকাল বাসে চড়ে আবার ওল্ড বাস স্ট্যান্ডে ফেরত এলাম। তারপর সেখান থেকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে হাটা শুরু করলাম। তখনই একটা মজার জিনিস খেয়াল করলাম। সিমলা একটি পাহাড়ি শহর হওয়ায় এর রাস্তাঘাট খুবই সরু। পাশাপাশি দুটো গাড়ি কোনরকমে যাওয়া আসা করতে পারে। তারপরও এই শহরে ফুটপাত আছে। রাস্তার ধার দিয়ে যেদিকে গভীর খাদ তার উপরে লোহা আর কাঠের কার্নিশ বানিয়ে ঝুলন্ত ফুটপাত তৈরী করা হয়েছে। সবাই সেই ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। আমিও নামলাম সেখানে। ফুটপাতটি দেখে একই সাথে বিস্ময় আর শ্রদ্ধা জাগলো। আর একই সাথে দুঃখ লাগলো প্রিয় শহর ঢাকার ফুটপাতের কথা ভেবে।




হাটতে হাটতে অনেকদূর চলে আসার পর সামনে দেখি লিফট। সিমলা পাহাড়ি শহর আর যেসব রাস্তায় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চলাচল করে সেখান থেকে ম্যাল বা রীজ অনেক উপরে। ম্যাল বা রীজে পুলিশ ফায়ার ব্রিগেড বা এ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য কোন গাড়ি প্রবেশ নিষেধ। এজন্য মানুষ বাস থেকে নেমে লিফটে করে উপরে ম্যাল বা রীজে পৌছায়।





১০রুপির টিকিট কেটে আমিও লিফটে উঠে পড়লাম। একটা নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত ওঠার পর লিফট বদলে কিছুদূর হেঁটে আবার আরেকটি লিফটে উঠতে হয়। দ্বিতীয় লিফট থেকে নেমে কিছুদূর হাটলেই চার্চ।



পুরো ম্যাল ফাঁকা। চার্চের বাম পাশ দিয়ে দেখি একটা রাস্তা চলে গেছে। সেখানকার সাইনবোর্ডে লেখা দেখে বুঝতে পারলাম এটাই জাখু টেম্পলে যাবার রাস্তা। সেখানে আরো লেখা আছে যদি কেউ ৩০মিনিটে মন্দিরে পৌছাতে পারে তবে সে নাকি অতিরিক্ত ফিট। আচ্ছা এই তাহলে হনুমানের মন্দিরে যাবার রাস্তা! যেখানে যাবার পথে গাদা গাদা বানর পড়ে। সেতু আর নিয়নের সাথে থেকে আমার সারাটা দিন নষ্ট হয়েছে, কিছুই দেখা হয়নি। আর কাল সকালে যদি মানালির বাসে উঠে পড়ি তবে সিমলার আর কিছুই দেখা হবে না। তাহলে ব্যাপারটা এই দাড়াচ্ছে যে মন্দিরটা দেখতে হলে এটায় আমার শেষ সুযোগ।

হায় তখন যদি আমার এই দুর্বুদ্ধি না হতো! বিসমিল্লাহ্‌ বলে পা বাড়ালাম। রাত তখন সাড়ে আটটার কাছাকাছি। কোথাও লোকজন নেই। পুরো ম্যাল একেবারে খাঁখাঁ করছে। খুবই খাড়া একটা পথ। কিছুদূর এগিয়েই জেলা প্রশাসকের বাংলো। এখানে দু’চারজন লোক দেখে ভাবলাম যে যাক মন্দিরে যাবার সঙ্গি পাওয়া গেল। কিন্তু ভুল ভাঙল একটু পরেই। এ পথে টুকটাক যে কয়টা বাড়ি পড়লো লোকগুলো সেখানে ঢুকে গেল।

পথটা ক্রমশ আরো উঁচু হয়েছে। রাস্তার একপাশে দেখি সিঁড়ি করে দেয়া আছে। কিছুক্ষণ সিঁড়ি ভাঙার পর বুঝলাম এর চাইতে ঢালু পথ বেয়ে ওঠা বেশি সহজ। উঠছি যতোটা তার চাইতে হাপাচ্ছি বেশী। কিছুক্ষন বিশ্রাম নিই তারপর আবার হাটি। তাজিংডং পাহাড়ে ওঠার সময়ও আমার এতোটা কষ্ট হয়নি। একজায়গায় দাঁড়িয়ে হা করে নিঃশ্বাস নিচ্ছি একটা লোককে এগিয়ে আসতে দেখলাম। মন্দিরে যাবার সঙ্গি পাওয়া গেছে ভেবে এগিয়ে গেলাম তার দিকে।

একজন স্থানীয় ভদ্রলোক। তার বাড়ি এই পাহাড়েই। আজকে তার ফিরতে দেরি হয়ে গেছে। কাউকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সাহস করে সে একাই রওনা দিয়েছে। তার এ বক্তব্য শুনে আমি খুবই ভয় পেয়ে গেলাম। যেখানে স্থানীয় লোকেরাই বানরের ভয়ে তটস্থ থাকে সেখানে এতো রাতে আমার একা একা এভাবে চলে আসা উচিৎ হয়নি। আমি একজন বিদেশি তারপরও মুসলমান একজন লোক হয়ে এতো রাত্রে বানরের এই ভয়ঙ্কর জঙ্গল মাড়িয়ে হনুমানের মন্দিরে যাচ্ছি শুনে ভদ্রলোক যারপরনাই অবাক হলেন।

কিছুদূর এগোলাম তার সাথে। জোরে জোরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে দেখে সে বললো যে কিছুক্ষনের মধ্যেই জোরে বৃষ্টি শুরু হবে। আমি এখন মন্দিরে গিয়েও নাকি কিছু দেখতে পারবো না, কারণ মন্দির নাকি রাত সাড়ে আটটায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে সবচেয়ে সতর্ক করলো জঙ্গলের ভয়ঙ্কর বানর সম্পর্কে। সেগুলির স্বভাব চরিত্র নাকি খুবই বীভৎস। তারপর লোকটার বাড়ি এসে পড়ায় সে ঢুকে পড়লো তার বাড়িতে, আর আমিও খুব ভয়ে ভয়ে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলাম।

পথটা এখানে আরো দুর্গম হয়েছে।আর দুপাশে শুরু হয়েছে ঘন জঙ্গল। সেই জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে বানরদের অমানুষিক চিৎকার। ঠিক এ সময়ই রাস্তার পাশের লাইটপোষ্টে যে আলো জ্বলছিল তা নিভে গেল। এমনিতেই ভয়ে অস্থির হয়ে ছিলাম আর এখন আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়লাম। নিজের বোকামিতে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে যে কেন আসতে গেলাম। আর এ সময় জোরে বাতাস শুরু হলো। আমার অবস্থা আরো টাইট। তবে এসময় বিদ্যুৎ চমকের আলোয় সামনে যা দেখলাম তা আগের সব অবস্থাকে ছাড়িয়ে গেল। দেখলাম একগাদা বানর দাঁত মুখ ভেংচে কিলবিল করছে। আমি তো জানতাম শুধু সাপের কিলবিল করে, কিন্তু একগাদা বানরও যে কিলবিল করতে পারে তা এই প্রথম দেখলাম! আমি না পারছি সামনে যেতে না পারছি পিছিয়ে আসতে। জায়গায় দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আয়াতুল কুরসি পড়া শুরু করলাম।

আল্লাহর বিশেষ রহমতে একটা দুটো করে বানর কমা শুরু করলো। ঘনঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আর তার সাথে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতো আছেই। শেষ পর্যন্ত সবগুলো বানর যখন সরে পড়লো তখন পথের পাশের রেলিং ধরে আস্তে আস্তে সামনে এগোতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি আরো কয়েকটা জলজ্যান্ত মূর্তিমান বিভীষিকা পথের পাশে বসে আছে। দাঁড়িয়ে আবার আয়াতুল কুরসি পড়া শুরু করলাম। সেগুলো সরে গেলে আবার সামনে আগানো শুরু করলাম। একটু পরে দেখি কিছুটা দূরে মন্দিরের আলো দেখা যাচ্ছে। জানে কিছুটা পানি এলো।

শেষের পথটুকু কিভাবে যে পার হলাম তা আল্লাহই জানে! তবে মন্দিরের দরজায় দাড়িয়েই আমি আবার ভয়াবহ চমকে উঠলাম। আসলে হয়েছে কি দরজার দুপাশে দুটো মূর্তি, বিদ্যুৎ চমকে আমি মনে করেছিলাম বিশাল সাইজের মানুষ নড়াচড়া করছে।






যাই হোক সেগুলো পার হয়ে আমি মন্দিরের সিঁড়ি বেয়ে আরো উপরের দিকে উঠে চললাম।আশেপাশে কোন মানুষের সাড়াশব্দ নেই। সিঁড়ি বেয়ে একদম উপরে উঠে দাড়ালাম হনুমানের মূর্তির পায়ের কাছে। ৮,১০০ফুট উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত ১০৮ফুট উঁচু এই মূর্তিটি নাকি পৃথিবীর সুবচেয়ে উঁচু মূর্তি।







গদা হাতে দাঁড়ানো হনুমানের বিরাট এবং বিকট এই মূর্তিটি আমার স্নায়ুর উপর প্রচন্ড চাপ ফেলছে। আসলে পরিবেশটায় অন্যরকম। আশেপাশে কোন মানুষ নেই, কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আর জোরে জোরে মেঘ ডাকছে, আর জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে বিশাল বিশাল বানরের তীক্ষ্ণ চিৎকার। যখন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তখন আমার মনে হচ্ছে হনুমানের বিশাল এই মূর্তিটি নড়ে চড়ে উঠছে। যেন যেকোন সময় এই ১২তলা উঁচু এই হনুমান তার বিশাল গদাখানি আমার মাথায় ধমাস করে বসিয়ে দেবে। আমি বুঝতে পারছি দিনের বেলায় আসলে ব্যাপারটি খুবই হাস্যকর হতো, কিন্তু এই রাত নটার দিকে এই জনমানবশূন্য ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাকে পরচন্ড নার্ভাস করে তুলেছে। বিশেষ করে যখন জঙ্গল থেকে বানরের রক্ত হীম করা উল্লাস ধ্বনি ভেসে আসছে। আমি আর সেখানে দাড়ানোর সাহস পেলাম না।

কিন্তু আবার এই পথে ফেরত যেতে হবে ভেবে মনটা দমে গেল। অথচ এছাড়া আর কোন উপায় নেই। ততোক্ষণে বৃষ্টির জোর কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য খুব জোরে না, কেমন যেন কুয়াশা কুয়াশা টাইপ বৃষ্টি। কিন্তু যে আকারে মেঘ ডাকছে যদি আরো জোরে বৃষ্টি শুরু হয় তাহলে আমি এখানে আটকে যেতে পারি। আর সারা রাত এখানে থাকতে হলে আমি নির্ঘাত মারা যাবো। মাথায় হুডি তুলে বিসমিল্লাহ্‌ বলে নামা শুরু করলাম। সুখের কথা এই যে ল্যাম্পপোস্টের লাইটগুলো জ্বলে উঠেছে।

তবু খুব ভয়ে ভয়ে নামতে লাগলাম। তবে নামার পথে আর কোন বানর চোখে পড়ছে না। উপরে উঠার চাইতে ভেজা পিচ্ছিল পথে নিচে নামাটা বেশী কঠিন। আশেপাশে যখন দুয়েকটা বাড়ির আলো চোখে পড়লো তখন কিছুটা সুস্থির হলাম। আস্তে আস্তে নেমে এলাম চার্চের সামনে। চোখ ধাঁধানো আলো ঝলমলে জায়গাটায় এসে যখন পৌছালাম তখন তো বিশ্বাসই হতে চাচ্ছিল না যে ঘন্টা খানেক ধরে আমার উপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে গেছে।

ইন্ডিয়ায় পাহাড়ি শহরগুলোতে দোকান পাট খুব দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। রাত প্রায় সাড়ে নটা বাজে। দুয়েকটি দোকান দেখলাম বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একটা দোকানে বাইরে ঝোলানো একটা কুর্তা দেখে মায়ের জন্য খুব পছন্দ হলো। দোকানটির ভিতরে ঢুকে সেটার কথা বলতেই দোকানি আরো একগাদা জামা নামিয়ে আনলো। দোকানদার ব্যাটা চালাক আছে। সবগুলো জামা খুব সুন্দর। মনে হচ্ছে সবগুলো কিনে নিই।

কিন্তু আমি প্রথমটিই বেছে নিলাম। দামও বেশ কম। বাড়িতে আনার পর সবাই সেটা খুব পছন্দ করেছে। এই দোকান থেকে বের হয়ে খাওয়ার জন্য রেস্ট্ররেন্টে গেলাম। রেস্ট্ররেন্টটি তখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে আবার খাবার রান্না শুরু করলো। বাইরে তখনো ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছে।

খাওয়া দাওয়া শেষে হোটেলে ফিরে দেখি সেতু আর নিয়ন তখনও ফেরেনি। হোটেলের ফোন থেকে তাদের কাছে ফোন দিলাম। তারা তখন স্ক্যান্ডাল পয়েন্টে আছে। বৃষ্টির মধ্যে হাটতে হাটতে তাদের কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি শেষ পর্যন্ত তারা শীত পোষাক কিনেছে। আমার কাছে গল্প দিলো সেগুলোর দাম নিয়েছে চার হাজার রুপি। কিন্তু আমার কাছে সেগুলো ২০০রুপির বেশি মনে হয়নি। আবার হাটতে হাটতে হোটেলে ফিরে এলাম।

হোটেলে ফিরে রুমে ঢোকার পর সেতু হোটেলের সব কর্মচারীকে ডেকে পাঠালো। সেতুর নাকি সারারাত ঘুম হয়নি। তাকে নাকি সারারাত ছাড়পোকা আর তেলাপোকা কামড়েছে। এই লেপ তোষক কম্বল বালিশ সব বদলে দিতে হবে। হৈ চৈ শুনে হোটেলের মালিক এসে ঢুকলো। সে প্রথমে সবকিছু মনযোগ দিয়ে শুনলো। তারপর ঠাণ্ডা ভাবে জানতে চাইলো আমরা কতো রুম ভাড়া দিচ্ছি। মাত্র ৬০০রুপি শুনে সে খুব ভয়ঙ্কর রেগে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। সেতু তখন চিৎকার শুরু করেছে বাথরুমে গরম পানি নেই কেন এজন্য।

আমি তো দেখলাম কাম সারছে! বৃষ্টি হওয়া এই রাত্রে বের করে দিলে কই যাবো! এখনও গরম পানি নেই কেন চিৎকার করতে করতে সেতু হোটেলের কাউন্টারে এগিয়ে গেল। আমি নিশ্চিত সেতু এবার সেখানে মারধোর খাবে। আমি ব্যাগ গুছানো শুরু করলাম। কারণ এতো ঘটনার পর হোটেলের লোকজন যে আমাদের ঘাড় ধরে বের করে দেবে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।

বেশ অনেকক্ষণ বসে থাকার পর সেতু ফেরত এলো। সেখানে কি কি ঝামেলা হয়াছে জানতে চাওয়ায় সেতু তো অবাক। দেরি হবার কারণ হিসাবে সেতু যা বললো তাতে আমার আক্কেল গুড়ুম। এতোক্ষণ সে নাকি হোটেল মালিকের সাথে খাওয়া দাওয়া করছিল। আমি তো পুরোপুরি হতভম্ব হয়ে গেলাম। যে লোকটা সেতুর উপর ওরকম ভয়ঙ্কর রেগে ঘর থেকে বের হয়ে গেল তার সাথে সেতু কি আচরণ করেছে যে লোকটা সেতুকে এতোক্ষণ বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ালো! যাকগে আর কথা না বাড়িয়ে বিরাট একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আমি শুয়ে পড়লাম।

কম খরচে আবার ভারত ( আধিক্য সিমলা ১,২,৩) এই পর্বের মোট খরচ
১। সকালের খাওয়া=২০রুপি
২।দুপুরের খাওয়া (আমার ভাগের বিল)=২৯০রুপি
৩। রাতের খাওয়া=৬০রুপি
৪। লোকাল বাস ভাড়া=১৪রুপি
৫। লিফট=১০রুপি
৬। আমার ভাগের হোটেল খরচ=২০০রুপি
মোট= ৫৯৪রুপি।
১০০টাকায় ৮২ রুপি হিসাবে শপিং বাদে মোট খরচ=৭২৪ টাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×