তবে বাস্তবতা হচ্ছে, পাশার দলে, মানে এরদোয়ানের বিপক্ষে লড়ার মতো কোন ক্যারিশম্যাটিক নেতা তুরস্কে নেই। অদূর ভবিষ্যতে আসবে বলেও মনে হয় না। ফলে এরদোয়ানের আদর্শ পছন্দ করেন না বা মতাদর্শে কট্টর নন এমন মানুষরা তার কাঁধেই দেশ পরিচালনার ভার দিতে চায়। যুক্তি হিসেব ওরা বলে, আমরা স্থিতিশীলতা চাই। দেশ যখন আঞ্চলিক সমস্যায় জর্জরিত তখন অভ্যন্তরীন সমস্যা সামাল দিতে না পারলে তুরস্ক ধ্বংশ হয়ে যাবে। এই যে দোদল্যমান মানুষগুলো, ওদের একজন আমার ডর্মের পাশের এক রেস্টুরেন্টের মালিক। খেতে গিয়ে তার সাথে মাঝেমধ্যে কথা বলি। তিনি চুপচাপ, রেফারেন্ডাম নিয়ে কোনরকম উৎসাহ নেই। পাশাকে ভালোবাসেন, আবার দেশকেও ভালোবাসেন। একটা নির্বিষ হাসি দিয়ে আমার কাছে জানতে চান, তুমি কি মনে কর, কিসে তুরস্কের মঙ্গল। আমিও নিরীহের মতো হাসি।
এদিকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ঐতিহ্য লালন করা এক বিশাল ধর্মীয় ভাবাপন্ন জনগোষ্ঠী এরদোয়ানের চোখ দিয়ে ‘ঐতিহ্যবাহী তুরস্কের’ পুন:প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতে চায়। তাদের ভাষায়, এরদোয়ান তুরস্ককে হারিয়ে যাওয়া ইসলামী ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার পথের গোড়াপত্তন করছেন। তারা শুধু এরদোয়ানকে সমর্থনই করেন না, তুরস্কের অবতার মানেন! জীবন দেওয়া-নেওয়ার মালিক এক আল্লাহ বলে বিশ্বাস করেন, বলেন রেজেপ তাইয়িপ্যের জন্য মরে যাওয়া মানে ইসলামের জন্য শহীদ হওয়া!
এই গণভোট তুরস্কের অনেক কিছুই বদলে দেবে। যদি ''হ্যাঁ' পাশ করে তাহলে পাল্টে যাবে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থা। আর 'না' ভোট জয়ী হলে একটা বড়সর ধাক্কা খাবে এরদোয়ানের শাসন।। এখানে একদল স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নতুন তুরস্ক গড়ার আর এক দল ডাক দিচ্ছেন আধুনিক তুরস্ককে রক্ষার।
যাইহোক, এই মুহূর্তে বলা মুশকিল, এই স্বপ্ন স্বপ্ন খেলা তুরস্ককে কোথায় নিয়ে যাবে। তবে আপাতত আমরা আজকের দিনে চোখ রাখতে পারি। যেখানে আপাতদৃষ্টিতে এরদোয়ানের পাল্লাই ভারী মনে হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৫৭