somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বাবার অপহরনকারীরা এবং তার উদ্ধার অভিযান....... (পর্ব-৩)

২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের দুই পর্ব পড়তে নিচে ক্লিক করুন।
আমার বাবার অপহরনকারীরা এবং তার উদ্ধার অভিযান....... (পর্ব-১)
আমার বাবার অপহরনকারীরা এবং তার উদ্ধার অভিযান....... (পর্ব-২)

পর্ব - ৩



আমরা মনস্থির করতে না পারার ফলে চলে গেলাম নিকটস্থ থানায়।ওসি সাহেব মন দিয়ে বিস্তারিত শুনলেন।টুকটাক কিছু যা দরকার ছিল তিনি জেনে নিলেন।তারপর বললেন,যেহেতু আপনারা জানেন কোথায় আছে সেক্ষেত্রে আপনারা একটা মামলা করেন।সেই মামলার রেফারেন্সে আমরা একঘণ্টার মধ্যে সবাইকে গ্রেফতার করে হাজির করে দিবো।কিন্তু আমরা পুলিসি একশনে গেলে বাবার যে কোনও ক্ষতি হবে না সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা পাচ্ছিলাম না।পুলিশের শেষ কথা হচ্ছে আপনারা আগে মামলা করেন।তারপর আমরা একশন নিবো।শেষমেশ থানাতেও আমরা কোনও ডিসিশন নিতে না পেরে পুলিশের কাছে সময় নিয়ে চলে এলাম।
বাসায় এসে মামা ও অন্যান্য মুরুব্বীদের বৈঠক চলতে লাগলো।পুলিশের ব্যাপারে আমরা কনফার্ম হতে পারছিলাম না।শেষমেষ আলোচনা শেষে এক বড়ভাইয়ের বুদ্ধিতে সবাই সিধান্ত নিলো স্থানীয় এক উঠতি রাজনৈতিক নেতার তত্ত্বাবধানে কিছু টাকা দিয়ে আমরা উনাকে মুক্ত করে আনার চেষ্টা করব।
ওইদিনই একটা দল চলে গেল জনৈক রাজনৈতিক নেতার খোঁজে এবং রাতের মধ্যে উনাকে বাসায় নিয়ে আসা হল।উনি তখন মদ্যপান করে অন্য দুনিয়ায় বিচরন করছেন।উনাকে স্থির করে সব কিছু বুজিয়ে বলা হল। উনি সমানে বকে যাচ্ছেন আর বারবার বলছেন, উনার এলাকায় কার সাহস হল এই কাজ করার।উনি বললেন, টেনশন করবেন না, রাতের মধ্যেই বাবাকে তিনি আমাদের হাতে বুঝিয়ে দিবেন।আমরা উনাকে বুঝাতে চাচ্ছি যে, আমাদের মুল টেনশন হচ্ছে উনার নিরাপত্তা নিয়ে।আমরা চাচ্ছি উনি সহি-সালামতে বাসায় ফিরে আসুক আর “আমরা টাকা দিতে রাজি”।
আর নেতা সাহেব “আমরা টাকা দিতে রাজি” এই কথাটাই শুধু ভালোভাবে শুনল আর সেই মোতাবেক উনার কাজ শুরু করল।

ওদিকে আমরা একবার হানা দেয়ার পর বাবাকে নিয়ে তারা ২ বার জায়গা বদল করলেন।তবে দূরে কোথাও না শুধু আশেপাশে ঘর পরিবর্তন করেছে।

ঐদিন রাতে একজন লোক বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তুললেন।বললেন তারাতারি জামা পড়ে নিতে।সময় একদম নেই। জলদি এখান থেকে ভাগতে হবে।বাবা বুঝে গেলেন যে উনি আমাদের লোক, বাবাকে উদ্ধার করতে এসেছেন।বাবা তাড়াতাড়ি জামাটা গায়ে দিয়ে উনার সাথে বের হয়ে গেলেন। উনি খুব দ্রুত দৌড়াছিলেন কিন্তু বাবা বয়সের কারনে তার সাথে তাল মিলাতে পারছিলেন না। উনি বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন। এমন সময় পেছন থেকে হই-হই আওয়াজ আসতে লাগলো।এবং অপহরণকারীরা কোনোভাবে খবর পেয়ে তাদের পিছু দৌড়াতে লাগলো। তখন ছিল অনুমান রাত ৩ টা। একে তো রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকার আর তার উপর উনার বয়সের কারনে ঠিকমত দৌড়াতে পারছিলেন না।তারা পথ চেঞ্জ করে রেল-লাইনের উপর উঠে গেলেন।কিন্তু রেল লাইনে উঠেই বাবা বিপদে পড়ে গেলেন,উনি আর দৌড়াতে পারছিলেন না। বাবার সাহায্যকারী ততোক্ষণে অনেক দূরে চলে গেছেন। আর বাবার চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। অপহরণকারীরা ততোক্ষণে বাবার কাছে এসে গেছে। বাবাকে তারা ধরে ফেললেন এবং হেঁটে হেঁটে অন্য পথ দিয়ে অন্য একটা বাসায় এনে আবার বন্ধী করে রাখলেন।
পরদিন বাবা ভয়ে ছিলেন যে আমাদের এ কর্মকাণ্ডে তারা আমাদের উপর বা বাবার উপর অন্য কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা।কিন্তু তাদের উত্তেজিত কথাবার্তায় ও পরে জিজ্ঞেস করে যা জানতে পারল তাতে আমরা পরবর্তীতে হতবাক।
বাবাকে স্থানীয় অন্য আরেকটা গ্রুপ অপহরন করতে ছেয়েছিল টাকার জন্য।

সেই অন্য গ্রুপটা আর কেউ না। আমাদের বাসায় আসা কথিত নেতা সাহেব। "আমরা টাকা দিতে রাজি" শুনে উনি আর লোভ সামলাতে পারেননি। ঝামেলা ছাড়া পুরো টাকাটাই নিজে হজম করতে চেয়েছিলেন। ................ (চলবে)


অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কেমন হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×