ছবি নেট
প্রিয়া জীবন তার ভুলে ভরা।উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় মেজো ভইয়ের বন্ধু আবরার ভইয়ের প্রেমে পড়া মস্ত বোকামী হয়েছে আবরার ভাই তাকে ভালবাসেনি ।ওটা ছিল মোহ। প্রিয়ার শারীরীক সৌন্দর্যের মোহ।বিদেশে ভাল একটা স্কলারশিপ পেয়ে তাকে ভুলে অস্ট্রেলিয়ায়।সেই থেকে প্রিয়া দারুণ পুরুষ বিদ্বেষী প্রেম হীন।তাছাড়া গোয়ালে পোড়া গরু মেঘ দেখলেই ভয় পায়। পুরুষ মানুষগুলোকে মাঝে মাঝে তার খুব খারাপ মনে হয়।
তবে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী বন্ধুরা আলাদা । তারা সবসময় তার পাশে দাড়িয়েছে। বিশেষ করে বাড়ী যাওয়ার সময় এগিয়ে দিয়ে আসত তাদের অনেকেই। এদের অনেকেই তাকে হয়তো ভালওবাসে। দুই একজন প্রোপোজও করেছিল। তবে নিজ ডিপার্টমেন্টের কোন ছেলের সঙ্গে প্রেমে তিনি বিশ্বাসী নন।
সহপাঠী একজনকে ভালোবাসার ইচ্ছা জেগেছিল তার। সেখানেও দুর্ভাগ্য ।তারই সহপাঠী জান্নাত এর সঙ্গে তার বন্ধুর শক্ত এফেয়ার হলো । তৃতীয় বর্ষে ই তারা বিয়েও সেরে ফেলে। মাঝে কয়দিন চরম একাকিত্ব বোধ করে। সেই সময়টাতে কোন বন্ধুকেই সে পাশে পায়নি। তার এলাকার একবছর সিনিয়র একটা ছেলে অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় থেকেই তার জন্য ফিদা। বিশ্ববিদ্যালয়েও সে কলাভবনের পাবলিক এডমিনিষ্ট্রেশনের ছাত্র। সেই তার শূণ্যতায় পাশে এসে দাড়িয়েছে। একেবারে ৪র্থ বর্ষে এসে তার ছেলেটাকে ভাল লেগে যায়। আর যাই হোক ছেলেটা তাকে ভালবাসে। কাওসার চাকরিও পেয়ে যায়।মহানন্দে সে নিজে তার সহপাঠীদের মিষ্টি খাইয়েছিল। অবশ্য বন্ধুরা তার উপর বিরক্ত ও হয়েছিল। হয়ত কিছুটা দুঃখ ও পেয়েছিল। চাকরি পাওয়ার পর তারা অনেক ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়। তাদের বিয়ের ব্যাপার পরিবার পর্যন্ত গড়ায়। বিধিবাম দেশের চরম রাজনৈতিক সংকটে তার চাকরিটা চলে যায়।
এর পরপরই তার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ভাই এর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ।কর্মসূত্রে।এমন প্রেমহীন মানুষ তার জীবনে দুটো দেখে নি। রাজা ভাইকে তার সবার মধ্যে ব্যতিক্রম মনে হলো। তার চোখে তাকালে শ্রদ্ধাবোধ জেগে ওঠে।তার চোখ হাসে।কঠিনতম পরিস্থিতি তুচ্ছতাচ্ছিল্যে উড়িয়ে দেন।চেহারাটা মনে হবে খুব চেনা খুব কাছের কেউ। তার প্রচন্ড ইমোশন।চোখে বোধ করি সাগর আছে।চোখ সবসময় ঝলমল করছে। এত যে কোমল স্বভাব তার সামনে আসলে সবচেয়ে খারাপ লোকটিও বিগলিত হয়ে যায়।এত সহজ সরল শিশু শুলভ চরিত্রের মানুষ আর আছে কিনা সন্দেহ।বড় ভুল সময়ে রাজা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা । মেধায় তিনি হারিয়ে দেন সবাইকে।খেলায় ও তিনি জিতে যান প্রচ্ন্ড দাপট নিয়ে ।তিনি জন্মেছিলেন জিতে যাওয়ার জন্য। তার সততা মুগ্ধ করবে সবাইকে।সামান্যতম সম্ভাবনা থেকে জয় করায়ত্ত করতে তার জুড়ি মেলা ভার ।তার কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। অদ্ভুত। বড় ভুল সময়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ।প্রিয়া তার প্রেমে পরেছে।আসলে অনেকেই তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। তাকে পায়কে ? তিনি মিষ্টি অমায়িক হাসি হেসে মেয়েদের অবলীলায় খুন করে চলেছেন হাজার কর্মমাঝে। প্রিয়ার বন্ধুরা আড়ালে তার দূর্নাম করে।সামনে গেলে মাথানত করে ছালাম করে। হিংসা থেকেই হয়তো বদনাম করে।
প্রিয়ার মনে প্রচন্ড কষ্ট।মনের মানুষটির দেখা পেলেন।মন দেয়ার অধিকার তখন তার নেই। বিশেষ করে একটা মেয়ের পক্ষে এই অবস্থান থেকে কাউকে মন দেয়াটা খুব দৃষ্টি কটু। তাছাড়া কাওসার তাকে ছাড়া হয়ত বাঁচবে না।রাজা ভাইয়ের দর্শন ই তাকে রাজা ভাইয়ের আকর্ষণ থেকে ফেরাতে পারে।রাজা ভাই বলেন অঙুর ফল টক।যেটি পাবা না। সেটাকে বলবা খুবখারাপ ।বাস তাহলে আর কষ্ট হবে না।রাজা ভাইকে দেখলেই তাই মনে মনে বার তিনেক নিজেকে প্রবোধ দেন এই বলে রাজা ভাই খুব খারাপ!এমনকি অনেকের সামনেও তাই বলে প্রিয়া। মন তো মানে না। তার ভিতরে রাজা ভাইয়ের জন্য অনেক মায়া সৃষ্টি হয়েছে। হয়েছে ভালবাসাও। যে ভালবাসা অত্যন্ত গভীর। রাজা ভাই কেউ বিপদের পড়লে তার উপকার করবেন ই। কেউ সাহায্য চাইলে তাকে সাহায্য করবেনই।
রাজা ভাইকে দেখলে তার মনে বসন্তের ছোয়া লাগে। প্রকৃতিটা অনেক সুন্দর মনে হয়।সময় দ্রুত কেটে যায়।তার সততায় মুগ্ধ হতে হয়।মানুষের ভালবাসা তার পাও না।........>
প্রেম অপ্রেমের গল্প-১
প্রেম-অপ্রেমের গল্প-২
-----------------------------------
উৎসর্গ প্রিয় অভিনেতা মরহুম হামায়ূন ফরীদি। তার জন্মদিন ২৯ মে। তারআত্নার মাগফিরাত কামনা করি ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৩ ভোর ৬:২৮