প্রথমে সুপ্রিয় ব্লগারগণ টার্গেট হলেন । ব্লগারদের সম্বন্ধে জনমানুষের মনে একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা হলো। এবং সেটা এই সরকারের সময়। কত সম্ভাবনাময় ব্লগার ব্লগ ছাড়লেন । ব্লগ মানে নাস্তিক আরো খারাপ কিছু। সমাজে ছি ছি রব পড়ে গেল। কঠিন একটা সময় পার করে আমরা এসছি। আমিও কলম তুলে নিয়েছিলাম। আমার পোস্টের উপজীব্য থাকতো আস্তিকতত্ব তথা দ্বীন ইসলাম। সেটা ছিল সময়ের প্রয়োজনে। তথাকথিত উলামালীগ লেলিয়ে দিয়ে ব্লগারদের হয়রান করেছে । বাগরুদ্ধ করেছে। এটা পুরোনো ব্লগাররা সবাই জানেন ।
এরপর টার্গেট হলেন খোদ আলেমগন। আমরা হয়তো সেটা দেখেছি ব্লগারদের পক্ষের শক্তি হিসেবে। আদতে তা নয়। উদ্দেশ্য হলো আলেম সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দেয়া। জামাত রাজনৈতিক প্রতিদন্ডি। তাদের অবস্থা আরো করুণ। তাদের রাজাকার টাজাকার দেশদ্রোহী বলে কোণঠাসা করেছে সবার আগে।
তারপর অরাজনৈতিক সংগঠন তাবলীগ । সেখানেও দু্ইদল। আলেম আর যারা আলেম নন। তারা দিল্লীর নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করে দিলেন। বিশ্ব ইজিতেমা দুইভাগ করা হলো। আগে একটা মুনাজাত হতো। এখন দু্ইটা। যুক্তি ট্রাফিক জ্যাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা। আসলে মূল টার্গেট তাবলীগকে দুইভাগে ভাগ করা। জামাত তাবলীগ হাল্কা দ্বন্দ্ব তো আছেই। ফলাফল হলো তাবলীগে সংঘর্ষ। মারামারা হাতাহাতি।পূর্ব এমনটা কখনো হয়নি ।
তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনা বাহিনীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল সাধারণ ছাত্ররা। সেই ১/১১ এর ঘটনা। ছাত্রদের প্রচন্ড মারধর করা হলো। বিসিএস ভাইভা বোর্ডে পর্যন্ত ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষককে তখন রাখা হয়নি । এমন হটকারীতা দেখায় সেই সরকার। সব কিছু এই সরকারের সময় ঘটতে হবে কেন? আগেতো কখনো এমন হয়নি।
২৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বোচিতদের বাদ দিয়ে নতুন করে ভাইভা নেয়া হলো। নতুন লোক নিয়োগ দেয়া হলো। হাছিনার সাঙ্গপাঙ্গ ২৭ তম বিসিএস এর আন্দোলনে সরাসরি সমর্থন দিলেন। ক্ষমতায় এসে তাদের নিয়োগ দেবার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনশন ভাঙলেন। নির্বাচনে জিতে ভাগ্যবঞ্চিত বিসিএস এ সুপারিশকৃতদের হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে হাছিনা হাইকোর্ট নিয়ে খেললেন।
সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সব কোটা বাতিলের ঘোষণা সংসদে দিয়ে আবার জনসমক্ষে কোট দেয়া হবেনা বলে ঘোষণা দিলেন। কোটা বিরুধীরা সবাই এদেশের মানুষ। তাদের রাজাকারের বাচ্চা বলা হলো। হাতুরী দিয়ে পেটানো হলো। মোদ্দাকথা এই সরকারের রাজনীতির প্রধান প্রতিপক্ষ দেশের আপামর জনসাধারণ। ছাত্রসমাজ, ব্লগার, ওলামা তাবলীগ সব। তাদের রাজনীতি এদেশের মানুষের বিপক্ষে। তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় একজন মহান মুক্তিযুদ্ধা। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ ৭১ এর বীরাঙ্গনা দেশমাতা বেগম খালেদাজিয়া।
এখন আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে দেশের ষোলকোটি মানুষ আওয়ামীলীগের ঘৃণ্য রাজনীতির টার্গেট। কী পরিমার রক্ত তারা বহিয়ে দিয়েছেন বাংলার মাটিতে খুন গুম হত্যাকান্ড করে তার ইতিহাস বাংলার মানুষের অজানা নয়। শাপলা চত্বরের ঘটনা, বিডিআর ট্রাজেডি এমন ভয়াবহ ঘটনার জন্ম দিয়েছে এই সরকার।দিয়ে আবার সীমানাহীন নির্যাতন করেছে দেশের মানুষের।
নদী খেকোরা নদী খেয়ে ফেলেছে। চর দখল পাহাড় দখল কোনটা বাদ দেয় নাই। কোর্ট শেষ করেছে সবার আগে। ভাবতে অবাক লাগে কোর্ট সবচেয়ে পক্ষপাতদুষ্ট। শাখের করাতের মত তারা একদিকে অবৈধ রায় দিয়ে আওয়ামীলীগকে ফেবার করেছে আবার অন্যদিক দিয়ে দেশের মানুষের অধিকার ও তাদের প্রতিপক্ষকে তছনছ করে দিয়েছে।
এখন আওয়ামীলীগের নেতাদের বক্তব্য বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশে রক্ত গঙ্গ বইবে। তারা যে সুগোপনে দেশের রক্ত গঙ্গ বইয়ে দিয়ে সেটি আর মুখ ফুটে বলেনা। কারণ তারা যাদের মেরেছে তারা হয়তো মানুষ নয়। তারাই কেবল মানুষ । ষোলকোটি জনসাধারণ তাদের ঘৃণ্য রাজনীতির লক্ষ্য। জনগন যেখানে প্রতিপক্ষ। নিয়ম যেখানে অর্থহীন । বিচার বিভাগ যেখানে একচোখা। সেই একচোখা বিচার বিভাগকে বিশ্বের দরবারে হাইলাইট করে হীনমনতার চরমে আওয়ামীলীগ ।
ঘৃণ্য সেই ব্যবস্থাকে আপামর জনসাধারণ মিলে প্রত্যাখান করার দাবী অমুলক নয়্। কারণ এখন বঞ্চিত মানুষ। এখন বঞ্চিত ছাত্রসমাজ। এখন বিধ্বস্ত তাবলীগজামাত। এখন বিধ্বস্ত শেখহাছিনার বিক্ষের লীগের নেতাগন। এ সরকার কলাপস করবে না তো কারা করবে।প্রকট বৈষম্যের কারণে যদি কোন সংঘর্ষ হয় । হুতু আর তুতসির মত আওয়ামীলী বনাম বাংলাদেশের মানুষ হয়ে থাকে তার পরিণতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে। কোটা সংস্কার আন্দোলন করে হাতুরীপেটা খেতে হয়, বিডিআর ট্রাজেডিতে সেনাবাহিনী হত্যা করা হয়, শাপলা চত্বরে ওলামাদের হত্যা করা হয়। আর ব্লগার মুক্তচিন্তার লেখালেখি বন্ধ করে বাক আর বিবেকের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান কোন কিছু আর বাদ রাখেনি এই সরকার। এখন ব্লগারাও তাদের প্রতিপক্ষ। একসময় ভয় লাগতো হয়তো হত্যার লিস্টে নাম চলে গেছে শুধু ব্লগ লেখার কারণে । ভাবতাম ব্লগার কৌশিককে হয়তো শূলে চড়িয়ে দেবে অথবা আমাকেই। জাফরুল মবীনের মত ব্লগার ব্লগ ছাড়লেন ব্লগ ছাড়লেন একজন আরমান। নারী ব্লগারও কতজনে ছাড়লেন। দেশের মানুষকে প্রতিপক্ষ করে রাজনীতি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করলাম।
হয়ে যাক একটি কবিতা
অযাচিত বেদনা
তিনি সবি পারেন
তিনি প্রতিবাদ করতে পিছপা হননা
তিনি রঙ্গমঞ্চের সুদক্ষ পারফরমার
তিনি প্রতিকূল পরিবেশে অনায়াসে ঘুরে দাড়ান
নির্জলা মিথ্যে বলায় তিনি অদ্বিতীয়
তিনি পারেননি কেবল এক হৃদয়ের আকূতি শুনতে
তিনি শুনেছেন অযৌক্তিক বার্তা শত্রুর
তিনি মহাব্যস্ত কেবল আকাশের তারা গুণতে
শেষ ছুরিটি প্রেমিকের বুকে গেঁথে শুনেছি তিনি
চরণদাসী হয়েছেন কাহার!
হৃদয় ভাঙলো যার -প্রতিদান কী তার!
শুনেছি হৃদয় ভাঙা আর মসজিদ ভাঙা সমান অপরাধ
আরে বাহ ! মোটে সাড়ে তিনহাত দেহ অথচ কবিতা নয় তার প্রয়োজন দুইটি প্রাসাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:০৬