somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কর্পোরেট ভালোবাসা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হ্যালো…. হ্যালো…………..। শীলার ফোন। শীলা মেয়েটা আজকাল বড্ড বেহারা হয়ে গেছে। ফোন না ধরা পর্যন্ত দিয়েই চলে ক্ষ্যান্ত দিতে চায় না। মনে মনে একটু বিরুক্ত হলেও ফোনটা রিসিভ করলাম।
হ…আমি শুনতে পাচ্ছি, কি খবর বল?
তুমি কই?
অফিসে আছি।
আজ অফিসে কি কাজ; আজকে না 14 ফেব্রুয়ারী?
আমি জানি কিন্তু কি করব বল।
কিছুই করার লাগবে না। তুমি চলে আসো।
আচ্ছা, তোমাকে পাঁচ মিনিট পরে ফোন দিচ্ছি।

মোবাইল ফোনটা পকেটে রেখে সোজা চলে গেলাম স্যারের রুমে, উদ্দেশ্য আজকে কিছুটা আগে ছুটি নিব। স্যারের রুমে প্রবেশ করলম।
কি খবর সাহু?
স্যার আমাকে এখন ছুটি দেয়া লাগবে।
কেন?
কিছুক্ষণ ভাবতে থাকি। সত্য বলব নাকি মিথ্যা বলব। আমার তত্বাবধানে প্রায় 20 জন পোলাপাইন মাকেটিং এ চাকুরী করে। তারা বিশেষ কোন কারণে ছুটি নিতে হলে অনেক সময় মিথ্যা কথা বলে । যেমন; বাবা অসুস্থ তাকে হাসপাতালে নিতে হবে, দাদি মারা গেছে, ফুফু স্টোক করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
বলার কারণ আছে, তারা জেনে গেছে সত্য বললে কোম্পানীর রুলস অনুযায়ী আমরা ছুটি দিতে পারি না। আমরা অনেক সময় বুঝে যাই সে মিথ্যা বলছে, তারপরও বিষয়টি না বোঝার ভান করে ছুটি দেই।
আজ যাতে এই সমস্ত অহেতুক ওজর আপত্তি দিয়ে ছুটি নিতে না পারে সেই জন্য অনেক কে সকালে বেলাই ফোন দিয়েছি, যাতে তারাতারি মার্কেটে বেড়িয়ে পরে, সাথে কিছু ডায়ালগও ছাড়ছি , আপনাদের কর্মদক্ষতা আশাব্যঞ্জক নয়।
কিন্তু এখন আমি নিন্ম স্তরের কাতারে আছি আর আমার উপরে একজন বস আছে, তাকে ম্যানেজ করতে হবে। যা হউক সত্য বলার সিদ্ধান্ত নিলাম, সত্যের গুড় নাকি অন্ধকারেও মিঠা লাগে।

………. স্যার শিলার সাথে দেখা করতে হবে। তাকে কিছুটা সময় দিতে হবে।
আমার মুখে একজন মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথাটা শুনে স্যারের মুখে কৌতুহল জেগেছে। স্যারের ধারণা আমি মেয়েদের সাথে যে কোন ধরণের রিলেশন থেকে মুক্ত, কারণ এর আগে দীর্ঘ দুই বছরে এ ধরণের সিম্বল তার চোখে পরে নাই। আসলেও ঠিক তাই। কিন্তু শিলা মেয়েটার কে এড়িয়ে চলতে চাইলেও পারি না। সে নিজে নিজেই আমার সাথে সম্পর্ক রাখে। আমিও রাখি, সেটা সৌজন্যবোধ। চাইলেও এড়িয়ে যেতে পারি না। ইদানিং সে ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা শুরু করে দিয়েছে। যেমন; সকালে অফিসে ঠিক সময় যাতে যেতে পারি সেই জন্য ফোন দিয়ে ঘুম থেকে উঠাবে, শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়ানোর জন্য ফোনে আগেই স্মরণ করে দিবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।

আসলে আপনি ছুটি চেয়েছেন ব্যক্তিগতভাবে আমার না করতে লজ্জা লাগে। কারণ; আমি জানি আপনি খুব প্রয়োজন না হলে ছুটি নেন না। নিশ্চয় শিলার সাথে সময় দেয়াটা আপনার জন্য আবশ্যিক হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু কি আর করা, করেন কোম্পানীর চাকরি; তার বিনিময়ে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে। হেড অফিস থেকে এমডি স্যার ফোন দিয়েছে, গত মাসের রিপোর্টে অডিট বিভাগে গড়মিল ধরা পরছে। যত রাত হউক যেন কারেকশন কপি পাঠিয়ে যাই।
কথা বলা শেষ হলে স্যারের মুখটা কালো হয়ে যায়। আমাকে ছুটি না দিতে পারায় তার ভিতরে হয়ত নাড়া দিয়েছে। তাকে কিছুটা পোড়াইছে। সে হয়ত তার সীমাবদ্ধতার কারণে অনুতপ্ত। আমি কিছুক্ষণ ঠাঁই দারিয়ে থাকলাম। তারপর মুখে আস্তে বললাম, থাক স্যার লাগবেনা। স্যার আমার মুখের দিকে একবার তাকালেন আর মাথাট বাম দিকে নাড়ালেন তারপর বললেন, জানিস সাহু তোর ভাবিও আজকে তারাতাড়ি বাসায় যেতে বলেছে, কিন্তু পারলাম কই?
আমি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম। উদ্দেশ্য শিলাকে ফোন দিয়ে না বলে দিব, কিন্তু তার আগেই শিলা আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে; এই আসতেছ?
না।
কেন?
অফিসে ঝামেলা আছে, স্যার ছুটি দেয় নাই।
থাক’ তাহলে দরকার নেই, মাথা গরম করে উল্টা পাল্টা কিছু কর না। আমাদের ভালোবাসা দিবসটা আগামী ফ্রাইডে তে পালন করব।
আমি কিছুটা ভাবুক হয়ে যাই। শিলা মেয়েটা এমনই। আর এ জন্যই শিলাকে ভালো লাগে।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:০৭
৩০টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×